alt

জাতীয়

অভিমত

জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশার ‘বিপরীতে’ হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার

আনু মুহাম্মদ : সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে হয়নি। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি দিয়ে এই গণঅভ্যুত্থান হয়নি। গণঅভ্যুত্থান হয়েছে হাসিনা সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ ও গণজাগরণের কারণে। আর সে গণঅভ্যুত্থানের মানুষ যখন নির্যাতনের শিকার হয়, নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করা হতে থাকে তখন মানুষের মধ্যে কিছু প্রত্যাশাও তৈরি হয়েছে। সে প্রত্যাশা ছিল যে, দেশে এমন একটা পরিবর্তন করতে হবে রাষ্ট্রযন্ত্র তার বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে অত্যাচার-নির্যাতন করবে, যা খুশি করবে সে রকম আর হবে না। এ অবস্থার অবসান ঘটবে। মানুষের মধ্যে আরেকটি প্রত্যাশা ছিল যে, মানুষ যাতে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে, নিজের মতো কাজ করতে পারে। কেউ যাতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি করতে না পারে এগুলো থেকে যাতে দেশের মানুষ মুক্তি পায়, কেউ যাতে এসব অপকর্ম করতে না পারে।

আরেকটি স্বপ্ন মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল যে, বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন একটি দেশ, বাংলাদেশের মানুষ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ পাবে, সবধরনের বৈষম্য থেকে মুক্তি ঘটবে, সমাজ বৈষম্যহীন হবে।

তবে সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা ছিল যে, বাংলাদেশে এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, যেখানে সরকার আর জনগণের প্রতিপক্ষ হবে না। সরকার জনগণের পক্ষ, জনগণের স্বার্থে উদারভাবে কাজ করবে, সরকার জনগণের কথা শুনবে, জনগণের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন সহানুভূতি থাকবে। জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়ার কেউ থাকবে না। এসব নিয়েই মানুষের মধ্যে বড় প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পর আমরা দেখছি, জনগণের এসব প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার জন্য যে ধরনের বড় বড় উদ্যোগ নেয়া দরকার ছিল, বিশেষ করে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগ নেয়া তা কোনোভাবেই প্রত্যাশা পূরণের দিকে যায়নি। বরং প্রত্যাশা বন্ধের অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যেমন, গণঅভ্যুত্থানের যারা অংশীদার ছিল শ্রমজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী, বেকার তারা যখন অভ্যুত্থানের পর তাদের নিজেদের দাবি-দাওয়া জানাতে যাচ্ছে তখন এই সরকার আগের স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই অত্যন্ত নিষ্ঠুর আচরণ করছে। যেমন বকেয়া মজুরির জন্য শ্রমিকরা আন্দোলন করছে, তাদের উপর গুলি করা হয়েছে। শিক্ষকরা তাদের দাবি-দাওয়া জানানো এবং দাবি আদায়ের জন্য প্রেসক্লাবের সামনে ফুটপাতে বা শাহবাগে বসে আছে, স্লোগান দিচ্ছে তাদের কথাই শুনছেই না সরকার। এসব বিষয়, অত্যাচার-নির্যাতন আগের মতোই রয়ে গেছে, কোনো পরিবর্তন হয়নি।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মব সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। মব সন্ত্রাস করা হচ্ছে দেশের নারী অধিকারের বিরুদ্ধে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে, এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যেও যারা মাজার সংস্কৃতি ধারণ করে তাদের মাজার ভাঙা হচ্ছে। মব সন্ত্রাস তৈরি করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ভাঙা হচ্ছে। গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু মানুষের উপর বর্বর আক্রমণ, নির্যাতন, তাদের বাড়িঘর লুটপাট করা হচ্ছে। সংখ্যাগুরু মানুষের নারীদের ওপর অপবাদ দেয়া হচ্ছে, আক্রমণ করা হচ্ছে। মব সন্ত্রাস এভাবে সব মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কিন্তু সরকার তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এগুলো তো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ।

এছাড়াও দেখা যাচ্ছে যে, হাসিনার আমলে যা হতো, টেন্ডার ছাড়া, জনগণকে না জানিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে দেখা গেল, এই সরকার চট্টগ্রাম বন্দরসহ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশ মানার জন্য নানারকম চুক্তি করছে কিন্তু জনগণকে জানানোই হচ্ছে না। জনগণ কিছুই জানে না, শুধু জনগণই নয়, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানও জানে না। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেয়া হচ্ছে, কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ জানে না, বোয়িং বিমান কেনা হচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ জানে না।

