রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের মধ্য দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের ২৪ দফা সংবলিত ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করেছে। সমাবেশটি দলের দেশব্যাপী ‘জুলাই পদযাত্রা’র আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি এবং আওয়ামী লীগ সরকার পতনের একদফা ঘোষণার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। দলটির পক্ষ থেকে দেশ পরিচালনার নীতি, পররাষ্ট্রনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, প্রবাসী নীতি, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামো তৈরির রূপরেখাসহ ২৪ দফা ইশতেহার তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে নাগরিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়।
আমরা এমন একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাই, যেখানে রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী সবাই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন: আখতার হোসেন
আমরা মুজিববাদী
সংবিধান আর চাই না: সারজিস আলম
রোববার,(০৩ আগস্ট ২০২৫) নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর সমাবেশের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের আসতে দেখা গেছে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের হাতে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা, বিভিন্ন ধরনের ব্যানার ফেস্টুন দেখা যায়। তারা দলীয় ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জনপ্রিয় স্লোগান দিতে থাকেন। সমাবেশে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের এই দিনে এই স্থান থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করা হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারির নেতারা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে রাজনৈতিক দল গঠন করে। দলটি এক বছর পর একই স্থান থেকেই তাদের ২৪ দফা রাজনৈতিক ইশতেহার ঘোষণা করেছে। তবে এক বছর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশে যে পরিমাণ জনসমাগম হয়েছিল, রোববারের দলীয় সমাবেশে তেমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সমাবেশস্থল ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।
দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্য নেতৃবৃন্দকে ৫টার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সমাবেশস্থলে দেখা যায়নি। ৫টার পরে মাইকে ঘোষণা
দেয়া হয় নাহিদ ইসলাম এসেছেন। এ সময় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দিন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ প্রমুখদের দেখা যায়। এরপর বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে শহীদ পরিবারের সদস্যের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দলটির সমাবেশ শুরু হয়। এরপর দলটির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ও শীর্ষ নেতারা একে একে বক্তব্য দেন।
জুলাই বিপ্লবে প্রাণ হারানো শহীদ ইমাম হাসান তায়েবের ভাই রবিউল আউয়াল তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মতো অনেক ভাই জীবন দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছে। আমার ভাই জীবনের বিনিময়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আজকের এই সমাবেশ। আমি চাই এভাবে আর কোনো ভাই তার আদরের টুকরা ভাইকে না হারাক, কোনো মায়ের বুক খালি না হোক, বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে মাথা তুলে দাঁড়াক।’
দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘গত বছর এখানে যে সমাবেশ হয়েছিল, তা সাধারণ কোনো সমাবেশ ছিল না। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সরকার পতনের একদফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছিল সেই সমাবেশ থেকে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাই যেখানে রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে জনগনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন।’ নতুন প্রজন্ম জীবন দিয়ে হলেও যে কোনো বৈষম্যের প্রতিবাদ করবে বলে আশা তার।
দলটির উত্তরাঞ্চলের আহ্বায়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মুজিববাদী সংবিধান আর চাই না। আমরা নতুন সংবিধান চাইতে আজ এখানে এসেছি। আমরা খুনি হাসিনার বিচার চাইতে আজ এখানে এসেছি। আমরা এই দেশে আর জঙ্গী নাটক হতে দিব না।।’
জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত এক বছরে ‘বাংলাদেশ যে পথে যাওয়ার কথা’ সেদিকে যায়নি বলে এর ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জুলাই পদযাত্রায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় বলেছি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে, কিন্তু ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্তের বিলোপ আমরা ঘটাতে পারিনি।’
ইশতেহার ঘোষণার পূর্বে নাহিদ আরও বলেন, ‘গত বছর এই দিনে এই শহীদ মিনার থেকে আমরা ঘোষণা করেছিলাম ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থা বিলোপের সেই ঐতিহাসিক এক দফা। ঐতিহাসিক এক দফা কোনো ব্যক্তি, দলের বা কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়নি। এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে। এক দফার প্রকৃত ঘোষক বাংলাদেশের জনগণ বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা এবং শহীদ ভাই-বোনেরা।’
তিনি সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই শহীদ মিনারেই আমরা শপথ নিয়েছিলাম এই দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করবো। আপনারা সেই আহ্বানে সাড়া দেয়ায় আমরা সবাই মিলে ফ্যাসিবাদী শাসনকে পরাজিত করেছি এবং দেশের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে নিয়েছি। আজ আবারও এই শহীদ মিনার থেকে আমরা আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক গঠনে ঐতিহাসিক ২৪ দফাকে বাস্তবে রূপান্তর করে সব নাগরিকের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ি।’
এরপর তিনি ২৪ দফা ইশতেহার পাঠ করেন। ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে, ১। নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক, ২। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার, ৩। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, ৪। ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার, ৫। সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন, ৬। জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ৭। গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার, ৮। স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ, ৯। সার্বজনীন স্বাস্থ্য, ১০। জাতি গঠনে শিক্ষানীতি, ১১। গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব, ১২। ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্তার মর্যাদা, ১৩। নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন, ১৪। মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি, ১৫। তারুণ্য ও কর্মসংস্থান, ১৬। বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি, ১৭। টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব, ১৮। শ্রমিক-কৃষকের অধিকার, ১৯। জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ২০। নগরায়ণ, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা, ২১। জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা, ২২। প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার, ২৩। বাংলাদেশপন্থি পররাষ্ট্রনীতি ও ২৪। জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।
রোববার, ০৩ আগস্ট ২০২৫
