গতকাল সোমবার চৌমুহনীর আটিয়াবাড়ি খাল দখলমুক্ত করে পানি নামানোর কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন -সংবাদ
গত এক মাস যাবত দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। এই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে লাখ লাখ মানুষ ভুগছে। এখনও কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার,(০৫ আগস্ট ২০২৫) দিনভর এবং এর আগের দুই দিন ধরে নোয়াখালীতে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
জানা যায়, বেগমগঞ্জের ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গত এক মাস ধরে জলাবদ্ধতা চলছে। ডুবে গেছে সড়ক, বসতঘর, স্কুল, মসজিদ, কবরস্থানসহ জনজীবনের প্রায় সবকিছু। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি; নৌকা ও বাঁশের সাঁকোই এখন চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রশাসনের উদ্যোগ সত্ত্বেও দুর্ভোগ কমছে না।
অন্যদিকে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাতে উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে নতুন করে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আগের পানি নামার আগেই নতুন বৃষ্টিতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, খাল-জলাশয় ও কালভার্টের মুখ ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে এবং দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
বিশেষ করে একলাশপুর, চৌমুহনী পৌরসভা, হাজীপুর, রসুলপুর, বেগমগঞ্জ, মিরওয়ারিশপুর, জিরতলী, শরীফপুর, কুতুবপুর ও কাদিরপুর ইউনিয়নের অনেক গ্রামীণ সড়ক ডুবে গেছে, বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। হাজীপুর এলাকার বাসিন্দা দলিল লেখক রেজোয়ান বলেন, “পানি নামছে ধীরগতিতে। গত এক মাস ধরে অনেক মানুষ এখনও পানিবন্দী। সড়ক ডুবে থাকায় চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’
বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনী ও জেলা শহরের অলিগলির রাস্তাঘাট, এমনকি অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ধীরগতিতে পানি নামার কারণে সড়ক, সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পানি উঠে গিয়ে সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই বেগমগঞ্জে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে বেগমগঞ্জবাসী দ্রুত সমাধান চায়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। এ পর্যন্ত খালের ওপর নির্মিত একাধিক ভবনসহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাল পরিষ্কার এবং পানিরস্রোত স্বাভাবিক রাখতে ময়লার ভাগাড় অপসারণ ও বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসী প্রশাসনের এই অব্যাহত অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুই পাড়ে নির্মিত বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। গতকাল সোমবার পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় চৌমুহনী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ আটিয়াবাড়ি খাল থেকে পশ্চিমমুখী আলীপুর ও নাজিরপুর এলাকার বিলুপ্ত নইমুদ্দিন খাল, গাবুয়া খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার করে এ এলাকার পানি নামানোর কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এ যাবৎ খালের ওপর নির্মিত একাধিক ভবনসহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাল পরিষ্কার এবং পানিরস্রোত স্বাভাবিক করতে ময়লার ভাগাড় অপসারণ ও খাল ভরাট করে দেয়া বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে।
আলীপুর নিবাসী জলিল মিয়া বলেন, ‘যারা খাল ভরাট করে দখল করেছিল, তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। পানি নামা অব্যাহত থাকলে আলীপুর ও নাজিরপুর এলাকার পানি দ্রুত নেমে যাবে।’
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেগমগঞ্জের অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে ছিল। সরকারি খাল ভরাট করে ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে খালগুলো ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চৌমুহনী পৌর প্রশাসক জানান, বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকর্ড ও নকশা অনুযায়ী সরকারি রেকডিয়া খাল উদ্ধারের কাজ চলছে। জরিপ রেকর্ড অনুযায়ী খাল উদ্ধার ও সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি এই কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
গতকাল সোমবার চৌমুহনীর আটিয়াবাড়ি খাল দখলমুক্ত করে পানি নামানোর কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন -সংবাদ
বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫
গত এক মাস যাবত দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। এই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে লাখ লাখ মানুষ ভুগছে। এখনও কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার,(০৫ আগস্ট ২০২৫) দিনভর এবং এর আগের দুই দিন ধরে নোয়াখালীতে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
জানা যায়, বেগমগঞ্জের ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গত এক মাস ধরে জলাবদ্ধতা চলছে। ডুবে গেছে সড়ক, বসতঘর, স্কুল, মসজিদ, কবরস্থানসহ জনজীবনের প্রায় সবকিছু। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি; নৌকা ও বাঁশের সাঁকোই এখন চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রশাসনের উদ্যোগ সত্ত্বেও দুর্ভোগ কমছে না।
অন্যদিকে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাতে উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে নতুন করে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আগের পানি নামার আগেই নতুন বৃষ্টিতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, খাল-জলাশয় ও কালভার্টের মুখ ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে এবং দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
বিশেষ করে একলাশপুর, চৌমুহনী পৌরসভা, হাজীপুর, রসুলপুর, বেগমগঞ্জ, মিরওয়ারিশপুর, জিরতলী, শরীফপুর, কুতুবপুর ও কাদিরপুর ইউনিয়নের অনেক গ্রামীণ সড়ক ডুবে গেছে, বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। হাজীপুর এলাকার বাসিন্দা দলিল লেখক রেজোয়ান বলেন, “পানি নামছে ধীরগতিতে। গত এক মাস ধরে অনেক মানুষ এখনও পানিবন্দী। সড়ক ডুবে থাকায় চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’
বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনী ও জেলা শহরের অলিগলির রাস্তাঘাট, এমনকি অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ধীরগতিতে পানি নামার কারণে সড়ক, সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পানি উঠে গিয়ে সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই বেগমগঞ্জে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে বেগমগঞ্জবাসী দ্রুত সমাধান চায়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। এ পর্যন্ত খালের ওপর নির্মিত একাধিক ভবনসহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাল পরিষ্কার এবং পানিরস্রোত স্বাভাবিক রাখতে ময়লার ভাগাড় অপসারণ ও বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসী প্রশাসনের এই অব্যাহত অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুই পাড়ে নির্মিত বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। গতকাল সোমবার পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় চৌমুহনী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ আটিয়াবাড়ি খাল থেকে পশ্চিমমুখী আলীপুর ও নাজিরপুর এলাকার বিলুপ্ত নইমুদ্দিন খাল, গাবুয়া খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার করে এ এলাকার পানি নামানোর কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এ যাবৎ খালের ওপর নির্মিত একাধিক ভবনসহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাল পরিষ্কার এবং পানিরস্রোত স্বাভাবিক করতে ময়লার ভাগাড় অপসারণ ও খাল ভরাট করে দেয়া বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে।
আলীপুর নিবাসী জলিল মিয়া বলেন, ‘যারা খাল ভরাট করে দখল করেছিল, তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। পানি নামা অব্যাহত থাকলে আলীপুর ও নাজিরপুর এলাকার পানি দ্রুত নেমে যাবে।’
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেগমগঞ্জের অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে ছিল। সরকারি খাল ভরাট করে ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে খালগুলো ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চৌমুহনী পৌর প্রশাসক জানান, বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকর্ড ও নকশা অনুযায়ী সরকারি রেকডিয়া খাল উদ্ধারের কাজ চলছে। জরিপ রেকর্ড অনুযায়ী খাল উদ্ধার ও সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি এই কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।