ছবি : অনলাইন থেকে সংগৃহীত
বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল-ফরিদপুর অংশের ১২৪ কিলোমিটার থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার অবস্থা চরম নাজুক। চলতি বর্ষা মৌসুমে লাগাতার ভারী বর্ষণে বরিশাল সড়ক জোনের প্রায় ১৭শ’ কিলোমিটার জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা সংযোগ সড়ক এবং দেশের ৮ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের অবস্থা নড়বড়ে।
তবে সড়ক অধিদপ্তর থেকে প্রতিদিন প্রতিটি সড়কের চলমান রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত কাজ অব্যাহত রয়েছে।
নজিরবিহীন ভারী বর্ষায় বিটুমিনাস কার্পেটিংয়ের সড়ক ও মহাসড়কগুলো ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সঙ্গে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক নিয়মিত চলাচল করায় পরিস্থিতি ক্রমশ নাজুক হয়ে উঠেছে।
এছাড়া লাগাতার ভারী বর্ষণে বিটুমিনাস সড়কগুলোর মেরামতও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তবে প্রতিটি সড়কে চলমান মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এ লক্ষ্যে সড়ক অধিদপ্তরের একাধিক বিশেষ টিম মাঠে রয়েছে।
শুধুমাত্র বরিশাল-ফরিদপুর অংশের ১২৪ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক মেরামত ও উন্নয়নে প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর মূল বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম বৃষ্টিপাতের পর ২২ থেকে ২৬ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর হয়ে ভারতের ভুবনেশ্বর ও কলকাতার মধ্যবর্তী এলাকা অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়।
গত বছর নভেম্বর থেকে চলতি এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পর মে মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ২৩৯ মিলিমিটারের বিপরীতে ২৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল।
জুন মাসে সারাদেশে সামগ্রিক বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের ১৯.৩% কম হলেও বরিশালে তা ছিল ১২.৩% বেশি।
জুলাই মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ৫৩৫ মিলিমিটারের পরিবর্তে ৮৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের প্রায় ৬৫% বেশি।
এগিয়ে আগস্টেও ৩৮০-৪২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। প্রথম সপ্তাহেই বরিশালে ৭০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
এই নজিরবিহীন বৃষ্টিপাতে ফসল ও মৎস সেক্টরের পর সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত খাত হয়েছে সড়ক পরিবহন সেক্টর। বরিশাল সড়ক জোনের প্রায় ১৬শ’ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়কের প্রায় প্রতিটিই পরিবেশগত দুর্যোগের কবলে।
এগুলো মেরামতে কত টাকা প্রয়োজন হবে তা এখনও সড়ক অধিদপ্তর বলতে পারছে না কারণ বর্ষণ এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে চলতি মাসের মধ্যে পরিপূর্ণ প্রাক্কলন তৈরি করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল-ফরিদপুর অংশের বরিশাল-ভুরঘাটার ৪৯ কিলোমিটারের মধ্যে দুটি প্যাকেজে ১৪ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণসহ পুনর্বাসনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং মূল্যায়নের কাজ চলছে।
প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ কাজে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে আগামী অক্টোবরের মধ্যেই কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় বরিশাল মহানগরীসংলগ্ন গড়িয়ারপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এবং জয়শ্রী থেকে কাসেমাবাদ পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার অংশে প্রয়োজনীয় প্রশস্তকরণসহ পূর্ণাঙ্গ ওভারলে করার জন্য ৫০ কোটি টাকার দরপত্র মূল্যায়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সঙ্গে কাসেমাবাদ থেকে বার্থি পর্যন্ত আরও ১১ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও ওভারলের জন্য প্রায় ৩০ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে, জানিয়েছেন বরিশাল সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।
ভুরঘাটা থেকে মোস্তফাপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক মেরামতের লক্ষ্যে সব পদক্ষেপ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
মোস্তফাপুর থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার অংশে দুটি প্যাকেজে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার, প্রশস্তকরণ ও ওভারলের কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে।
একই মহাসড়কের টেকেরহাট থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মহাসড়কের সংস্কার, প্রশস্তকরণ ও ওভারলের কাজ চলমান রয়েছে। বর্ষা শেষ হলেই এ অংশে ওভারলে সম্পন্ন হবে বলে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল জানিয়েছে।
