অবরোধে, বৃষ্টিতে এমন দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে বৃহস্পতিবার সারাদিন রাজধানীর শাহবাগে -সংবাদ
জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন এবং তা স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন জুলাই যোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার, (৩১ জুলাই ২০২৫) সকাল সাড়ে ১০টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করে তারা। এর আগে তারা জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন। এতে শাহবাগ মোড় ও এর আশপাশের সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় তীব্র যানজটের। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবী, সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা। দিনভর ব্যারিকেড দিয়ে সড়ক বন্ধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা।
পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে চাইলে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ওই সড়ক ধরে গন্তব্যে যেতে গিয়ে শাহবাগ মোড়ে আটকা পড়েন অসংখ্য পথচারী ও মোটরবাইকসহ অন্য যানবাহন চালকরা। ব্যারিকেড সরিয়ে এক পাশ দিয়ে যেতে দেয়ার অনুরোধ করলেও শুনেনি আন্দোলনকারীরা। এ নিয়ে পথচারীদের সঙ্গে কয়েক দফায় বাগবিতণ্ডায় জড়ায় তারা। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহতরা। অবরোধ ঘিরে শাহবাগ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে অবরোধ শুরু করেন তারা। এ সময় তারা, ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘জুলাই সনদ নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘রক্ত লাগলে রক্ত নে, জুলাই সনদ দিয়ে দে’সহ নানান স্লোগান দেন। দাবি না মানা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলতেই থাকবে বলে জানান মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা সৌরভ। তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেছি, কিন্তু রাষ্ট্র বারবার আমাদের সঙ্গে টালবাহানা করেছে। এখন আমাদের কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়েও কাজ হবে না, সমস্ত প্রতিশ্রুতির বাইরে গিয়ে আমাদের জুলাই সনদ আর ঘোষণাপত্র দিতে হবে। না হলে আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
নাজির আহমেদ খান নামে আহত এক আন্দোলনকারী বলেন, উপদেষ্টাম-লীকে বলে দিতে চাই, আমরা রক্ত দিয়েছি। আমরা আর রক্ত দিতে ভয় পাই না। যারা স্বৈরাচার হটাতে জীবন দিয়েছেন তারা জাতির সূর্যসন্তান। আমাদের মৃত্যুর ভয় দেখাবেন না। গুম, হত্যার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। সতেরোটা বছর সব রাজনৈতিক দল ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এই জাতির সূর্যসন্তানরা যখন রাস্তায় নেমে এসেছে তখন হাসিনা এক মাসের মাথায় পালাতে বাধ্য হয়েছে।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় ও এর আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাদের সরানো যাচ্ছে না।
দিনভর সড়কটি ব্যারিকেড দিয়ে রাখে আন্দোলনকারীরা। এতে বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, মৎস্য ভবন, পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সব ধরনের পাবলিক যানবাহন বাংলামোটর থেকে ঘুরিয়ে মগবাজার দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছায়। আবার সদরঘাট থেকে আসা যানবাহন শাহবাগ দিয়ে যেতে না পেরে অন্য রুট দিয়ে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। দুপুরের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে একে একে শাহবাগ মোড়ে এসে আটকা পড়েন বাইকাররা। তারা আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করেন, যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার। সামান্য একটু জায়গা দিলে তারা যেতে পারবেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তা মানতে নারাজ। এ সময় একাধিক মোটরসাইকেল চালক, পথচারী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
সুমন নামের একজন বাইকচালক বলেন, তিনি মৎস্য ভবন, পল্টন হয়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখান দিয়ে তীব্র যানজটে বেশি এগোতে পারছিলেন না। তাই শিক্ষাভবন-দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি হয়ে শাহবাগ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এখানে এসে আরও বেশি আটকা পড়েছেন। টোটালি কোনোদিক যাওয়া যাচ্ছে না। সামান্য একটু ব্যারিকেড সরিয়ে নিলে আমরা বাইকাররা যেতে পারতাম। এমনটি বলার পরও তারা কথা শুনছেন না। উল্টো আমাদের বিভিন্ন দলের কর্মী বলে আখ্যা দিচ্ছে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অবস্থানরত আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে চাইলে এই ধাক্কাধাক্কি ও বাগবিতণ্ডা তৈরি হয়। চট্টগ্রাম থেকে আসা মো. মিজান নামে একজন আন্দোলনকারী বলেন, আমাদের অবরোধ করা ব্যারিকেড পুলিশ টেনে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে এবং তারা সেটা নিয়ে যায়। আমাদের কর্মসূচি বন্ধ করতে বলে তখন আমরা এগিয়ে গেলে বাগবিতণ্ডা হয়। উপস্থিত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা শুধু আমাদের ব্যারিকেড সরিয়ে নিয়েছি। তাদের ওপর কোনো লাঠিচার্জ বা তাদের কর্মসূচি বন্ধ করতে কোনো চাপ দেয়া হয়নি। ব্যারিকেড সরিয়ে নেয়ার কারণে মূলত তারা বাগবিতণ্ডা শুরু করে।
