জিপিএ-৫ পেল আরও এক হাজার ১৭১ জন
এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এতে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে নতুন করে উত্তীর্ণ হয়েছে চার হাজার ৯৮৩ জন শিক্ষার্থী। আর নতুন করে সর্বোচ্চ স্কোর জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ১৭১ জন শিক্ষার্থী।
গতকাল ওয়েবসাইটে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুনঃনিরীক্ষায় খাতা নতুন করে মূল্যায়ন করা হয় না। নম্বর সঠিকভাবে যোগ হয়েছে কিনা, কোনো প্রশ্নের নম্বর বাদ পড়েছে কিনা এবং ওএমআর শিটে নম্বর সঠিকভাবে উঠেছে কিনা- এসব যাচাই করে প্রয়োজনে সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পুনঃনিরীক্ষণের ফল
এসএসসি পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট না হয়ে খাতা চ্যালেঞ্জ করা দুই হাজার ৯৪৬ জন পরীক্ষার্থীর ফলে পরিবর্তন এসেছে। তাদের মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮৬ জন। আগের ফলে অনুত্তীর্ণ থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে খাতা চ্যালেঞ্জের পর জিপিএ-৫ পেয়েছে তিনজন। আগের ফলে ফেল থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে খাতা চ্যালেঞ্জ করে পাস করেছে ২৯৩ জন শিক্ষার্থী।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার জানান, এবার ৯২ হাজার ৮৬৩ জন শিক্ষার্থী মোট দুই লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪টি খাতার পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। াবেদনকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২১ হাজার, আর চ্যালেঞ্জ হওয়া খাতার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪০ হাজার।
তিনি আরও জানান, সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে গণিত বিষয়ে-৪২ হাজার ৯৩৬টি খাতা। এরপর ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৯ হাজার ৬৮৮টি করে, পদার্থবিজ্ঞানে ১৬ হাজার ২৩৩টি এবং বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৩ হাজার ৫৫৮টি খাতার পুনঃনিরীক্ষণ হয়েছে। সবচেয়ে কম আবেদন এসেছে চারু ও কারুকলা বিষয়ে মাত্র ৬টি।
এবার সারাদেশের ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছয় লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র তিন লাখ ২৪ হাজার ৭১৬ জন এবং ছাত্রী দুই লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৪ জন।
চট্টগ্রাম বোর্ড
এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫ জন। আর ফেল থেকে পাস করেছে ৬৪ জন।
এবার ৭৮ হাজার ১৯২টি খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে এক হাজার ৬৬৯ শিক্ষার্থীর নম্বর পরিবর্তন হয়েছে। আর আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে ৬৪৬ জনের। এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে ফেল থেকে পাশ করেছে ২৬ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া আরও ২৬ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জিএম শহীদুল ইসলাম জানান, গত ১০ জুলাই এ বছরের অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণার পর পুনঃনিরীক্ষণের জন্য ১৩ হাজার ২৬৪ জন আবেদন করেন।
তাদের আবেদন করা ৩৮ হাজার ৪৩৭টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণ করে ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ২৭৬ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে।
ময়মনসিংহ বোর্ড
এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১৬৬ জন। আর ফেল থেকে পাস করেছে ২১০ জন শিক্ষার্থী।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সৈয়দ আক্তারুজ্জামান জানান, খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য বোর্ডে মোট ৪৬ হাজার ৬৬৪টি আবেদন জমা পড়েছিল। এসব আবেদন পুনঃনিরীক্ষণে তিন হাজার আটটি উত্তরপত্রে বিভিন্ন বিষয়ে নম্বর বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে এক হাজার ৫৯০টি আবেদনে শিক্ষার্থীদের গ্রেড পয়েন্ট পরিবর্তিত হয়। বাকি আবেদনগুলোতে নম্বর বাড়লেও গ্রেড পয়েন্ট অপরিবর্তিত থাকে।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সাধারণত যেসব শিক্ষক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করেন তাদের কিছু ভুলের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। প্রথম, দ্বিতীয় পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নম্বরপত্র হিসাব-নিকাশ করে চূড়ান্ত করে বোর্ডে পাঠায়।
নম্বর যোগের ক্ষেত্রে এবং ওএমআর শিটে ভুল বৃত্ত ভরাটের কারণে ফলে ত্রুটি দেখা দেয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে বোর্ড কর্মকর্তাদের কোনো দায় নেই।
রাজশাহী বোর্ড
এ বছর এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ৪৮ জন। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ জন।
এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছিল ৬১ হাজার ২৭৯ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ৩২৩ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ জন। ফেল থেকে পাস করেছে ৪৮ জন পরীক্ষার্থী।
কুমিল্লা বোর্ড
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে ৮৪৪ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৭ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছে ১৯০ জন।
৩৫ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষার্থী ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছিল। তারা মোট ৭৫ হাজার ৮৭৭টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।
সিলেট বোর্ড
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে নতুন করে ৪৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। একই সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন আরও ২২১ জন।
