বিচারক হিসেবে ‘বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায়’ দেয়া এবং ‘জাল রায়’ তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। পুলিশের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহ বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) এই আদেশ দেয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন জানান।
শুনানিতে খায়রুল হকের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালতও তার বক্তব্য শোনেনি। এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়। তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ হয়ে যায়।
সেই রায়ে জালিয়াতি এবং দুর্নীতির অভিযোগে গতবছর ২৭ আগস্ট শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘বিচারপতি খায়রুল হক সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রভাবিত হয়ে অবসরপরবর্তী ভালো পদায়নের লোভে দুর্নীতিমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য ২০১১ সালের ১০ মে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার সংক্ষিপ্ত আদেশ পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।’
মামলায় বাদী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন রিট আবেদন করেন। সেই মামলার শুনানি করে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। রিট আবেদনকারী ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেয় আপিল বিভাগ। তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন এ বি এম খায়রুল হক।’
‘ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্য আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিলেন। কিন্তু ওই বছর
সেপ্টেম্বরে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের সময় জালিয়াতি করা হয়।’ খায়রুল হক অবসরে যাওয়ার পর ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা পুনর্নিয়োগ দেয়া হয় তাকে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ১৩ আগস্ট আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন খায়রুল হক। এরপর তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা দায়ের হয়। তার ৯ মাসের মাথায় গত ২৪ জুলাই ধানমন্ডির বাসা থেকে এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ওইদিনই তাকে যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় নিয়ে তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা রয়েছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় এ মামলা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া। মামলায় সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে তার বিরুদ্ধে ‘বিধি বহির্ভুতভাবে প্লট নেয়ার’ একটি অভিযোগও অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এর অংশ হিসেবে দুদক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান এবং উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করেছে।
শুনানিতে যা হলো
এদিন শুনানিকালে খায়রুল হককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল ১০টার কিছু আগে তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এজলাসে তোলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই খালেক মিয়া খায়রুল হককে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। সকাল ১০টা ১ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। প্রথমে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়। পরে ১০ দিনের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়।
শুনানিতে প্রসিকিউশন বিভাগের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আসামি খায়রুল হক সাবেক প্রধান বিচারপতি ছিলেন। ত্রয়োদশ সংশোধনীতে সাতজন সদস্যের মধ্যে চারজন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা রাখার পক্ষে রায় দেয়। তবে অবসরে যাওয়ার পর ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনীর ফেব্রিকেটেড রায় প্রদান করেন।’ তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা খায়রুল হক বলেন, ‘নট কারেক্ট, নট কারেক্ট।’
আসাদুজ্জামান তখন বলেন, ‘আমরা জেনে এসেছি, হাকিম নড়ে কিন্তু হুকুম নড়ে না। কিন্তু তিনি হুকুম নড়ালেন। তার এ রায়ের কারণে তিন প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি। যাদের বয়স এখন ৩৫/৩৬ বছর। যার কারণে গত ৫ আগস্ট ঘটেছে, জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কেন, কী জন্য ওই রায় দিয়েছিলেন, আর কেউ জড়িত আছে কিনা জানার জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।’ এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক দিদার ও মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।
আজিজুল হক দিদার বলেন, ‘শেখ হাসিনা অবৈধ সরকার। তাকে স্বৈরাচার, দীর্য়মেয়াদি করার ব্যবস্থাটা খায়রুল হকই করেছিলেন। সারা পৃথিবীর মানুষ উনার কর্মকাণ্ড দেখেছেন, আপনারাও দেখেছেন।’ রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন বলেন, ‘তিনি শেখ মুজিবের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার ছিলেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী সংক্রান্ত রায় বাতিল করেন। বিচার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছেন। তার এমন ব্যবস্থার কারণে গত ৫ আগস্টের মতো ঘটনা ঘটেছে। হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। শত শত তরুণ যুবককে প্রাণ দিতে হয়েছে। হাজার হাজার তরুণ আহত হয়েছে।’ শুনানি চলাকালে এসব অভিযোগ শুনে মাথা নেড়ে ‘না, না’ করতে দেখা যায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে। শুনানি শেষে বিচারক তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।
বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
বিচারক হিসেবে ‘বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায়’ দেয়া এবং ‘জাল রায়’ তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। পুলিশের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহ বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) এই আদেশ দেয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন জানান।
শুনানিতে খায়রুল হকের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালতও তার বক্তব্য শোনেনি। এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়। তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ হয়ে যায়।
সেই রায়ে জালিয়াতি এবং দুর্নীতির অভিযোগে গতবছর ২৭ আগস্ট শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘বিচারপতি খায়রুল হক সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রভাবিত হয়ে অবসরপরবর্তী ভালো পদায়নের লোভে দুর্নীতিমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য ২০১১ সালের ১০ মে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার সংক্ষিপ্ত আদেশ পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।’
মামলায় বাদী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন রিট আবেদন করেন। সেই মামলার শুনানি করে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। রিট আবেদনকারী ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেয় আপিল বিভাগ। তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন এ বি এম খায়রুল হক।’
‘ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্য আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিলেন। কিন্তু ওই বছর
সেপ্টেম্বরে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের সময় জালিয়াতি করা হয়।’ খায়রুল হক অবসরে যাওয়ার পর ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা পুনর্নিয়োগ দেয়া হয় তাকে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ১৩ আগস্ট আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন খায়রুল হক। এরপর তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা দায়ের হয়। তার ৯ মাসের মাথায় গত ২৪ জুলাই ধানমন্ডির বাসা থেকে এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ওইদিনই তাকে যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় নিয়ে তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা রয়েছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় এ মামলা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া। মামলায় সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে তার বিরুদ্ধে ‘বিধি বহির্ভুতভাবে প্লট নেয়ার’ একটি অভিযোগও অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এর অংশ হিসেবে দুদক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান এবং উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করেছে।
শুনানিতে যা হলো
এদিন শুনানিকালে খায়রুল হককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল ১০টার কিছু আগে তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এজলাসে তোলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই খালেক মিয়া খায়রুল হককে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। সকাল ১০টা ১ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। প্রথমে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়। পরে ১০ দিনের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়।
শুনানিতে প্রসিকিউশন বিভাগের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আসামি খায়রুল হক সাবেক প্রধান বিচারপতি ছিলেন। ত্রয়োদশ সংশোধনীতে সাতজন সদস্যের মধ্যে চারজন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা রাখার পক্ষে রায় দেয়। তবে অবসরে যাওয়ার পর ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনীর ফেব্রিকেটেড রায় প্রদান করেন।’ তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা খায়রুল হক বলেন, ‘নট কারেক্ট, নট কারেক্ট।’
আসাদুজ্জামান তখন বলেন, ‘আমরা জেনে এসেছি, হাকিম নড়ে কিন্তু হুকুম নড়ে না। কিন্তু তিনি হুকুম নড়ালেন। তার এ রায়ের কারণে তিন প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি। যাদের বয়স এখন ৩৫/৩৬ বছর। যার কারণে গত ৫ আগস্ট ঘটেছে, জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কেন, কী জন্য ওই রায় দিয়েছিলেন, আর কেউ জড়িত আছে কিনা জানার জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।’ এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক দিদার ও মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।
আজিজুল হক দিদার বলেন, ‘শেখ হাসিনা অবৈধ সরকার। তাকে স্বৈরাচার, দীর্য়মেয়াদি করার ব্যবস্থাটা খায়রুল হকই করেছিলেন। সারা পৃথিবীর মানুষ উনার কর্মকাণ্ড দেখেছেন, আপনারাও দেখেছেন।’ রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন বলেন, ‘তিনি শেখ মুজিবের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার ছিলেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী সংক্রান্ত রায় বাতিল করেন। বিচার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছেন। তার এমন ব্যবস্থার কারণে গত ৫ আগস্টের মতো ঘটনা ঘটেছে। হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। শত শত তরুণ যুবককে প্রাণ দিতে হয়েছে। হাজার হাজার তরুণ আহত হয়েছে।’ শুনানি চলাকালে এসব অভিযোগ শুনে মাথা নেড়ে ‘না, না’ করতে দেখা যায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে। শুনানি শেষে বিচারক তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।