অবরোধে, বৃষ্টিতে এমন দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে বৃহস্পতিবার সারাদিন রাজধানীর শাহবাগে -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন এবং তা স্থায়ী বিধানে যুক্ত করার দাবিতে রাজধানীতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন জুলাই যোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার, (৩১ জুলাই ২০২৫) সকাল সাড়ে ১০টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করে তারা। এর আগে তারা জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন। এতে শাহবাগ মোড় ও এর আশপাশের সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় তীব্র যানজটের। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবী, সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা। দিনভর ব্যারিকেড দিয়ে সড়ক বন্ধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা।
পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে চাইলে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ওই সড়ক ধরে গন্তব্যে যেতে গিয়ে শাহবাগ মোড়ে আটকা পড়েন অসংখ্য পথচারী ও মোটরবাইকসহ অন্য যানবাহন চালকরা। ব্যারিকেড সরিয়ে এক পাশ দিয়ে যেতে দেয়ার অনুরোধ করলেও শুনেনি আন্দোলনকারীরা। এ নিয়ে পথচারীদের সঙ্গে কয়েক দফায় বাগবিতণ্ডায় জড়ায় তারা। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহতরা। অবরোধ ঘিরে শাহবাগ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে অবরোধ শুরু করেন তারা। এ সময় তারা, ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘জুলাই সনদ নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘রক্ত লাগলে রক্ত নে, জুলাই সনদ দিয়ে দে’সহ নানান স্লোগান দেন। দাবি না মানা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলতেই থাকবে বলে জানান মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা সৌরভ। তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেছি, কিন্তু রাষ্ট্র বারবার আমাদের সঙ্গে টালবাহানা করেছে। এখন আমাদের কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়েও কাজ হবে না, সমস্ত প্রতিশ্রুতির বাইরে গিয়ে আমাদের জুলাই সনদ আর ঘোষণাপত্র দিতে হবে। না হলে আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
নাজির আহমেদ খান নামে আহত এক আন্দোলনকারী বলেন, উপদেষ্টাম-লীকে বলে দিতে চাই, আমরা রক্ত দিয়েছি। আমরা আর রক্ত দিতে ভয় পাই না। যারা স্বৈরাচার হটাতে জীবন দিয়েছেন তারা জাতির সূর্যসন্তান। আমাদের মৃত্যুর ভয় দেখাবেন না। গুম, হত্যার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। সতেরোটা বছর সব রাজনৈতিক দল ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এই জাতির সূর্যসন্তানরা যখন রাস্তায় নেমে এসেছে তখন হাসিনা এক মাসের মাথায় পালাতে বাধ্য হয়েছে।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় ও এর আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাদের সরানো যাচ্ছে না।
দিনভর সড়কটি ব্যারিকেড দিয়ে রাখে আন্দোলনকারীরা। এতে বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, মৎস্য ভবন, পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সব ধরনের পাবলিক যানবাহন বাংলামোটর থেকে ঘুরিয়ে মগবাজার দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছায়। আবার সদরঘাট থেকে আসা যানবাহন শাহবাগ দিয়ে যেতে না পেরে অন্য রুট দিয়ে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। দুপুরের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে একে একে শাহবাগ মোড়ে এসে আটকা পড়েন বাইকাররা। তারা আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করেন, যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার। সামান্য একটু জায়গা দিলে তারা যেতে পারবেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তা মানতে নারাজ। এ সময় একাধিক মোটরসাইকেল চালক, পথচারী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
সুমন নামের একজন বাইকচালক বলেন, তিনি মৎস্য ভবন, পল্টন হয়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখান দিয়ে তীব্র যানজটে বেশি এগোতে পারছিলেন না। তাই শিক্ষাভবন-দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি হয়ে শাহবাগ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এখানে এসে আরও বেশি আটকা পড়েছেন। টোটালি কোনোদিক যাওয়া যাচ্ছে না। সামান্য একটু ব্যারিকেড সরিয়ে নিলে আমরা বাইকাররা যেতে পারতাম। এমনটি বলার পরও তারা কথা শুনছেন না। উল্টো আমাদের বিভিন্ন দলের কর্মী বলে আখ্যা দিচ্ছে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অবস্থানরত আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে চাইলে এই ধাক্কাধাক্কি ও বাগবিতণ্ডা তৈরি হয়। চট্টগ্রাম থেকে আসা মো. মিজান নামে একজন আন্দোলনকারী বলেন, আমাদের অবরোধ করা ব্যারিকেড পুলিশ টেনে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে এবং তারা সেটা নিয়ে যায়। আমাদের কর্মসূচি বন্ধ করতে বলে তখন আমরা এগিয়ে গেলে বাগবিতণ্ডা হয়। উপস্থিত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা শুধু আমাদের ব্যারিকেড সরিয়ে নিয়েছি। তাদের ওপর কোনো লাঠিচার্জ বা তাদের কর্মসূচি বন্ধ করতে কোনো চাপ দেয়া হয়নি। ব্যারিকেড সরিয়ে নেয়ার কারণে মূলত তারা বাগবিতণ্ডা শুরু করে।