বুধবার দিনাজপুরে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার
অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, দেশে স্মরণকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ খাদ্য সংগৃহীত হয়েছে। যা ১০০ শতাংশের ওপরে। দিনাজপুর অঞ্চলেও লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হয়েছে। তারপরও দেশে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাল আমদানিসহ ৩ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
বুধবার,(২০ আগস্ট ২০২৫) বেলা ১২টায় দিনাজপুর সার্কিট হাউজে সরকারের চলমান খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।
চাল আমদানির ব্যাপারে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, চাল শুধু মানুষই খায়- তা নয়, গরু-ছাগল খায়, হাঁস-মুরগি খায়, মাছে খায়, অনেকে খায়। চালের বহুবিধ ব্যবহার হয়। সুতরাং চাহিদা না থাকলে কিন্তু এ জিনিসটা আসতো না। যারা চাল আমদানি করছেন তারা অবশ্যই লাভের সম্ভাবনা দেখেই আনছেন। বাজারের তুলনায় লাভ না থাকলে তারা কখনো চাল আনতো না। তিনি বলেন, ‘চাল আমদানির বিষয়ে যারা আবেদন দিয়েছিল, সেগুলো একটা কমিটি বাছাই করে অনুমতি দিয়েছে। আরও কেউ যদি চায় তাহলে আবেদন করতে পারবেন। এরইমধ্যে চাল আসা শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং বাজার যাতে স্থিতিশীল থাকে সেই কারণে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে ৩ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ১৫ আগস্টের পর থেকে বাজার থেকে ধান-চাল কেনা বন্ধ করেছি। পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল ছাড়া শুরু করেছি। এছাড়া চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এতে করে বাজারের চালের ওপর প্রভাব কমবে।
সিন্ডিকেটের ব্যাপারে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, যারা লাইসেন্সবিহীনভাবে খাদ্যশস্য মজুদ করে রাখবে অথবা লাইসেন্স এর শর্ত ভঙ্গ করবে কতদিন রাখতে পারবে কতটুকু পরিমাণ রাখতে পারবে, এটা কিন্তু লাইসেন্সের মধ্যে উল্লেখ করা থাকে যদি কেউ অনিয়ম করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং তাদের ধরা হবে।
বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, চালের বাজার অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আছে বলে আমি মনে করি। সরকার প্রতি কেজি চালে ২০-৩০ টাকা ভর্তুকি দেয়। বর্তমানে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। উৎপাদন খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষকদের লাভ করতে হয়। তাই চালের বাজার কিছুটা বাড়লেও এখন পর্যন্ত সহনশীল আছে। ভবিষ্যতে যাতে চালের বাজার সহনশীল থাকে সে জন্য সরকার তিন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে।’ খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, গত ১৭ আগস্ট থেকে সারাদেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হয়েছে। এবার উপকারভোগীর সংখ্যা ৫ লাখ বৃদ্ধি করে ৫৫ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল দেয়া হবে। এ কর্মসূচি চলবে ছয় মাস। ৫৫ লাখের মধ্যে ১০ লাখ রয়েছে রংপুর বিভাগে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। বিতরণ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় কোনো প্রকার অনিয়ম বা দুর্নীতি না হয় সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি প্রথম পর্যায়ে আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাস চলবে। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি এই দুই মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এরপর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ দুই মাস পুনরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলবে। এ বছর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে মোট ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হবে।
এর আগে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা খাদ্য বিভাগের আয়োজনে সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম এনডিসির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর। সভায় রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার দিনাজপুরে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার
বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, দেশে স্মরণকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ খাদ্য সংগৃহীত হয়েছে। যা ১০০ শতাংশের ওপরে। দিনাজপুর অঞ্চলেও লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হয়েছে। তারপরও দেশে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাল আমদানিসহ ৩ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
বুধবার,(২০ আগস্ট ২০২৫) বেলা ১২টায় দিনাজপুর সার্কিট হাউজে সরকারের চলমান খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।
চাল আমদানির ব্যাপারে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, চাল শুধু মানুষই খায়- তা নয়, গরু-ছাগল খায়, হাঁস-মুরগি খায়, মাছে খায়, অনেকে খায়। চালের বহুবিধ ব্যবহার হয়। সুতরাং চাহিদা না থাকলে কিন্তু এ জিনিসটা আসতো না। যারা চাল আমদানি করছেন তারা অবশ্যই লাভের সম্ভাবনা দেখেই আনছেন। বাজারের তুলনায় লাভ না থাকলে তারা কখনো চাল আনতো না। তিনি বলেন, ‘চাল আমদানির বিষয়ে যারা আবেদন দিয়েছিল, সেগুলো একটা কমিটি বাছাই করে অনুমতি দিয়েছে। আরও কেউ যদি চায় তাহলে আবেদন করতে পারবেন। এরইমধ্যে চাল আসা শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং বাজার যাতে স্থিতিশীল থাকে সেই কারণে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে ৩ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ১৫ আগস্টের পর থেকে বাজার থেকে ধান-চাল কেনা বন্ধ করেছি। পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল ছাড়া শুরু করেছি। এছাড়া চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছি। এতে করে বাজারের চালের ওপর প্রভাব কমবে।
সিন্ডিকেটের ব্যাপারে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, যারা লাইসেন্সবিহীনভাবে খাদ্যশস্য মজুদ করে রাখবে অথবা লাইসেন্স এর শর্ত ভঙ্গ করবে কতদিন রাখতে পারবে কতটুকু পরিমাণ রাখতে পারবে, এটা কিন্তু লাইসেন্সের মধ্যে উল্লেখ করা থাকে যদি কেউ অনিয়ম করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং তাদের ধরা হবে।
বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, চালের বাজার অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আছে বলে আমি মনে করি। সরকার প্রতি কেজি চালে ২০-৩০ টাকা ভর্তুকি দেয়। বর্তমানে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। উৎপাদন খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষকদের লাভ করতে হয়। তাই চালের বাজার কিছুটা বাড়লেও এখন পর্যন্ত সহনশীল আছে। ভবিষ্যতে যাতে চালের বাজার সহনশীল থাকে সে জন্য সরকার তিন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে।’ খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, গত ১৭ আগস্ট থেকে সারাদেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হয়েছে। এবার উপকারভোগীর সংখ্যা ৫ লাখ বৃদ্ধি করে ৫৫ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল দেয়া হবে। এ কর্মসূচি চলবে ছয় মাস। ৫৫ লাখের মধ্যে ১০ লাখ রয়েছে রংপুর বিভাগে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। বিতরণ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় কোনো প্রকার অনিয়ম বা দুর্নীতি না হয় সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি প্রথম পর্যায়ে আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাস চলবে। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি এই দুই মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এরপর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ দুই মাস পুনরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলবে। এ বছর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে মোট ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হবে।
এর আগে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা খাদ্য বিভাগের আয়োজনে সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম এনডিসির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর। সভায় রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা উপস্থিত ছিলেন।