রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত একটি শিশু -সংবাদ
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গতকাল পর্যন্ত মোট ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখনই জরুরি পদক্ষেপ না নিলে অবস্থার আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে নতুন করে আরও ৪৪৮ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন চট্টগ্রাম বিভাগে, দু’জন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল ১০ আগস্ট পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৪ হাজার ১৮৩ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চলতি মাসের গত ১০ দিনে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশালে ৯৫জন, চট্টগ্রামে ৮১ জন, ঢাকা বিভাগে ৮৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৪ জন, ঢাকা দক্ষিণে ৪৬ জন, খুলনা বিভাগে ৫৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৮ জন, রাজশাহীতে ৩৪ জন, রংপুরে ৭ জন, সিলেটে ২ জন।
বয়স বেধে আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের শিশু ২৪টি , ৬-১০ বছর বয়সের ৩৬টি, ১১-১৫ বছর বয়সের ২১ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৫১ জন, ৭১-৭৫ বছর বয়সের ৩ জন। বয়স বেধে দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
হাসপাতালের তথ্যমতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭২ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৩৮ জন, সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৮ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৪ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২৮ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ২৯৬ জন ভর্তি আছে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখনও ১৩শ’র বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে।
কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ কবিরুল বাসার ডেঙ্গু নিয়ে তার এক প্রতিবেদনে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং জনসচেতনতার অভাবের ফলে এডিস মশাবাহিত এ রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। বর্তমানে ডেঙ্গু আগের চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।
এখন ডেঙ্গুজ্বর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে আক্রান্ত বাড়ছে। সম্প্রতি বরগুনায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ টিম গিয়ে ডেঙ্গুজ্বর বৃদ্ধির ক্লু উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, এডিস মশা আগে দিনের বেলায় বেশি কামড়াত। বিশেষ করে সকালে ও সন্ধ্যায় মানুষকে কামড়াত। এখন ডেঙ্গু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাতেও কামড়ায়।
আর এই মশার বৈশিষ্ট্য সাধারণ পরিষ্কার ও জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। যেমন- ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, ফিজের ট্রে, পানি জমিয়ে রাখা কলস বা মটকা ও এসির পানি জমানো স্থান ইত্যাদি।
ডেঙ্গু দেশের জন্য ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে উঠেছে। এটি প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগ, জনসচেতনতা এবং ব্যক্তিগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা একসঙ্গে করতে হবে। প্রতিরোধের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করছেন।
রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত একটি শিশু -সংবাদ
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গতকাল পর্যন্ত মোট ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখনই জরুরি পদক্ষেপ না নিলে অবস্থার আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে নতুন করে আরও ৪৪৮ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন চট্টগ্রাম বিভাগে, দু’জন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল ১০ আগস্ট পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৪ হাজার ১৮৩ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চলতি মাসের গত ১০ দিনে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশালে ৯৫জন, চট্টগ্রামে ৮১ জন, ঢাকা বিভাগে ৮৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৪ জন, ঢাকা দক্ষিণে ৪৬ জন, খুলনা বিভাগে ৫৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৮ জন, রাজশাহীতে ৩৪ জন, রংপুরে ৭ জন, সিলেটে ২ জন।
বয়স বেধে আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের শিশু ২৪টি , ৬-১০ বছর বয়সের ৩৬টি, ১১-১৫ বছর বয়সের ২১ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৫১ জন, ৭১-৭৫ বছর বয়সের ৩ জন। বয়স বেধে দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
হাসপাতালের তথ্যমতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭২ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৩৮ জন, সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৮ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৪ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২৮ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ২৯৬ জন ভর্তি আছে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখনও ১৩শ’র বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে।
কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ কবিরুল বাসার ডেঙ্গু নিয়ে তার এক প্রতিবেদনে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং জনসচেতনতার অভাবের ফলে এডিস মশাবাহিত এ রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। বর্তমানে ডেঙ্গু আগের চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।
এখন ডেঙ্গুজ্বর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে আক্রান্ত বাড়ছে। সম্প্রতি বরগুনায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ টিম গিয়ে ডেঙ্গুজ্বর বৃদ্ধির ক্লু উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, এডিস মশা আগে দিনের বেলায় বেশি কামড়াত। বিশেষ করে সকালে ও সন্ধ্যায় মানুষকে কামড়াত। এখন ডেঙ্গু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাতেও কামড়ায়।
আর এই মশার বৈশিষ্ট্য সাধারণ পরিষ্কার ও জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। যেমন- ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, ফিজের ট্রে, পানি জমিয়ে রাখা কলস বা মটকা ও এসির পানি জমানো স্থান ইত্যাদি।
ডেঙ্গু দেশের জন্য ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে উঠেছে। এটি প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগ, জনসচেতনতা এবং ব্যক্তিগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা একসঙ্গে করতে হবে। প্রতিরোধের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করছেন।