পত্রিকা পড়ে জেনেছি, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি: রেজওয়ানা
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলেট, কূটনীতিকদের কার্যালয় ও বাসভবন থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এ নির্দেশনা কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি বা ই-মেইলে পাঠানো হয়নি। টেলিফোনে অঞ্চলভিত্তিক কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে বিষয়টি জানিয়ে পরে অন্য মিশনগুলোতে খবরটি পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।
তবে চেষ্টা করেও রোববার,(১৭ আগস্ট ২০২৫) সাংবাদিকরা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাননি। পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কিছু বলতে রাজি হননি। রোববার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্র সচিব এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাহ আসিফ রহমানও প্রশ্ন এড়িয়ে যান। মিশনগুলো থেকে নামানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও রোববার, বিকেল পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্যাফেতে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের ছবি দেখা যায়।
তবে রোববার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি নামিয়ে ফেলার নির্দেশনার যে খবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে তা তিনি পত্রিকা পড়ে জেনেছেন। তিনি বলেছেন, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে রিজওয়ানা বলেন, ‘এটা আদৌ কোনো বার্তা দেয় কিনা জানি না। আমি পত্রিকায় দেখেছি। সরকারি পর্যায়ের সব মহলের সিদ্ধান্ত হলে সেটা লিখিত থাকত। সরকার আদৌ এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা জানি না। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এটা আলোচিত হয়নি। সরকারি পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলে সভায় আলোচিত হবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, অঞ্চলভিত্তিক কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে- কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলেট, কূটনীতিকদের অফিস ও বাসভবন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি অবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত একাধিক মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, এখনও অনেকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পাননি। তবে অন্তত দুটি মিশনের প্রধান নিশ্চিত করেছেন, তারা সরকারের কাছ থেকে সরাসরি এ ধরনের বার্তা পেয়েছেন।
দূতাবাস সূত্র জানায়, বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস, হাইকমিশন ও কূটনীতিকদের
বাসভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি টানানো ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেই ছবি তাৎক্ষণিকভাবে নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। নির্দেশনার বাস্তবায়ন তদারকির জন্য অঞ্চলভিত্তিক একজন করে রাষ্ট্রদূতকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা নিশ্চিত করবেন যে মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো হয়েছে। এ পদক্ষেপে বিদেশে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে আর কোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানের ছবি থাকছে না।
বিদেশে কর্মরত একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ঢাকা থেকে ফোনে আমাদের জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপতির ছবি সরাতে হবে। এটি লিখিতভাবে আসেনি, তবে আমাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অন্য মিশনগুলোতেও বিষয়টি জানিয়ে দেয়ার। একই সঙ্গে তদারকির দায়িত্বও থাকবে।’
আরেকজন কূটনীতিক জানান, তাদের অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সরাসরি এ বার্তা দিলেও কাছাকাছি আরেকটি মিশনের মাধ্যমেও বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে।
সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন ও উপ-মিশন রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টির বেশি মিশন ও উপ-মিশন থেকে ৫ আগস্টের পরপরই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যে কয়েকটি মিশনের এখনো রাষ্ট্রপতির ছবি টানানো রয়েছে সেগুলো নামিয়ে ফেলতে সম্প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়।
গত বছর ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত রাষ্টপতি মো, সাহাবুদ্দিনকে সরানোর অনেক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এরপর সরকারি প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির ছবি না টানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তখনই অনেক কূটনৈতিক মিশন থেকে রাষ্ট্রপতি ছবি নামিয়ে ফেলা হয়। তবে অনেক দূতাবাসে এখনও রাষ্ট্রপতি ছবি টানানো রয়েছে।
ছবি সরানোর উদ্যোগের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়ার সফরের সময় কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে এবং রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে রাষ্ট্রপতির ছবি থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে। যেহেতু অন্যান্য দূতাবাসের ছবি সরানো হয়েছে, এখানে সরানো হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন আসে। এরপর মিশনগুলো থেকে যেন সরানো হয়, অর্থাৎ একই রকম থাকে, সেই উদ্যোগ নেয়া হয়।’
