চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির অঙ্গীকার রেখে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
২৮ দফার এ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে।”
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “৫ অগাস্ট ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হল।”
জুলাই ঘোষণাপত্র:
১। উপনিবেশ বিরোধী লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় ২৩ বছরের পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস।
২। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার জন্য জনগণের ত্যাগ।
৩। ১৯৭২ সালের সংবিধানের কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগে মুক্তিযুদ্ধের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতা এবং গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ হওয়া।
৪। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকারের একদলীয় শাসন (বাকশাল) প্রতিষ্ঠা, মতপ্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ এবং ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের প্রেক্ষাপট।
৫। আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন।
৬। দেশী-বিদেশী চক্রান্তে ১/১১-এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতার পথ সুগম হওয়া।
৭। ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক শাসন ও সংবিধানের অবৈধ পরিবর্তনের মাধ্যমে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা।
৮। দুঃশাসন, গুম, খুন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস।
৯। ফ্যাসিস্ট সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা।
১০। সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, অর্থনীতি ও পরিবেশ বিপর্যয়।
১১। ষোলো বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে জনগণের ওপর দমন-পীড়ন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
১২। বিদেশী রাষ্ট্রের অন্যায় প্রভুত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমন।
১৩। তিনটি প্রহসনের নির্বাচনের (২০১৪, ২০১৮, ২০২৪) মাধ্যমে ভোটাধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করা।
১৪। ভিন্নমতের নেতাকর্মীদের নির্যাতন, দলীয় নিয়োগ ও কোটাভিত্তিক বৈষম্যে ক্ষোভ সৃষ্টি।
১৫। বিরোধী দলগুলোর ওপর চরম নিপীড়নে জনরোষ বৃদ্ধি।
১৬। বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ড, যা গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
১৭। আন্দোলনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যোগদান, নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজার মানুষ হত্যা এবং সামরিক বাহিনীর সমর্থন।
১৮। অসহযোগ আন্দোলন ও ৫ অগাস্ট ঢাকামুখী লংমার্চের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগ।
১৯। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌমত্বের বৈধতা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
২০। অবৈধ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে ৮ অগাস্ট ২০২৪-এ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন।
২১। ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের আকাঙ্ক্ষা।
২২। সুশাসন, সুষ্ঠু নির্বাচন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক সংস্কারের অভিপ্রায়।
২৩। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত অপরাধসমূহের দ্রুত বিচারের অঙ্গীকার।
২৪। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা, শহীদ পরিবার ও আহতদের সুরক্ষা।
২৫। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সাংবিধানিক সংস্কার করে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠন।
২৬। পরিবেশ ও জলবায়ু সহিষ্ণু টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে প্রজন্মের অধিকার সংরক্ষণ।
২৭। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান।
২৮। ৫ অগাস্ট ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে ঘোষণাপত্র প্রণয়ন।
মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট ২০২৫
চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির অঙ্গীকার রেখে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
২৮ দফার এ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে।”
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “৫ অগাস্ট ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হল।”
জুলাই ঘোষণাপত্র:
১। উপনিবেশ বিরোধী লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় ২৩ বছরের পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস।
২। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার জন্য জনগণের ত্যাগ।
৩। ১৯৭২ সালের সংবিধানের কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগে মুক্তিযুদ্ধের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতা এবং গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ হওয়া।
৪। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকারের একদলীয় শাসন (বাকশাল) প্রতিষ্ঠা, মতপ্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ এবং ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের প্রেক্ষাপট।
৫। আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন।
৬। দেশী-বিদেশী চক্রান্তে ১/১১-এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতার পথ সুগম হওয়া।
৭। ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক শাসন ও সংবিধানের অবৈধ পরিবর্তনের মাধ্যমে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা।
৮। দুঃশাসন, গুম, খুন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস।
৯। ফ্যাসিস্ট সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা।
১০। সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, অর্থনীতি ও পরিবেশ বিপর্যয়।
১১। ষোলো বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে জনগণের ওপর দমন-পীড়ন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
১২। বিদেশী রাষ্ট্রের অন্যায় প্রভুত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমন।
১৩। তিনটি প্রহসনের নির্বাচনের (২০১৪, ২০১৮, ২০২৪) মাধ্যমে ভোটাধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করা।
১৪। ভিন্নমতের নেতাকর্মীদের নির্যাতন, দলীয় নিয়োগ ও কোটাভিত্তিক বৈষম্যে ক্ষোভ সৃষ্টি।
১৫। বিরোধী দলগুলোর ওপর চরম নিপীড়নে জনরোষ বৃদ্ধি।
১৬। বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ড, যা গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
১৭। আন্দোলনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যোগদান, নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজার মানুষ হত্যা এবং সামরিক বাহিনীর সমর্থন।
১৮। অসহযোগ আন্দোলন ও ৫ অগাস্ট ঢাকামুখী লংমার্চের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগ।
১৯। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌমত্বের বৈধতা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
২০। অবৈধ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে ৮ অগাস্ট ২০২৪-এ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন।
২১। ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের আকাঙ্ক্ষা।
২২। সুশাসন, সুষ্ঠু নির্বাচন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক সংস্কারের অভিপ্রায়।
২৩। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত অপরাধসমূহের দ্রুত বিচারের অঙ্গীকার।
২৪। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা, শহীদ পরিবার ও আহতদের সুরক্ষা।
২৫। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সাংবিধানিক সংস্কার করে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠন।
২৬। পরিবেশ ও জলবায়ু সহিষ্ণু টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে প্রজন্মের অধিকার সংরক্ষণ।
২৭। ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান।
২৮। ৫ অগাস্ট ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে ঘোষণাপত্র প্রণয়ন।