ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্যের চিত্র ফুটে উঠেছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশকারীদের গণতন্ত্রের বিপক্ষের শক্তি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। একইদিনে দলের অন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র ও শঙ্কার কথা বলেছেন। আর দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশাসনে একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলে নতুন চেতনার উত্থান হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শনিবার,(১৬ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীতে পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানে দলটির নেতারা এসব মন্তব্য করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে যুবদল আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে সালাহউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের বন্ধু নয়। এই শক্তিগুলো নির্বাচনকে বিলম্বিত বা বানচাল করার উদ্দেশ্যে ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলছে।’
দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ। গণতন্ত্রের যাত্রাপথে যারা বাধা সৃষ্টি করবে, জনগণ তাদের রুখে দেবে।’ তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের মতো আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী দল গণতান্ত্রিক উত্তরণে সরকারসহ সব গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
একইদিনে শাহজাহানপুর রেলওয়ে আলিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে, ষড়যন্ত্র আছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে নিশ্চয়তা নেই।’ সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং পরাজিত আওয়ামী লীগ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তার। এ বিষয়ে দলের নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান গয়েশ্বর। শুধু সরকার বা নির্বাচন কমিশন চাইলেই সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয় বরং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সদিচ্ছারও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর দেশের জনগণ নির্যাতিত হয়েছে। খালেদা জিয়ার ওপরও অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে তিলে তিলে মারার জন্য সবকিছুই তারা করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতেই এমনটা করা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই আওয়ামী লীগের আমলের সব খুন হত্যার বিচার করবে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রুহুল কবির রিজভী ‘দেশে এক চেতনার বদলে অন্য চেতনার উদ্ভব হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। ধর্মের নামে একটি নতুন চেতনার উত্থান ঘটছে এবং একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের লোকজনকে প্রশাসনের সর্বত্র বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা যেখানেই যাই শুনি একটি সংগঠনের লোক সেখানে বসে আছে। ডিসি থেকে শুরু করে সব স্থানে একটি বিশেষ দলের লোক বসে আছে। ওইসব স্থানে বসে তারা ডিসিগিরি করছে না, তারা তাদের সংগঠনের কাজ করছে।’
শেখ হাসিনার দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি দেখার জন্য জনগণ আন্দোলন করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে মানুষ জীবন দিতে পারে তার অন্যতম নিদর্শন চব্বিশের গণঅভুত্থ্যান। তবে অভ্যুত্থানের শহীদদের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।’ অনেক উপদেষ্টাদের নামে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, যা শেখ হাসিনার দুর্নীতিরই পুনরাবৃত্তি বলে মনে করেন তিনি।
একটি নির্দিষ্ট দলের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্বার্থে কর্মীদের ব্যাবহার হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি, তিনি তার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বলেছেন, তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না।’ প্রকৃত গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবী দ্বারা বিএনপিকে এতদিন সন্ত্রাসী সংগঠন বানিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে বলেও অভিযোগ তার।
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি, সেটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে দেশকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আব্দুল মঈন খান দাবি করে বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকার লোভে বাংলাদেশের জনগণকে হত্যার মাধ্যমে মরণকামড় দেয়ার চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের আগেই বিজয়ীদের লিস্ট তৈরির নীলনকশার মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে বিগত ১৫ বছর ধরে ১ লাখেরও বেশি ভুয়া মামলা হয়েছিল।’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্যের চিত্র ফুটে উঠেছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশকারীদের গণতন্ত্রের বিপক্ষের শক্তি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। একইদিনে দলের অন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র ও শঙ্কার কথা বলেছেন। আর দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশাসনে একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলে নতুন চেতনার উত্থান হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শনিবার,(১৬ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীতে পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানে দলটির নেতারা এসব মন্তব্য করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে যুবদল আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে সালাহউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে, তারা গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের বন্ধু নয়। এই শক্তিগুলো নির্বাচনকে বিলম্বিত বা বানচাল করার উদ্দেশ্যে ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলছে।’
দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ। গণতন্ত্রের যাত্রাপথে যারা বাধা সৃষ্টি করবে, জনগণ তাদের রুখে দেবে।’ তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের মতো আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী দল গণতান্ত্রিক উত্তরণে সরকারসহ সব গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
একইদিনে শাহজাহানপুর রেলওয়ে আলিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে, ষড়যন্ত্র আছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে নিশ্চয়তা নেই।’ সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং পরাজিত আওয়ামী লীগ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তার। এ বিষয়ে দলের নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান গয়েশ্বর। শুধু সরকার বা নির্বাচন কমিশন চাইলেই সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয় বরং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সদিচ্ছারও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর দেশের জনগণ নির্যাতিত হয়েছে। খালেদা জিয়ার ওপরও অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে তিলে তিলে মারার জন্য সবকিছুই তারা করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতেই এমনটা করা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই আওয়ামী লীগের আমলের সব খুন হত্যার বিচার করবে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রুহুল কবির রিজভী ‘দেশে এক চেতনার বদলে অন্য চেতনার উদ্ভব হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। ধর্মের নামে একটি নতুন চেতনার উত্থান ঘটছে এবং একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের লোকজনকে প্রশাসনের সর্বত্র বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা যেখানেই যাই শুনি একটি সংগঠনের লোক সেখানে বসে আছে। ডিসি থেকে শুরু করে সব স্থানে একটি বিশেষ দলের লোক বসে আছে। ওইসব স্থানে বসে তারা ডিসিগিরি করছে না, তারা তাদের সংগঠনের কাজ করছে।’
শেখ হাসিনার দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি দেখার জন্য জনগণ আন্দোলন করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে মানুষ জীবন দিতে পারে তার অন্যতম নিদর্শন চব্বিশের গণঅভুত্থ্যান। তবে অভ্যুত্থানের শহীদদের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।’ অনেক উপদেষ্টাদের নামে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, যা শেখ হাসিনার দুর্নীতিরই পুনরাবৃত্তি বলে মনে করেন তিনি।
একটি নির্দিষ্ট দলের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্বার্থে কর্মীদের ব্যাবহার হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি, তিনি তার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বলেছেন, তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না।’ প্রকৃত গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবী দ্বারা বিএনপিকে এতদিন সন্ত্রাসী সংগঠন বানিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে বলেও অভিযোগ তার।
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি, সেটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে দেশকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আব্দুল মঈন খান দাবি করে বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকার লোভে বাংলাদেশের জনগণকে হত্যার মাধ্যমে মরণকামড় দেয়ার চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের আগেই বিজয়ীদের লিস্ট তৈরির নীলনকশার মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে বিগত ১৫ বছর ধরে ১ লাখেরও বেশি ভুয়া মামলা হয়েছিল।’