alt

জাতীয়

‘তিন শিক্ষক মানবতা ও সাহসিকতার দৃষ্টান্ত’ — প্রধান উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী, মাসুকা বেগম ও মাহফুজা খানম মানবতা ও সাহসিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবে জাতির কাছে ‘চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার তিন শিক্ষকের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সাক্ষাৎ হয়। সেখানে শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল, দুই ছেলে আদিল রশিদ ও আয়ান রশিদ, বোন মেহেতাজ চৌধুরী, ভাই মুনাফ মজিব চৌধুরী ও আত্মীয় কাওসার হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষক মাসুকা বেগমের স্বজনদের মধ্যে ছিলেন বোন পাপড়ি রহমান ও ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান। আরেক শিক্ষক মাহফুজা খাতুনের পরিবার থেকে এসেছিলেন মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা, বোন মুরশিদা খাতুন, ভাগ্নে মো. মাইদুল ইসলাম ও আত্মীয় হুমায়ূন কবির।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বেশ কিছুদিন পার হলেও এই স্মৃতি এখনো সবার মধ্যে দগদগে হয়ে আছে। আমি ঘটনা জানামাত্রই আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা যে দুঃসময়ের মধ্যে ছিলেন, সেসময়ে দেখা করা সমীচীন হতো না। আমরা আপনাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করতে পারি, কিন্তু এই দুঃসহ স্মৃতি মুছে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, এ শোক আপনাদের একার নয়। জাতি হিসেবে আমরা এই শোক ধারণ করি।”

এ সময় তিন শিক্ষক পরিবারের কাছে তাদের স্মৃতিকথা শুনতে চান প্রধান উপদেষ্টা।

শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল বলেন, “তাকে যখন হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল, তখন ফোনে আমার সঙ্গে কথা হয়। সেদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে যে দৃশ্য দেখেছি, তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। জীবনে যেন কারো সেই অভিজ্ঞতা না হয়। আমি তাকে দেখলাম, একপাশ পুরোটা পুড়ে গেছে। সেখানে কয়েকজন সামান্য দগ্ধ বাচ্চা চিকিৎসা নিতে নিতে আমাকে বলল, ‘মিসই আমাদের টেনে টেনে বের করে আনল! মিস তো সুস্থ ছিল! এমন হলো কেন!’ আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি বের হয়ে এলে না কেন? তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না?’ সে আমাকে বলল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?’ পৃথিবীর সকল মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তার জন্য দোয়া করেছে। সবার জন্যই সে নিবেদিত প্রাণ ছিল।”

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৪ অগাস্ট মারা যান মাহফুজা খাতুন। মায়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা। তিনি বলেন, “আমার মা অনেকখানি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। আমি ভেবেছিলাম, মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরব। মাকে যেদিন হুইলচেয়ারে বসাই, সেদিন মনে হলো আমি বিশ্বজয় করেছি। মা ছাড়া একেকটা দিন আমার দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয়। আমার তো বাবা নেই, এখন মাও চলে গেল। আমি এতিম হয়ে গেলাম। এখন পর্যন্ত নিজের বাসায় ফিরতে পারিনি। মা ছাড়া সে বাসায় ফিরব কী করে?”

শিক্ষক মাসুকা বেগমের ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান বলেন, “দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেক দিন ধরেই তার বোন অসুস্থ। চোখে কিছুটা কম দেখেন। মাসুকা সবসময় তার বাবা ও বোনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত, তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার চেষ্টা ছিল। বাবাকে নিয়মিত হাতখরচ পাঠাত। আমার ছেলে-মেয়েদের সে নিজের সন্তানের মতো মনে করত। প্রতিদিন তাদের সঙ্গে ওর কথা হতো। আমরা আর তার স্কুল— এই ছিল তার জীবন।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “তাদের কথা শুনতে কষ্ট লাগে। একইসঙ্গে গর্ববোধ হয় যে আমাদের দেশে এমন নাগরিক আছে, যারা অন্যের জীবন বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছে। মানবতার এ দৃষ্টান্ত তারা প্রমাণ করে গেছে। আমরা ক্ষুদ্র মানব ছিলাম, তারা আমাদের বড় করেছে। সবার ভেতরে নাড়া দিয়েছে। সবাই এটা নিজের মধ্যে অনুভব করেছে যে, ‘আমি যদি সেই অবস্থানে থাকতাম, আমি কী করতাম? আমি কি জীবনের পরোয়া না করে এভাবে ছোট শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে আত্মবিসর্জন দিতাম?’ এ প্রশ্ন সবার মনে এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “এসব শিক্ষক আমাদের গর্ব, আমাদের আদর্শ। তাদের স্মৃতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। এজন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, আমরা তা করব।”

