আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে, মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আনা বড় চ্যালেঞ্জ
আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে, মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আনা বড় চ্যালেঞ্জ
নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে, তাই ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, নির্বাচন কাঠামো ও জনবল গুছিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সিইসি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টরা আগামী নির্বাচনে কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করবে না। দেশের ১৮ কোটি মানুষের হয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের লক্ষ্য।” তিনি আরও জানান, গত নির্বাচনে যেসব প্রিজাইডিং অফিসার ভোট গ্রহণে সমস্যা তৈরি করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, “ভোট দেওয়া যেমন নাগরিক দায়িত্ব, তেমনি এটি ঈমানি দায়িত্বও।” তিনি উল্লেখ করেন, এআইএ ব্যবহারের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, যা মোকাবিলায় কমিশন কাজ করছে। তিনি সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে তাদের অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া হবে। তবে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে সরাসরি সম্প্রচার না করার আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও বিভাগের প্রতিটি জেলার নির্বাচনি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন
প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রংপুর নগরীর উত্তম এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ডিসি, এসপি সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে কাউকেই বিশৃঙ্খলা করার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। যে কেউ অরাজকতা করার চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে। নির্বাচনে কেউ একজন গোলমাল করলেই বা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলেই সঙ্গে সঙ্গে ওই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হবে না; সঠিক তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে—কোনো ধরনের অরাজকতা কাউকেই করতে দেওয়া হবে না।
আগে নির্বাচনী কর্মকর্তা ও প্রশাসনের যারা বিগত প্রহসনের নির্বাচনে সহায়তা করেছিলেন, তাদের কাউকেই এবারের নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হবে না বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, এবার আমরা প্রশাসনে সৎ কর্মকর্তা সহ নতুন করে পোলিং ও প্রিজাইডিং অফিসার দ্বারা নির্বাচন করব। এরই মধ্যে যাচাই-বাছাই ও স্ক্রুটিনি চলছে।
রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, ডিসি, এসপি ও পুলিশ কমিশনার তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে রংপুর বিভাগে সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। আশা করছি, জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করবেন।