তিন বছর আগে সুন্দরবন মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়: ফায়ার সার্ভিস
শনিবার গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কায়ার মার্কেটের আগুন নেভাচ্ছে দমকলবাহিনী -সংবাদ
রাজধানীর গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের নিচতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত মোবাইল এক্সেসরিজের গোডাউন। শনিবার,(২ আগস্ট ২০২৫) সকাল ৯টায় গোডাউন মাত্র খোলা শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। এর এক ঘণ্টা পরই আগুন লাগে। আগুনের খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। সকাল ১০টার দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ভবনের পাঁচতলায় জজ মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর দুটি গোডাউন পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। গোডাউন দুটিতে মোবাইল এক্সেসরিজের প্রায় এক কোটি টাকার মালামাল ছিল বলে দাবি জজ মিয়ার।
বেলা ১২টা ৪৭ মিনিটে আগুন লাগা ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন জজ মিয়া। আগুনে দুটি গোডাউন পুড়ে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। দুইজন ধরে তাকে ভবনের নিচে নামিয়ে আনেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার গোডাউনে ছিল সব আইফোনের মালামাল। এক কোটি টাকার ওপরে মালামাল ছিল। সব শেষ।
শাহ পরান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, পঞ্চম তলায় পশ্চিম পাশে একটি গোডাউন আছে আমার। এর পাশেই জজ মিয়ার দুটি গোডাউন। জজ মিয়ার গোডাউন দুটি পুড়ে গেছে। গোডাউন দুটিতে প্রায় কোটি টাকার মালামাল ছিল। আব্দুল মান্নান নামের আরেক ব্যবসায়ীর বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে মার্কেটে ছুটে আসি। চতুর্থ তলায় আমার তিনটি গোডাউন রয়েছে। তবে আমার গোডাউন পর্যন্ত আগুন পৌঁছাতে পারেনি।
ফায়ার সার্ভিসের প্রশংসা করে এ ব্যবসায়ী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তড়িৎ ভূমিকার কারণে আগুন অন্য গোডাউনে ছড়াতে পারেনি। নাহলে আগুন পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে পড়লে আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো। মার্কেটের পঞ্চম তলায় ভিশন এক্সেসরিজ নামের এক গোডাউনে কাজ করেন জীবন কুমার। তিনি বলেন, দোকান (গোডাউন) খুলে জিনিসপত্র পরিষ্কার করছিলাম। এমন সময় চারদিকে দেখি ধোঁয়া। ভয়ে গোডাউন বন্ধ করে নিচে নেমে আসি।
ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) তালহা বিন জসিম বলেন, সকাল ১০টায় গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের ৫ম তলায় আগুন লাগার খবর আসে। এরপর ১০টা ৩ মিনিটে প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে আরও ১১ ইউনিট সেখানে যোগ দেয়। ১২ ইউনিটের চেষ্টায় বেলা ১১টা ১২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিন বছর আগে সুন্দরবন মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়
গুলিস্থানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের আগুন বিপজ্জনক ছিল। এছাড়া দুই-তিন বছর আগে মার্কেটটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল ফায়ার সার্ভিস। মার্কেটের ভেতরে ছিল না কোনো ধরনের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা। শনিবার আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) কাজী নজমুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভবনের নিচ তলা ও চার তলাসহ ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে অনেক লোকজন ছিল। এসব লোকজনকে বার বার বলার পরেও বের হতে চাচ্ছিলেন না তারা। পরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সেনাবাহিনী এসব লোকজনকে ভবন থেকে বের করার চেষ্টা করে। ভবনে থাকা মানুষদের কারণে কাজ ব্যহত হচ্ছিল। আমরা যদি সঠিক সময়ে আমাদের কাজ না করতে পারি তাহলে আগুন নেভানো সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় বিপজ্জনক এই অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণ করতে পেরেছি। অগ্নিকাণ্ডটা বিপজ্জনক ছিল।
আগুনে কী পরিমাণ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটা কি জানা গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী নজমুজ্জামান বলেন, আমরা দুইটা দোকানের শাটার খুলে আগুন পেয়েছি। তবে কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখন পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে এটা জানা যাবে। আগুনের সূত্রপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। এছাড়া ভবনে কোনো ধরনের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। এই ভবনটাকে তিন বছর আগেই ফায়ার সার্ভিস ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে ঘোষণা করেছিল। ভবনের বৈদ্যুতিক সংযোগের তারগুলো এলোমেলো অবস্থায় ছিল। এলোমেলো তারের কারণে আগুনটা একদিক থেকে অন্য দিকে চলে যায়। প্রচন্ড ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়, এতে করে আগুন নেভাতে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। হতাহতের কোনো ঘটনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো হতাহতের ঘটনা নেই।
তিন বছর আগে সুন্দরবন মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়: ফায়ার সার্ভিস