জানা গেছে, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও অকৃতকার্য মিলিয়ে ১৭ হাজার ৬৮১ জন শিক্ষার্থী ৩৪ হাজার ৯২০ পত্রের জন্য পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছিল।
দিনাজপুর বোর্ড
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৭ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছে ৯৯ জন।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার ৬১ হাজার ২৮৭টি খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে এক হাজার ৪৮৭টি খাতার নম্বর পরিবর্তন হয়েছে।
যশোর বোর্ড
এসএসসি পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষণে ৬৭০ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭১ জন পরীক্ষার্থী এবং ফেল থেকে পাস করেছে ১৮৭ জন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুল মতিন বলেন, এবার যশোর শিক্ষা বোর্ডে পুনঃনিরীক্ষণে আবেদন পড়েছে ৪৯ হাজার ৭৭৯টি। এর মধ্যে ৬৭০ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড
এসএসসি (ভোকেশনাল) ফল পুনঃনিরীক্ষণে তিন হাজার ৬৮৭ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ শিক্ষার্থী।
কারিগরিতে ২৫ হাজার ৮৯০টি খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। এ আবেদনের মধ্যে গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে এক হাজার ৩৩ জনের। ফেল থেকে পাস করেছেন দুই হাজার ৬৫৪ জন। মোট ফল পরিবর্তন হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৭ জনের। এছাড়া নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ জন এবং ফেল করা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিনজন।
মাদ্রাসা বোর্ড
দাখিল পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের এক হাজার ৯১২ জন পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। তাদের মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৯ জন। আগের ফলে ফেল করা ৯৯১ জন শিক্ষার্থী নতুন করে পাস করেছে। ফল পুনঃনিরীক্ষণে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছিল।
গত ১০ জুলাই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এবার এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৯ লাখ চার হাজার ৮৬ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন। এই হিসেবে ছয় লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী ফেল বা অকৃতকার্য হয়েছে। আর এবার এই পরীক্ষায় মোট এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন সর্বোচ্চ স্কোর অর্থাৎ জিপিএ-৫ (গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ) পেয়েছে, যা মোট উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর সঙ্গে পুনঃনিরীক্ষণের ফল যোগ হবে।
জিপিএ-৫ পেল আরও এক হাজার ১৭১ জন
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এতে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে নতুন করে উত্তীর্ণ হয়েছে চার হাজার ৯৮৩ জন শিক্ষার্থী। আর নতুন করে সর্বোচ্চ স্কোর জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ১৭১ জন শিক্ষার্থী।
গতকাল ওয়েবসাইটে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুনঃনিরীক্ষায় খাতা নতুন করে মূল্যায়ন করা হয় না। নম্বর সঠিকভাবে যোগ হয়েছে কিনা, কোনো প্রশ্নের নম্বর বাদ পড়েছে কিনা এবং ওএমআর শিটে নম্বর সঠিকভাবে উঠেছে কিনা- এসব যাচাই করে প্রয়োজনে সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পুনঃনিরীক্ষণের ফল
এসএসসি পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট না হয়ে খাতা চ্যালেঞ্জ করা দুই হাজার ৯৪৬ জন পরীক্ষার্থীর ফলে পরিবর্তন এসেছে। তাদের মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮৬ জন। আগের ফলে অনুত্তীর্ণ থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে খাতা চ্যালেঞ্জের পর জিপিএ-৫ পেয়েছে তিনজন। আগের ফলে ফেল থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে খাতা চ্যালেঞ্জ করে পাস করেছে ২৯৩ জন শিক্ষার্থী।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার জানান, এবার ৯২ হাজার ৮৬৩ জন শিক্ষার্থী মোট দুই লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪টি খাতার পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। াবেদনকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২১ হাজার, আর চ্যালেঞ্জ হওয়া খাতার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪০ হাজার।
তিনি আরও জানান, সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে গণিত বিষয়ে-৪২ হাজার ৯৩৬টি খাতা। এরপর ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৯ হাজার ৬৮৮টি করে, পদার্থবিজ্ঞানে ১৬ হাজার ২৩৩টি এবং বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৩ হাজার ৫৫৮টি খাতার পুনঃনিরীক্ষণ হয়েছে। সবচেয়ে কম আবেদন এসেছে চারু ও কারুকলা বিষয়ে মাত্র ৬টি।
এবার সারাদেশের ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছয় লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র তিন লাখ ২৪ হাজার ৭১৬ জন এবং ছাত্রী দুই লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৪ জন।
চট্টগ্রাম বোর্ড
এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫ জন। আর ফেল থেকে পাস করেছে ৬৪ জন।