এই ঘটনাগুলো আমাদের খুব প্রত্যাশা ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের যেমন প্রত্যাশা ছিল এসব ঘটনায়, সে প্রত্যাশা পূরণে বিরুদ্ধে যায় এগুলো। এমন প্রেক্ষাপটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে আমরা আশা করি, এসব ঘটনার অবসান হবে। আমরা আশা করি, সরকার জনগণের গণঅভ্যুত্থানের ভাষা বুঝতে পারবে, জনগণের প্রত্যাশা বুঝতে পারবে। সরকারের যে দুর্বলতা এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এসব পরিবর্তন করে সরকার একটি পক্ষপাতহীন এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে ধরনের সংস্কার প্রয়োজন সেটা যথাযথভাবে করবে।

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি: টিআইবি

ছবি

ভাইরাস জ্বরের রোগী বাড়ছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৯৫ জন, মৃত্যু ২

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে সাক্ষ্য দিলেন ইমরান

ছবি

জ্বরের চিকিৎসা নিতে গিয়ে চামড়া হলো কয়লা

ছবি

‘আসুন এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না’

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুলিবিদ্ধ এক নারীর করুণ অভিজ্ঞতা

ছবি

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি হবে ‘হাইব্রিড ধরনের’

ছবি

গণতন্ত্রের উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে: বিএনপি

ছবি

যে কোনো সময় জুলাই সনদে স্বাক্ষরে প্রস্তুত বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

মার্কিন শুল্ক: চুক্তিতে ‘ভূ-রাজনৈতিক সমঝোতা’ থাকলে ‘হুমকি’ দেখছে সিপিবি

ছবি

১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা ঘটেছিল

ছবি

নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখতে সেপ্টেম্বরে আসছে ইইউ প্রতিনিধিদল

ছবি

দেশ ছাড়তে মাত্র ৪৫ মিনিট সময় ছিল শেখ হাসিনার

ছবি

টিআইবির প্রতিবেদন: ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার’ পতনের এক বছরেও দলীয়করণের ধারাবাহিকতা সর্বস্তরে

ছবি

বৈষম্যবিরোধীদের বহুল প্রত্যাশিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ মঙ্গলবার, পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

বিদেশে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে গেলে লজ্জা লাগে: আসিফ নজরুল

ছবি

শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়ে ভারত ইতিবাচক উত্তর দেয়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে মানিক মিয়ায় ডাইভারশন, ড্রোন শো ও সাংস্কৃতিক আয়োজন

ছবি

‘জুলাই অভ্যুত্থান’ দিবসে জাতিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

ছবি

জুলাই আন্দোলনে হাফিজের ভূমিকা নিয়ে শফিকুল আলমের সমালোচনা

ছবি

বিশেষ অভিযান চলবে নির্বাচনের আগপর্যন্ত: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ছবি

একই আইনজীবী দিয়ে দুই আসামির বিচার প্রশ্নবিদ্ধ: বার্গম্যানের ফেসবুক পোস্টে উদ্বেগ

ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত: গবেষণা প্রতিবেদন

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে সাক্ষ্য দিলেন আহত শিক্ষার্থী ইমরান

রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার শঙ্কা দেখছে টিআইবি

ছবি

৪৮তম বিশেষ বিসিএস: তৃতীয় ধাপের ভাইভা শুরু ১৭ আগস্ট

ছবি

আরও তিন-চার দিন ঝরবে বৃষ্টি

ছবি

জনকণ্ঠ দখলের অভিযোগ: সম্পাদকসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, পাল্টা বোর্ড গঠন ও ৫ দাবি

ছবি

জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ অনুষ্ঠান: ঢাকায় লোক আনতে সরকারের ৮ জোড়া ট্রেন ভাড়া

ছবি

আগস্টে বন্যার পূর্বাভাস, সঙ্গে মৃদু তাপপ্রবাহ ও বজ্রবৃষ্টি

ছবি

ডেঙ্গু: আরও ৩৪৩ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি

ছবি

নৌ ও বিমানবাহিনী নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধন প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

গুলশানে চাঁদাবাজি: রিয়াদের ‘দোষ স্বীকার’,৪ জন কারাগারে

ছবি

জামায়াতের ‘শৃঙ্খলা-সততা’র প্রশংসায় প্রেস সচিব

ছবি

‘অবৈধভাবে’ গড়ে উঠেছে অসংখ্য মিনি পেট্রোল পাম্প, শঙ্কায় ডিমলাবাসী

ছবি

ফ্লাইট এক্সপার্ট কাণ্ড: গ্রেপ্তার তিনজনের জামিন আবেদন নাকচ

tab

জাতীয়

অভিমত

জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশার ‘বিপরীতে’ হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার

