জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক ছোট হয়, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩১৯ জন, মৃত্যু ৩ জনের
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরে প্রতিদিন শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ বছর বয়সের শিশু ২০জন আক্রান্ত হয়েছে। ৬ থেকে ১০ বছর বয়সের ১৫জন, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের ২০ জন। আর ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সের ৩৩জন, ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের ৩০জন, ৭০ থেকে ৮০ বছর বয়সের ৩জন, আর ৮০ বছর বয়সের ১জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
এই ভাবে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে ৩১৯জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণে ১জন ও চট্রগ্রামে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ডেঙ্গুতে মোট ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শিশুদের ডেঙ্গু প্রসঙ্গে আড়াইশ বেডের টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার সংবাদকে বলেন, শিশুরা ঝুঁকিতে থাকে। বয়স কম হওয়ায় তারা কিছু বুঝতেও পারে না। এ সময় শিশুদের ফুলহাতার জামা ও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে দিতে হবে। আর ডেঙ্গু প্রতিরোধী মলম ও শিশুদের প্রতি আলাদা নজর দেয়ার কথা বলেন এই বিশেষজ্ঞ।
২৪ ঘন্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে৭২জন, চট্রগ্রাম বিভাগে ৪৯জন ,ঢাকা বিভাগে ৫৮জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৭জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬২জন, খুলনা বিভাগে ৩৬জন , ময়মনসিংহ বিভাগে ১১জন, রংপুর বিভাগে ৪জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫জন,মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮জন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৪জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৫জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৫জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২৬ জন ভর্তি হয়েছে। এই ভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে এখনও ২৫৫জন ভর্তি আছে। সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো ১২৮৯জন ভর্তি আছে।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ও ডেঙ্গু গবেষক কবিরুল বাসার তার এক প্রতিবেদনে বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তার মধ্যে সম্প্রতি চট্রগ্রামে দুইজন রোগীর জিকা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবরে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এরমধ্যে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ফাইলেরিয়া ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ রয়েছে। নতুন করে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দেখা যায়, জ্বর, ত্বকে র্যাশ, মাথাব্যথা, চোখ লাল হওয়া, অস্থিসন্ধি ও পেশির ব্যথা। ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই এ উপসর্গগুলো সেরে যায়। কিন্তু গর্ভবর্তী নারীদের মধ্যে এ ভাইরাস সংক্রমিত হলে গর্ভস্থ শিশুদের মধ্যে মাইক্রোসেফালি, মস্তিস্ক ছোট হওয়া ও নিউরো ডেভেলপমেণ্টাল জটিলতা তৈরী হতে পারে। এই ভাইরাস স্নায়বিক জটিলতার কারণ হতে পারে, যার ফলে দীর্ঘমেয়াদি পক্ষাঘাতও হতে পারে।
এডিস মশার মাধ্যমে জিকা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া এ তিন ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ ছড়ায়। এদের উপসর্গেও অনেকটা মিল আছে। ফলে চিকিৎসক ও রোগী উভয়ের জন্যই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করন কঠিন হয়ে পড়ে। এতে যেমন চিকিৎসার বিলম্ব ঘটে তেমনি রোগ ছড়ানোর সম্ভবনাও বাড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জিকা ভাইরাসকে ২০১৬ সালে পাবলিক হেলথ্ ইমারজেন্সি অব ইণ্টারন্যাশনাল কনসার্ন হিসেবে ঘোষনা করেছিল। এ ঘোষনার পর অনেক দেশ জরুরি গবেষনা, প্রতিরোধমূলক পরিকল্পনা ও গণসচেতনতা জোরদার করে। বাংলাদেশেও এখন সেই মাত্রায় প্রস্তুতি নেয়া দরকার বলে এই বিশেষজ্ঞ মনে করেন।
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক ছোট হয়, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩১৯ জন, মৃত্যু ৩ জনের
বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরে প্রতিদিন শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ বছর বয়সের শিশু ২০জন আক্রান্ত হয়েছে। ৬ থেকে ১০ বছর বয়সের ১৫জন, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের ২০ জন। আর ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সের ৩৩জন, ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের ৩০জন, ৭০ থেকে ৮০ বছর বয়সের ৩জন, আর ৮০ বছর বয়সের ১জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
এই ভাবে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে ৩১৯জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণে ১জন ও চট্রগ্রামে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ডেঙ্গুতে মোট ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শিশুদের ডেঙ্গু প্রসঙ্গে আড়াইশ বেডের টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার সংবাদকে বলেন, শিশুরা ঝুঁকিতে থাকে। বয়স কম হওয়ায় তারা কিছু বুঝতেও পারে না। এ সময় শিশুদের ফুলহাতার জামা ও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে দিতে হবে। আর ডেঙ্গু প্রতিরোধী মলম ও শিশুদের প্রতি আলাদা নজর দেয়ার কথা বলেন এই বিশেষজ্ঞ।
২৪ ঘন্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে৭২জন, চট্রগ্রাম বিভাগে ৪৯জন ,ঢাকা বিভাগে ৫৮জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৭জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬২জন, খুলনা বিভাগে ৩৬জন , ময়মনসিংহ বিভাগে ১১জন, রংপুর বিভাগে ৪জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫জন,মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৮জন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৪জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৫জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৫জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২৬ জন ভর্তি হয়েছে। এই ভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে এখনও ২৫৫জন ভর্তি আছে। সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো ১২৮৯জন ভর্তি আছে।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ও ডেঙ্গু গবেষক কবিরুল বাসার তার এক প্রতিবেদনে বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তার মধ্যে সম্প্রতি চট্রগ্রামে দুইজন রোগীর জিকা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবরে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এরমধ্যে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ফাইলেরিয়া ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ রয়েছে। নতুন করে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দেখা যায়, জ্বর, ত্বকে র্যাশ, মাথাব্যথা, চোখ লাল হওয়া, অস্থিসন্ধি ও পেশির ব্যথা। ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই এ উপসর্গগুলো সেরে যায়। কিন্তু গর্ভবর্তী নারীদের মধ্যে এ ভাইরাস সংক্রমিত হলে গর্ভস্থ শিশুদের মধ্যে মাইক্রোসেফালি, মস্তিস্ক ছোট হওয়া ও নিউরো ডেভেলপমেণ্টাল জটিলতা তৈরী হতে পারে। এই ভাইরাস স্নায়বিক জটিলতার কারণ হতে পারে, যার ফলে দীর্ঘমেয়াদি পক্ষাঘাতও হতে পারে।
এডিস মশার মাধ্যমে জিকা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া এ তিন ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ ছড়ায়। এদের উপসর্গেও অনেকটা মিল আছে। ফলে চিকিৎসক ও রোগী উভয়ের জন্যই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করন কঠিন হয়ে পড়ে। এতে যেমন চিকিৎসার বিলম্ব ঘটে তেমনি রোগ ছড়ানোর সম্ভবনাও বাড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জিকা ভাইরাসকে ২০১৬ সালে পাবলিক হেলথ্ ইমারজেন্সি অব ইণ্টারন্যাশনাল কনসার্ন হিসেবে ঘোষনা করেছিল। এ ঘোষনার পর অনেক দেশ জরুরি গবেষনা, প্রতিরোধমূলক পরিকল্পনা ও গণসচেতনতা জোরদার করে। বাংলাদেশেও এখন সেই মাত্রায় প্রস্তুতি নেয়া দরকার বলে এই বিশেষজ্ঞ মনে করেন।