কথামালার রাজনীতি নয় বরং মানুষের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতির প্রত্যাশা তারেক রহমানের
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতি ৯ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংগঠনটি। ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলে প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত, শিক্ষাঙ্গনে গেস্টরুম নির্যাতন, গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা, সব ধরনের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ছাত্রদল সক্রিয় ভূমিকা সংবলিত এসব প্রতিশ্রুতি পাঠ করেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘পরিণত বাংলাদেশে জনগণ আর বিভেদ, বিরোধ, প্রতিহিংসা ও প্রতিরোধের রাজনীতি চায় না তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জনগণ চায় রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন। সুতরাং আসো কথামালার রাজনীতি নয় বরং আমরা শুরু করি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি।’
রোববার,(০৩ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ছাত্রদলের ‘ছাত্র সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি তরুণ ভোটারদের কাছে ধানের শীষের জন্য ভোট চান।
তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘তারুণ্যের প্রথম ভোট, ধানের শীষের জন্য হোক। দেশের ১৩ কোটি ভোটারের মধ্যে গত দেড় দশকে প্রায় ৪ কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে। তোমরা ভোটার হলেও ফ্যাসিবাদ চক্র তোমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তোমাদের হারানো ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিরাট সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বিএনপির গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য, পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলের গত দেড় দশকের ভোটপ্রয়োগের অধিকারবঞ্চিত ৩ কোটি ভোটারসহ সবার সমর্থন ও সহযোগিতা চাই।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আগামীদিনের নীতি, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধে উচ্চকিত মানবিক মানুষ করার রাজনীতি শুরু করতে চায়। বিএনপির আগামীদিনের নীতি কর্মসংস্থান সৃষ্টি আর নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার রাজনীতি। আজকের এই জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করার রাজনীতি; মানবিক মূল্যবোধ উজ্জীবিত কর্মমুখী শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের রাজনীতি। ’
তারেক রহমান বলেন, ‘তারুণ্যের শক্তি এবং নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে একটি রাষ্ট্র কখনোই সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। এই গ্লোবালাইজেশনের সময়ে টেকনোলজির কারণে নারী-পুরুষ সবার সামনে কিন্তু সব সম্ভাবনার দ্বার আজ উন্মুক্ত। আমাদের
এই তারুণ্য আমাদের এই শিক্ষার্থীরা যাতে সব সম্ভাবনাকে সাফল্যে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয় এইজন্য একটি বাস্তবধর্মী সুষ্ঠু নীতি পরিকল্পনা আমরা তৈরি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি স্কুল পর্যায় থেকে ব্যবহারিক এবং কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে আগামীদিনে শিক্ষা কারিকুলাম ঢেলে সাজানোর কাজ করছে। আমাদের দলের থেকে আমাদের দলের ভেতরে যারা এ ব্যাপারে এক্সপার্ট আছেন, সেই একটি বিশেষজ্ঞ টিমের মধ্যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা সেগুলোকে সেভাবে তৈরি করছে। ’
তিনি বলেন, ‘ আমরা মনে করি অ্যাকাডেমিক স্টাডির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যদি স্কুলপর্যায় থেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অর্থাৎ যার যেটি ইন্টারেস্ট এই ক্ষেত্রগুলোতে পলিটিক্যাল নলেজ বা ব্যবহারিক জ্ঞানার্জনের দিকে ব্যবস্থা করে দেয়া যায়। এ ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী যারা থাকবে বা থাকা অবস্থাতেই একজন শিক্ষার্থীর বাস্তব কর্ম অভিজ্ঞতা তৈরি হয় তাহলে একজন শিক্ষার্থীর স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হলে তাকে বেকারত্বের অভিশাপ হয়তো পোহাতে হবে না।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের পাশের দেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাদের লোকজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে বসে তারা দেশের মধ্যে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সেসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নতুন একটা সূর্য উঠেছে। এই সূর্য আলোকিত করবে আমাদের সবাইকে। প্রিয় ছাত্র ভাই ও বোনেরা, আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে নতুন করে বাংলাদেশকে নির্মাণ করার।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের অনেক আনন্দের দিন। আবার একইসঙ্গে কষ্টে দিন। এক বছর আগে একই দিনে আমরা অনেক ছাত্র ভাই-বোনকে হারিয়েছি। শুধু ৩৬ দিন নয়, এর আগেও অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন। এই যে প্রাণ দেয়া, এই যে ত্যাগ এর উদ্দেশ্য একটাই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
এদিকে শাহবাগের ছাত্র সমাবেশ থেকে ৯টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ছাত্রদল। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব প্রতিশ্রুতি পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
