ছবি : অনলাইন থেকে সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে এ সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা ছিল ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের। কিন্তু বৈষম্য দূর হয়নি। বরং এবার আদিবাসী দিবস পালিত হয়েছে শঙ্কার মধ্য দিয়ে। বর্তমান সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয়নি এবং সরকারি কোনো আয়োজন করেনি।
গতকাল অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) উদ্যোগে রাজধানীর সিরডাপে ‘আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, বন ও মানবাধিকার সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যৎ গঠনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সার্থক প্রয়োগ’। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, এবারের প্রতিপাদ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তো ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের শিক্ষার জন্য ভালো কোনও স্কুলই নেই। জাতিসংঘ পুরো পৃথিবীর ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ কী অবস্থায় আছে তা জানে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এসে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়েছে। আবার বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরও মার খেয়েছে। পার্থক্য কোথায়?
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বহু জাতি, বহু ধর্ম, বহু সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যের দেশ। এটাকে বহুত্ববাদ বলে। কিন্তু এই বহুত্ববাদকে নাকচ করে দেয়া হচ্ছে। সংবিধানকে আরও উগ্র বাঙালিকরণ, উগ্র ইসলামীকরণ, উগ্র ধর্মান্ধকরণের প্রক্রিয়া চলছে। হিন্দুরা সংকুচিত হয়ে আছে। তাদের বোঝার জন্য এই সরকারের যে মানসিকতা সংবেদনশীলতা, তা নেই। তারা এটাকে অপপ্রচার বলছে।
সেমিনারে আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘আদিবাসী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ গঠন জরুরি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হলেও এই কমিশন গঠন করে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের বর্তমান অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে রিপোর্ট দেয়া সম্ভব।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুন নাহার ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তোপের মুখে পড়ার অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, সাম্প্রতি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেশন নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দু একজনের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েন। এখন ক্লাসে এবং বক্তৃতা দিতে গেলে ভয় পান বলে জানান।
আইনুন নাহার বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর যে আশা ছিল পরিবর্তনের তা হয়নি। এই সরকার কী আজ পর্যন্ত আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করেছে? কেন করেনি? তারা তো সমতার বাংলাদেশ চেয়েছিল। ৯ তারিখে বিশেষ কোনও বাণী পেয়েছি? ক্ষমতায় গেলে কী ভুলে যান? ক্ষমতা হারানোর ভয় পান?’
এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, যারা মব করে তারা সংখ্যায় কম। তাই সাধারণ মানুষকে সংগঠিত হয়ে এই মবকে প্রতিরোধ করতে হবে। চুপ করে থাকা যাবে না। নিজেদের রাষ্ট্রকে নিজেদেরই গড়ে তুলতে হবে।
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, রাষ্ট্র বধির, স্থবির ও জড় হয়ে আছে। একে ধাক্কা মারতে হবে যাতে কথা শোনে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকার এলেও ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে বৈষম্য বেড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির বলেন, অধিকার স্বীকৃতি আদায় করতে নিতে হবে। রাষ্ট্রের চার মূলনীতি বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। নিজ নিজ এলাকায় অন্যায়ের প্রতিবাদ জারি রাখতে হবে।
কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা বলেন, এবার শঙ্কা, ভয় নিয়ে আদিবাসী দিবস উদ্?যাপিত হয়েছে। প্রতিবছর অদিবাসী দিবসে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিপীড়নের বিষয় নিয়ে কথা বলা হয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হলো না। অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাশা ছিল পাহাড়েও পরিবর্তন আসবে। কিন্তু সেখানে হামলা, খুন হলো।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ‘সমতল আদিবাসী অধিকার আন্দোলনে’র আহ্বায়ক উজ্জ্বল আজিম। তাতে তিনি কিছু দাবির কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে আছে ‘আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি’, সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীদের জন্য জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন।
এ ছাড়া ‘আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, বন ও মানবাধিকার সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক নিবন্ধ তুলে ধরেন এএলআরডির গবেষণা কর্মকর্তা ইলিরা দেওয়ান এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজার রফিক আহমেদ সিরাজী। সেখানে তারা কিছু দাবির কথা জানান। এর মধ্যে আছে এক বছর ধরে আটক বম জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের মুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিতে একজন সংবেদনশীল অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে নিয়োগ, পাহাড়ে ও সমতলে ভূমি দখল বন্ধ, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের সংস্কৃতিকে অক্সক্ষুন্ন রেখে বহুত্ববাদ রাখা এবং আগামী নির্বাচনে সব দলের ইশতেহারে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ।
ছবি : অনলাইন থেকে সংগৃহীত
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে এ সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা ছিল ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের। কিন্তু বৈষম্য দূর হয়নি। বরং এবার আদিবাসী দিবস পালিত হয়েছে শঙ্কার মধ্য দিয়ে। বর্তমান সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয়নি এবং সরকারি কোনো আয়োজন করেনি।
গতকাল অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) উদ্যোগে রাজধানীর সিরডাপে ‘আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, বন ও মানবাধিকার সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যৎ গঠনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সার্থক প্রয়োগ’। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, এবারের প্রতিপাদ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তো ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের শিক্ষার জন্য ভালো কোনও স্কুলই নেই। জাতিসংঘ পুরো পৃথিবীর ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ কী অবস্থায় আছে তা জানে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এসে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়েছে। আবার বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরও মার খেয়েছে। পার্থক্য কোথায়?