এ অংশে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর শহর পর্যন্ত অবশিষ্ট ৩০ কিলোমিটার অংশের মেরামতসহ ওভারলে কাজের জন্য ইতোমধ্যে কয়েকটি প্যাকেজে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এসব প্যাকেজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
বরিশাল সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও সড়ক অধিদপ্তরের মতে, এবারের নজিরবিহীন বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের ৮ নম্বর জাতীয় মহাসড়কসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব সড়কের অবস্থা নাজুক হলেও ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
তাদের মতে, ১৯৬০-৬৫ সালে মাত্র ৫ টন বহনক্ষমতা সম্পন্ন বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা সড়ক নির্মাণের পর এখন তার আয়ুসীমা শেষ হয়েছে।
উপরন্তু মাত্র ৫ টন ধারণক্ষমতার এই মহাসড়কে বর্তমানে ৩৫ টন পণ্য বোঝাই ট্রাকও চলাচল করছে।
গত ৬০ বছরে মহাসড়কটি পুনঃনির্মাণের কথা থাকলেও তা হয়নি, শুধুমাত্র জরুরি জোড়াতালি দিয়ে সচল রাখা হয়েছে।
এই মহাসড়কের ওপরই রাজধানী ঢাকা ছাড়াও রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের সঙ্গে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল।
পদ্মা সেতু চালুর পরে এ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু মহাসড়কের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়নি।
পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় থেকে এ অঞ্চলের ২১টি জেলার মহাসড়কের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে বরিশাল-ফরিদপুর ও বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত পথনকশা তৈরি হলেও এরপর আর কোনো পদক্ষেপ হয়নি।
ভূমি অধিগ্রহণ কাজও গত ৭ বছরেও শেষ হয়নি। ২০১৮ সালে ভূমি অধিগ্রহণে বরাদ্দকৃত ১,৮৫৪ কোটি টাকার বদলে এখন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশন পূর্বের বরাদ্দকৃত অর্থে ফরিদপুর থেকে বরিশালের লেবুখালী পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক পূর্বের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও পথনকশা বাদ দিয়ে নতুন করে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে, কিন্তু সড়ক অধিদপ্তর এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক পরিবহনের একমাত্র মহাসড়কের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।
ছবি : অনলাইন থেকে সংগৃহীত
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল-ফরিদপুর অংশের ১২৪ কিলোমিটার থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার অবস্থা চরম নাজুক। চলতি বর্ষা মৌসুমে লাগাতার ভারী বর্ষণে বরিশাল সড়ক জোনের প্রায় ১৭শ’ কিলোমিটার জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা সংযোগ সড়ক এবং দেশের ৮ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের অবস্থা নড়বড়ে।
তবে সড়ক অধিদপ্তর থেকে প্রতিদিন প্রতিটি সড়কের চলমান রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত কাজ অব্যাহত রয়েছে।
নজিরবিহীন ভারী বর্ষায় বিটুমিনাস কার্পেটিংয়ের সড়ক ও মহাসড়কগুলো ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সঙ্গে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক নিয়মিত চলাচল করায় পরিস্থিতি ক্রমশ নাজুক হয়ে উঠেছে।
এছাড়া লাগাতার ভারী বর্ষণে বিটুমিনাস সড়কগুলোর মেরামতও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তবে প্রতিটি সড়কে চলমান মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এ লক্ষ্যে সড়ক অধিদপ্তরের একাধিক বিশেষ টিম মাঠে রয়েছে।
শুধুমাত্র বরিশাল-ফরিদপুর অংশের ১২৪ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক মেরামত ও উন্নয়নে প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর মূল বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম বৃষ্টিপাতের পর ২২ থেকে ২৬ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর হয়ে ভারতের ভুবনেশ্বর ও কলকাতার মধ্যবর্তী এলাকা অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়।
গত বছর নভেম্বর থেকে চলতি এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পর মে মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ২৩৯ মিলিমিটারের বিপরীতে ২৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল।
জুন মাসে সারাদেশে সামগ্রিক বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের ১৯.৩% কম হলেও বরিশালে তা ছিল ১২.৩% বেশি।
জুলাই মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ৫৩৫ মিলিমিটারের পরিবর্তে ৮৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের প্রায় ৬৫% বেশি।
এগিয়ে আগস্টেও ৩৮০-৪২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। প্রথম সপ্তাহেই বরিশালে ৭০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