প্রতিশ্রুতিগুলো হলো
১. শিক্ষাঙ্গনে গেস্টরুম নির্যাতন, গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের মতো ঘৃণিত চর্চার স্থায়ী বিলোপ। সব ধরনের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকা- প্রতিরোধে ছাত্রদল সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
২. ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলে প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন, পুষ্টিকর খাদ্য, বাসযোগ্য কক্ষ এবং পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
৩. ধর্ম, বর্ণ, জাতিসত্তা, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি জনকল্যাণমুখী, পরমতসহিষ্ণু, উদার এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ছাত্রদলের সব নেতাকর্মী নিবেদিত থাকবে। শিক্ষাক্ষেত্রে এবং রাষ্ট্রগঠনের সব পর্যায়ে নারীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং নারীদের জন্য শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে।
৪. স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষা এবং জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী চিন্তার সন্নিবেশনে রাষ্ট্রকর্তৃক বাংলাদেশপন্থি সর্বজনীন শিক্ষানীতি ও পাঠক্রম প্রণয়নের লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে ছাত্রদল।
৫. বেকারত্ব দূর করতে রাষ্ট্রকর্তৃক কর্মমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে। পাশাপাশি সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ এবং এসব পরীক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্নীতি ও জালিয়াতিমুক্ত করতে ছাত্রদল সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।
৬. মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ছাত্রদল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
৭. ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৬৯, ১৯৭৫-এর ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভাবধারার সাংস্কৃতিক চর্চা বেগবান করার লক্ষ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলবে ছাত্রদল।
৮. শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো ভূমিকা রাখবে।
৯. বাংলাদেশে যেন আর কখনও ঘৃণ্য ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে, সে লক্ষ্যে ছাত্রদল সদা সোচ্চার থাকবে। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা নিশ্চিত করতে ছাত্রদল আপামর ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর কাজ করে যাবে।
কথামালার রাজনীতি নয় বরং মানুষের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতির প্রত্যাশা তারেক রহমানের
রোববার, ০৩ আগস্ট ২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতি ৯ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংগঠনটি। ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলে প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত, শিক্ষাঙ্গনে গেস্টরুম নির্যাতন, গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা, সব ধরনের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ছাত্রদল সক্রিয় ভূমিকা সংবলিত এসব প্রতিশ্রুতি পাঠ করেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘পরিণত বাংলাদেশে জনগণ আর বিভেদ, বিরোধ, প্রতিহিংসা ও প্রতিরোধের রাজনীতি চায় না তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জনগণ চায় রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন। সুতরাং আসো কথামালার রাজনীতি নয় বরং আমরা শুরু করি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি।’
রোববার,(০৩ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ছাত্রদলের ‘ছাত্র সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি তরুণ ভোটারদের কাছে ধানের শীষের জন্য ভোট চান।
তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘তারুণ্যের প্রথম ভোট, ধানের শীষের জন্য হোক। দেশের ১৩ কোটি ভোটারের মধ্যে গত দেড় দশকে প্রায় ৪ কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে। তোমরা ভোটার হলেও ফ্যাসিবাদ চক্র তোমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তোমাদের হারানো ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিরাট সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বিএনপির গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য, পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলের গত দেড় দশকের ভোটপ্রয়োগের অধিকারবঞ্চিত ৩ কোটি ভোটারসহ সবার সমর্থন ও সহযোগিতা চাই।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আগামীদিনের নীতি, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধে উচ্চকিত মানবিক মানুষ করার রাজনীতি শুরু করতে চায়। বিএনপির আগামীদিনের নীতি কর্মসংস্থান সৃষ্টি আর নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার রাজনীতি। আজকের এই জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করার রাজনীতি; মানবিক মূল্যবোধ উজ্জীবিত কর্মমুখী শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের রাজনীতি। ’
তারেক রহমান বলেন, ‘তারুণ্যের শক্তি এবং নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে একটি রাষ্ট্র কখনোই সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। এই গ্লোবালাইজেশনের সময়ে টেকনোলজির কারণে নারী-পুরুষ সবার সামনে কিন্তু সব সম্ভাবনার দ্বার আজ উন্মুক্ত। আমাদের
