গাজীপুরে আসন বেড়েছে, বাগেরহাটে কমেছে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯টি সংসদীয় আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ২৬১ আসনের সীমানা বহাল রয়েছে। পরিবর্তনের মধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো হয়েছে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
সীমানা নির্ধারণে বিশেষায়িত কারিগরি কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ইসি এ সংক্রান্ত অনুমোদন দেয়। বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের জানান, এবার ভোটার সংখ্যাকে আমলে নিয়ে ইসির বিশেষায়িত কমিটির সুপারিশ ও সীমানাসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে সংসদীয় এলাকার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিশেষায়িত কমিটি ভোটার সংখ্যা ও জনসংখ্যা বিশ্লেষণ করে গাজীপুর ও বাগেরহাট নিয়ে কমানো-বাড়ানোর প্রস্তাব রেখেছিল। বর্তমানে বাগেরহাটে ৪টি আসন ও গাজীপুরে ৫টি আসন রয়েছে। নতুন প্রস্তাবে বাগেরহাটে ৩টি ও গাজীপুরে ৬টি হবে।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫শ’। এটা ধরে ওপরের জেলায় একটি আসন বাড়ালে তা গাজীপুরে হবে। এ গড়ের কম বাগেরহাটে একটি কমালে সমতা চলে আসে। বাকিগুলোয় আসন কমবেশি প্রস্তাব দেয়া হয়নি। দুই জেলার আসনই এফেক্টেড হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।’
বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব ছিল না জানিয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘খুবই মাইক্রো লেভেলের প্রস্তাব। কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সাতক্ষীরাসহ বেশ কয়েকটি জেলায়।’
সেসব আসনে পরিবর্তন করা হয়েছে
পঞ্চগড় ১, ২; রংপুর ৩; সিরাজগঞ্জ ১, ২; সাতক্ষীরা ৩, ৪; শরীয়তপুর ২, ৩; ঢাকা ২, ৩, ৭, ১০, ১৪, ১৯; গাজীপুর ১, ২, ৩, ৫, ৬; নারায়ণগঞ্জ ৩, ৪, ৫; সিলেট ১, ৩; ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২, ৩; কুমিল্লা ১, ২, ১০, ১১; নোয়াখালী ১, ২, ৪, ৫; চট্টগ্রাম ৭ ও ৮; বাগেরহাট: ২, ৩।
এসব আসনের নাম জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘এ প্রস্তাব কমিশনে আমরা উপস্থাপন করেছি। ইসি সেটা অনুমোদন দেয়। ১০ অগাস্ট পর্যন্ত আবেদন (দাবি বা আপত্তি) করা যাবে। এরপর দাবি আপত্তি শুনানি শেষ করে চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হবে।’
*সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া*
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের এখতিয়ার ইসির।’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণ করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ জুলাই সীমানা নির্ধারণে ভূগোলবিদ, নগরবিদ, পরিসংখ্যানবিদসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৯ সদস্যের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি করা হয়। বিদ্যমান আইনানুযায়ী এ টিম ৬৪ জেলার ৩০০ আসনের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে।
আইনানুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও আদমশুমারিকে গুরুত্ব দিয়ে নির্ধারণ করতে হয়।
আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আদমশুমারি ২০২২ ধরে কাজ করতে গিয়ে কারিগরি কমিটি দেখলেন অসামঞ্জস্য রয়েছে আদমশুমারিতে। বর্তমানে ইসির হালনাগাদ ভোটার সংখ্যা রয়েছে। সেই ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে চার লাখ ২০ হাজার ৫০০ কমবেশি গড় ভিত্তিতে গ্রেডিং করে কারিগরি কমিটি।’
কোন জেলায় ভোটার বেশি, কোন জেলায় কম তাও পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সর্বনিম্ন ভোটার সংখ্যা যে জেলায় সেখানে ফিক্স আপ করেছে। এক, দুই, তিন আসন বিশিষ্ট জেলাগুলোকে আসন বাড়ানো বা কমানোয় বিবেচনায় নেয়া হয়নি। আড়াই শতাধিক আসনের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি আবেদন না আসায় বিদ্যমান সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ ভোটার রয়েছে এমন জেলায় একটি আসন বাড়ালেও সেখানে জাতীয় গড়ের চেয়েও ভোটার বেশি থাকে। সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছে এমন জেলায় একটি আসন কমালে সেখানে জাতীয় গড় ভোটারের কাছাকাছি থাকে। সেক্ষেত্রে কারিগরি কমিটি সবচেয়ে বেশি ভোটারের জেলায় একটি আসন বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। সর্বনিম্ন ভোটারের জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছে।’
*ছোটখাটো পরিবর্তন*
আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৫০০-এর মতো আবেদন পেয়েছে কমিশন। কারিগরি কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী ইসির এ সংক্রান্ত কমিটি প্রস্তাব প্রস্তুত করেছে। পরিবর্তন বলতে খুব মাইনর। কোথাও আবেদন করা হয়েছে, উপজেলাকে খণ্ডিত করা যাবে না, কোথাও এ ইউনিয়ন রাখলে সুবিধা হয়। কোথাও ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরা হয়।’
উল্লেখ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন হয়েছিল। একাদশে ২৫টিতে, দশমে অর্ধশত আসনে, নবম সংসদে শতাধিক আসনে পরিবর্তন করা হয়েছিল।
