alt

জাতীয়

জুলাই সনদ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার, জানালেন আলী রীয়াজ

: বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কার ইস্যুগুলোতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ।

আইনি ভিত্তি না থাকলে ‘জুলাই সনদ’ সই করবে না জামায়াত

জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া ‘অপরিণত’ বলছে এনসিপি

সংসদের ৩শ’ আসনের ৭ শতাংশে নারী প্রার্থীর প্রস্তাব কমিশনের

বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিন শেষে তিনি এ কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এই কমিশনের সভাপতি।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি বড় দায়িত্ব। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছি। আশা করছি,(বৃহস্পতিবার) রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্তগুলো জানাতে পারব।’

এই পর্যায়ের আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি, উচ্চকক্ষ গঠন ও তার সদস্যদের নির্বাচনের প্রক্রিয়া, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, রাষ্ট্রের মূলনীতি এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা দপ্তর এবং তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘সাংসদ হিসেবে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিয়ে ভালো অগ্রগতি হয়েছে। এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কাছে তুলে ধরা হয়েছে।’ তিনি জানান, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ সংক্রান্ত আলাদা একটি প্রস্তাবও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তুলে ধরা হয়েছে। এ নিয়ে সকল দল মৌলিকভাবে একমত হলেও সংবিধানে এটি কীভাবে প্রতিফলিত হবে—তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকের মধ্যে আমরা যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি, তার একটি তালিকা দলগুলোকে দেব। আশা করছি, আগামীকাল একটি সমন্বিত এবং গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘জুলাই সনদ’ মানবে না’

সংস্কার প্রস্তাবগুলোর আইনগত ভিত্তি না থাকলে তা বাস্তবায়নযোগ্য হবে না বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেছেন, ‘জনগণের কাছে এর কোনো মূল্য থাকবে না।’ বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কর প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এ কথা বলেন জামায়াত নেতা তাহের।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ আলোচনার পর যে সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে একমত হয়েছি, তা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়, তাহলে বাংলাদেশে একটি গুণগত পরিবর্তন সম্ভব। কিন্তু বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) কমিশনের পক্ষ থেকে যে সনদের (জুলাই জাতীয় সনদ) খসড়া পাঠানো

হয়েছে, তা দেখে আমরা খুব হতাশ হয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু সরকারের মেয়াদ বা কমিশনের এখতিয়ার সম্পর্কিত কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।’

সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে জামায়াত নেতা তাহের বলেন, ‘এই সরকার কি তাহলে দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়? যদি বর্তমান সরকার না থেকে পরবর্তী সরকার এসব বাস্তবায়ন করে, তাহলে এতদিন ধরে আমরা যে পরিশ্রম করেছি, তা কি কেবল পরামর্শ দেওয়ার জন্যই ছিল? তাহলে তো এর কোনো মূল্যই থাকল না। আমরা শুরু থেকেই ধরে নিয়েছিলাম, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো আইনগত ভিত্তি পাবে এবং তা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে। কিন্তু যদি আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে এটি কেবল কথার কথা থেকে যাবে-যা জনগণ মানবে না, গুরুত্ব দেবে না।’

তাহের বলেন, ‘কমিশনের চেয়ারপারসন ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে আগে একটি লিখিত চুক্তি হয়েছিল, কিন্তু মাঠপর্যায়ে তার কোনো বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়নি। কমিটমেন্ট না মানলে সেটি শুধু প্রতারণাই নয়, বরং জনগণের সঙ্গে উপহাস। বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই ধরনের পরিস্থিতি বহুবার তৈরি হয়েছে এবং তখনও আইনি গ্যাপ পেরিয়ে সমাধানের পথ বের করা হয়েছে। অতীত উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এরশাদসহ অনেক শাসক আইনগত প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় গিয়েছেন, সংসদ গঠন করেছেন, আইন পাস করিয়েছেন। ফলে এখনো আইনি ভিত্তি দেওয়ার সুযোগ আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আইনজ্ঞদের নিয়ে একটি বৈঠক করতে চাই, যেখানে এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো কীভাবে আইনগত ভিত্তি পেতে পারে, তা আলোচনা করা হবে। এখনই সেই আলোচনার সুযোগ দিলে ভালো হয়, না হলে পরবর্তী সময়ে যেন সেই সুযোগ দেওয়া হয়। এই সনদের প্রস্তাব যদি বাস্তবায়নযোগ্য না হয়, আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে তা শুধু একটি প্রতীকী দলিল হয়ে থাকবে। তাতে আমরা সই করব না, কারণ জনগণের কাছে যার কোনো বাস্তব মূল্য নেই, এমন প্রস্তাবে সই করে লাভ কী?’

