আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন, তবে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করেননি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভাষণ দেওয়ার পর থেকেই সরকার নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করবে। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি পাঠানো হবে, যাতে রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। গত জুনে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় হিসেবে ২০২৬ সালের এপ্রিলের কথা বলেছিলেন। তবে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনার কথা উঠে আসে।
বিএনপিসহ কয়েকটি দল সুনির্দিষ্ট সময়সূচি ও তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিল। রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শেষ হওয়ায় অনেকে আশা করেছিলেন মঙ্গলবারের ভাষণে নির্দিষ্ট তারিখ আসবে। তবে প্রধান উপদেষ্টা তা না জানিয়ে সুষ্ঠু ও আনন্দমুখর নির্বাচনের জন্য সবার দোয়া চান।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে আনন্দ-উৎসব, শান্তি-শৃঙ্খলা, ভোটার উপস্থিতি, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় করে তোলার জন্য মানসিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হবে। প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নারী ভোটারদের নির্দ্বিধায় ভোটকেন্দ্রে আনতে সব ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তিনটি নির্বাচনে ভোটাধিকার হরণ হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচনকে ঈদের উৎসবের মতো করতে চান। সবাইকে সেরা প্রার্থী বেছে নিতে খোঁজখবর নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া
ভাষণের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, সরকারের তিনটি প্রধান দায়িত্ব ছিল—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন কাজ করেছে, যার সুপারিশ অনুযায়ী স্বল্পমেয়াদি বহু সংস্কার ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে।
অর্থনৈতিক খাত, বিচার ব্যবস্থা ও জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দুর্নীতি হ্রাসের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষে ১৯টি মৌলিক সংস্কারের বিষয় চিহ্নিত করে। এর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঐকমত্য গড়ে উঠেছে।
জুলাই সনদকে রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক অর্জন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সনদ বাস্তবায়ন ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রকে এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে এবং গণঅভ্যুত্থানের পুনরাবৃত্তি না হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় বিচার প্রক্রিয়া দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ সহযোগীদের বিচার স্বচ্ছ ও দৃশ্যমান থাকবে।
ভাষণের শেষে তিনি আহ্বান জানান—জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রথম বড় পরীক্ষায় সফল হতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট ২০২৫
আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন, তবে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করেননি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভাষণ দেওয়ার পর থেকেই সরকার নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করবে। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি পাঠানো হবে, যাতে রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। গত জুনে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় হিসেবে ২০২৬ সালের এপ্রিলের কথা বলেছিলেন। তবে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনার কথা উঠে আসে।
বিএনপিসহ কয়েকটি দল সুনির্দিষ্ট সময়সূচি ও তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিল। রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শেষ হওয়ায় অনেকে আশা করেছিলেন মঙ্গলবারের ভাষণে নির্দিষ্ট তারিখ আসবে। তবে প্রধান উপদেষ্টা তা না জানিয়ে সুষ্ঠু ও আনন্দমুখর নির্বাচনের জন্য সবার দোয়া চান।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে আনন্দ-উৎসব, শান্তি-শৃঙ্খলা, ভোটার উপস্থিতি, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় করে তোলার জন্য মানসিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হবে। প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নারী ভোটারদের নির্দ্বিধায় ভোটকেন্দ্রে আনতে সব ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের তিনটি নির্বাচনে ভোটাধিকার হরণ হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচনকে ঈদের উৎসবের মতো করতে চান। সবাইকে সেরা প্রার্থী বেছে নিতে খোঁজখবর নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া
ভাষণের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, সরকারের তিনটি প্রধান দায়িত্ব ছিল—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন কাজ করেছে, যার সুপারিশ অনুযায়ী স্বল্পমেয়াদি বহু সংস্কার ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে।
অর্থনৈতিক খাত, বিচার ব্যবস্থা ও জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দুর্নীতি হ্রাসের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষে ১৯টি মৌলিক সংস্কারের বিষয় চিহ্নিত করে। এর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঐকমত্য গড়ে উঠেছে।
জুলাই সনদকে রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক অর্জন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সনদ বাস্তবায়ন ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রকে এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে এবং গণঅভ্যুত্থানের পুনরাবৃত্তি না হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় বিচার প্রক্রিয়া দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ সহযোগীদের বিচার স্বচ্ছ ও দৃশ্যমান থাকবে।
ভাষণের শেষে তিনি আহ্বান জানান—জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রথম বড় পরীক্ষায় সফল হতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।