জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত, খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত
চৌমুহনীসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত করার কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন -সংবাদ
গত এক মাস যাবৎ দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। জলাবদ্ধতার কারণে বর্তমানে লাখ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে আছে। হাজার হাজার পরিবার এখনও পানিবন্দী। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত দুদিন ধরে নোয়াখালীতে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে মানুষের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘ জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হয়েছে।
এদিকে, চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুপাড়ে নির্মিত বহুতলা ভবনসহ অবৈধ বিভিন্ন দখল উচ্ছেদ করার কাজ প্রশাসন অব্যাহত রেখেছে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হয়েছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় শুক্রবার,(৮ আগস্ট ২০২৫) দিনভর চৌমুহনী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ কলেজ রোড থেকে রশিদের দোকান এলাকায় বিলীন হওয়া খাল উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। এ সময় খালের ওপর নির্মিত অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ ভরাট হওয়া খালের বাঁধ কাটা এবং ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হয়। এছাড়াও, গত দুদিন ধরে পৌরসভাধীন আলীপুর ও নাজিরপুর এলাকার বিলুপ্ত নইমুদ্দিন খাল, গাবুয়া খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার করে এ এলাকার পানি নামানোর জন্য ভরাট হওয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশে বাঁধ কাটার কাজ অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এর পাশাপাশি চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল পরিষ্কার এবং খালের পানির স্রোত স্বাভাবিক করতে ময়লার ভাগাড় এবং খাল ভরাট করে খালের ওপর দেয়া কিছু বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চৌমুহনী পৌর এলাকাসহ উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ও আশপাশ জলমগ্ন ও জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষাকর্মসূচি ব্যাহত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এই জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠেছে।
জলাবদ্ধতার ফলে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, মহল্লা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়া-আসা কঠিন হয়ে পড়েছে, যার ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই অবস্থায় বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, প্রত্যন্ত এলাকায় হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুলে আসে, তারা কোমর সমান পানি ভেঙে স্কুলে যেতে হয়, ফলে প্রতিদিন তাদের জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও এমন পরিস্থিতিতে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গত এক মাস ধরে জলাবদ্ধতা চলছে। সড়ক, বসতঘর, স্কুল, মসজিদ, কবরস্থানসহ জনজীবনের প্রায় সবকিছু ডুবে আছে। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমর পানি। নৌকা ও বাঁশের সাঁকোই এখন চলাচলের ভরসা।
প্রশাসনের উদ্যোগ সত্ত্বেও জনদুর্ভোগ কমছে না। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে
উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ সড়ক ও বাড়িঘর ডুবে গেছে। আগের পানি নামতে না নামতেই নতুন বৃষ্টিতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, খাল-জলাশয় এবং পোল কালভার্ডের মুখ ভরাট হয়ে দ্রুত পানি সরতে না পারার কারণেই এই দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। বিশেষ করে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর, চৌমুহনী পৌরসভা, হাজীপুর, রসুলপুর, বেগমগঞ্জ, মিরওয়ারিশপুর, জিরতলী, শরীফপুর, কুতুবপুর ও কাদিরপুর ইউপির অনেক গ্রামীণ সড়ক ডুবে গেছে এবং বসতবাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
হাজীপুর এলাকার বাসিন্দা দলিল লেখক রেজোয়ান বলেন, ‘পানি নামছে ধীরগতিতে। গত এক মাস ধরে অনেক মানুষ এখনও পানিবন্দী। সড়ক ডুবে থাকায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।’
বানিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীসহ জেলা শহরের অলিগলির রাস্তাঘাট এবং অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ধীর গতিতে পানি নামার কারণে সড়ক ও রাস্তাঘাটের পাশাপাশি কিছু বাসা বাড়ি, শহরের সরকারি ও বেসরকারি অফিসসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পানি উঠে গেছে, যা সেবা কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউনিয়নসহ চৌমুহনী পৌরসভার অধিকাংশ এলাকার অবস্থা বর্তমানে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই বেগমগঞ্জে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে বেগমগঞ্জবাসী দ্রুত মুক্তি চায়। জনগণের এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুপাড়ে নির্মিত বহুতলা ভবনসহ অবৈধ বিভিন্ন দখলা উচ্ছেদ কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন।
এ পর্যন্ত খালের ওপর নির্মিত একাধিক ভবনসহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দখলা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাশাপাশি চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল পরিষ্কার এবং খালের পানির স্রোত স্বাভাবিক করতে ময়লার ভাগাড় এবং খাল ভরাট করে খালের ওপর দেয়া কিছু বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে।
এ অভিযানকে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন। আলীপুর নিবাসী জলিল মিয়া বলেন, ‘যারা এই খালগুলো ভরাট করে দখল করে বাড়ি বানিয়েছে, তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। এই খাল দিয়ে পানি নামা অব্যাহত থাকলে পৌর এলাকার আলীপুর, নাজিরপুর এলাকার পানি দ্রুত নেমে যাবে।’
কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে চলে গেছে। অধিকাংশ সরকারি খাল ভরাটসহ খালের ওপর গড়ে উঠেছে ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ময়লা আবর্জনা ফেলায় খালগুলো বর্তমানে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই চৌমুহনী পৌর এলাকা ও বেগমগঞ্জে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বেগমগঞ্জ) মো. রাসেল উদ্দিন জানান, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের কর্মকা- অব্যাহত রয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চৌমুহনী পৌর প্রশাসক জানালেন, ‘বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকর্ড ও নকশা অনুযায়ী সরকারি রেকর্ডকৃত খাল উদ্ধার কাজ চলছে। জরিপ রেকর্ড অনুযায়ী খাল উদ্ধারসহ সব অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ কাজে আমরা সবারর সহযোগিতা কামনা করছি।’
জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত, খালপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত
চৌমুহনীসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত করার কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন -সংবাদ
শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫
গত এক মাস যাবৎ দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। জলাবদ্ধতার কারণে বর্তমানে লাখ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে আছে। হাজার হাজার পরিবার এখনও পানিবন্দী। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত দুদিন ধরে নোয়াখালীতে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে মানুষের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘ জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হয়েছে।
এদিকে, চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুপাড়ে নির্মিত বহুতলা ভবনসহ অবৈধ বিভিন্ন দখল উচ্ছেদ করার কাজ প্রশাসন অব্যাহত রেখেছে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হয়েছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় শুক্রবার,(৮ আগস্ট ২০২৫) দিনভর চৌমুহনী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ কলেজ রোড থেকে রশিদের দোকান এলাকায় বিলীন হওয়া খাল উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। এ সময় খালের ওপর নির্মিত অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ ভরাট হওয়া খালের বাঁধ কাটা এবং ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হয়। এছাড়াও, গত দুদিন ধরে পৌরসভাধীন আলীপুর ও নাজিরপুর এলাকার বিলুপ্ত নইমুদ্দিন খাল, গাবুয়া খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার করে এ এলাকার পানি নামানোর জন্য ভরাট হওয়া গুরুত্বপূর্ণ অংশে বাঁধ কাটার কাজ অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এর পাশাপাশি চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল পরিষ্কার এবং খালের পানির স্রোত স্বাভাবিক করতে ময়লার ভাগাড় এবং খাল ভরাট করে খালের ওপর দেয়া কিছু বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চৌমুহনী পৌর এলাকাসহ উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ও আশপাশ জলমগ্ন ও জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষাকর্মসূচি ব্যাহত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এই জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠেছে।
