জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় উদ্যাপনের মুহূর্তে উপস্থিত না থেকে কেন কক্সবাজারে ভ্রমণে ছিলেন, এ বিষয়ে নিজ দলের শোকজের ব্যাখ্যা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। নোটিশের লিখিত জবাবে বৃহস্পতিবার,(৭ আগস্ট ২০২৫) তিনি বলেছেন, ‘রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে একান্তে চিন্তা-ভাবনা করতে’ তিনি সাগরপাড়ে গিয়েছিলেন।
বললেন, ‘আহ্বায়ককে জানিয়েই গিয়েছি। শোকজ বাস্তবভিত্তিক হয়নি’
৫ আগস্ট ঢাকায় যখন জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উদ্যাপিত হচ্ছিল, তখন কক্সবাজারে যান এনসিপির শীর্ষ পাঁচ নেতা। সেখানে দুপুরের দিকে একটি হোটেলে তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করছেন বলে কক্সবাজারে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে কক্সবাজারের ইনানীর ‘সীপার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’ হোটেলের (হোটেল রয়্যাল টিউলিপ নামে পরিচিত) সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভও প্রকাশ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হয়ে বিনা অনুমতিতে ‘ব্যক্তিগত সফরে’ কক্সবাজারে চলে যাওয়ায় নিজ দলের জেষ্ঠ্য পাঁচ নেতাকে গতকাল বুধবার কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয় এনসিপি।
নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, তার স্ত্রী এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এই পাঁচজনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় নোটিশে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তার নোটিশের জবাবে (লিখিত) বলেন, ‘আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম, তবে এই ঘোরার লক্ষ্য ছিল রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে একান্তে চিন্তাভাবনা করা। সাগরের পাড়ে বসে আমি গভীরভাবে ভাবতে চেয়েছি গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি, নাগরিক পার্টির কাঠামো, ভবিষ্যৎ গণপরিষদ এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধানের রূপরেখা নিয়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এটিকে কোনো অপরাধ মনে করি না, বরং একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য এটি একটি দায়িত্বশীল মানসিক চর্চা। গত ৫ আগস্ট আমার কোনো পূর্বনির্ধারিত রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল না। দল থেকেও আমাকে এ সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব বা কর্মপরিকল্পনা জানানো হয়নি।’
কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে অবহিত করেছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট রাতে দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার কোচিং অফিসের সহকর্মীর ফোন ব্যবহার করে আমাকে জানায় যে, সে তার স্কুল বন্ধুদের সঙ্গে দুই দিনের জন্য ঘুরতে যাবে। আমি তাকে আহ্বায়ক মহোদয়কে অবহিত করতে বলি এবং সে জানায় যে বিষয়টি জানাবে এবং আমাকেও জানাতে বলে যেহেতু তার নিজস্ব ফোন পদযাত্রায় চুরি হয়ে গিয়েছিল।’
নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট রাতে পার্টি অফিসে আমি আহ্বায়ক মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাই। একই রাতে আমি সদস্য সচিব মহোদয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি এবং জানতে পারি যে, রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে দল থেকে তিনজন প্রতিনিধি যাচ্ছেন এবং সেখানে আমার কোনো কাজ নাই। আমি কোনো দায়িত্বে না থাকায় এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও মানসিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সফরসঙ্গী হিসেবে সস্ত্রীক সারজিস আলম ও তাসনিম জারা-খালেদ সাইফুল্লাহ দম্পতি যুক্ত হন।’
কক্সবাজারে পৌঁছানোর পর গুজব ছড়িয়ে পড়ে দাবি করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা নাকি সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমি তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমকে জানাই যে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে জানায় সেখানে পিটার হাস নামে কেউ নেই। পরবর্তীতে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি তখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন।’
বিষয়টিকে ‘ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অতীতেও আমি এই হোটেলে থেকেছি এবং কখনও কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। অতীতেও আমি বেশ কয়েকবার ঘুরতে গিয়েছি, কিন্তু ঘুরতে আসলে দলের বিধিমালা লঙ্ঘন হয়, এমন কোনো বার্তা আমাকে কখনও দল থেকে দেয়া হয়নি।’
নাসিরুদ্দীন বলেন, ‘পরিস্থিতির আলোকে, আমি মনে করি শোকজ নোটিশটি বাস্তবভিত্তিক নয়। আমার সফর ছিল স্বচ্ছ, সাংগঠনিক নীতিমালাবিরোধী নয় এবং একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনার সুযোগ মাত্র। তবুও দলীয় শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে আমি এই লিখিত জবাব প্রদান করছি। অসভ্য জগতে সভ্যতার এক নিদর্শন হিসেবে। আমার বক্তব্য স্পষ্ট, ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়। কারণ ইতিহাস কেবল মিটিংয়ে নয়, অনেক সময় নির্জন চিন্তার ঘরে বা সাগরের পাড়েও জন্ম নেয়।’