শনিবার গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কায়ার মার্কেটের আগুন নেভাচ্ছে দমকলবাহিনী -সংবাদ
শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
রাজধানীর গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের নিচতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত মোবাইল এক্সেসরিজের গোডাউন। শনিবার,(২ আগস্ট ২০২৫) সকাল ৯টায় গোডাউন মাত্র খোলা শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। এর এক ঘণ্টা পরই আগুন লাগে। আগুনের খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। সকাল ১০টার দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ভবনের পাঁচতলায় জজ মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর দুটি গোডাউন পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। গোডাউন দুটিতে মোবাইল এক্সেসরিজের প্রায় এক কোটি টাকার মালামাল ছিল বলে দাবি জজ মিয়ার।
বেলা ১২টা ৪৭ মিনিটে আগুন লাগা ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন জজ মিয়া। আগুনে দুটি গোডাউন পুড়ে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। দুইজন ধরে তাকে ভবনের নিচে নামিয়ে আনেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার গোডাউনে ছিল সব আইফোনের মালামাল। এক কোটি টাকার ওপরে মালামাল ছিল। সব শেষ।
শাহ পরান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, পঞ্চম তলায় পশ্চিম পাশে একটি গোডাউন আছে আমার। এর পাশেই জজ মিয়ার দুটি গোডাউন। জজ মিয়ার গোডাউন দুটি পুড়ে গেছে। গোডাউন দুটিতে প্রায় কোটি টাকার মালামাল ছিল। আব্দুল মান্নান নামের আরেক ব্যবসায়ীর বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে মার্কেটে ছুটে আসি। চতুর্থ তলায় আমার তিনটি গোডাউন রয়েছে। তবে আমার গোডাউন পর্যন্ত আগুন পৌঁছাতে পারেনি।
ফায়ার সার্ভিসের প্রশংসা করে এ ব্যবসায়ী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তড়িৎ ভূমিকার কারণে আগুন অন্য গোডাউনে ছড়াতে পারেনি। নাহলে আগুন পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে পড়লে আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো। মার্কেটের পঞ্চম তলায় ভিশন এক্সেসরিজ নামের এক গোডাউনে কাজ করেন জীবন কুমার। তিনি বলেন, দোকান (গোডাউন) খুলে জিনিসপত্র পরিষ্কার করছিলাম। এমন সময় চারদিকে দেখি ধোঁয়া। ভয়ে গোডাউন বন্ধ করে নিচে নেমে আসি।
ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) তালহা বিন জসিম বলেন, সকাল ১০টায় গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের ৫ম তলায় আগুন লাগার খবর আসে। এরপর ১০টা ৩ মিনিটে প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে আরও ১১ ইউনিট সেখানে যোগ দেয়। ১২ ইউনিটের চেষ্টায় বেলা ১১টা ১২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিন বছর আগে সুন্দরবন মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়
গুলিস্থানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের আগুন বিপজ্জনক ছিল। এছাড়া দুই-তিন বছর আগে মার্কেটটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল ফায়ার সার্ভিস। মার্কেটের ভেতরে ছিল না কোনো ধরনের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা। শনিবার আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) কাজী নজমুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভবনের নিচ তলা ও চার তলাসহ ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে অনেক লোকজন ছিল। এসব লোকজনকে বার বার বলার পরেও বের হতে চাচ্ছিলেন না তারা। পরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সেনাবাহিনী এসব লোকজনকে ভবন থেকে বের করার চেষ্টা করে। ভবনে থাকা মানুষদের কারণে কাজ ব্যহত হচ্ছিল। আমরা যদি সঠিক সময়ে আমাদের কাজ না করতে পারি তাহলে আগুন নেভানো সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় বিপজ্জনক এই অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণ করতে পেরেছি। অগ্নিকাণ্ডটা বিপজ্জনক ছিল।
আগুনে কী পরিমাণ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটা কি জানা গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী নজমুজ্জামান বলেন, আমরা দুইটা দোকানের শাটার খুলে আগুন পেয়েছি। তবে কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখন পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। তদন্ত সাপেক্ষে এটা জানা যাবে। আগুনের সূত্রপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ভবনের ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। এছাড়া ভবনে কোনো ধরনের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। এই ভবনটাকে তিন বছর আগেই ফায়ার সার্ভিস ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে ঘোষণা করেছিল। ভবনের বৈদ্যুতিক সংযোগের তারগুলো এলোমেলো অবস্থায় ছিল। এলোমেলো তারের কারণে আগুনটা একদিক থেকে অন্য দিকে চলে যায়। প্রচন্ড ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়, এতে করে আগুন নেভাতে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। হতাহতের কোনো ঘটনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো হতাহতের ঘটনা নেই।