একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মোবারক হোসেনের সাজা বাতিল করে খালাস দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বেঞ্চ বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) এ রায় দেয়। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাসের রায় এলো আপিল বিভাগ থেকে। এর আগে গত ২৭ মে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি ‘প্রমাণিত’ হওয়ার কথা জানিয়ে মোবারককে একটিতে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্যটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায় থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় মোবারক হোসেন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
এরমধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ৩ নম্বর অভিযোগে মোবারককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর
চতুর্দশ রায়ে মো. মোবারক হোসেনের মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে। ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর ওই রায়ে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মোবারককে হত্যা, নির্যাতনের মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের আদেশ দেয়া হয় সেই রায়ে।
ট্রাইব্যুনালে করা মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের দিনগুলোতে মোবারক জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হিন্দু মন্দির ‘আনন্দময়ী কালীবাড়ি’ দখল করে ‘রাজাকার মঞ্জিল’ নামকরণ করেন এবং সেখানে অনেক মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন চালায়।
তার নেতৃত্বেই রাজাকার বাহিনী সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অপহরণ, লুটপাট, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশ কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়ান মোবারক। ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি।
একাত্তরে ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় নিহত আব্দুল খালেকের মেয়ে খোদেজা বেগম ২০০৯ সালের ৩ মে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন। সেখানে মোবারককে আসামি করা হয়।
ওই বছরের ১৩ মে মোবারক হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের আগাম জামিন নেন। এরপর কয়েক দফা জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০১২ সালের ৬ জুন মোবারকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলাটি ট্রাইব্যুনালে আসে।
ওই বছরের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ২৫ ফেব্রুয়ারি মোবারকের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। ১২ মার্চ অভিযোগ আমলে নিয়ে জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মোবারকের বিচার শুরু হয়। সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষে
আপিল বিভাগের রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘১ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড ও ৩ নম্বর অভিযোগে মোবারককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। দুই অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করা হয়েছে। অন্য কোনো মামলা না থাকলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই।’
বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মোবারক হোসেনের সাজা বাতিল করে খালাস দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বেঞ্চ বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) এ রায় দেয়। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে সরকার বদলের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাসের রায় এলো আপিল বিভাগ থেকে। এর আগে গত ২৭ মে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি ‘প্রমাণিত’ হওয়ার কথা জানিয়ে মোবারককে একটিতে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্যটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায় থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় মোবারক হোসেন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
এরমধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ৩ নম্বর অভিযোগে মোবারককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর
চতুর্দশ রায়ে মো. মোবারক হোসেনের মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে। ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর ওই রায়ে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মোবারককে হত্যা, নির্যাতনের মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের আদেশ দেয়া হয় সেই রায়ে।
ট্রাইব্যুনালে করা মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের দিনগুলোতে মোবারক জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হিন্দু মন্দির ‘আনন্দময়ী কালীবাড়ি’ দখল করে ‘রাজাকার মঞ্জিল’ নামকরণ করেন এবং সেখানে অনেক মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন চালায়।
তার নেতৃত্বেই রাজাকার বাহিনী সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অপহরণ, লুটপাট, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশ কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়ান মোবারক। ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি।
একাত্তরে ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় নিহত আব্দুল খালেকের মেয়ে খোদেজা বেগম ২০০৯ সালের ৩ মে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন। সেখানে মোবারককে আসামি করা হয়।
ওই বছরের ১৩ মে মোবারক হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের আগাম জামিন নেন। এরপর কয়েক দফা জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০১২ সালের ৬ জুন মোবারকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলাটি ট্রাইব্যুনালে আসে।
ওই বছরের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ২৫ ফেব্রুয়ারি মোবারকের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। ১২ মার্চ অভিযোগ আমলে নিয়ে জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মোবারকের বিচার শুরু হয়। সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষে
আপিল বিভাগের রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘১ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড ও ৩ নম্বর অভিযোগে মোবারককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। দুই অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করা হয়েছে। অন্য কোনো মামলা না থাকলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই।’