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় উদ্যাপনের মুহূর্তে উপস্থিত না থেকে কেন কক্সবাজারে ভ্রমণে ছিলেন, এ বিষয়ে নিজ দলের শোকজের ব্যাখ্যা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। নোটিশের লিখিত জবাবে বৃহস্পতিবার,(৭ আগস্ট ২০২৫) তিনি বলেছেন, ‘রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে একান্তে চিন্তা-ভাবনা করতে’ তিনি সাগরপাড়ে গিয়েছিলেন।
বললেন, ‘আহ্বায়ককে জানিয়েই গিয়েছি। শোকজ বাস্তবভিত্তিক হয়নি’
৫ আগস্ট ঢাকায় যখন জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উদ্যাপিত হচ্ছিল, তখন কক্সবাজারে যান এনসিপির শীর্ষ পাঁচ নেতা। সেখানে দুপুরের দিকে একটি হোটেলে তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করছেন বলে কক্সবাজারে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে কক্সবাজারের ইনানীর ‘সীপার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’ হোটেলের (হোটেল রয়্যাল টিউলিপ নামে পরিচিত) সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভও প্রকাশ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হয়ে বিনা অনুমতিতে ‘ব্যক্তিগত সফরে’ কক্সবাজারে চলে যাওয়ায় নিজ দলের জেষ্ঠ্য পাঁচ নেতাকে গতকাল বুধবার কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয় এনসিপি।
নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, তার স্ত্রী এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এই পাঁচজনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় নোটিশে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তার নোটিশের জবাবে (লিখিত) বলেন, ‘আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম, তবে এই ঘোরার লক্ষ্য ছিল রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে একান্তে চিন্তাভাবনা করা। সাগরের পাড়ে বসে আমি গভীরভাবে ভাবতে চেয়েছি গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি, নাগরিক পার্টির কাঠামো, ভবিষ্যৎ গণপরিষদ এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধানের রূপরেখা নিয়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এটিকে কোনো অপরাধ মনে করি না, বরং একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য এটি একটি দায়িত্বশীল মানসিক চর্চা। গত ৫ আগস্ট আমার কোনো পূর্বনির্ধারিত রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল না। দল থেকেও আমাকে এ সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব বা কর্মপরিকল্পনা জানানো হয়নি।’
কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে অবহিত করেছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট রাতে দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার কোচিং অফিসের সহকর্মীর ফোন ব্যবহার করে আমাকে জানায় যে, সে তার স্কুল বন্ধুদের সঙ্গে দুই দিনের জন্য ঘুরতে যাবে। আমি তাকে আহ্বায়ক মহোদয়কে অবহিত করতে বলি এবং সে জানায় যে বিষয়টি জানাবে এবং আমাকেও জানাতে বলে যেহেতু তার নিজস্ব ফোন পদযাত্রায় চুরি হয়ে গিয়েছিল।’
নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট রাতে পার্টি অফিসে আমি আহ্বায়ক মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাই। একই রাতে আমি সদস্য সচিব মহোদয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি এবং জানতে পারি যে, রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে দল থেকে তিনজন প্রতিনিধি যাচ্ছেন এবং সেখানে আমার কোনো কাজ নাই। আমি কোনো দায়িত্বে না থাকায় এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও মানসিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সফরসঙ্গী হিসেবে সস্ত্রীক সারজিস আলম ও তাসনিম জারা-খালেদ সাইফুল্লাহ দম্পতি যুক্ত হন।’
কক্সবাজারে পৌঁছানোর পর গুজব ছড়িয়ে পড়ে দাবি করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা নাকি সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমি তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমকে জানাই যে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে জানায় সেখানে পিটার হাস নামে কেউ নেই। পরবর্তীতে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি তখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন।’
বিষয়টিকে ‘ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অতীতেও আমি এই হোটেলে থেকেছি এবং কখনও কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। অতীতেও আমি বেশ কয়েকবার ঘুরতে গিয়েছি, কিন্তু ঘুরতে আসলে দলের বিধিমালা লঙ্ঘন হয়, এমন কোনো বার্তা আমাকে কখনও দল থেকে দেয়া হয়নি।’
নাসিরুদ্দীন বলেন, ‘পরিস্থিতির আলোকে, আমি মনে করি শোকজ নোটিশটি বাস্তবভিত্তিক নয়। আমার সফর ছিল স্বচ্ছ, সাংগঠনিক নীতিমালাবিরোধী নয় এবং একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনার সুযোগ মাত্র। তবুও দলীয় শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে আমি এই লিখিত জবাব প্রদান করছি। অসভ্য জগতে সভ্যতার এক নিদর্শন হিসেবে। আমার বক্তব্য স্পষ্ট, ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়। কারণ ইতিহাস কেবল মিটিংয়ে নয়, অনেক সময় নির্জন চিন্তার ঘরে বা সাগরের পাড়েও জন্ম নেয়।’