এই তারুণ্য আমাদের এই শিক্ষার্থীরা যাতে সব সম্ভাবনাকে সাফল্যে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয় এইজন্য একটি বাস্তবধর্মী সুষ্ঠু নীতি পরিকল্পনা আমরা তৈরি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি স্কুল পর্যায় থেকে ব্যবহারিক এবং কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে আগামীদিনে শিক্ষা কারিকুলাম ঢেলে সাজানোর কাজ করছে। আমাদের দলের থেকে আমাদের দলের ভেতরে যারা এ ব্যাপারে এক্সপার্ট আছেন, সেই একটি বিশেষজ্ঞ টিমের মধ্যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা সেগুলোকে সেভাবে তৈরি করছে। ’
তিনি বলেন, ‘ আমরা মনে করি অ্যাকাডেমিক স্টাডির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যদি স্কুলপর্যায় থেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অর্থাৎ যার যেটি ইন্টারেস্ট এই ক্ষেত্রগুলোতে পলিটিক্যাল নলেজ বা ব্যবহারিক জ্ঞানার্জনের দিকে ব্যবস্থা করে দেয়া যায়। এ ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী যারা থাকবে বা থাকা অবস্থাতেই একজন শিক্ষার্থীর বাস্তব কর্ম অভিজ্ঞতা তৈরি হয় তাহলে একজন শিক্ষার্থীর স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হলে তাকে বেকারত্বের অভিশাপ হয়তো পোহাতে হবে না।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের পাশের দেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাদের লোকজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে বসে তারা দেশের মধ্যে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সেসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নতুন একটা সূর্য উঠেছে। এই সূর্য আলোকিত করবে আমাদের সবাইকে। প্রিয় ছাত্র ভাই ও বোনেরা, আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে নতুন করে বাংলাদেশকে নির্মাণ করার।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের অনেক আনন্দের দিন। আবার একইসঙ্গে কষ্টে দিন। এক বছর আগে একই দিনে আমরা অনেক ছাত্র ভাই-বোনকে হারিয়েছি। শুধু ৩৬ দিন নয়, এর আগেও অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন। এই যে প্রাণ দেয়া, এই যে ত্যাগ এর উদ্দেশ্য একটাই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
এদিকে শাহবাগের ছাত্র সমাবেশ থেকে ৯টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ছাত্রদল। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব প্রতিশ্রুতি পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
প্রতিশ্রুতিগুলো হলো
১. শিক্ষাঙ্গনে গেস্টরুম নির্যাতন, গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের মতো ঘৃণিত চর্চার স্থায়ী বিলোপ। সব ধরনের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকা- প্রতিরোধে ছাত্রদল সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
২. ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হলে প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন, পুষ্টিকর খাদ্য, বাসযোগ্য কক্ষ এবং পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
৩. ধর্ম, বর্ণ, জাতিসত্তা, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি জনকল্যাণমুখী, পরমতসহিষ্ণু, উদার এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ছাত্রদলের সব নেতাকর্মী নিবেদিত থাকবে। শিক্ষাক্ষেত্রে এবং রাষ্ট্রগঠনের সব পর্যায়ে নারীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং নারীদের জন্য শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে।
৪. স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষা এবং জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আধিপত্যবাদবিরোধী এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী চিন্তার সন্নিবেশনে রাষ্ট্রকর্তৃক বাংলাদেশপন্থি সর্বজনীন শিক্ষানীতি ও পাঠক্রম প্রণয়নের লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে ছাত্রদল।
৫. বেকারত্ব দূর করতে রাষ্ট্রকর্তৃক কর্মমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে ছাত্রদল জোরালো উদ্যোগ নেবে। পাশাপাশি সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ এবং এসব পরীক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্নীতি ও জালিয়াতিমুক্ত করতে ছাত্রদল সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।
৬. মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ছাত্রদল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
৭. ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৬৯, ১৯৭৫-এর ৭ নভেম্বর, ১৯৯০ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভাবধারার সাংস্কৃতিক চর্চা বেগবান করার লক্ষ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলবে ছাত্রদল।
৮. শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ছাত্রদল জোরালো ভূমিকা রাখবে।
৯. বাংলাদেশে যেন আর কখনও ঘৃণ্য ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে, সে লক্ষ্যে ছাত্রদল সদা সোচ্চার থাকবে। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা নিশ্চিত করতে ছাত্রদল আপামর ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর কাজ করে যাবে।