গাজীপুরে আসন বেড়েছে, বাগেরহাটে কমেছে
বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯টি সংসদীয় আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ২৬১ আসনের সীমানা বহাল রয়েছে। পরিবর্তনের মধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো হয়েছে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
সীমানা নির্ধারণে বিশেষায়িত কারিগরি কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ইসি এ সংক্রান্ত অনুমোদন দেয়। বুধবার,(৩০ জুলাই ২০২৫) বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের জানান, এবার ভোটার সংখ্যাকে আমলে নিয়ে ইসির বিশেষায়িত কমিটির সুপারিশ ও সীমানাসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে সংসদীয় এলাকার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিশেষায়িত কমিটি ভোটার সংখ্যা ও জনসংখ্যা বিশ্লেষণ করে গাজীপুর ও বাগেরহাট নিয়ে কমানো-বাড়ানোর প্রস্তাব রেখেছিল। বর্তমানে বাগেরহাটে ৪টি আসন ও গাজীপুরে ৫টি আসন রয়েছে। নতুন প্রস্তাবে বাগেরহাটে ৩টি ও গাজীপুরে ৬টি হবে।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫শ’। এটা ধরে ওপরের জেলায় একটি আসন বাড়ালে তা গাজীপুরে হবে। এ গড়ের কম বাগেরহাটে একটি কমালে সমতা চলে আসে। বাকিগুলোয় আসন কমবেশি প্রস্তাব দেয়া হয়নি। দুই জেলার আসনই এফেক্টেড হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।’
বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের প্রস্তাব ছিল না জানিয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘খুবই মাইক্রো লেভেলের প্রস্তাব। কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সাতক্ষীরাসহ বেশ কয়েকটি জেলায়।’
সেসব আসনে পরিবর্তন করা হয়েছে
পঞ্চগড় ১, ২; রংপুর ৩; সিরাজগঞ্জ ১, ২; সাতক্ষীরা ৩, ৪; শরীয়তপুর ২, ৩; ঢাকা ২, ৩, ৭, ১০, ১৪, ১৯; গাজীপুর ১, ২, ৩, ৫, ৬; নারায়ণগঞ্জ ৩, ৪, ৫; সিলেট ১, ৩; ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২, ৩; কুমিল্লা ১, ২, ১০, ১১; নোয়াখালী ১, ২, ৪, ৫; চট্টগ্রাম ৭ ও ৮; বাগেরহাট: ২, ৩।
এসব আসনের নাম জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘এ প্রস্তাব কমিশনে আমরা উপস্থাপন করেছি। ইসি সেটা অনুমোদন দেয়। ১০ অগাস্ট পর্যন্ত আবেদন (দাবি বা আপত্তি) করা যাবে। এরপর দাবি আপত্তি শুনানি শেষ করে চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হবে।’
*সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া*
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের এখতিয়ার ইসির।’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণ করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ জুলাই সীমানা নির্ধারণে ভূগোলবিদ, নগরবিদ, পরিসংখ্যানবিদসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৯ সদস্যের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি করা হয়। বিদ্যমান আইনানুযায়ী এ টিম ৬৪ জেলার ৩০০ আসনের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে।
আইনানুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও আদমশুমারিকে গুরুত্ব দিয়ে নির্ধারণ করতে হয়।
আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আদমশুমারি ২০২২ ধরে কাজ করতে গিয়ে কারিগরি কমিটি দেখলেন অসামঞ্জস্য রয়েছে আদমশুমারিতে। বর্তমানে ইসির হালনাগাদ ভোটার সংখ্যা রয়েছে। সেই ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে চার লাখ ২০ হাজার ৫০০ কমবেশি গড় ভিত্তিতে গ্রেডিং করে কারিগরি কমিটি।’
কোন জেলায় ভোটার বেশি, কোন জেলায় কম তাও পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সর্বনিম্ন ভোটার সংখ্যা যে জেলায় সেখানে ফিক্স আপ করেছে। এক, দুই, তিন আসন বিশিষ্ট জেলাগুলোকে আসন বাড়ানো বা কমানোয় বিবেচনায় নেয়া হয়নি। আড়াই শতাধিক আসনের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি আবেদন না আসায় বিদ্যমান সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ ভোটার রয়েছে এমন জেলায় একটি আসন বাড়ালেও সেখানে জাতীয় গড়ের চেয়েও ভোটার বেশি থাকে। সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছে এমন জেলায় একটি আসন কমালে সেখানে জাতীয় গড় ভোটারের কাছাকাছি থাকে। সেক্ষেত্রে কারিগরি কমিটি সবচেয়ে বেশি ভোটারের জেলায় একটি আসন বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। সর্বনিম্ন ভোটারের জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছে।’
*ছোটখাটো পরিবর্তন*
আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৫০০-এর মতো আবেদন পেয়েছে কমিশন। কারিগরি কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী ইসির এ সংক্রান্ত কমিটি প্রস্তাব প্রস্তুত করেছে। পরিবর্তন বলতে খুব মাইনর। কোথাও আবেদন করা হয়েছে, উপজেলাকে খণ্ডিত করা যাবে না, কোথাও এ ইউনিয়ন রাখলে সুবিধা হয়। কোথাও ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরা হয়।’
উল্লেখ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন হয়েছিল। একাদশে ২৫টিতে, দশমে অর্ধশত আসনে, নবম সংসদে শতাধিক আসনে পরিবর্তন করা হয়েছিল।