খসড়া ‘অপরিণত’

চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ খসড়া ‘অপরিণত’ বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, সরকার ’৩৬ জুলাইয়ের’ (৫ অগাস্ট) মধ্যে এ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে না পারলে জনগণকে সাথে নিয়ে তারাই তা ঘোষণা করবেন। বুধবার বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনের আলোচনার বিরতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বের কাঠামোসহ অমীমাংসিত সাত বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে দলগুলোর সঙ্গে বৈঠ বসেছে কমিশন। ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ খসড়া মতামত নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দলগুলোকে হস্তান্তর করা হয়।

‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ খসড়ায় চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির অঙ্গীকার রাখার কথা বলা হয়েছে। ২৬ দফার এ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের জনগণ নতুন সাংবিধানিক ব্যবস্থার যুক্তিসঙ্গত সময়ে আয়োজিতব্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের প্রত্যাশা, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আইনের শাসন ও মানবাধিকার, দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বাবস্থা প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় বাক্ত করছে। এবং বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। বিশেষত, সংবিধানের প্রস্তাবনায় এর উল্লেখ থাকবে এবং তফসিলে এর ঘোষণাপত্র সংযুক্ত থাকবে।’

জুলাই সনদের খসড়া পাওয়ার তথ্য দিয়ে এনসিপির আখতার হোসেন বলেন, ‘সরকার যে খসড়া দিয়েছে সেটা পরিণত নয়। সরকারকে আমাদের পক্ষ থেকে একটি পরিণত খসড়া দিয়েছি এবং আলোচনার মধ্যেই রয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি চোখে পড়ছে না। সরকার যদি আন্তরিক হয় এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমন্বয় করে, তবে ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যেই একটি পরিপূর্ণ, আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তিসম্পন্ন ঘোষণাপত্র জারি করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মত্যাগের বাস্তব ভিত্তি যাতে জুলাই ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়, সেটাই তারা চান।

তিনি বলেন, ‘আমরা একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি না। সরকার যদি ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে ঘোষণাপত্র জারি না করে, তাহলে এনসিপি দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে নিজেরা তা জারি করবে।’

সংসদে ৭ শতাংশে নারী প্রার্থী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীদের সংরক্ষিত ৫০ আসন ঠিক রেখে সংসদের ৭ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে দলীয়ভাবে ৩০০ আসনের মধ্যে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে।

বুধবার সংলাপে সংশোধিত এ প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে ঐকমত্য কমিশন। সংবিধান সংস্কার কমিশন ১০০ আসনে সরাসরি নারীদের নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের ১০০ আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সরাসরি ভোটের কথা বলে।

তবে জামায়াতসহ ইসলামি দলগুলো সংখ্যানুপাতিক হারে ১০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপিসহ সমমনারা বিদ্যমান পদ্ধতিতে ১০০ সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব দেয়।

এ অবস্থায় কমিশন ১৪ জুলাই সংশোধিত একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, কোনো দল ২৫টির বেশি আসনে মনোনয়ন দিলে সেখানে নূন্যতম এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। তবে ওইদিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অধিকাংশ দল। ২৭ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার পাশাপাশি ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী করার প্রস্তাব করেন, যা আগামী নির্বাচনে বাস্তবায়ন হবে।

এরপর চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব দেয় দলটি।

এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার বৈঠকে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (৩) এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষরের’ পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।

চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। রাজনৈতিক দলগুলো এই হার পর্যায়ক্রমে প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করে সংসদে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের মনোনয়নের মাধ্যমে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ১০০ তে উন্নীত করবে।

পঞ্চদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক নারীদেরকে মনোনয়ন দেবে যাতে ১০০ জন নারী জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন।

একটি জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এ আলোচনা এ মাসের মধ্যে শেষ করতে চায় কমিশন। কমিশনের ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২টি বিষয়ে ঐকমত্যে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো।

