চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ‘স্বৈরাচারী অপশাসন’ অবসানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বৈষম্যমূলক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করাই ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য।”
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের সূচনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র হয়ে আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সরকারের জবাব ছিল বলপ্রয়োগ—গুলি, টিয়ারশেল, লাঠিচার্জ। ফেইসবুক এবং পরে ইন্টারনেট বন্ধ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়, যা উল্টো প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
৩৬ দিনের টানা আন্দোলনের পর ৫ অগাস্ট ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভারতে পালিয়ে যান। তিন দিন পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
সরকারি গেজেটে অভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ বলে জানানো হয়েছে। তবে জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে নিহতের সংখ্যা ১,৪০০ জনেরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
৫ অগাস্ট দিনটি ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে উদযাপন করছে বাংলাদেশ। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “আজ ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস। বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে ২০২৪ সালের আজকের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। ঐতিহাসিক এই অর্জনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আমি দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সকল শহীদকে। আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। জুলাই যোদ্ধার ত্যাগ ও অবদানকে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।”
রাষ্ট্রপতির ভাষায়, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, গুম, খুন, অপহরণ, ভোটাধিকার হরণসহ সব ধরনের অত্যাচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম ও আপামর জনতার ক্ষোভের বিস্ফোরণ। একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র একটি ব্যাপক সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এই সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।”
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, “আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করি সকল জুলাই যোদ্ধাকে যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন, হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি।”
তার ভাষায়, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।”
তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে এবং জুলাই ‘গণহত্যা’র বিচারের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সাথে আলোচনা চলমান আছে। শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে। হাজারো শহিদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে।”
সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫
চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ‘স্বৈরাচারী অপশাসন’ অবসানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বৈষম্যমূলক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করাই ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য।”
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের সূচনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র হয়ে আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সরকারের জবাব ছিল বলপ্রয়োগ—গুলি, টিয়ারশেল, লাঠিচার্জ। ফেইসবুক এবং পরে ইন্টারনেট বন্ধ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়, যা উল্টো প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
৩৬ দিনের টানা আন্দোলনের পর ৫ অগাস্ট ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভারতে পালিয়ে যান। তিন দিন পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
সরকারি গেজেটে অভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ বলে জানানো হয়েছে। তবে জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে নিহতের সংখ্যা ১,৪০০ জনেরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
৫ অগাস্ট দিনটি ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে উদযাপন করছে বাংলাদেশ। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “আজ ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস। বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে ২০২৪ সালের আজকের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। ঐতিহাসিক এই অর্জনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আমি দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সকল শহীদকে। আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। জুলাই যোদ্ধার ত্যাগ ও অবদানকে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।”
রাষ্ট্রপতির ভাষায়, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, গুম, খুন, অপহরণ, ভোটাধিকার হরণসহ সব ধরনের অত্যাচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম ও আপামর জনতার ক্ষোভের বিস্ফোরণ। একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র একটি ব্যাপক সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এই সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।”
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, “আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করি সকল জুলাই যোদ্ধাকে যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন, হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি।”
তার ভাষায়, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।”
তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে এবং জুলাই ‘গণহত্যা’র বিচারের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সাথে আলোচনা চলমান আছে। শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে। হাজারো শহিদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে।”