আনু মুহাম্মদ

সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে হয়নি। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি দিয়ে এই গণঅভ্যুত্থান হয়নি। গণঅভ্যুত্থান হয়েছে হাসিনা সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ ও গণজাগরণের কারণে। আর সে গণঅভ্যুত্থানের মানুষ যখন নির্যাতনের শিকার হয়, নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করা হতে থাকে তখন মানুষের মধ্যে কিছু প্রত্যাশাও তৈরি হয়েছে। সে প্রত্যাশা ছিল যে, দেশে এমন একটা পরিবর্তন করতে হবে রাষ্ট্রযন্ত্র তার বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে অত্যাচার-নির্যাতন করবে, যা খুশি করবে সে রকম আর হবে না। এ অবস্থার অবসান ঘটবে। মানুষের মধ্যে আরেকটি প্রত্যাশা ছিল যে, মানুষ যাতে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে, নিজের মতো কাজ করতে পারে। কেউ যাতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি করতে না পারে এগুলো থেকে যাতে দেশের মানুষ মুক্তি পায়, কেউ যাতে এসব অপকর্ম করতে না পারে।

আরেকটি স্বপ্ন মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল যে, বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন একটি দেশ, বাংলাদেশের মানুষ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ পাবে, সবধরনের বৈষম্য থেকে মুক্তি ঘটবে, সমাজ বৈষম্যহীন হবে।

তবে সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা ছিল যে, বাংলাদেশে এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, যেখানে সরকার আর জনগণের প্রতিপক্ষ হবে না। সরকার জনগণের পক্ষ, জনগণের স্বার্থে উদারভাবে কাজ করবে, সরকার জনগণের কথা শুনবে, জনগণের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন সহানুভূতি থাকবে। জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়ার কেউ থাকবে না। এসব নিয়েই মানুষের মধ্যে বড় প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পর আমরা দেখছি, জনগণের এসব প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার জন্য যে ধরনের বড় বড় উদ্যোগ নেয়া দরকার ছিল, বিশেষ করে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগ নেয়া তা কোনোভাবেই প্রত্যাশা পূরণের দিকে যায়নি। বরং প্রত্যাশা বন্ধের অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যেমন, গণঅভ্যুত্থানের যারা অংশীদার ছিল শ্রমজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী, বেকার তারা যখন অভ্যুত্থানের পর তাদের নিজেদের দাবি-দাওয়া জানাতে যাচ্ছে তখন এই সরকার আগের স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই অত্যন্ত নিষ্ঠুর আচরণ করছে। যেমন বকেয়া মজুরির জন্য শ্রমিকরা আন্দোলন করছে, তাদের উপর গুলি করা হয়েছে। শিক্ষকরা তাদের দাবি-দাওয়া জানানো এবং দাবি আদায়ের জন্য প্রেসক্লাবের সামনে ফুটপাতে বা শাহবাগে বসে আছে, স্লোগান দিচ্ছে তাদের কথাই শুনছেই না সরকার। এসব বিষয়, অত্যাচার-নির্যাতন আগের মতোই রয়ে গেছে, কোনো পরিবর্তন হয়নি।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মব সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। মব সন্ত্রাস করা হচ্ছে দেশের নারী অধিকারের বিরুদ্ধে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে, এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যেও যারা মাজার সংস্কৃতি ধারণ করে তাদের মাজার ভাঙা হচ্ছে। মব সন্ত্রাস তৈরি করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ভাঙা হচ্ছে। গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু মানুষের উপর বর্বর আক্রমণ, নির্যাতন, তাদের বাড়িঘর লুটপাট করা হচ্ছে। সংখ্যাগুরু মানুষের নারীদের ওপর অপবাদ দেয়া হচ্ছে, আক্রমণ করা হচ্ছে। মব সন্ত্রাস এভাবে সব মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কিন্তু সরকার তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এগুলো তো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ।

এছাড়াও দেখা যাচ্ছে যে, হাসিনার আমলে যা হতো, টেন্ডার ছাড়া, জনগণকে না জানিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে দেখা গেল, এই সরকার চট্টগ্রাম বন্দরসহ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশ মানার জন্য নানারকম চুক্তি করছে কিন্তু জনগণকে জানানোই হচ্ছে না। জনগণ কিছুই জানে না, শুধু জনগণই নয়, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানও জানে না। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেয়া হচ্ছে, কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ জানে না, বোয়িং বিমান কেনা হচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ জানে না।

এই ঘটনাগুলো আমাদের খুব প্রত্যাশা ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের যেমন প্রত্যাশা ছিল এসব ঘটনায়, সে প্রত্যাশা পূরণে বিরুদ্ধে যায় এগুলো। এমন প্রেক্ষাপটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে আমরা আশা করি, এসব ঘটনার অবসান হবে। আমরা আশা করি, সরকার জনগণের গণঅভ্যুত্থানের ভাষা বুঝতে পারবে, জনগণের প্রত্যাশা বুঝতে পারবে। সরকারের যে দুর্বলতা এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এসব পরিবর্তন করে সরকার একটি পক্ষপাতহীন এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে ধরনের সংস্কার প্রয়োজন সেটা যথাযথভাবে করবে।

back to top