রাজধানীসহ সারাদেশে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। ঘরে ঘরে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে নতুন করে নানা পেশার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্তরা ঘরেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছেন।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস ছাড়াও এখন অনেকেই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্তদের বিশ্রাম নিতে নিতে হবে। পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। ৫ থেকে ৭ দিন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জ্বরে কষ্ট করতে হয়। এরপর আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা করেন।
জ্বরে আক্রান্ত কয়েকজন রোগী জানান, হঠাৎ করে জ্বর হয়। এরপর নাপা বা প্যারাসিটামল খাওয়ার পর জ্বর কমে যায়। আবার কেঁপে কেঁপে জ্বর আসে। জ্বর ছাড়াও মাথা ও পেটব্যথা করে। গত ৩-৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছে। জ্বরে প্রচণ্ড দুর্বল করে ফেলছে। এরপর জ্বর কমছে না। জ্বরের পাশাপাশি নাকও বন্ধ হয়ে যায়। নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়।
আবার আরেকজন রোগী বলেন, জ্বরের পাশাপাশি ডায়রিয়া হচ্ছে। অনেকেই জ্বরের কারণে ঘর বসা হয়ে দিন কাটছে। আবার অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসা-বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গরিব রোগীদের কষ্ট বেশি।
শ্যামলী আড়াইশ’ বেডের টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আয়শা আক্তার সংবাদকে বলেন, জ্বর হলে অবহেলা করা যাবে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জ্বর প্রায় ৭ দিন থাকে। কাশিও হয়। এজন্য প্যারাসিটামল খেতে হয়। পানি, জুস
ও ওরস্যালাইন খেতে হবে। এরপর জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা নিতে হবে।
অন্যদিকে মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৯৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার,(৪ আগস্ট ২০২৫) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২২ হাজার ৬৫ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬১ জন, ঢাকা বিভাগে ৬৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৫৬ জন, ময়মমনসিংহ বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৮ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন ও সিলেটে ৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে বয়স বেঁধে ৫ বছরের শিশু ৩৮টি, ৬-১০ বছরের শিশু ৩২টি, ১১-১৫ বছর বয়সের ২৭ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৪০ জন রয়েছে।
হাসপাতালের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গতে আক্রান্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ৮ জন, সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩৪ জন, মুদগা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৫ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৫ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২৬ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ২৫৫ জন ভর্তি আছে।
সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গুতে ১২৩৫ জন রোগী ভর্তি আছে। জ্বরে আক্রান্ত অনেক রোগী বাসা-বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই সংখ্যা জানা গেলে আক্রান্ত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকের চিকুনগুনিয়া হচ্ছে। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে। চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীও বাড়ছে। আর চট্টগ্রামে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এভাবে প্রতিদিন ৪ ধরনের ভাইরাইসে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। আবার মারাও যাচ্ছেন।
সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫
রাজধানীসহ সারাদেশে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। ঘরে ঘরে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে নতুন করে নানা পেশার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্তরা ঘরেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছেন।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস ছাড়াও এখন অনেকেই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্তদের বিশ্রাম নিতে নিতে হবে। পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। ৫ থেকে ৭ দিন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জ্বরে কষ্ট করতে হয়। এরপর আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা করেন।
জ্বরে আক্রান্ত কয়েকজন রোগী জানান, হঠাৎ করে জ্বর হয়। এরপর নাপা বা প্যারাসিটামল খাওয়ার পর জ্বর কমে যায়। আবার কেঁপে কেঁপে জ্বর আসে। জ্বর ছাড়াও মাথা ও পেটব্যথা করে। গত ৩-৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছে। জ্বরে প্রচণ্ড দুর্বল করে ফেলছে। এরপর জ্বর কমছে না। জ্বরের পাশাপাশি নাকও বন্ধ হয়ে যায়। নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়।
আবার আরেকজন রোগী বলেন, জ্বরের পাশাপাশি ডায়রিয়া হচ্ছে। অনেকেই জ্বরের কারণে ঘর বসা হয়ে দিন কাটছে। আবার অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসা-বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গরিব রোগীদের কষ্ট বেশি।
শ্যামলী আড়াইশ’ বেডের টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আয়শা আক্তার সংবাদকে বলেন, জ্বর হলে অবহেলা করা যাবে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জ্বর প্রায় ৭ দিন থাকে। কাশিও হয়। এজন্য প্যারাসিটামল খেতে হয়। পানি, জুস
ও ওরস্যালাইন খেতে হবে। এরপর জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা নিতে হবে।
অন্যদিকে মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৯৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার,(৪ আগস্ট ২০২৫) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২২ হাজার ৬৫ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬১ জন, ঢাকা বিভাগে ৬৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৫৬ জন, ময়মমনসিংহ বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৮ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন ও সিলেটে ৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে বয়স বেঁধে ৫ বছরের শিশু ৩৮টি, ৬-১০ বছরের শিশু ৩২টি, ১১-১৫ বছর বয়সের ২৭ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৪০ জন রয়েছে।
হাসপাতালের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গতে আক্রান্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ৮ জন, সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩৪ জন, মুদগা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৫ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৫ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২৬ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ২৫৫ জন ভর্তি আছে।
সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গুতে ১২৩৫ জন রোগী ভর্তি আছে। জ্বরে আক্রান্ত অনেক রোগী বাসা-বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই সংখ্যা জানা গেলে আক্রান্ত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকের চিকুনগুনিয়া হচ্ছে। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে। চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীও বাড়ছে। আর চট্টগ্রামে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এভাবে প্রতিদিন ৪ ধরনের ভাইরাইসে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। আবার মারাও যাচ্ছেন।