এই নজিরবিহীন বৃষ্টিপাতে ফসল ও মৎস সেক্টরের পর সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত খাত হয়েছে সড়ক পরিবহন সেক্টর। বরিশাল সড়ক জোনের প্রায় ১৬শ’ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়কের প্রায় প্রতিটিই পরিবেশগত দুর্যোগের কবলে।
এগুলো মেরামতে কত টাকা প্রয়োজন হবে তা এখনও সড়ক অধিদপ্তর বলতে পারছে না কারণ বর্ষণ এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে চলতি মাসের মধ্যে পরিপূর্ণ প্রাক্কলন তৈরি করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল-ফরিদপুর অংশের বরিশাল-ভুরঘাটার ৪৯ কিলোমিটারের মধ্যে দুটি প্যাকেজে ১৪ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণসহ পুনর্বাসনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং মূল্যায়নের কাজ চলছে।
প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ কাজে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে আগামী অক্টোবরের মধ্যেই কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় বরিশাল মহানগরীসংলগ্ন গড়িয়ারপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এবং জয়শ্রী থেকে কাসেমাবাদ পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার অংশে প্রয়োজনীয় প্রশস্তকরণসহ পূর্ণাঙ্গ ওভারলে করার জন্য ৫০ কোটি টাকার দরপত্র মূল্যায়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সঙ্গে কাসেমাবাদ থেকে বার্থি পর্যন্ত আরও ১১ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও ওভারলের জন্য প্রায় ৩০ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে, জানিয়েছেন বরিশাল সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।
ভুরঘাটা থেকে মোস্তফাপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক মেরামতের লক্ষ্যে সব পদক্ষেপ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
মোস্তফাপুর থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার অংশে দুটি প্যাকেজে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার, প্রশস্তকরণ ও ওভারলের কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে।
একই মহাসড়কের টেকেরহাট থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মহাসড়কের সংস্কার, প্রশস্তকরণ ও ওভারলের কাজ চলমান রয়েছে। বর্ষা শেষ হলেই এ অংশে ওভারলে সম্পন্ন হবে বলে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল জানিয়েছে।
এ অংশে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর শহর পর্যন্ত অবশিষ্ট ৩০ কিলোমিটার অংশের মেরামতসহ ওভারলে কাজের জন্য ইতোমধ্যে কয়েকটি প্যাকেজে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এসব প্যাকেজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
বরিশাল সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও সড়ক অধিদপ্তরের মতে, এবারের নজিরবিহীন বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের ৮ নম্বর জাতীয় মহাসড়কসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব সড়কের অবস্থা নাজুক হলেও ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
তাদের মতে, ১৯৬০-৬৫ সালে মাত্র ৫ টন বহনক্ষমতা সম্পন্ন বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা সড়ক নির্মাণের পর এখন তার আয়ুসীমা শেষ হয়েছে।
উপরন্তু মাত্র ৫ টন ধারণক্ষমতার এই মহাসড়কে বর্তমানে ৩৫ টন পণ্য বোঝাই ট্রাকও চলাচল করছে।
গত ৬০ বছরে মহাসড়কটি পুনঃনির্মাণের কথা থাকলেও তা হয়নি, শুধুমাত্র জরুরি জোড়াতালি দিয়ে সচল রাখা হয়েছে।
এই মহাসড়কের ওপরই রাজধানী ঢাকা ছাড়াও রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের সঙ্গে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল।
পদ্মা সেতু চালুর পরে এ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু মহাসড়কের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়নি।
পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় থেকে এ অঞ্চলের ২১টি জেলার মহাসড়কের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে বরিশাল-ফরিদপুর ও বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত পথনকশা তৈরি হলেও এরপর আর কোনো পদক্ষেপ হয়নি।
ভূমি অধিগ্রহণ কাজও গত ৭ বছরেও শেষ হয়নি। ২০১৮ সালে ভূমি অধিগ্রহণে বরাদ্দকৃত ১,৮৫৪ কোটি টাকার বদলে এখন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশন পূর্বের বরাদ্দকৃত অর্থে ফরিদপুর থেকে বরিশালের লেবুখালী পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক পূর্বের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও পথনকশা বাদ দিয়ে নতুন করে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে, কিন্তু সড়ক অধিদপ্তর এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক পরিবহনের একমাত্র মহাসড়কের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।