জলাবদ্ধতার ফলে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, মহল্লা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়া-আসা কঠিন হয়ে পড়েছে, যার ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই অবস্থায় বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, প্রত্যন্ত এলাকায় হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুলে আসে, তারা কোমর সমান পানি ভেঙে স্কুলে যেতে হয়, ফলে প্রতিদিন তাদের জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও এমন পরিস্থিতিতে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গত এক মাস ধরে জলাবদ্ধতা চলছে। সড়ক, বসতঘর, স্কুল, মসজিদ, কবরস্থানসহ জনজীবনের প্রায় সবকিছু ডুবে আছে। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমর পানি। নৌকা ও বাঁশের সাঁকোই এখন চলাচলের ভরসা।
প্রশাসনের উদ্যোগ সত্ত্বেও জনদুর্ভোগ কমছে না। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে
উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ সড়ক ও বাড়িঘর ডুবে গেছে। আগের পানি নামতে না নামতেই নতুন বৃষ্টিতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, খাল-জলাশয় এবং পোল কালভার্ডের মুখ ভরাট হয়ে দ্রুত পানি সরতে না পারার কারণেই এই দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। বিশেষ করে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর, চৌমুহনী পৌরসভা, হাজীপুর, রসুলপুর, বেগমগঞ্জ, মিরওয়ারিশপুর, জিরতলী, শরীফপুর, কুতুবপুর ও কাদিরপুর ইউপির অনেক গ্রামীণ সড়ক ডুবে গেছে এবং বসতবাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
হাজীপুর এলাকার বাসিন্দা দলিল লেখক রেজোয়ান বলেন, ‘পানি নামছে ধীরগতিতে। গত এক মাস ধরে অনেক মানুষ এখনও পানিবন্দী। সড়ক ডুবে থাকায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।’
বানিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীসহ জেলা শহরের অলিগলির রাস্তাঘাট এবং অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ধীর গতিতে পানি নামার কারণে সড়ক ও রাস্তাঘাটের পাশাপাশি কিছু বাসা বাড়ি, শহরের সরকারি ও বেসরকারি অফিসসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পানি উঠে গেছে, যা সেবা কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউনিয়নসহ চৌমুহনী পৌরসভার অধিকাংশ এলাকার অবস্থা বর্তমানে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই বেগমগঞ্জে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে বেগমগঞ্জবাসী দ্রুত মুক্তি চায়। জনগণের এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল অবৈধ দখলমুক্ত ও সরকারি খাল ভরাট করে খালের দুপাড়ে নির্মিত বহুতলা ভবনসহ অবৈধ বিভিন্ন দখলা উচ্ছেদ কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন।
এ পর্যন্ত খালের ওপর নির্মিত একাধিক ভবনসহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দখলা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাশাপাশি চৌমুহনী শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল পরিষ্কার এবং খালের পানির স্রোত স্বাভাবিক করতে ময়লার ভাগাড় এবং খাল ভরাট করে খালের ওপর দেয়া কিছু বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে।
এ অভিযানকে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন। আলীপুর নিবাসী জলিল মিয়া বলেন, ‘যারা এই খালগুলো ভরাট করে দখল করে বাড়ি বানিয়েছে, তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। এই খাল দিয়ে পানি নামা অব্যাহত থাকলে পৌর এলাকার আলীপুর, নাজিরপুর এলাকার পানি দ্রুত নেমে যাবে।’
কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের অধিকাংশ খাল অবৈধ দখলে চলে গেছে। অধিকাংশ সরকারি খাল ভরাটসহ খালের ওপর গড়ে উঠেছে ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ময়লা আবর্জনা ফেলায় খালগুলো বর্তমানে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই চৌমুহনী পৌর এলাকা ও বেগমগঞ্জে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বেগমগঞ্জ) মো. রাসেল উদ্দিন জানান, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের কর্মকা- অব্যাহত রয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চৌমুহনী পৌর প্রশাসক জানালেন, ‘বাংলাদেশ জরিপ (বিএস) রেকর্ড ও নকশা অনুযায়ী সরকারি রেকর্ডকৃত খাল উদ্ধার কাজ চলছে। জরিপ রেকর্ড অনুযায়ী খাল উদ্ধারসহ সব অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ কাজে আমরা সবারর সহযোগিতা কামনা করছি।’