বিদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে’ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ‘প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফর’ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সম্প্রতি বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, কলকাতার একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে আওয়ামী লীগের একটি ‘পার্টি অফিস’ চালু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে, তাই তাদের দেশের বাইরে কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তারা দেশজুড়ে কোনো অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিনা সেটিও আমরা খতিয়ে দেখছি।’
শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। দলটির প্রধান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিনই দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। তিন দিন পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
৫ আগাস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। শীর্ষ নেতাদের একটি অংশ জেলে, বাকিরা পলাতক। এ অবস্থায় নেতৃত্বশূন্যতায় চরম দিশেহারা তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। তবে, কয়েক মাসে সেই বিপর্যয় কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে দলটি। দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয় অনলাইন নেটওয়ার্ক (যোগযোগ)। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো শেখ হাসিনার সংবাদ, বিবৃতি প্রচার শুরু করে।
এরপর অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশ ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে (হাসিনাকে) যদি ভারত রাখতে চায় তাহলে তাকে (হাসিনাকে) চুপ থাকতে হবে।
এরপর, নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে গত বছর ১০ নভেম্বর দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। যদিও শেষ পর্যন্ত রাস্তায় নামতে পারেনি দলটি। পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সেদিন মাঠ দখলে রেখেছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর ছয় মাসের মাথায় ফের কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ১৬ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতাল-অবরোধ ঘোষণা করে দলটি। নিজেদের দাবির পক্ষে জনসমর্থন আদায়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী দুই সপ্তাহ সারাদেশে লিফলেট বিতরণ ও বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচিও দেয়া হয়। এসব কর্মসূচিও সফল হয়নি।
তবে নেট দুনিয়ায় সরব ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, বিবৃতি, ঘোষণা জনমনে ‘বিভ্রান্তি তৈরি করছে’ বলে অভিযোগ আসছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধীদের গড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ ইসলামপন্থি কয়েকটি দলের নেতাকর্মীদের বক্তব্যে।
এরপর, চলতি বছর ১২ মে মাসে সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে গেজেট প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই অভ্যুত্থান দমাতে ‘গুম, খুন, গণহত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, মানবতাবিরোধী অপরাধের’ জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার কথা বলা হয় গেজেটে। একই দিনে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। এতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়।
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
বিদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে’ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ‘প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফর’ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সম্প্রতি বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, কলকাতার একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে আওয়ামী লীগের একটি ‘পার্টি অফিস’ চালু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে, তাই তাদের দেশের বাইরে কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তারা দেশজুড়ে কোনো অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিনা সেটিও আমরা খতিয়ে দেখছি।’
শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। দলটির প্রধান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিনই দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। তিন দিন পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
৫ আগাস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। শীর্ষ নেতাদের একটি অংশ জেলে, বাকিরা পলাতক। এ অবস্থায় নেতৃত্বশূন্যতায় চরম দিশেহারা তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। তবে, কয়েক মাসে সেই বিপর্যয় কাটিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে দলটি। দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয় অনলাইন নেটওয়ার্ক (যোগযোগ)। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো শেখ হাসিনার সংবাদ, বিবৃতি প্রচার শুরু করে।
এরপর অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশ ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে (হাসিনাকে) যদি ভারত রাখতে চায় তাহলে তাকে (হাসিনাকে) চুপ থাকতে হবে।
এরপর, নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে গত বছর ১০ নভেম্বর দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। যদিও শেষ পর্যন্ত রাস্তায় নামতে পারেনি দলটি। পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সেদিন মাঠ দখলে রেখেছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর ছয় মাসের মাথায় ফের কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ১৬ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতাল-অবরোধ ঘোষণা করে দলটি। নিজেদের দাবির পক্ষে জনসমর্থন আদায়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী দুই সপ্তাহ সারাদেশে লিফলেট বিতরণ ও বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচিও দেয়া হয়। এসব কর্মসূচিও সফল হয়নি।
তবে নেট দুনিয়ায় সরব ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, বিবৃতি, ঘোষণা জনমনে ‘বিভ্রান্তি তৈরি করছে’ বলে অভিযোগ আসছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধীদের গড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ ইসলামপন্থি কয়েকটি দলের নেতাকর্মীদের বক্তব্যে।
এরপর, চলতি বছর ১২ মে মাসে সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে গেজেট প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই অভ্যুত্থান দমাতে ‘গুম, খুন, গণহত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, মানবতাবিরোধী অপরাধের’ জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার কথা বলা হয় গেজেটে। একই দিনে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। এতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়।