জলাবদ্ধতায় জরাজীর্ণ বরিশালের আগৈলঝাড়ার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
বরিশালের আগৈলঝাড়ার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনে জীবন ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। বৃষ্টি হলে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, কারণ ছাদ দিয়ে পানি চুঁইয়ে পড়ে ফ্লোর তলিয়ে যায়। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডে ছাদের পানি পড়ে ফ্লোর তলিয়ে গেছে।
ভবনের ভিতরে ময়লা ও অপরিষ্কার পানির কারণে রোগীরা বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারপাশের ড্রেনে ময়লা জমে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভবনের পিছনে ময়লা জমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। ভবন সংস্কারের জন্য তিনবার ঊর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিত আবেদন করা হলেও এখনও কোনও সুফল মেলেনি।
স্থানীয় ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা এলাকায় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়, জনসাধারণের চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে। ২০০৪ সালে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সেবা ও পরিবেশ উন্নত হয়নি।
ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে রোগীদের গায়ে পানি পড়ে ভিজে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডের ফ্লোরে পানি জমে রোগীরা বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়াও ভবনের বিভিন্ন স্থানে দিয়ে পানি চুঁইয়ে পড়ছে। বর্তমানে রোগীরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছেন। কমপ্লেক্সটির জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে অসুস্থ রোগীরা গরম ও অন্ধকারে চরম বিপাকে পড়েন। পানি সরবরাহের সমস্যার কারণে দুর্গন্ধযুক্ত ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারছেন না রোগীরা। বৃষ্টির পানি কমপ্লেক্সটির চারপাশে জমে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সংস্কারের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হলেও এখনও কোনও সুফল পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী দেলোয়ার মল্লিক, জনি সরদার ও মাহিনুর বেগম বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীরা সুস্থ হওয়ার জন্য ভর্তি হয়, কিন্তু মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ ও পানি থাকে না, যার কারণে ওয়াশরুম দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যায় এবং ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ফ্লোর তলিয়ে যায়।” আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিশির কুমার গাইন জানান, “কমপ্লেক্সের দ্বিতল ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ওয়ার্ডের ফ্লোর তলিয়ে যায়। এতে দ্বিতীয় তলার বাথরুম ও টয়লেটের নোংরা পানি বের হয়ে মিশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। ছাদের পানি চুঁইয়ে বৈদ্যুতিক পাখা শর্ট সার্কিট হয়ে যায়। অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ ব্যাহত হয়। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অধিকাংশ সময় ধারণক্ষমতার চেয়ে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ভর্তি থাকে। একেকজন রোগীকে দেখাশোনার জন্য ৪-৫ জন লোক আসে। তাদের চলাচলের কারণে ওয়ার্ডের ফ্লোর কর্দমাক্ত হয়ে যায়, যা প্রতিদিন ২-৩ বার পরিষ্কার করেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হয় না। এসব কারণে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে।” এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. গোলাম মোর্শেদ সজীব সাংবাদিকদের বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ছে, যার ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। ভবন সংস্কারের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।”
জলাবদ্ধতায় জরাজীর্ণ বরিশালের আগৈলঝাড়ার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
বরিশালের আগৈলঝাড়ার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনে জীবন ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। বৃষ্টি হলে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, কারণ ছাদ দিয়ে পানি চুঁইয়ে পড়ে ফ্লোর তলিয়ে যায়। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডে ছাদের পানি পড়ে ফ্লোর তলিয়ে গেছে।
ভবনের ভিতরে ময়লা ও অপরিষ্কার পানির কারণে রোগীরা বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারপাশের ড্রেনে ময়লা জমে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় ভবনের পিছনে ময়লা জমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। ভবন সংস্কারের জন্য তিনবার ঊর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিত আবেদন করা হলেও এখনও কোনও সুফল মেলেনি।
স্থানীয় ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা এলাকায় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়, জনসাধারণের চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে। ২০০৪ সালে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সেবা ও পরিবেশ উন্নত হয়নি।
ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে রোগীদের গায়ে পানি পড়ে ভিজে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডের ফ্লোরে পানি জমে রোগীরা বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়াও ভবনের বিভিন্ন স্থানে দিয়ে পানি চুঁইয়ে পড়ছে। বর্তমানে রোগীরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছেন। কমপ্লেক্সটির জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে অসুস্থ রোগীরা গরম ও অন্ধকারে চরম বিপাকে পড়েন। পানি সরবরাহের সমস্যার কারণে দুর্গন্ধযুক্ত ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারছেন না রোগীরা। বৃষ্টির পানি কমপ্লেক্সটির চারপাশে জমে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সংস্কারের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হলেও এখনও কোনও সুফল পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগী দেলোয়ার মল্লিক, জনি সরদার ও মাহিনুর বেগম বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীরা সুস্থ হওয়ার জন্য ভর্তি হয়, কিন্তু মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ ও পানি থাকে না, যার কারণে ওয়াশরুম দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যায় এবং ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৃষ্টির সময় ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ফ্লোর তলিয়ে যায়।” আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিশির কুমার গাইন জানান, “কমপ্লেক্সের দ্বিতল ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ওয়ার্ডের ফ্লোর তলিয়ে যায়। এতে দ্বিতীয় তলার বাথরুম ও টয়লেটের নোংরা পানি বের হয়ে মিশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। ছাদের পানি চুঁইয়ে বৈদ্যুতিক পাখা শর্ট সার্কিট হয়ে যায়। অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহ ব্যাহত হয়। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অধিকাংশ সময় ধারণক্ষমতার চেয়ে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ভর্তি থাকে। একেকজন রোগীকে দেখাশোনার জন্য ৪-৫ জন লোক আসে। তাদের চলাচলের কারণে ওয়ার্ডের ফ্লোর কর্দমাক্ত হয়ে যায়, যা প্রতিদিন ২-৩ বার পরিষ্কার করেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হয় না। এসব কারণে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে।” এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. গোলাম মোর্শেদ সজীব সাংবাদিকদের বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ছে, যার ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। ভবন সংস্কারের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।”