ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে ভাগ করা হবে; সব ক্লাস সশরীরে হবে না, পঠন-পাঠনের ধারাও হবে দেশের সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে আলাদা। এটি হবে ‘হাইব্রিড ধরনের’।
৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইনে ও ৬০ শতাংশ ক্লাস অফলাইনেশিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীরা প্রথম চারটি সেমিস্টার নন মেজর কোর্সে, পরবর্তী চার সেমিস্টার ডিসিপ্লিন অনুযায়ী মেজর কোর্সে পাঠ করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সোমবার,(৪ আগস্ট ২০২৫) সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার সরকারি সাতটি কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের অগ্রগতি তুলে ধরেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মজিবর রহমান, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ ও সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এবং সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসক ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ইলিয়াস।
সচিব মজিবর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা হবে ‘ইন্টার ডিসিপ্লিনারি’ ও ‘হাইব্রিড ধরনের’। সেখানে ৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইনে ও ৬০ শতাংশ ক্লাস অফলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে সব পরীক্ষা হবে সশরীরে।
সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, এর মধ্যে স্কুল অব সায়েন্সের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস। স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের জন্য সরকারি বাংলা কলেজ এবং স্কুল অব বিজনেসের জন্য সরকারি তিতুমীর কলেজ। স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসের জন্য কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী প্রথম চারটি সেমিস্টার নন মেজর কোর্সে অধ্যয়ন করবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পরবর্তী চার সেমিস্টার ডিসিপ্লিন অনুযায়ী মেজর কোর্সে অধ্যয়ন করবে। তবে পঞ্চম সেমিস্টারে শর্তপূরণ সাপেক্ষে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবর্তন করতে পারবে, তবে ক্যাম্পাস পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না। সবার জন্য সুবিধাজনক স্থানে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হবে।
মজিবর রহমান জানান, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রক্টর থাকবেন। আর প্রতিটি কলেজে একজন পুরুষ ও একজন নারী ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন। সাত কলেজে মোট ১৪ জন ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন।
বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আগের বিদ্যমান অ্যাকাডেমিক কাঠামো অনুযায়ী পড়ালেখা শেষ করবে জানিয়ে সচিব বলেন, তাদের সময় মতো পরীক্ষা দেয়া ও ফল প্রকাশের ব্যবস্থা নেয়া হবে। কলেজগুলোর বিদ্যমান উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় চালু থাকবে। স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা টাইম, স্পেস ও রিসোর্স শেয়ারিং পদ্ধতিতে একই ক্যাম্পাস ব্যবহার করবেন।
ইউজিসির সদস্য তানজীমউদ্দিন খান বলেন, সাত কলেজকে যে উপায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত করা হয়েছিল তার কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না। যেভাবে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অধিভুক্তি বাতিল হয়েছে, তারও কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট কত আসনে ভর্তি হবে সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন যে ভর্তি কাঠামো শুরু হচ্ছে সেটি বিদ্যমান কাঠামোতে হবে। এটি তদারকি করবে অন্তর্বর্তী প্রশাসন। কলেজের শিক্ষকরা (শিক্ষা ক্যাডার) আপাতত এ কলেজগুলোতে থাকবেন। তারা যোগ্যতা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সুযোগ পাবেন।’
তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোতে না গিয়ে আলাদা কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছে।
সেই বিষয়ে তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘তিতুমীর কলেজ অনেক সৌভাগ্যবান, তিতুমীর কলেজ স্কুল অব বিজনেস স্টাডিস। এটা তো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে কম কিছু না।’
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতে ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়।
কিন্তু ঢাবি অধিভুক্তির পর সেশনজটসহ হয়রানি আরও বেড়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। সেজন্য সাত কলেজ নিয়ে আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠার জন্য প্রায়ই ‘সড়ক অবরোধ’ করাসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর ওই সাত কলেজ পরিচালনায় ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠা করে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে ভাগ করা হবে; সব ক্লাস সশরীরে হবে না, পঠন-পাঠনের ধারাও হবে দেশের সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে আলাদা। এটি হবে ‘হাইব্রিড ধরনের’।
৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইনে ও ৬০ শতাংশ ক্লাস অফলাইনেশিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীরা প্রথম চারটি সেমিস্টার নন মেজর কোর্সে, পরবর্তী চার সেমিস্টার ডিসিপ্লিন অনুযায়ী মেজর কোর্সে পাঠ করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সোমবার,(৪ আগস্ট ২০২৫) সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার সরকারি সাতটি কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের অগ্রগতি তুলে ধরেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মজিবর রহমান, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ ও সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এবং সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসক ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ইলিয়াস।
সচিব মজিবর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা হবে ‘ইন্টার ডিসিপ্লিনারি’ ও ‘হাইব্রিড ধরনের’। সেখানে ৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইনে ও ৬০ শতাংশ ক্লাস অফলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে সব পরীক্ষা হবে সশরীরে।
সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, এর মধ্যে স্কুল অব সায়েন্সের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস। স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের জন্য সরকারি বাংলা কলেজ এবং স্কুল অব বিজনেসের জন্য সরকারি তিতুমীর কলেজ। স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসের জন্য কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী প্রথম চারটি সেমিস্টার নন মেজর কোর্সে অধ্যয়ন করবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পরবর্তী চার সেমিস্টার ডিসিপ্লিন অনুযায়ী মেজর কোর্সে অধ্যয়ন করবে। তবে পঞ্চম সেমিস্টারে শর্তপূরণ সাপেক্ষে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবর্তন করতে পারবে, তবে ক্যাম্পাস পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না। সবার জন্য সুবিধাজনক স্থানে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হবে।
মজিবর রহমান জানান, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রক্টর থাকবেন। আর প্রতিটি কলেজে একজন পুরুষ ও একজন নারী ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন। সাত কলেজে মোট ১৪ জন ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন।
বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আগের বিদ্যমান অ্যাকাডেমিক কাঠামো অনুযায়ী পড়ালেখা শেষ করবে জানিয়ে সচিব বলেন, তাদের সময় মতো পরীক্ষা দেয়া ও ফল প্রকাশের ব্যবস্থা নেয়া হবে। কলেজগুলোর বিদ্যমান উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় চালু থাকবে। স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা টাইম, স্পেস ও রিসোর্স শেয়ারিং পদ্ধতিতে একই ক্যাম্পাস ব্যবহার করবেন।
ইউজিসির সদস্য তানজীমউদ্দিন খান বলেন, সাত কলেজকে যে উপায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত করা হয়েছিল তার কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না। যেভাবে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অধিভুক্তি বাতিল হয়েছে, তারও কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট কত আসনে ভর্তি হবে সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন যে ভর্তি কাঠামো শুরু হচ্ছে সেটি বিদ্যমান কাঠামোতে হবে। এটি তদারকি করবে অন্তর্বর্তী প্রশাসন। কলেজের শিক্ষকরা (শিক্ষা ক্যাডার) আপাতত এ কলেজগুলোতে থাকবেন। তারা যোগ্যতা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সুযোগ পাবেন।’
তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোতে না গিয়ে আলাদা কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছে।
সেই বিষয়ে তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘তিতুমীর কলেজ অনেক সৌভাগ্যবান, তিতুমীর কলেজ স্কুল অব বিজনেস স্টাডিস। এটা তো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে কম কিছু না।’
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতে ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়।
কিন্তু ঢাবি অধিভুক্তির পর সেশনজটসহ হয়রানি আরও বেড়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। সেজন্য সাত কলেজ নিয়ে আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠার জন্য প্রায়ই ‘সড়ক অবরোধ’ করাসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর ওই সাত কলেজ পরিচালনায় ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠা করে অন্তর্বর্তী সরকার।