চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দীন সিএমপি কমিশনারের বেতার বার্তা ‘ফাঁসের’ ঘটনায় গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্য অমি দাশকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।

খুলশী থানার বেতার কন্সটেবল পদে কর্মরত অমি দাশকে (৩১) রোববার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের ডিউটিতে না যাওয়ার নির্দেশনা সংক্রান্ত সিএমপি কমিশনারের ওয়াকিটকিতে দেয়া বার্তা ‘ফাঁস’ করেন তিনি।

পরে বিনা অনুমতিতে ওই বার্তা ভিডিও রেকর্ড এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট এর ৩ (খ) ধারা এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর ২৩ (২)/২৭ ধারায় মামলা করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানিতে অমি দাশ উপস্থিত ছিলেন এবং তার পক্ষে আইনজীবীরা অংশ নেন।

গত ১১ অগাস্ট রাতে নগরীর বন্দর থানার ইশান মিস্ত্রি ঘাট এলাকায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের খবরে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় এক এসআই আহত হন।

পরদিন ১২ অগাস্ট রাতে এক বেতার বার্তায় সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছাড়া কাউকে ডিউটি করতে না যাওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পুলিশের সামনে কোনো অস্ত্র দেখা গেলে ‘সাথে সাথে গুলি করার’ নির্দেশনাও দেন।

ওই বার্তায় তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্টের আগের নিয়ম অনুযায়ী লাইভ অ্যামিউনেশন ছাড়া কোন পার্টি থানা থেকে বের হবে না। রাবার বুলেট দিয়ে কাজ হবে না। তিনি আরও বলেন, “ওই পরিস্থিতিতে পরলে দুই চারটা লাশ ছাড়া যেন কোন মোবাইল পার্টি ফেরত না আসে।”

তিনি টহল দলের সামনে অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনা ঘটলে সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। মাথায়, বুকে, পিঠে গুলি করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশও দেন।

এই বেতার বার্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

এর আগে গত বছর জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন দমনে নির্বিচার অস্ত্র ব্যবহারের কারণে সমালোচনায় পড়ে পুলিশ বাহিনী। এরপর সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, পুলিশের হাতে আর কোনো মারণাস্ত্র থাকবে না। তবে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) হাতে মারণাস্ত্র থাকবে।