এ সময় যমুনায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

ছবি

জুলাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৮, বেশি মোটরসাইকেলে

ছবি

বারবার যান্ত্রিক ত্রুটি: যেসব পদক্ষেপের কথা জানালো বিমান

ছবি

এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চায় দুদক

ছবি

৮৫ নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে ফেরানোর পূর্ণাঙ্গ রায়

ছবি

পাটুরিয়ায় নদী ভাঙন: নিঃস্ব ঘাট পাড়ের অন্তত ৩০টি পরিবার

ছবি

ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাদ

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: শীর্ষ তিন পদে লড়বেন পাঁচ নারী

ছবি

একদিনে ৪১ অতিরিক্ত কর কমিশনারকে বদলি

ছবি

ছাদ সৌরবিদ্যুৎ: ৩ হাজার মেগাওয়াট ডিসেম্বরের মধ্যে ‘অসম্ভব ও উচ্চাভিলাষী’ বলছে আইইইএফএ

ছবি

যুক্তরাজ্য থেকে ৩ কার্গো এলএনজি কিনছে সরকার

ছবি

আড়াইহাজারে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০, বাড়িঘর লুট, ভাঙচুর

ছবি

জুলাই সনদের ‘অসংগতি সংশোধন’ হলে মতামত দেবে বিএনপি

ছবি

‘অনিয়মের’ অভিযোগ: কয়লা আমদানির দরপত্র বাতিল, সংকটে পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র

ছবি

মালয়েশিয়ায় জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস উদযাপন

ছবি

সিএমপি কমিশনারের বেতার বার্তা ফাঁস: পুলিশ সদস্য অমি দাশ তিন দিনের রিমান্ডে

ছবি

এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চাইল দুদক

ছবি

অসুস্থতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হাসানুল বান্নার পদত্যাগ

ছবি

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশকে ৪০ লাখ ইউরো দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ছবি

সিইসির সঙ্গে ইইউ প্রতিনিধি দলের বৈঠক

ছবি

সচিবালয়ের সামনে জুলাই শহীদ পরিবার-আহতদের অবস্থান, আইন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

ছবি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাদ, অধ্যাদেশ জারি

ছবি

ট্রাইব্যুনালে ছেলের লাশ পোড়ানোর ভিডিও চলাকালে ভেঙে পড়লেন বাবা

ছবি

রাজশাহীতে ‘আওয়ামী লীগ নেতাদের’ সশস্ত্র হামলার বর্ণনা ট্রাইব্যুনালে দিলেন জসিম, ফাঁসি দাবি

ছবি

ধর্ম নিয়ে কটূক্তি ‘ব্যক্তির অপরাধ’, সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

ছবি

অ্যাম্বুলেন্স চক্রে জিম্মি রোগী ও স্বজন

ছবি

‘ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়ায় পাহাড়ে দখল, উচ্ছেদ, সংঘাত’

ছবি

বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহে ‘রেকর্ড’

ছবি

কর্মস্থলে অনুপস্থিত: হারুনসহ ১৮ পুলিশ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

ছবি

হায়দরাবাদে পাচার হওয়া বাংলাদেশি কিশোরী উদ্ধার

ছবি

বেরোবিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা

ছবি

চলতি সপ্তাহে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে : ইসি সচিব

ছবি

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া-কাজীরহাট: ফেরি চলাচল ব্যাহত, ঘাট এলাকায় যানজট, দুর্ভোগ

ছবি

সেমিনারে চিকিৎসকদের অভিমত, ‘জুলাই আন্দোলনে আহতদের সাড়ে ৮২ শতাংশ বিষণ্নতায় ভুগছেন’

ছবি

শাটডাউন কর্মসূচিতে যাচ্ছেন বমেকের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