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বহু জাতি, বহু ধর্ম, বহু সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যের দেশ। এটাকে বহুত্ববাদ বলে। কিন্তু এই বহুত্ববাদকে নাকচ করে দেয়া হচ্ছে। সংবিধানকে আরও উগ্র বাঙালিকরণ, উগ্র ইসলামীকরণ, উগ্র ধর্মান্ধকরণের প্রক্রিয়া চলছে। হিন্দুরা সংকুচিত হয়ে আছে। তাদের বোঝার জন্য এই সরকারের যে মানসিকতা সংবেদনশীলতা, তা নেই। তারা এটাকে অপপ্রচার বলছে।
সেমিনারে আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘আদিবাসী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ গঠন জরুরি। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হলেও এই কমিশন গঠন করে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের বর্তমান অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে রিপোর্ট দেয়া সম্ভব।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুন নাহার ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তোপের মুখে পড়ার অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, সাম্প্রতি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেশন নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দু একজনের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েন। এখন ক্লাসে এবং বক্তৃতা দিতে গেলে ভয় পান বলে জানান।
আইনুন নাহার বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর যে আশা ছিল পরিবর্তনের তা হয়নি। এই সরকার কী আজ পর্যন্ত আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করেছে? কেন করেনি? তারা তো সমতার বাংলাদেশ চেয়েছিল। ৯ তারিখে বিশেষ কোনও বাণী পেয়েছি? ক্ষমতায় গেলে কী ভুলে যান? ক্ষমতা হারানোর ভয় পান?’
এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, যারা মব করে তারা সংখ্যায় কম। তাই সাধারণ মানুষকে সংগঠিত হয়ে এই মবকে প্রতিরোধ করতে হবে। চুপ করে থাকা যাবে না। নিজেদের রাষ্ট্রকে নিজেদেরই গড়ে তুলতে হবে।
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, রাষ্ট্র বধির, স্থবির ও জড় হয়ে আছে। একে ধাক্কা মারতে হবে যাতে কথা শোনে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকার এলেও ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে বৈষম্য বেড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির বলেন, অধিকার স্বীকৃতি আদায় করতে নিতে হবে। রাষ্ট্রের চার মূলনীতি বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। নিজ নিজ এলাকায় অন্যায়ের প্রতিবাদ জারি রাখতে হবে।
কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা বলেন, এবার শঙ্কা, ভয় নিয়ে আদিবাসী দিবস উদ্?যাপিত হয়েছে। প্রতিবছর অদিবাসী দিবসে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিপীড়নের বিষয় নিয়ে কথা বলা হয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হলো না। অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাশা ছিল পাহাড়েও পরিবর্তন আসবে। কিন্তু সেখানে হামলা, খুন হলো।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ‘সমতল আদিবাসী অধিকার আন্দোলনে’র আহ্বায়ক উজ্জ্বল আজিম। তাতে তিনি কিছু দাবির কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে আছে ‘আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি’, সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠন, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীদের জন্য জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন।
এ ছাড়া ‘আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, বন ও মানবাধিকার সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক নিবন্ধ তুলে ধরেন এএলআরডির গবেষণা কর্মকর্তা ইলিরা দেওয়ান এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজার রফিক আহমেদ সিরাজী। সেখানে তারা কিছু দাবির কথা জানান। এর মধ্যে আছে এক বছর ধরে আটক বম জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের মুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিতে একজন সংবেদনশীল অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে নিয়োগ, পাহাড়ে ও সমতলে ভূমি দখল বন্ধ, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষদের সংস্কৃতিকে অক্সক্ষুন্ন রেখে বহুত্ববাদ রাখা এবং আগামী নির্বাচনে সব দলের ইশতেহারে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ।