আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক বছরও পূর্ণ হয়নি, এর মধ্যেই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) বিগত সময়ের প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। চক্রটি বিগত আওয়ামী লীগ আমলে ‘অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই)’ অনুমোদন ছাড়াই ‘আইন লঙ্ঘন করে’ যে নিয়োগগুলো হয়েছিল, সেগুলোরও বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে।
বিগত সময়ের উপাচার্যদের ‘ঘনিষ্ঠজন’ হিসেবে পরিচিত সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক যবিপ্রবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব অবসরে গেলেও তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাকে ঘিরে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা পুরনো সিন্ডিকেট সক্রিয় করতে তৎপর বলে যবিপ্রবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, যবিপ্রবিতে বিগত সময়ের ‘নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম’ তদন্তে গঠিত কমিটি পাঁচ মাসেও কাজ শুরু করতে পারেনি। ফলে ওই চক্রটির চেষ্টা সফল হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
যবিপ্রবি সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম ২০১৯-২০ অর্থবছরে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। পরে কর্তৃপক্ষ নতুন প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনের জন্য ইউজিসিতে পাঠায়। ইউজিসি সেটি পর্যালোচনা করে সুপারিশসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে প্রেরণ করলেও শেষ পর্যন্ত অনুমোদন হয়নি। আর অনুমোদন ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিয়োগের সুযোগ নেই।
তবুও বিগত সরকারের শেষ চার বছরে অর্গানোগ্রামের বাইরে একের পর এক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অর্থ লেনদেনের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও পছন্দের প্রার্থীদের জন্য নানা অনিয়ম করা হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ গত ২২ আগস্ট ২০২৩-এ ‘ল অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মাহমুদ আশরাবীর বাবা ছিলেন রেজিস্ট্রারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার। যোগ্যতা সাপেক্ষে পদ না থাকায় বিজ্ঞপ্তি পরিবর্তন করে নিয়োগ দেয়া হয়। বিতর্কের পর তার বাবা পদত্যাগ করেন, তবে ছেলে চাকরিতে বহাল থাকেন।
এছাড়া রেজিস্ট্রারের আত্মীয়স্বজনসহ বেশ কয়েকজনকে অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।
২০২৩ সালের ২১ আগস্ট দুদক যবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার, ইবির সাবেক উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন ও উপ-পরিচালক আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে ৬১ লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে। এই মামলায় ড. আব্দুস সাত্তার কারাগারে গেলেও, চার্জশিটভুক্ত আব্দুর রউফ এখনও পদে বহাল আছেন যা চাকরিবিধির পরিপন্থী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, গত এক যুগে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার আহসান হাবীবের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। তিনি এখন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে ফের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার ফোন ও বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে গঠিত তদন্ত কমিটি এখনও কাজ শুরু না করায় পরিস্থিতি অনিশ্চিত রয়ে গেছে। বর্তমান উপাচার্য ড. মো. আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, কমিটি কাজ করছে এবং সময়সাপেক্ষ হওয়ায় ধৈর্য ধরতে হবে। রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে এবং কোনো অনিয়ম-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক বছরও পূর্ণ হয়নি, এর মধ্যেই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) বিগত সময়ের প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। চক্রটি বিগত আওয়ামী লীগ আমলে ‘অর্গানোগ্রাম (টিওঅ্যান্ডই)’ অনুমোদন ছাড়াই ‘আইন লঙ্ঘন করে’ যে নিয়োগগুলো হয়েছিল, সেগুলোরও বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে।
বিগত সময়ের উপাচার্যদের ‘ঘনিষ্ঠজন’ হিসেবে পরিচিত সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক যবিপ্রবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব অবসরে গেলেও তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাকে ঘিরে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা পুরনো সিন্ডিকেট সক্রিয় করতে তৎপর বলে যবিপ্রবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, যবিপ্রবিতে বিগত সময়ের ‘নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম’ তদন্তে গঠিত কমিটি পাঁচ মাসেও কাজ শুরু করতে পারেনি। ফলে ওই চক্রটির চেষ্টা সফল হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
যবিপ্রবি সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম ২০১৯-২০ অর্থবছরে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। পরে কর্তৃপক্ষ নতুন প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনের জন্য ইউজিসিতে পাঠায়। ইউজিসি সেটি পর্যালোচনা করে সুপারিশসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে প্রেরণ করলেও শেষ পর্যন্ত অনুমোদন হয়নি। আর অনুমোদন ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিয়োগের সুযোগ নেই।
তবুও বিগত সরকারের শেষ চার বছরে অর্গানোগ্রামের বাইরে একের পর এক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অর্থ লেনদেনের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও পছন্দের প্রার্থীদের জন্য নানা অনিয়ম করা হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ গত ২২ আগস্ট ২০২৩-এ ‘ল অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মাহমুদ আশরাবীর বাবা ছিলেন রেজিস্ট্রারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার। যোগ্যতা সাপেক্ষে পদ না থাকায় বিজ্ঞপ্তি পরিবর্তন করে নিয়োগ দেয়া হয়। বিতর্কের পর তার বাবা পদত্যাগ করেন, তবে ছেলে চাকরিতে বহাল থাকেন।
এছাড়া রেজিস্ট্রারের আত্মীয়স্বজনসহ বেশ কয়েকজনকে অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।
২০২৩ সালের ২১ আগস্ট দুদক যবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার, ইবির সাবেক উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন ও উপ-পরিচালক আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে ৬১ লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে। এই মামলায় ড. আব্দুস সাত্তার কারাগারে গেলেও, চার্জশিটভুক্ত আব্দুর রউফ এখনও পদে বহাল আছেন যা চাকরিবিধির পরিপন্থী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, গত এক যুগে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার আহসান হাবীবের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। তিনি এখন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে ফের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার ফোন ও বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে গঠিত তদন্ত কমিটি এখনও কাজ শুরু না করায় পরিস্থিতি অনিশ্চিত রয়ে গেছে। বর্তমান উপাচার্য ড. মো. আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, কমিটি কাজ করছে এবং সময়সাপেক্ষ হওয়ায় ধৈর্য ধরতে হবে। রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে এবং কোনো অনিয়ম-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।