রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার বর্তমান সম্পাদক শামীমা এ খানসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পত্রিকাটির উপপ্রধান প্রতিবেদক ইস্রাফিল ফরাজি। এ ঘটনায় জনকণ্ঠ ভবনে দখল, প্রতিপক্ষের ‘সম্পাদকীয় বোর্ড’ গঠন এবং দুই দিনের ছাপাখানা বন্ধের ঘোষণা ঘিরে তৈরি হয়েছে চরম উত্তেজনা।
মামলার পাশাপাশি একদল সাংবাদিক ও কর্মচারী জনকণ্ঠের মালিকপক্ষকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে শামীমা খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। তারা ‘সর্বসম্মতিতে’ একটি নতুন সম্পাদকীয় বোর্ড গঠন করে পত্রিকার দায়িত্ব নিজেদের হাতে নিয়েছেন বলে দাবি করেন।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সম্পাদক শামীমা খান আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাত দেখিয়ে পত্রিকার ব্যানারে ‘লাল-কালো’ রং পরিবর্তন করেন। এ নিয়ে সৃষ্ট অসন্তোষের জেরে গত শনিবার রাতে পত্রিকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয় আন্দোলনরত কর্মীরা।
হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১ আগস্ট জনকণ্ঠের ফেইসবুক পেইজে আওয়ামী লীগের শোক দিবসকে সামনে রেখে কালো রঙের ব্যাকগ্রাউন্ডে নিউজ কার্ড প্রকাশ করা হয়, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি সম্পাদক শামীমা খান ও তার ছেলে জিসাল এ খানকে জানানো হলেও তারা ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে’ অবস্থান নেন বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী।
মামলায় আরও বলা হয়, সেদিন রাতে আলোচনা করতে গেলে পত্রিকার অভ্যন্তরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং এক নারী সাংবাদিককে যৌন নিপীড়নের ঘটনাও ঘটে।
সম্পাদক শামীমা এ খান দাবি করেছেন, “এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমার সিদ্ধান্তে কোনো কালো রং ছিল না। যারা আন্দোলন করছে, তারাই ব্যানারে রং পরিবর্তন করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে।”
তিনি বলেন, “এটা স্যাবোটাজ। তারা বাইরের লোক এনে জনকণ্ঠ দখল করেছে। আমি এখন অফিসে ঢুকতেও পারছি না। প্রশাসনের কাছ থেকেও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।”
গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার আফিজুর রহমান এবং এনসিপি নেতা জয়নাল আবেদীন শিশিরকে ‘দখল ও ষড়যন্ত্রের মূল পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে দায়ী করেছেন শামীমা খান। তবে তারা দুইজনই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফিজ বলেন, “হাউজ দখলের প্রশ্নই আসে না। প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার স্বার্থে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”
শিশির বলেন, “দখলের অভিযোগ আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ভাষ্য। আমরা সব সাংবাদিকের সম্মতিতে একটি বোর্ড করেছি।”
সাংবাদিক ও কর্মচারীরা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে রয়েছে:
১. জুলাই বিপ্লবে শহীদদের অবমাননা করে পত্রিকাটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাথে সঙ্গতি রেখে কালো টেমপ্লেট ধারণ করার জন্য জড়িত মালিক পক্ষকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
২. লাল রং ধারণ করে পত্রিকাটি প্রকাশ করার কারণে জুলাই বিপ্লবের পক্ষের চাকুরিচ্যুত সকল সাংবাদিককে চাকুরিতে সসম্মান পুনর্বহাল করতে হবে।
৩. আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রায় ৬ কোটি টাকা বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।
৪. এই প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত তিন শতাধিক ব্যক্তির পাওনা টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে এবং
৫. প্রতিষ্ঠানের যেসব পাওনাদার মালিকপক্ষের অমানবিক আচরণের শিকার, তাদের দায় গ্লোব জনকণ্ঠের মালিককে নিতে হবে এবং সব পাওনা পরিশোধ করতে হবে।
সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার বর্তমান সম্পাদক শামীমা এ খানসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পত্রিকাটির উপপ্রধান প্রতিবেদক ইস্রাফিল ফরাজি। এ ঘটনায় জনকণ্ঠ ভবনে দখল, প্রতিপক্ষের ‘সম্পাদকীয় বোর্ড’ গঠন এবং দুই দিনের ছাপাখানা বন্ধের ঘোষণা ঘিরে তৈরি হয়েছে চরম উত্তেজনা।
মামলার পাশাপাশি একদল সাংবাদিক ও কর্মচারী জনকণ্ঠের মালিকপক্ষকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে শামীমা খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। তারা ‘সর্বসম্মতিতে’ একটি নতুন সম্পাদকীয় বোর্ড গঠন করে পত্রিকার দায়িত্ব নিজেদের হাতে নিয়েছেন বলে দাবি করেন।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সম্পাদক শামীমা খান আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাত দেখিয়ে পত্রিকার ব্যানারে ‘লাল-কালো’ রং পরিবর্তন করেন। এ নিয়ে সৃষ্ট অসন্তোষের জেরে গত শনিবার রাতে পত্রিকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয় আন্দোলনরত কর্মীরা।
হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১ আগস্ট জনকণ্ঠের ফেইসবুক পেইজে আওয়ামী লীগের শোক দিবসকে সামনে রেখে কালো রঙের ব্যাকগ্রাউন্ডে নিউজ কার্ড প্রকাশ করা হয়, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি সম্পাদক শামীমা খান ও তার ছেলে জিসাল এ খানকে জানানো হলেও তারা ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে’ অবস্থান নেন বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী।
মামলায় আরও বলা হয়, সেদিন রাতে আলোচনা করতে গেলে পত্রিকার অভ্যন্তরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং এক নারী সাংবাদিককে যৌন নিপীড়নের ঘটনাও ঘটে।
সম্পাদক শামীমা এ খান দাবি করেছেন, “এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমার সিদ্ধান্তে কোনো কালো রং ছিল না। যারা আন্দোলন করছে, তারাই ব্যানারে রং পরিবর্তন করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে।”
তিনি বলেন, “এটা স্যাবোটাজ। তারা বাইরের লোক এনে জনকণ্ঠ দখল করেছে। আমি এখন অফিসে ঢুকতেও পারছি না। প্রশাসনের কাছ থেকেও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।”
গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার আফিজুর রহমান এবং এনসিপি নেতা জয়নাল আবেদীন শিশিরকে ‘দখল ও ষড়যন্ত্রের মূল পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে দায়ী করেছেন শামীমা খান। তবে তারা দুইজনই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফিজ বলেন, “হাউজ দখলের প্রশ্নই আসে না। প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার স্বার্থে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”
শিশির বলেন, “দখলের অভিযোগ আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ভাষ্য। আমরা সব সাংবাদিকের সম্মতিতে একটি বোর্ড করেছি।”
সাংবাদিক ও কর্মচারীরা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে রয়েছে:
১. জুলাই বিপ্লবে শহীদদের অবমাননা করে পত্রিকাটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাথে সঙ্গতি রেখে কালো টেমপ্লেট ধারণ করার জন্য জড়িত মালিক পক্ষকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
২. লাল রং ধারণ করে পত্রিকাটি প্রকাশ করার কারণে জুলাই বিপ্লবের পক্ষের চাকুরিচ্যুত সকল সাংবাদিককে চাকুরিতে সসম্মান পুনর্বহাল করতে হবে।
৩. আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রায় ৬ কোটি টাকা বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।
৪. এই প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত তিন শতাধিক ব্যক্তির পাওনা টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে এবং
৫. প্রতিষ্ঠানের যেসব পাওনাদার মালিকপক্ষের অমানবিক আচরণের শিকার, তাদের দায় গ্লোব জনকণ্ঠের মালিককে নিতে হবে এবং সব পাওনা পরিশোধ করতে হবে।