ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) আলোচিত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার ৭৮টি বিপিএম ও পিপিএম পদক বাতিল করা হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে এসব কর্মকর্তার কারও কারও চারটি পর্যন্ত পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পাওয়া ৭ জনের পদক আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৪০ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহারের প্রজ্ঞাপন গত ৭ আগস্ট জারি করলেও তা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় গতকাল। এসব কর্মকর্তার সবাই ‘পলাতক’ বলে প্রজ্ঞাপনে তুলে ধরা হয়। পলাতক থাকার অভিযোগে তাদের অনেককে ইতোমধ্যে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করলেও তারা কর্মস্থলে যোগ দেননি।
পদক প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামের আরও তিনটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে তার পাওয়া পদকটি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান থাকাকালে নানা কর্মকা-ের কারণে আলোচিত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের আরও চারটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২০১৮ সালে পাওয়া পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি নূরে আলম মীনার ২০১৮ সালের পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনে তার আরও দুটো পদক প্রত্যাহার হয়েছে। ডিএমপির আরেক আলোচিত কর্মকর্তা সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের তিনটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আলোচিত আরেক যুগ্ম কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দ্দারের তিনটি পদক বাতিল হয়েছে।
প্রতিবছর সাহসিকতা ও সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালনের কৃতিত্বের জন্য কর্মকর্তা ও সদস্যদের বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) পুরস্কার দিয়ে থাকে পুলিশ বাহিনী। পুলিশ সপ্তাহের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধান নিজ হাতে পুরস্কার পাওয়া কর্মকর্তাদের পদক পরিয়ে দেন। পদকপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা তাদের দাপ্তরিক যোগযোগের ক্ষেত্রে নামের শেষে বিপিএম বা পিপিএম শব্দগুলো যোগ করতে পারেন। এ পদক পাওয়ার জন্য প্রতিমাসে বেতনের সঙ্গে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনাও পেয়ে থাকেন কর্মকর্তারা।
গত ১৫ বছরে ঘুরে ফিরে একগুচ্ছ কর্মকর্তাকে বারবার পদক দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ঢালাওভাবে জেলাগুলোতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা পুলিশ কর্মকর্তাদের পদক দেয়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। ওই বছরের কৃতিত্বের জন্য ২০১৯ সালে ৩৪৯ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে পদক দেয়া হয়, যা পুলিশের পদক দেয়ার ক্ষেত্রে একটি রেকর্ড সংশ্লিষ্টদের তথ্য।
আরও যাদের পদক বাতিল
অতিরিক্ত ডিআইজি শ্যামল মুখার্জীর একটি পদক বাতিল হয়েছে। র্যাব-১০ এর সাবেক পরিচালক (অতিরিক্ত ডিআইজি) ফরিদ উদ্দীনের দুটি পদক বাতিল হয়েছে। সংখ্যাতিরিক্ত অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া আয়েশা সিদ্দিকার দুটো পদক বাতিল হয়েছে। আরেক সাবেক যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদী হাসানের চারটি ও সঞ্জিত কুমার রায়ের বাতিল হয়েছে একটি পদক। ডিএমপি ডিবির সাবেক কর্মকর্তা সঞ্জিতের ২০১৮ সালের পদকটি এর আগেই বাতিল করা হয়।
দুটি পদক বাতিল হয়েছে ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার জায়েদুল আলমের। তার ২০১৮ সালের পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়। ডিএমপির আরেক সাবেক যুগ্ম কমিশনার রিফাত রহমান শামীমের একটি পদক বাতিল হয়েছে, তার ২০১৮ সালের পদকটি আগেই বাতিল করা হয়। ডিএমপির আরেক সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর বাতিল হয়েছে দুটি পদক।
পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আশরাফুল আজীমের একটি পদক বাতিল হয়েছে। তার ২০১৮ সালে পাওয়া পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়। এসপি আসাদুজ্জামানের তিনটি, মো. শাহজাহানের একটি, ছানোয়ার হোসেনের চারটি, মানস কুমার পোদ্দারের দুটি, গোলাম মোস্তফা রাসেলের তিনটি, আরিফুর রহমান ম-লের চারটি, ইকবাল হোসাইনের একটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। সংখ্যাতিরিক্ত এসপি হিসেবে পদক পাওয়া হাসান আরাফাতের দুটি ও রহমত উল্লাহ চৌধুরীর তিনটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের মধ্যে এসএম জাহাঙ্গীর হাসানের তিনটি, রুবাইয়াত জামানের একটি, শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলামের একটি, তোহিদুল ইসলামের দুটি, ইফতেখায়রুল ইসলামের দুটি, রওশনুল হক সৈকতের একটি, মিশু বিশ্বাসের দুটি পদক বাতিল করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) মধ্যে গোলাম রুহানীর একটি পদক বাতিল করা হয়েছে।
ঢাকার বিভিন্ন থানার ওসি ও গোয়েন্দা পুলিশে দায়িত্ব পালন করা নয়জন পুলিশ পরিদর্শকের পদক বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে মেজবাহউদ্দিন আহাম্মেদের তিনটি, মশিউর রহমানের দুটি পদক বাতিল হয়েছে। একটি করে পদক প্রত্যাহার হয়েছে বিএম ফরমান আলী, নূর এ আলম সিদ্দিকী, কাজী মাইনুল ইসলাম, অপূর্ব হাসান, মো. শাহজামান, শেখ আমিনুল বাশার ও জাকির হোসাইনের।
