আগস্ট ২০২৪ থেকে রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে মানুষের আশাবাদ কমেছে
ভোটারদের প্রায় অর্ধেক কাকে ভোট দেবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীন। গত বছরের অক্টোবরে তারা ছিলেন ৩৮ শতাংশ। বর্তমানে ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।
ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ। কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ
৩২ শতাংশ বলেছেন, তারা আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন চান ২৩ শতাংশ আর ডিসেম্বর (২০২৬) অথবা পরে নির্বাচনের কথা বলেছেন ২৫ শতাংশ
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ও সংস্কারবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্মের যৌথভাবে জরিপে উঠে এসেছে এই চিত্র। সোমবার,(১১ আগস্ট ২০২৫) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা’, শীর্ষক এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, ভোট কাকে দেবেন, এই প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীনতা পুরুষের চেয়ে নারীদের মধ্যে বেশি। সিদ্ধান্তহীন ভোটারদের সংখ্যা শহরে ৪৭ শতাংশ, গ্রামে ৪৯ শতাংশ। একই জরিপে আরও দেখা যাচ্ছে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ তারা কাদের ভোট দেবেন সে কথা জানাতে চান না। তবে ভোট দেবেন না ১ দশমিক ৭০ শতাংশ ভোটার।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে ১২ শতাংশ বিএনপি, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াতে ইসলামী এবং ২ দশমিক ৮০ শতাংশ মানুষ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কথা বলেছেন। গত অক্টোবরের তুলনায় বিএনপির ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ ভোট কমলেও জামায়াতের কমেছে ১ শতাংশের কম। তবে ছাত্রদের দল বলে পরিচিত এনসিপির ভোট শূন্য দশমিক আট শতাংশ বেড়েছে। জরিপে গত অক্টোবরে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার কথা বললেও সেটি এখন কমে হয়েছে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর বাইরে জাতীয় পার্টির ভোট শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ, অন্যান্য ইসলামি দলের ভোট ২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে নেমেছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ।
বয়সভেদে দলগুলোর জনসমর্থনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তরুণদের অর্থাৎ ২৭ বছরের নিচের ভোটারদের জামায়াতের প্রতি সমর্থন ১২ শতাংশ হলেও বিএনপি ৯ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৭ শতাংশ। তবে ৩৬-৫০ বছর ও ৫০ বছর অধিক বয়সের ভোটারদের বিএনপির প্রতি সমর্থন ২৯ শতাংশ, জামায়াত ১৯ শতাংশ ও আওয়ামী লীগ ১৫ শতাংশ। তরুণ ভোটারদের মধ্যে এনসিপির ৪ শতাংশ জনসমর্থন থাকলেও ২৮-৩৫ বছর ও ৩৬-৫০ বছরের ভোটারদের মধ্যে তাদের সমর্থন কমে অর্ধেকে নেমেছে।
তবে গ্র্যাজুয়েট ভোটারদের মধ্যে বিএনপি-আওয়ামী লীগের জনসমর্থন সমান হলেও এনসিপির সমর্থন আওয়ামী লীগের চেয়ে এক শতাংশ কম।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনি কাকে ভোট দেবেন এমন প্রশ্নে, সিদ্ধান্তহীন ভোটারের সংখ্যা সর্বোচ্চ অর্থাৎ প্রায় ৬৩ শতাংশ। তবে ১২ শতাংশ বিএনপি, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াত ও ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন। ২ দশমিক ৮ শতাংশ এনসিপির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করলেও ২ শতাংশ ভোটার ভোট দেবে না বলে জানিয়েছেন।
অবশ্য আপনার নির্বাচনী এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে বলে মনে হয় এমন প্রশ্নে ৩৮ শতাংশ মানুষ বিএনপির কথা বলেছেন। এই প্রশ্নের উত্তরে ১৩ শতাংশ মানুষ জামায়াত ও ১ শতাংশ এনসিপির কথা বলেছেন। আর আওয়ামী লীগের কথা বলেছেন ৭ শতাংশ মানুষ। তবে ৩৮ শতাংশ মানুষ কেন সিদ্ধান্ত জানাননি।
অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরে বিআইজিডির ফেলো অব প্র্যাকটিস সৈয়দা সেলিনা আজিজ জানান, গত ১ থেকে ২০ জুলাই সারাদেশের ৬৪ জেলায় গ্রাম ও শহরের নানা শ্রেণীপেশার ৫ হাজার ৪৮৯ জন মানুষের মতামত নেয়া হয়েছে। তাদের ৫৩ শতাংশ পুরুষ ও ৪৭ শতাংশ নারী; ৭৩ শতাংশ গ্রামের ও ২৭ শতাংশ শহরের। জরিপে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, চলমান সমস্যা, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে টেলিফোনে প্রশ্ন করে মতামত জানতে চাওয়া হয়।
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ
বিআইজিডির জরিপে আগস্ট ২০২৪ এ দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের যে আশাবাদ ছিল তা ক্রমশ কমেছে। ২০২৪-এ আগস্টে ৭১ শতাংশ মানুষ, দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে বলে মনে করলেও ২০২৫-এর জুলাই এই হার কমে নেমেছে ৪২ শতাংশে। একইসঙ্গে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে মনে করা মানুষের সংখ্যা গত আগস্টে ৬০ শতাংশ থাকলেও এ বছরের জুলাইয়ে তা কমে ৪৫ শতাংশ হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ পর্যন্ত যেসব প্রচেষ্টা, সেগুলোকে আপনি ১০০-তে কত নম্বর দেবেন, এই প্রশ্নে সরকারকে ৬৩ শতাংশ নম্বর দিয়েছেন উত্তরদাতারা তবে গত আগস্টে এটি ছিল ৭৫ শতাংশ।
জরিপে গত অক্টোবরে ৫০ শতাংশ মানুষ দাম বৃদ্ধিকে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা মনে করলেও জুলাই ২০২৫-এ একাধিক সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ১৮ শতাংশ মানুষ নির্বাচিত সরকার না থাকা, ১৫ শতাংশ ব্যবসায় মন্দা, ১৪ শতাংশ আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ১৩ শতাংশ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ৯ শতাংশ দাম বৃদ্ধিকে সমস্যা বলে চিহ্নিত করেছেন।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অভিমত
ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ মানুষ। কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ। সংস্কার বাদ দিয়ে নির্বাচন দেয়া ভালো বলে মনে করেন ১৪ শতাংশ মানুষ। আর সংস্কার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলেছেন ১৩ শতাংশ মানুষ।
কোন সংস্কারগুলো প্রয়োজন বলে মনে করেন, এই প্রশ্নে একাধিক উত্তর দেয়ার সুযোগ ছিল। এর উত্তরে ৩০ শতাংশ মানুষ আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের কথা বলেছেন। আইন ও বিচারব্যবস্থার উন্নতির কথা বলেছেন ১৬ শতাংশ। এছাড়া ১১ শতাংশ মানুষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১৬ শতাংশ অর্থনীতি বা ব্যবসা চাঙ্গা করা, ১৩ শতাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো, ১০ শতাংশ বেকারত্ব কমানো, ১৭ শতাংশ দুর্নীতি দমনের কথা বলেছেন। এর বাইরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসহনশীলতা কমানো এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলেছেন ১৯ শতাংশ করে মানুষ।
জাতীয় নির্বাচন কখন চান, এমন একটি প্রশ্নের উত্তরে ৩২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন চান ২৩ শতাংশ আর ডিসেম্বর (২০২৬) অথবা পরে নির্বাচনের কথা বলেছেন ২৫ শতাংশ মানুষ। তবে এ বিষয়ে মতামত দিতে চাননি ১৮ শতাংশ মানুষ।
জরিপে ৭০ শতাংশ মানুষ আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলে মনে করলেও সুষ্ঠু হবে না মনে করেন ১৫ শতাংশ আর এ বিষয়ে জানেন না বলেছেন ১৪ শতাংশ মানুষ।
জরিপের ফল প্রকাশের পর অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর।
আগস্ট ২০২৪ থেকে রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে মানুষের আশাবাদ কমেছে
সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
ভোটারদের প্রায় অর্ধেক কাকে ভোট দেবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীন। গত বছরের অক্টোবরে তারা ছিলেন ৩৮ শতাংশ। বর্তমানে ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।
ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ। কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ
৩২ শতাংশ বলেছেন, তারা আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন চান ২৩ শতাংশ আর ডিসেম্বর (২০২৬) অথবা পরে নির্বাচনের কথা বলেছেন ২৫ শতাংশ
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ও সংস্কারবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্মের যৌথভাবে জরিপে উঠে এসেছে এই চিত্র। সোমবার,(১১ আগস্ট ২০২৫) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা’, শীর্ষক এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, ভোট কাকে দেবেন, এই প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীনতা পুরুষের চেয়ে নারীদের মধ্যে বেশি। সিদ্ধান্তহীন ভোটারদের সংখ্যা শহরে ৪৭ শতাংশ, গ্রামে ৪৯ শতাংশ। একই জরিপে আরও দেখা যাচ্ছে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ তারা কাদের ভোট দেবেন সে কথা জানাতে চান না। তবে ভোট দেবেন না ১ দশমিক ৭০ শতাংশ ভোটার।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে ১২ শতাংশ বিএনপি, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াতে ইসলামী এবং ২ দশমিক ৮০ শতাংশ মানুষ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কথা বলেছেন। গত অক্টোবরের তুলনায় বিএনপির ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ ভোট কমলেও জামায়াতের কমেছে ১ শতাংশের কম। তবে ছাত্রদের দল বলে পরিচিত এনসিপির ভোট শূন্য দশমিক আট শতাংশ বেড়েছে। জরিপে গত অক্টোবরে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার কথা বললেও সেটি এখন কমে হয়েছে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর বাইরে জাতীয় পার্টির ভোট শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ, অন্যান্য ইসলামি দলের ভোট ২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে নেমেছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ।
বয়সভেদে দলগুলোর জনসমর্থনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তরুণদের অর্থাৎ ২৭ বছরের নিচের ভোটারদের জামায়াতের প্রতি সমর্থন ১২ শতাংশ হলেও বিএনপি ৯ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৭ শতাংশ। তবে ৩৬-৫০ বছর ও ৫০ বছর অধিক বয়সের ভোটারদের বিএনপির প্রতি সমর্থন ২৯ শতাংশ, জামায়াত ১৯ শতাংশ ও আওয়ামী লীগ ১৫ শতাংশ। তরুণ ভোটারদের মধ্যে এনসিপির ৪ শতাংশ জনসমর্থন থাকলেও ২৮-৩৫ বছর ও ৩৬-৫০ বছরের ভোটারদের মধ্যে তাদের সমর্থন কমে অর্ধেকে নেমেছে।
তবে গ্র্যাজুয়েট ভোটারদের মধ্যে বিএনপি-আওয়ামী লীগের জনসমর্থন সমান হলেও এনসিপির সমর্থন আওয়ামী লীগের চেয়ে এক শতাংশ কম।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনি কাকে ভোট দেবেন এমন প্রশ্নে, সিদ্ধান্তহীন ভোটারের সংখ্যা সর্বোচ্চ অর্থাৎ প্রায় ৬৩ শতাংশ। তবে ১২ শতাংশ বিএনপি, ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ জামায়াত ও ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন। ২ দশমিক ৮ শতাংশ এনসিপির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করলেও ২ শতাংশ ভোটার ভোট দেবে না বলে জানিয়েছেন।
অবশ্য আপনার নির্বাচনী এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে বলে মনে হয় এমন প্রশ্নে ৩৮ শতাংশ মানুষ বিএনপির কথা বলেছেন। এই প্রশ্নের উত্তরে ১৩ শতাংশ মানুষ জামায়াত ও ১ শতাংশ এনসিপির কথা বলেছেন। আর আওয়ামী লীগের কথা বলেছেন ৭ শতাংশ মানুষ। তবে ৩৮ শতাংশ মানুষ কেন সিদ্ধান্ত জানাননি।
অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরে বিআইজিডির ফেলো অব প্র্যাকটিস সৈয়দা সেলিনা আজিজ জানান, গত ১ থেকে ২০ জুলাই সারাদেশের ৬৪ জেলায় গ্রাম ও শহরের নানা শ্রেণীপেশার ৫ হাজার ৪৮৯ জন মানুষের মতামত নেয়া হয়েছে। তাদের ৫৩ শতাংশ পুরুষ ও ৪৭ শতাংশ নারী; ৭৩ শতাংশ গ্রামের ও ২৭ শতাংশ শহরের। জরিপে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, চলমান সমস্যা, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে টেলিফোনে প্রশ্ন করে মতামত জানতে চাওয়া হয়।
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ
বিআইজিডির জরিপে আগস্ট ২০২৪ এ দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের যে আশাবাদ ছিল তা ক্রমশ কমেছে। ২০২৪-এ আগস্টে ৭১ শতাংশ মানুষ, দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে বলে মনে করলেও ২০২৫-এর জুলাই এই হার কমে নেমেছে ৪২ শতাংশে। একইসঙ্গে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে মনে করা মানুষের সংখ্যা গত আগস্টে ৬০ শতাংশ থাকলেও এ বছরের জুলাইয়ে তা কমে ৪৫ শতাংশ হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ পর্যন্ত যেসব প্রচেষ্টা, সেগুলোকে আপনি ১০০-তে কত নম্বর দেবেন, এই প্রশ্নে সরকারকে ৬৩ শতাংশ নম্বর দিয়েছেন উত্তরদাতারা তবে গত আগস্টে এটি ছিল ৭৫ শতাংশ।
জরিপে গত অক্টোবরে ৫০ শতাংশ মানুষ দাম বৃদ্ধিকে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা মনে করলেও জুলাই ২০২৫-এ একাধিক সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ১৮ শতাংশ মানুষ নির্বাচিত সরকার না থাকা, ১৫ শতাংশ ব্যবসায় মন্দা, ১৪ শতাংশ আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ১৩ শতাংশ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ৯ শতাংশ দাম বৃদ্ধিকে সমস্যা বলে চিহ্নিত করেছেন।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অভিমত
ভালোভাবে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন চান ৫১ শতাংশ মানুষ। কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চান ১৭ শতাংশ। সংস্কার বাদ দিয়ে নির্বাচন দেয়া ভালো বলে মনে করেন ১৪ শতাংশ মানুষ। আর সংস্কার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলেছেন ১৩ শতাংশ মানুষ।
কোন সংস্কারগুলো প্রয়োজন বলে মনে করেন, এই প্রশ্নে একাধিক উত্তর দেয়ার সুযোগ ছিল। এর উত্তরে ৩০ শতাংশ মানুষ আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের কথা বলেছেন। আইন ও বিচারব্যবস্থার উন্নতির কথা বলেছেন ১৬ শতাংশ। এছাড়া ১১ শতাংশ মানুষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১৬ শতাংশ অর্থনীতি বা ব্যবসা চাঙ্গা করা, ১৩ শতাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো, ১০ শতাংশ বেকারত্ব কমানো, ১৭ শতাংশ দুর্নীতি দমনের কথা বলেছেন। এর বাইরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসহনশীলতা কমানো এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলেছেন ১৯ শতাংশ করে মানুষ।
জাতীয় নির্বাচন কখন চান, এমন একটি প্রশ্নের উত্তরে ৩২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা আগামী ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন চান ২৩ শতাংশ আর ডিসেম্বর (২০২৬) অথবা পরে নির্বাচনের কথা বলেছেন ২৫ শতাংশ মানুষ। তবে এ বিষয়ে মতামত দিতে চাননি ১৮ শতাংশ মানুষ।
জরিপে ৭০ শতাংশ মানুষ আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলে মনে করলেও সুষ্ঠু হবে না মনে করেন ১৫ শতাংশ আর এ বিষয়ে জানেন না বলেছেন ১৪ শতাংশ মানুষ।
জরিপের ফল প্রকাশের পর অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর।