বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর বাসা থেকে একটি নতুন মোটরসাইকেল উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে উদ্ধার মোটরসাইকেলটি গত ১৭ জুলাই কেনা হয়েছিল, যেদিন ওই এমপির বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেয়া হয়।
মোটরসাইকেলটি সেই চাঁদার টাকায় কেনা কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর গুলশান-২ নম্বরে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা নিতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত পাঁচজন। গতকাল শুক্রবার ঢাকার গোপীবাগ এলাকা থেকে সর্বশেষ জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ৫ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হলেও অপু পালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
অপুকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসা থেকে মোটরসাইলে উদ্ধারের তথ্য দিয়ে শনিবার,(২ আগস্ট ২০২৫) সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘মোটরসাইকেলটি গত ১৭ জুলাই নতুন কেনা হয়েছে। সেটি কেনার অর্থের উৎস আমরা খতিয়ে দেখছি।’ গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে নারী এমপির বাসায় চাঁদা দাবির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন তালেবুর রহমান।
সেদিন ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত গত ১৭ জুলাই। সকাল আনুমানিক ১০টার সময় জানে আলম অপু ও রিয়াদ নামে দুজন ওই বাসায় প্রথম যান। গিয়ে তারা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং সেদিনই তারা ১০ লাখ টাকা নগদ নিয়ে আসেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। ‘পরে গত ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় ওই বাসায় গিয়ে বাকি ৪০ লাখ টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। গত ২৬ জুলাই আরও লোকজন বাড়িয়ে সেখানে যান এবং বাকি টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।’
তখন পুলিশকে খবর দেয়া হলে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে ‘হাতেনাতে’ গ্রেপ্তার করা হয় এবং একজন পালিয়ে যান। সেই পলাতক জানে আলম অপুকে ঢাকার গোপীবাগ এলাকা থেকে গত শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ঘটনার দিন গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক রিয়াদের বাবু বাজারের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক এবং পরে বাড্ডার আরেকটি বাসা থেকে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করার কথাও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
গ্রেপ্তার বাকি চারজন হলেন সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। এ ঘটনার পর ‘সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকা-ে জড়িত থাকার’ অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। পাশপাশি কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারাদেশের সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
রিয়াদের ওপর দোষ
চাপালেন অপু
চাঁদাবাজির মামলার রিমান্ড শুনানিতে অপু আদালতকে বলেছেন, ‘রিয়াদ বাদে আমরা বাকিরা সবাই নির্দোষ। রিয়াদের ডাকে গিয়ে ফেঁসে গেছি।’ শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম নাজমিন আক্তারের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে একথা বলে তিনি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তার আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন বিকেল ৩টার দিকে সাদা প্রাইভেটকারে করে অপুকে আদালতে আনা হয়। তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর ৩টা ২৮ মিনিটের দিকে এজলাসে তোলা হয় তাকে।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘আসামিরা সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ দলের সদস্য। তারা দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে এ মামলার বাদীসহ বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদা নেয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাদের এ রকম কার্যকলাপ প্রচারিত হচ্ছে। এছাড়া ভুক্তভোগী আরও কিছু মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করেছে মর্মে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ আছে বলে জানা যায়।
রিয়াদকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে বাড্ডা থানার ওসি বলেন, সাবেক সংস সদস্যের বাসা থেকে তারা যে ১০ লাখ টাকা ‘চাঁদা নিয়েছিল’ তার মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগে পেয়েছিল রিয়াদ। এ কাজে তার মূল অংশীদার কাজী গৌরব অপুসহ অন্যরা বাকি টাকা নেয়। ওসির ভাষ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রিয়াদ ও অপু মিলে একটি ‘গ্রুপ’ করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতো। তারা জমি দখলের পাশাপাশি ‘মব সন্ত্রাসের’ ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করত। এটাই তাদের ‘পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল’।
শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর বাসা থেকে একটি নতুন মোটরসাইকেল উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে উদ্ধার মোটরসাইকেলটি গত ১৭ জুলাই কেনা হয়েছিল, যেদিন ওই এমপির বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেয়া হয়।
মোটরসাইকেলটি সেই চাঁদার টাকায় কেনা কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যার পর গুলশান-২ নম্বরে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা নিতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত পাঁচজন। গতকাল শুক্রবার ঢাকার গোপীবাগ এলাকা থেকে সর্বশেষ জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ৫ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হলেও অপু পালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
অপুকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসা থেকে মোটরসাইলে উদ্ধারের তথ্য দিয়ে শনিবার,(২ আগস্ট ২০২৫) সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘মোটরসাইকেলটি গত ১৭ জুলাই নতুন কেনা হয়েছে। সেটি কেনার অর্থের উৎস আমরা খতিয়ে দেখছি।’ গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে নারী এমপির বাসায় চাঁদা দাবির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন তালেবুর রহমান।
সেদিন ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত গত ১৭ জুলাই। সকাল আনুমানিক ১০টার সময় জানে আলম অপু ও রিয়াদ নামে দুজন ওই বাসায় প্রথম যান। গিয়ে তারা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং সেদিনই তারা ১০ লাখ টাকা নগদ নিয়ে আসেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। ‘পরে গত ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় ওই বাসায় গিয়ে বাকি ৪০ লাখ টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। গত ২৬ জুলাই আরও লোকজন বাড়িয়ে সেখানে যান এবং বাকি টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।’
তখন পুলিশকে খবর দেয়া হলে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে ‘হাতেনাতে’ গ্রেপ্তার করা হয় এবং একজন পালিয়ে যান। সেই পলাতক জানে আলম অপুকে ঢাকার গোপীবাগ এলাকা থেকে গত শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ঘটনার দিন গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক রিয়াদের বাবু বাজারের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক এবং পরে বাড্ডার আরেকটি বাসা থেকে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করার কথাও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
গ্রেপ্তার বাকি চারজন হলেন সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। এ ঘটনার পর ‘সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকা-ে জড়িত থাকার’ অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। পাশপাশি কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারাদেশের সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
রিয়াদের ওপর দোষ
চাপালেন অপু
চাঁদাবাজির মামলার রিমান্ড শুনানিতে অপু আদালতকে বলেছেন, ‘রিয়াদ বাদে আমরা বাকিরা সবাই নির্দোষ। রিয়াদের ডাকে গিয়ে ফেঁসে গেছি।’ শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম নাজমিন আক্তারের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে একথা বলে তিনি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তার আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন বিকেল ৩টার দিকে সাদা প্রাইভেটকারে করে অপুকে আদালতে আনা হয়। তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর ৩টা ২৮ মিনিটের দিকে এজলাসে তোলা হয় তাকে।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘আসামিরা সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ দলের সদস্য। তারা দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে এ মামলার বাদীসহ বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদা নেয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাদের এ রকম কার্যকলাপ প্রচারিত হচ্ছে। এছাড়া ভুক্তভোগী আরও কিছু মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করেছে মর্মে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ আছে বলে জানা যায়।
রিয়াদকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে বাড্ডা থানার ওসি বলেন, সাবেক সংস সদস্যের বাসা থেকে তারা যে ১০ লাখ টাকা ‘চাঁদা নিয়েছিল’ তার মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগে পেয়েছিল রিয়াদ। এ কাজে তার মূল অংশীদার কাজী গৌরব অপুসহ অন্যরা বাকি টাকা নেয়। ওসির ভাষ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রিয়াদ ও অপু মিলে একটি ‘গ্রুপ’ করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতো। তারা জমি দখলের পাশাপাশি ‘মব সন্ত্রাসের’ ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করত। এটাই তাদের ‘পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল’।