মঙ্গলবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হলেও দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা রয়ে গেছে।

ছবি

ভোটের সময়সূচি ঘিরে আলোচনা, প্রস্তুতি চলছে নির্বাচনের: আসিফ নজরুল

ছবি

বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে শিশুদের অবস্থা প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে গুরুতর

ছবি

জুলাই সনদ: আজই নিষ্পত্তি চায় ঐকমত্য কমিশন

ছবি

ঢাকাসহ ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, তীব্র যানজট

ছবি

দুর্নীতি মামলা: শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু

ছবি

গাজীপুরে একটি আসন বাড়ছে, বাগেরহাটে কমছে একটি: নির্বাচন কমিশন

আ’লীগ আমলের তিন সংসদ নির্বাচন পর্যালোচনায় গঠিত কমিটিকে কমিশনে রূপান্তর

ছবি

বিমান শারজাহ থেকে ফিরলো ৬ ঘণ্টা দেরিতে

ছবি

ইসলামী ব্যাংকের ‘অর্থ আত্মসাৎ’: নাবিল গ্রুপের আমিনুলের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

স্বাদে-গন্ধে তুলনাহীন শ্রীমঙ্গলের সুমিষ্ট আনারস, সংরক্ষণের ব্যবস্থা জরুরি

ছবি

আসিফের মৃত্যু: সেনা-পুলিশসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তে পিবিআই

ছবি

খালেদা জিয়া সুস্থ, নির্বাচনে অংশ নেবেন: আবদুল আউয়াল মিন্টু

‘মারধর-নির্যাতন’, অনুপস্থিত: ঊর্ধ্বতন ৫ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

ছবি

মুরাদনগরে বিএনপি-আসিফ ও এনসিপি সংঘর্ষ, আহত ৩০

ছবি

রাজধানীতে মাসে গড়ে ২০ হত্যা ও ৫ ডাকাতি: ডিএমপি

ছবি

‘বৈষম্যবিরোধী’ নেতার চাঁদাবাজি: পীরগঞ্জের সাবেক এমপির কাছ থেকে চেক লিখে নেন রিয়াদ

ছবি

সংসদীয় ৩৯ আসনের সীমানায় পরিবর্তন, দাবি-আপত্তি ১০ আগস্টের মধ্যে

ছবি

বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ শুল্ক কমাবে যুক্তরাষ্ট্র, আশা সরকারের

ছবি

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

ছবি

৫ আগস্ট ঘিরে শঙ্কা! স্বরাষ্ট্র কর্মকর্তাদের বিপরীতমুখী বক্তব্য

ছবি

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত মোবারকও আপিলে খালাস

ছবি

পুঁজিবাজারে আজীবন ‘অবাঞ্ছিত’ সালমান, শায়ান ও শিবলী

ছবি

জেলা জজ ও সচিবদের মর্যাদা নির্ধারণ নিয়ে রিভিউয়ের রায় অপেক্ষায়

ছবি

রাষ্ট্রের মূলনীতি থেকে নারী প্রতিনিধিত্ব : ঐকমত্যে পৌঁছাতে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে কমিশন

ছবি

আবু সাঈদ হত্যা: অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ, আদেশ ৬ অগাস্ট

ছবি

গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক রাজ্জাকের বাসা থেকে ২ কোটি টাকার চেক উদ্ধার: ডিএমপি

ছবি

‘পলাতক’ যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় চাকরিচ্যুত, ফেইসবুকে নিজেকে বললেন ‘ভাগ্যবান’

ছবি

১০টির বেশি সিম থাকলে এসএমএস-বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ধাপে ধাপে বন্ধ করবে বিটিআরসি

ছবি

রংপুরে হিন্দুদের ঘরবাড়িতে হামলার ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার: পুলিশ

ছবি

তিন নির্বাচন পর্যালোচনায় গঠিত কমিটিকে ‘কমিশনে’ রূপান্তর

ছবি

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

ছবি

যুদ্ধাপরাধ: মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মোবারক আপিলে খালাস

ছবি

নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জাতীয় ঐকমত্যের প্রত্যাশা

ছবি

আবু সাঈদ হত্যা মামলা: অভিযোগ গঠনের অবশিষ্ট শুনানি বুধবার

ছবি

জুলাইয়ের মধ্যে ‘যেভাবেই হোক’ সনদ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ

tab

জাতীয়

জুলাই সনদ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার, জানালেন আলী রীয়াজ

বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কার ইস্যুগুলোতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ।

আইনি ভিত্তি না থাকলে ‘জুলাই সনদ’ সই করবে না জামায়াত

জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া ‘অপরিণত’ বলছে এনসিপি

সংসদের ৩শ’ আসনের ৭ শতাংশে নারী প্রার্থীর প্রস্তাব কমিশনের

বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিন শেষে তিনি এ কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এই কমিশনের সভাপতি।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি বড় দায়িত্ব। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছি। আশা করছি,(বৃহস্পতিবার) রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্তগুলো জানাতে পারব।’

এই পর্যায়ের আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি, উচ্চকক্ষ গঠন ও তার সদস্যদের নির্বাচনের প্রক্রিয়া, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, রাষ্ট্রের মূলনীতি এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা দপ্তর এবং তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘সাংসদ হিসেবে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিয়ে ভালো অগ্রগতি হয়েছে। এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কাছে তুলে ধরা হয়েছে।’ তিনি জানান, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ সংক্রান্ত আলাদা একটি প্রস্তাবও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তুলে ধরা হয়েছে। এ নিয়ে সকল দল মৌলিকভাবে একমত হলেও সংবিধানে এটি কীভাবে প্রতিফলিত হবে—তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকের মধ্যে আমরা যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি, তার একটি তালিকা দলগুলোকে দেব। আশা করছি, আগামীকাল একটি সমন্বিত এবং গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘জুলাই সনদ’ মানবে না’

সংস্কার প্রস্তাবগুলোর আইনগত ভিত্তি না থাকলে তা বাস্তবায়নযোগ্য হবে না বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেছেন, ‘জনগণের কাছে এর কোনো মূল্য থাকবে না।’ বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কর প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এ কথা বলেন জামায়াত নেতা তাহের।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ আলোচনার পর যে সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে একমত হয়েছি, তা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়, তাহলে বাংলাদেশে একটি গুণগত পরিবর্তন সম্ভব। কিন্তু বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) কমিশনের পক্ষ থেকে যে সনদের (জুলাই জাতীয় সনদ) খসড়া পাঠানো

হয়েছে, তা দেখে আমরা খুব হতাশ হয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু সরকারের মেয়াদ বা কমিশনের এখতিয়ার সম্পর্কিত কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।’

সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে জামায়াত নেতা তাহের বলেন, ‘এই সরকার কি তাহলে দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়? যদি বর্তমান সরকার না থেকে পরবর্তী সরকার এসব বাস্তবায়ন করে, তাহলে এতদিন ধরে আমরা যে পরিশ্রম করেছি, তা কি কেবল পরামর্শ দেওয়ার জন্যই ছিল? তাহলে তো এর কোনো মূল্যই থাকল না। আমরা শুরু থেকেই ধরে নিয়েছিলাম, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো আইনগত ভিত্তি পাবে এবং তা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে। কিন্তু যদি আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে এটি কেবল কথার কথা থেকে যাবে-যা জনগণ মানবে না, গুরুত্ব দেবে না।’

তাহের বলেন, ‘কমিশনের চেয়ারপারসন ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে আগে একটি লিখিত চুক্তি হয়েছিল, কিন্তু মাঠপর্যায়ে তার কোনো বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়নি। কমিটমেন্ট না মানলে সেটি শুধু প্রতারণাই নয়, বরং জনগণের সঙ্গে উপহাস। বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই ধরনের পরিস্থিতি বহুবার তৈরি হয়েছে এবং তখনও আইনি গ্যাপ পেরিয়ে সমাধানের পথ বের করা হয়েছে। অতীত উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এরশাদসহ অনেক শাসক আইনগত প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় গিয়েছেন, সংসদ গঠন করেছেন, আইন পাস করিয়েছেন। ফলে এখনো আইনি ভিত্তি দেওয়ার সুযোগ আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আইনজ্ঞদের নিয়ে একটি বৈঠক করতে চাই, যেখানে এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো কীভাবে আইনগত ভিত্তি পেতে পারে, তা আলোচনা করা হবে। এখনই সেই আলোচনার সুযোগ দিলে ভালো হয়, না হলে পরবর্তী সময়ে যেন সেই সুযোগ দেওয়া হয়। এই সনদের প্রস্তাব যদি বাস্তবায়নযোগ্য না হয়, আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে তা শুধু একটি প্রতীকী দলিল হয়ে থাকবে। তাতে আমরা সই করব না, কারণ জনগণের কাছে যার কোনো বাস্তব মূল্য নেই, এমন প্রস্তাবে সই করে লাভ কী?’

