রাজধানীর গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি জানান, গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া রাজ্জাককে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার বাসা থেকে চারটি চেক উদ্ধার করা হয়। মোট টাকার পরিমাণ ২ কোটি ২৫ লাখ। চেক উদ্ধারের ঘটনায় কলাবাগান থানায় পৃথক একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তালেবুর রহমান জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার আবদুর রাজ্জাক আগে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ঘটনায় জড়িত থাকায় তাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্যোগে গঠিত এই সংগঠনটি ছাত্র রাজনীতিতে নতুন হলেও সম্প্রতি আলোচনায় উঠে আসে।

এদিকে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে ডিএমপির নিয়মিত তথ্যে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগর এলাকায় চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ডিএমপির ৫০টি থানার আওতায় দুই ধাপে মোট ৪৭১টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করেছে।

এসবের মধ্যে ছিল ২১২টি মোবাইল পেট্রোল, ২০টি ফুট পেট্রোল ও ২৭টি হোন্ডা পেট্রোল টিম। পাশাপাশি কৌশলগত ৬৬টি স্থানে স্থাপন করা হয় চেকপোস্ট।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ডাকাত, চোর, মাদক কারবারি, প্রতারক ও পরোয়ানাভুক্ত আসামি। অভিযানে ১১টি মোবাইল ফোন, একটি বাস ও ১৩ হাজার টাকার বেশি নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া মাদকদ্রব্য হিসেবে উদ্ধার করা হয় ১০ হাজার ৬৫ পিস ইয়াবা, ১ কেজি ৪০ গ্রাম গাঁজা, ৭৪ বোতল ফেনসিডিল ও ১ গ্রাম হেরোইন।

ডিবির ওয়ারী বিভাগ ২৪ ঘণ্টায় ১২৩টি চুরি হওয়া মুঠোফোন উদ্ধার করেছে এবং জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অপর এক অভিযানে কবজি কাটা আনোয়ার গ্রুপের দুই সদস্য নিশাত ও রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় খুনের ঘটনা ঘটেছে ১৫৪টি, ছিনতাই ২৪৮টি, চুরি ১,০৬৮টি এবং ডাকাতি ৩৩টি।

এছাড়া, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৪৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯২টি রেকার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তালেবুর রহমান বলেন, “হঠাৎ সতর্কতার পেছনে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।”