পত্রিকা পড়ে জেনেছি, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি: রেজওয়ানা
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলেট, কূটনীতিকদের কার্যালয় ও বাসভবন থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এ নির্দেশনা কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি বা ই-মেইলে পাঠানো হয়নি। টেলিফোনে অঞ্চলভিত্তিক কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে বিষয়টি জানিয়ে পরে অন্য মিশনগুলোতে খবরটি পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।
তবে চেষ্টা করেও রোববার,(১৭ আগস্ট ২০২৫) সাংবাদিকরা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাননি। পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কিছু বলতে রাজি হননি। রোববার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্র সচিব এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাহ আসিফ রহমানও প্রশ্ন এড়িয়ে যান। মিশনগুলো থেকে নামানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও রোববার, বিকেল পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্যাফেতে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের ছবি দেখা যায়।
তবে রোববার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি নামিয়ে ফেলার নির্দেশনার যে খবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে তা তিনি পত্রিকা পড়ে জেনেছেন। তিনি বলেছেন, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে রিজওয়ানা বলেন, ‘এটা আদৌ কোনো বার্তা দেয় কিনা জানি না। আমি পত্রিকায় দেখেছি। সরকারি পর্যায়ের সব মহলের সিদ্ধান্ত হলে সেটা লিখিত থাকত। সরকার আদৌ এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা জানি না। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এটা আলোচিত হয়নি। সরকারি পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলে সভায় আলোচিত হবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, অঞ্চলভিত্তিক কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে- কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলেট, কূটনীতিকদের অফিস ও বাসভবন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি অবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত একাধিক মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, এখনও অনেকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পাননি। তবে অন্তত দুটি মিশনের প্রধান নিশ্চিত করেছেন, তারা সরকারের কাছ থেকে সরাসরি এ ধরনের বার্তা পেয়েছেন।
দূতাবাস সূত্র জানায়, বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস, হাইকমিশন ও কূটনীতিকদের
বাসভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি টানানো ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেই ছবি তাৎক্ষণিকভাবে নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। নির্দেশনার বাস্তবায়ন তদারকির জন্য অঞ্চলভিত্তিক একজন করে রাষ্ট্রদূতকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা নিশ্চিত করবেন যে মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো হয়েছে। এ পদক্ষেপে বিদেশে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে আর কোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানের ছবি থাকছে না।
বিদেশে কর্মরত একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ঢাকা থেকে ফোনে আমাদের জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপতির ছবি সরাতে হবে। এটি লিখিতভাবে আসেনি, তবে আমাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অন্য মিশনগুলোতেও বিষয়টি জানিয়ে দেয়ার। একই সঙ্গে তদারকির দায়িত্বও থাকবে।’
আরেকজন কূটনীতিক জানান, তাদের অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সরাসরি এ বার্তা দিলেও কাছাকাছি আরেকটি মিশনের মাধ্যমেও বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে।
সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন ও উপ-মিশন রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টির বেশি মিশন ও উপ-মিশন থেকে ৫ আগস্টের পরপরই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যে কয়েকটি মিশনের এখনো রাষ্ট্রপতির ছবি টানানো রয়েছে সেগুলো নামিয়ে ফেলতে সম্প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়।
গত বছর ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত রাষ্টপতি মো, সাহাবুদ্দিনকে সরানোর অনেক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এরপর সরকারি প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির ছবি না টানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তখনই অনেক কূটনৈতিক মিশন থেকে রাষ্ট্রপতি ছবি নামিয়ে ফেলা হয়। তবে অনেক দূতাবাসে এখনও রাষ্ট্রপতি ছবি টানানো রয়েছে।
ছবি সরানোর উদ্যোগের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়ার সফরের সময় কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে এবং রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে রাষ্ট্রপতির ছবি থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে। যেহেতু অন্যান্য দূতাবাসের ছবি সরানো হয়েছে, এখানে সরানো হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন আসে। এরপর মিশনগুলো থেকে যেন সরানো হয়, অর্থাৎ একই রকম থাকে, সেই উদ্যোগ নেয়া হয়।’