খসড়া ‘অপরিণত’

চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ খসড়া ‘অপরিণত’ বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, সরকার ’৩৬ জুলাইয়ের’ (৫ অগাস্ট) মধ্যে এ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে না পারলে জনগণকে সাথে নিয়ে তারাই তা ঘোষণা করবেন। বুধবার বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনের আলোচনার বিরতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বের কাঠামোসহ অমীমাংসিত সাত বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে দলগুলোর সঙ্গে বৈঠ বসেছে কমিশন। ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ খসড়া মতামত নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার দলগুলোকে হস্তান্তর করা হয়।

‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ খসড়ায় চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির অঙ্গীকার রাখার কথা বলা হয়েছে। ২৬ দফার এ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের জনগণ নতুন সাংবিধানিক ব্যবস্থার যুক্তিসঙ্গত সময়ে আয়োজিতব্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের প্রত্যাশা, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আইনের শাসন ও মানবাধিকার, দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বাবস্থা প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় বাক্ত করছে। এবং বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। বিশেষত, সংবিধানের প্রস্তাবনায় এর উল্লেখ থাকবে এবং তফসিলে এর ঘোষণাপত্র সংযুক্ত থাকবে।’

জুলাই সনদের খসড়া পাওয়ার তথ্য দিয়ে এনসিপির আখতার হোসেন বলেন, ‘সরকার যে খসড়া দিয়েছে সেটা পরিণত নয়। সরকারকে আমাদের পক্ষ থেকে একটি পরিণত খসড়া দিয়েছি এবং আলোচনার মধ্যেই রয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি চোখে পড়ছে না। সরকার যদি আন্তরিক হয় এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমন্বয় করে, তবে ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যেই একটি পরিপূর্ণ, আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তিসম্পন্ন ঘোষণাপত্র জারি করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মত্যাগের বাস্তব ভিত্তি যাতে জুলাই ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়, সেটাই তারা চান।

তিনি বলেন, ‘আমরা একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি না। সরকার যদি ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে ঘোষণাপত্র জারি না করে, তাহলে এনসিপি দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে নিজেরা তা জারি করবে।’

সংসদে ৭ শতাংশে নারী প্রার্থী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীদের সংরক্ষিত ৫০ আসন ঠিক রেখে সংসদের ৭ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে দলীয়ভাবে ৩০০ আসনের মধ্যে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে।

বুধবার সংলাপে সংশোধিত এ প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে ঐকমত্য কমিশন। সংবিধান সংস্কার কমিশন ১০০ আসনে সরাসরি নারীদের নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের ১০০ আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সরাসরি ভোটের কথা বলে।

তবে জামায়াতসহ ইসলামি দলগুলো সংখ্যানুপাতিক হারে ১০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপিসহ সমমনারা বিদ্যমান পদ্ধতিতে ১০০ সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব দেয়।

এ অবস্থায় কমিশন ১৪ জুলাই সংশোধিত একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, কোনো দল ২৫টির বেশি আসনে মনোনয়ন দিলে সেখানে নূন্যতম এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে। তবে ওইদিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অধিকাংশ দল। ২৭ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার পাশাপাশি ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী করার প্রস্তাব করেন, যা আগামী নির্বাচনে বাস্তবায়ন হবে।

এরপর চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব দেয় দলটি।

এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার বৈঠকে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (৩) এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষরের’ পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।

চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। রাজনৈতিক দলগুলো এই হার পর্যায়ক্রমে প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করে সংসদে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের মনোনয়নের মাধ্যমে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ১০০ তে উন্নীত করবে।

পঞ্চদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক নারীদেরকে মনোনয়ন দেবে যাতে ১০০ জন নারী জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন।

একটি জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এ আলোচনা এ মাসের মধ্যে শেষ করতে চায় কমিশন। কমিশনের ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২টি বিষয়ে ঐকমত্যে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো।

মঙ্গলবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হলেও দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা রয়ে গেছে।

back to top