এবার ৭৮ হাজার ১৯২টি খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে এক হাজার ৬৬৯ শিক্ষার্থীর নম্বর পরিবর্তন হয়েছে। আর আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে ৬৪৬ জনের। এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে ফেল থেকে পাশ করেছে ২৬ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া আরও ২৬ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জিএম শহীদুল ইসলাম জানান, গত ১০ জুলাই এ বছরের অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণার পর পুনঃনিরীক্ষণের জন্য ১৩ হাজার ২৬৪ জন আবেদন করেন।
তাদের আবেদন করা ৩৮ হাজার ৪৩৭টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণ করে ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ২৭৬ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে।
ময়মনসিংহ বোর্ড
এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১৬৬ জন। আর ফেল থেকে পাস করেছে ২১০ জন শিক্ষার্থী।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সৈয়দ আক্তারুজ্জামান জানান, খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য বোর্ডে মোট ৪৬ হাজার ৬৬৪টি আবেদন জমা পড়েছিল। এসব আবেদন পুনঃনিরীক্ষণে তিন হাজার আটটি উত্তরপত্রে বিভিন্ন বিষয়ে নম্বর বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে এক হাজার ৫৯০টি আবেদনে শিক্ষার্থীদের গ্রেড পয়েন্ট পরিবর্তিত হয়। বাকি আবেদনগুলোতে নম্বর বাড়লেও গ্রেড পয়েন্ট অপরিবর্তিত থাকে।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সাধারণত যেসব শিক্ষক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করেন তাদের কিছু ভুলের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। প্রথম, দ্বিতীয় পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নম্বরপত্র হিসাব-নিকাশ করে চূড়ান্ত করে বোর্ডে পাঠায়।
নম্বর যোগের ক্ষেত্রে এবং ওএমআর শিটে ভুল বৃত্ত ভরাটের কারণে ফলে ত্রুটি দেখা দেয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে বোর্ড কর্মকর্তাদের কোনো দায় নেই।
রাজশাহী বোর্ড
এ বছর এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ৪৮ জন। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ জন।
এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছিল ৬১ হাজার ২৭৯ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ৩২৩ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ জন। ফেল থেকে পাস করেছে ৪৮ জন পরীক্ষার্থী।
কুমিল্লা বোর্ড
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে ৮৪৪ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৭ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছে ১৯০ জন।
৩৫ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষার্থী ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছিল। তারা মোট ৭৫ হাজার ৮৭৭টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।
সিলেট বোর্ড
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে নতুন করে ৪৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। একই সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন আরও ২২১ জন।
জানা গেছে, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও অকৃতকার্য মিলিয়ে ১৭ হাজার ৬৮১ জন শিক্ষার্থী ৩৪ হাজার ৯২০ পত্রের জন্য পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছিল।
দিনাজপুর বোর্ড
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৭ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছে ৯৯ জন।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার ৬১ হাজার ২৮৭টি খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে এক হাজার ৪৮৭টি খাতার নম্বর পরিবর্তন হয়েছে।
যশোর বোর্ড
এসএসসি পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষণে ৬৭০ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭১ জন পরীক্ষার্থী এবং ফেল থেকে পাস করেছে ১৮৭ জন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুল মতিন বলেন, এবার যশোর শিক্ষা বোর্ডে পুনঃনিরীক্ষণে আবেদন পড়েছে ৪৯ হাজার ৭৭৯টি। এর মধ্যে ৬৭০ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড
এসএসসি (ভোকেশনাল) ফল পুনঃনিরীক্ষণে তিন হাজার ৬৮৭ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ শিক্ষার্থী।
কারিগরিতে ২৫ হাজার ৮৯০টি খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। এ আবেদনের মধ্যে গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে এক হাজার ৩৩ জনের। ফেল থেকে পাস করেছেন দুই হাজার ৬৫৪ জন। মোট ফল পরিবর্তন হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৭ জনের। এছাড়া নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ জন এবং ফেল করা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিনজন।
মাদ্রাসা বোর্ড
দাখিল পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের এক হাজার ৯১২ জন পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। তাদের মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৯ জন। আগের ফলে ফেল করা ৯৯১ জন শিক্ষার্থী নতুন করে পাস করেছে। ফল পুনঃনিরীক্ষণে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছিল।
গত ১০ জুলাই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এবার এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৯ লাখ চার হাজার ৮৬ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন। এই হিসেবে ছয় লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী ফেল বা অকৃতকার্য হয়েছে। আর এবার এই পরীক্ষায় মোট এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন সর্বোচ্চ স্কোর অর্থাৎ জিপিএ-৫ (গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ) পেয়েছে, যা মোট উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর সঙ্গে পুনঃনিরীক্ষণের ফল যোগ হবে।