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) আলোচিত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার ৭৮টি বিপিএম ও পিপিএম পদক বাতিল করা হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে এসব কর্মকর্তার কারও কারও চারটি পর্যন্ত পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পাওয়া ৭ জনের পদক আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৪০ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহারের প্রজ্ঞাপন গত ৭ আগস্ট জারি করলেও তা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় গতকাল। এসব কর্মকর্তার সবাই ‘পলাতক’ বলে প্রজ্ঞাপনে তুলে ধরা হয়। পলাতক থাকার অভিযোগে তাদের অনেককে ইতোমধ্যে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করলেও তারা কর্মস্থলে যোগ দেননি।
পদক প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামের আরও তিনটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে তার পাওয়া পদকটি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান থাকাকালে নানা কর্মকা-ের কারণে আলোচিত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের আরও চারটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২০১৮ সালে পাওয়া পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি নূরে আলম মীনার ২০১৮ সালের পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনে তার আরও দুটো পদক প্রত্যাহার হয়েছে। ডিএমপির আরেক আলোচিত কর্মকর্তা সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের তিনটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আলোচিত আরেক যুগ্ম কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দ্দারের তিনটি পদক বাতিল হয়েছে।
প্রতিবছর সাহসিকতা ও সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালনের কৃতিত্বের জন্য কর্মকর্তা ও সদস্যদের বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) পুরস্কার দিয়ে থাকে পুলিশ বাহিনী। পুলিশ সপ্তাহের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধান নিজ হাতে পুরস্কার পাওয়া কর্মকর্তাদের পদক পরিয়ে দেন। পদকপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা তাদের দাপ্তরিক যোগযোগের ক্ষেত্রে নামের শেষে বিপিএম বা পিপিএম শব্দগুলো যোগ করতে পারেন। এ পদক পাওয়ার জন্য প্রতিমাসে বেতনের সঙ্গে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনাও পেয়ে থাকেন কর্মকর্তারা।
গত ১৫ বছরে ঘুরে ফিরে একগুচ্ছ কর্মকর্তাকে বারবার পদক দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ঢালাওভাবে জেলাগুলোতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা পুলিশ কর্মকর্তাদের পদক দেয়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। ওই বছরের কৃতিত্বের জন্য ২০১৯ সালে ৩৪৯ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে পদক দেয়া হয়, যা পুলিশের পদক দেয়ার ক্ষেত্রে একটি রেকর্ড সংশ্লিষ্টদের তথ্য।
আরও যাদের পদক বাতিল
অতিরিক্ত ডিআইজি শ্যামল মুখার্জীর একটি পদক বাতিল হয়েছে। র্যাব-১০ এর সাবেক পরিচালক (অতিরিক্ত ডিআইজি) ফরিদ উদ্দীনের দুটি পদক বাতিল হয়েছে। সংখ্যাতিরিক্ত অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া আয়েশা সিদ্দিকার দুটো পদক বাতিল হয়েছে। আরেক সাবেক যুগ্ম কমিশনার এস এম মেহেদী হাসানের চারটি ও সঞ্জিত কুমার রায়ের বাতিল হয়েছে একটি পদক। ডিএমপি ডিবির সাবেক কর্মকর্তা সঞ্জিতের ২০১৮ সালের পদকটি এর আগেই বাতিল করা হয়।
দুটি পদক বাতিল হয়েছে ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার জায়েদুল আলমের। তার ২০১৮ সালের পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়। ডিএমপির আরেক সাবেক যুগ্ম কমিশনার রিফাত রহমান শামীমের একটি পদক বাতিল হয়েছে, তার ২০১৮ সালের পদকটি আগেই বাতিল করা হয়। ডিএমপির আরেক সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর বাতিল হয়েছে দুটি পদক।
পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আশরাফুল আজীমের একটি পদক বাতিল হয়েছে। তার ২০১৮ সালে পাওয়া পদকটি আগেই প্রত্যাহার করা হয়। এসপি আসাদুজ্জামানের তিনটি, মো. শাহজাহানের একটি, ছানোয়ার হোসেনের চারটি, মানস কুমার পোদ্দারের দুটি, গোলাম মোস্তফা রাসেলের তিনটি, আরিফুর রহমান ম-লের চারটি, ইকবাল হোসাইনের একটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে। সংখ্যাতিরিক্ত এসপি হিসেবে পদক পাওয়া হাসান আরাফাতের দুটি ও রহমত উল্লাহ চৌধুরীর তিনটি পদক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের মধ্যে এসএম জাহাঙ্গীর হাসানের তিনটি, রুবাইয়াত জামানের একটি, শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলামের একটি, তোহিদুল ইসলামের দুটি, ইফতেখায়রুল ইসলামের দুটি, রওশনুল হক সৈকতের একটি, মিশু বিশ্বাসের দুটি পদক বাতিল করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) মধ্যে গোলাম রুহানীর একটি পদক বাতিল করা হয়েছে।
ঢাকার বিভিন্ন থানার ওসি ও গোয়েন্দা পুলিশে দায়িত্ব পালন করা নয়জন পুলিশ পরিদর্শকের পদক বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে মেজবাহউদ্দিন আহাম্মেদের তিনটি, মশিউর রহমানের দুটি পদক বাতিল হয়েছে। একটি করে পদক প্রত্যাহার হয়েছে বিএম ফরমান আলী, নূর এ আলম সিদ্দিকী, কাজী মাইনুল ইসলাম, অপূর্ব হাসান, মো. শাহজামান, শেখ আমিনুল বাশার ও জাকির হোসাইনের।