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের মধ্য দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের ২৪ দফা সংবলিত ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করেছে। সমাবেশটি দলের দেশব্যাপী ‘জুলাই পদযাত্রা’র আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি এবং আওয়ামী লীগ সরকার পতনের একদফা ঘোষণার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। দলটির পক্ষ থেকে দেশ পরিচালনার নীতি, পররাষ্ট্রনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, প্রবাসী নীতি, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামো তৈরির রূপরেখাসহ ২৪ দফা ইশতেহার তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে নাগরিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়।
আমরা এমন একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাই, যেখানে রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী সবাই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন: আখতার হোসেন
আমরা মুজিববাদী
সংবিধান আর চাই না: সারজিস আলম
রোববার,(০৩ আগস্ট ২০২৫) নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর সমাবেশের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের আসতে দেখা গেছে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের হাতে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা, বিভিন্ন ধরনের ব্যানার ফেস্টুন দেখা যায়। তারা দলীয় ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জনপ্রিয় স্লোগান দিতে থাকেন। সমাবেশে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের এই দিনে এই স্থান থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করা হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারির নেতারা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে রাজনৈতিক দল গঠন করে। দলটি এক বছর পর একই স্থান থেকেই তাদের ২৪ দফা রাজনৈতিক ইশতেহার ঘোষণা করেছে। তবে এক বছর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশে যে পরিমাণ জনসমাগম হয়েছিল, রোববারের দলীয় সমাবেশে তেমনটা লক্ষ্য করা যায়নি। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সমাবেশস্থল ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।
দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্য নেতৃবৃন্দকে ৫টার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সমাবেশস্থলে দেখা যায়নি। ৫টার পরে মাইকে ঘোষণা
দেয়া হয় নাহিদ ইসলাম এসেছেন। এ সময় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দিন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ প্রমুখদের দেখা যায়। এরপর বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে শহীদ পরিবারের সদস্যের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দলটির সমাবেশ শুরু হয়। এরপর দলটির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ও শীর্ষ নেতারা একে একে বক্তব্য দেন।
জুলাই বিপ্লবে প্রাণ হারানো শহীদ ইমাম হাসান তায়েবের ভাই রবিউল আউয়াল তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মতো অনেক ভাই জীবন দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছে। আমার ভাই জীবনের বিনিময়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আজকের এই সমাবেশ। আমি চাই এভাবে আর কোনো ভাই তার আদরের টুকরা ভাইকে না হারাক, কোনো মায়ের বুক খালি না হোক, বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে মাথা তুলে দাঁড়াক।’
দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘গত বছর এখানে যে সমাবেশ হয়েছিল, তা সাধারণ কোনো সমাবেশ ছিল না। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সরকার পতনের একদফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছিল সেই সমাবেশ থেকে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাই যেখানে রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে জনগনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন।’ নতুন প্রজন্ম জীবন দিয়ে হলেও যে কোনো বৈষম্যের প্রতিবাদ করবে বলে আশা তার।
দলটির উত্তরাঞ্চলের আহ্বায়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মুজিববাদী সংবিধান আর চাই না। আমরা নতুন সংবিধান চাইতে আজ এখানে এসেছি। আমরা খুনি হাসিনার বিচার চাইতে আজ এখানে এসেছি। আমরা এই দেশে আর জঙ্গী নাটক হতে দিব না।।’
জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত এক বছরে ‘বাংলাদেশ যে পথে যাওয়ার কথা’ সেদিকে যায়নি বলে এর ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জুলাই পদযাত্রায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় বলেছি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে, কিন্তু ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্তের বিলোপ আমরা ঘটাতে পারিনি।’
ইশতেহার ঘোষণার পূর্বে নাহিদ আরও বলেন, ‘গত বছর এই দিনে এই শহীদ মিনার থেকে আমরা ঘোষণা করেছিলাম ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থা বিলোপের সেই ঐতিহাসিক এক দফা। ঐতিহাসিক এক দফা কোনো ব্যক্তি, দলের বা কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়নি। এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে। এক দফার প্রকৃত ঘোষক বাংলাদেশের জনগণ বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা এবং শহীদ ভাই-বোনেরা।’
তিনি সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই শহীদ মিনারেই আমরা শপথ নিয়েছিলাম এই দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করবো। আপনারা সেই আহ্বানে সাড়া দেয়ায় আমরা সবাই মিলে ফ্যাসিবাদী শাসনকে পরাজিত করেছি এবং দেশের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে নিয়েছি। আজ আবারও এই শহীদ মিনার থেকে আমরা আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক গঠনে ঐতিহাসিক ২৪ দফাকে বাস্তবে রূপান্তর করে সব নাগরিকের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ি।’
এরপর তিনি ২৪ দফা ইশতেহার পাঠ করেন। ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে, ১। নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক, ২। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার, ৩। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, ৪। ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার, ৫। সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন, ৬। জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ৭। গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার, ৮। স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ, ৯। সার্বজনীন স্বাস্থ্য, ১০। জাতি গঠনে শিক্ষানীতি, ১১। গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব, ১২। ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্তার মর্যাদা, ১৩। নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন, ১৪। মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি, ১৫। তারুণ্য ও কর্মসংস্থান, ১৬। বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি, ১৭। টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব, ১৮। শ্রমিক-কৃষকের অধিকার, ১৯। জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ২০। নগরায়ণ, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা, ২১। জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা, ২২। প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার, ২৩। বাংলাদেশপন্থি পররাষ্ট্রনীতি ও ২৪। জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।