ছবি

বিপর্যয়ের একটি সকাল কেড়ে নিলো পাঁচটি তাজা প্রাণ

ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হাসান ইমামকে গুলি করেন তিন পুলিশ সদস্য: একজনের সাক্ষ্য

tab

জাতীয়

‘তিন শিক্ষক মানবতা ও সাহসিকতার দৃষ্টান্ত’ — প্রধান উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী, মাসুকা বেগম ও মাহফুজা খানম মানবতা ও সাহসিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবে জাতির কাছে ‘চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার তিন শিক্ষকের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সাক্ষাৎ হয়। সেখানে শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল, দুই ছেলে আদিল রশিদ ও আয়ান রশিদ, বোন মেহেতাজ চৌধুরী, ভাই মুনাফ মজিব চৌধুরী ও আত্মীয় কাওসার হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষক মাসুকা বেগমের স্বজনদের মধ্যে ছিলেন বোন পাপড়ি রহমান ও ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান। আরেক শিক্ষক মাহফুজা খাতুনের পরিবার থেকে এসেছিলেন মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা, বোন মুরশিদা খাতুন, ভাগ্নে মো. মাইদুল ইসলাম ও আত্মীয় হুমায়ূন কবির।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বেশ কিছুদিন পার হলেও এই স্মৃতি এখনো সবার মধ্যে দগদগে হয়ে আছে। আমি ঘটনা জানামাত্রই আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা যে দুঃসময়ের মধ্যে ছিলেন, সেসময়ে দেখা করা সমীচীন হতো না। আমরা আপনাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করতে পারি, কিন্তু এই দুঃসহ স্মৃতি মুছে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, এ শোক আপনাদের একার নয়। জাতি হিসেবে আমরা এই শোক ধারণ করি।”

এ সময় তিন শিক্ষক পরিবারের কাছে তাদের স্মৃতিকথা শুনতে চান প্রধান উপদেষ্টা।

শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল বলেন, “তাকে যখন হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল, তখন ফোনে আমার সঙ্গে কথা হয়। সেদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে যে দৃশ্য দেখেছি, তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। জীবনে যেন কারো সেই অভিজ্ঞতা না হয়। আমি তাকে দেখলাম, একপাশ পুরোটা পুড়ে গেছে। সেখানে কয়েকজন সামান্য দগ্ধ বাচ্চা চিকিৎসা নিতে নিতে আমাকে বলল, ‘মিসই আমাদের টেনে টেনে বের করে আনল! মিস তো সুস্থ ছিল! এমন হলো কেন!’ আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি বের হয়ে এলে না কেন? তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না?’ সে আমাকে বলল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?’ পৃথিবীর সকল মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তার জন্য দোয়া করেছে। সবার জন্যই সে নিবেদিত প্রাণ ছিল।”

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৪ অগাস্ট মারা যান মাহফুজা খাতুন। মায়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা। তিনি বলেন, “আমার মা অনেকখানি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। আমি ভেবেছিলাম, মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরব। মাকে যেদিন হুইলচেয়ারে বসাই, সেদিন মনে হলো আমি বিশ্বজয় করেছি। মা ছাড়া একেকটা দিন আমার দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয়। আমার তো বাবা নেই, এখন মাও চলে গেল। আমি এতিম হয়ে গেলাম। এখন পর্যন্ত নিজের বাসায় ফিরতে পারিনি। মা ছাড়া সে বাসায় ফিরব কী করে?”

শিক্ষক মাসুকা বেগমের ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান বলেন, “দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অনেক দিন ধরেই তার বোন অসুস্থ। চোখে কিছুটা কম দেখেন। মাসুকা সবসময় তার বাবা ও বোনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত, তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার চেষ্টা ছিল। বাবাকে নিয়মিত হাতখরচ পাঠাত। আমার ছেলে-মেয়েদের সে নিজের সন্তানের মতো মনে করত। প্রতিদিন তাদের সঙ্গে ওর কথা হতো। আমরা আর তার স্কুল— এই ছিল তার জীবন।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “তাদের কথা শুনতে কষ্ট লাগে। একইসঙ্গে গর্ববোধ হয় যে আমাদের দেশে এমন নাগরিক আছে, যারা অন্যের জীবন বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছে। মানবতার এ দৃষ্টান্ত তারা প্রমাণ করে গেছে। আমরা ক্ষুদ্র মানব ছিলাম, তারা আমাদের বড় করেছে। সবার ভেতরে নাড়া দিয়েছে। সবাই এটা নিজের মধ্যে অনুভব করেছে যে, ‘আমি যদি সেই অবস্থানে থাকতাম, আমি কী করতাম? আমি কি জীবনের পরোয়া না করে এভাবে ছোট শিশুদের প্রাণ বাঁচাতে আত্মবিসর্জন দিতাম?’ এ প্রশ্ন সবার মনে এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “এসব শিক্ষক আমাদের গর্ব, আমাদের আদর্শ। তাদের স্মৃতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। এজন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, আমরা তা করব।”

এ সময় যমুনায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

back to top