মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ বৃহস্পতিবার দেশের একাধিক জেলার বিভিন্ন স্থানে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, পিরোজপুর ,দিনাজপুর, শরীয়তপুরসহ দেশের কয়েক জেলার বিভিন্ন স্থানের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদুল ফিতর পালন করছেন মির্জাখীল দরবারের অনুসারীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে চন্দনাইশ শাহসুফী মমতাজিয়া দরবার শরীফে দুটি ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদের প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. আলী এবং দ্বিতীয় জামায়াতে ইমামতি করেন শাহজাদা মনজুর আলী।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার দুটি গ্রামসহ সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ির অর্ধশতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হচ্ছে। সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করেন। আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ও তৈলারদ্বীপ গ্রামে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সিগঞ্জের ৯টি গ্রামে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। গ্রামগুলো হচ্ছে- সদর উপজেলার আনন্দপুর, শিলই, নায়েবকান্দি, আধারা, মিজিকান্দি, কালিরচর, বাংলাবাজার, বাঘাইকান্দির ও কংসপুরা একাংশ।
গ্রামগুলোর জাহাগীর তরিকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছে। বিগত বছরগুলোর মতো শিলই গ্রামে এই ঈদ জামাতে ইমামতি করেছেন হাজী ডা. মনিরুল ইসলাম। তিনি এবার অসুস্থ থাকায় তার ছেলে ঈদ জামাত পড়ান মো. সফিকুল ইসলাম।
সকাল ৯টায় খোলা মাঠে স্থানীয় ঈদগায়ে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কোলাকুলিসহ আনন্দে মেতে উঠেন গ্রামবাসী।
কলাপাড়ায় ঈদ উদযাপন
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার আজ বৃহস্পতিবার ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করছে। তারা প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। এই পরিবারগুলো এলাকায় চান টুপির লোক হিসেবে পরিচিত। মূলত তারা কাদরিয়া চিশতিয়া তরিকতের অনুসারী।
জানা গেছে, উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের উত্তর নিশানবাড়িয়া জাহাগিরিয়া শাহ্সূফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে এই অনুসারীদের ঈদের নামাজের প্রধান জামাত বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাফেজ মোহাম্মদ আরিফ এতে ইমামতি করেন। এ জামাতে ধানখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া, গিলাতলা, ফুলতলী ও পাঁচজুনিয়া গ্রামের চান টুপির লোকেরা অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া কলাপাড়া পৌর শহরের নাইয়াপট্টি, উত্তর লালুয়া মাঝিবাড়িসহ বিভিন্ন স্পটে আরও ৮টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া, গন্ডামারি, মরিচবুনিয়া, চালিতাবুনিয়া, ছইলাবুনিয়া, সেনের হাওলা, পৌর শহরের নাইয়াপট্টি, বাদুরতলী, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের তেগাছিয়া, সাফাখালী, চরপাড়া এবং আজিমদ্দিন গ্রামে প্রায় ৫ হাজার পরিবারে এ তরিকার ১৫ হাজার লোক বসবাস করেন।
কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া দরবার শরীফের পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন বিশ্বাস জানান, তারা চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চন নগর ইউনিয়নের পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের সিলসিলায়ে আলীয়া কাদরিয়া চিশতিয়া জাহাগিরিয়িা তরিকতের অনুসারী। যার কারণে তারা একদিন আগে রোজা রাখা শুরু করেন এবং ঈদও একদিন আগে উদযাপন করে থাকেন।
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান,
সৌদি আরবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দিনাজপুরে আজ ঈদ উদযাপন করছে প্রায় দেড় হাজার পরিবার। দিনাজপুর সদর, চিরিরবন্দর, বিরল, কাহারোল, বিরামপুর উপজেলাসহ বেশকিছু এলাকায় আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে।
আজ সকাল সাড়ে ৭টায় দিনাজপুর শহরের পার্টি সেন্টারে নারী-পুরুষসহ দুই শতাধিক মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। এ নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা সাইফুল ইসলাম।
এ ছাড়া দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতাড়া, বিরল উপজেলার কান্দেবপুর ও কাজিপাড়া, কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ ও গড়েয়া এবং বিরামপুর উপজেলায় দুটি গ্রামে আজ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলায় ১৩টি উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করছে।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান,সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে আজ পবিত্র ঈদ পালন করেছে শরীয়তপুরের ৩০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরিফের অনুসারী ৩০টির অধিক গ্রামের বাসিন্দারা আজ সকাল ৯টায় নিজ নিজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
সুরেশ্বর দরবার শরিফের পীর শাহ নূরে কামাল সুরেশ্বরী বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখি এবং ঈদ পালন করে থাকি। এ বছর সেই নিয়মেই আমরা আজ ঈদ পালন করছি। করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনা থাকায় আমরা মসজিদে নামাজ আদায় করেছি। এর আগে তারাবি নামাজও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করেছি।’
নূরে কামাল দাবি করেন, শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় দেড় কোটি মুসলমান আজ ঈদের নামাজ আদায় করেছে।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের ১৫ গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। জেলার হাজীগঞ্জের সাদ্রা মাদরাসা মাঠে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা আরীফ চৌধুরী। এ সময় আরীফ চৌধুরীর অনুসারী মুসল্লিরা ঈদের জামাতে অংশ নেন। পরে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব, কচুয়া ও শাহরাস্তিসহ পাঁচ উপজেলার প্রায় ১৫টি গ্রামে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। ঈদের নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
মাওলানা আরীফ চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার (১১ মে) সোমালিয়া, নাইজার ও পাকিস্থানে চাঁদ দেখে গেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর নির্ভরযোগ্য ছিল না। তাই বুধবার (১২ মে) আমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করিনি।
তিনি বলেন, যারা দুই দিন আগে ঈদ করেছে তারা ভুল তথ্যের মধ্যে দিয়ে ঈদ পালন করেছে। আর সেই সংখ্যা খুবই কম। বুধবার (১২ মে) হাজীগঞ্জ উপজেলার শমেষপুর ও সাদ্রা এলাকার দুটি গ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।
এর আগে সোমালিয়া, নাইজার ও পাকিস্থানে চাঁদ দেখে গেছে- এমন খবরের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার (১২ মে) চাঁদপুরের কয়েকটি গ্রামে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
১৯২৮ সাল থেকে মুফতি আল্লামা ইসহাক (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত চাঁদপুর জেলার সাদ্রা ঐতিহাসিক দরবার শরিফের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সর্বপ্রথম চাঁদ দর্শনের নির্ভরযোগ্য সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবছরই ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহাসহ ধর্মীয় সকল উৎসব পালন করেন। তবে এবার তাদের মাঝে দ্বন্দ্বের কারণে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিন আগাম ঈদ উদযাপিত হয়।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে দেখা গেছে উদাসীনতা। বেশিরভাগ মুসল্লির মুখে ছিল না ছিল মাস্ক। এছাড়াও সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা ইমান আলী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ করেন এসব গ্রামের মুসল্লিরা।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যাংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার কয়েকটি গ্রামে থাকা মির্জারখীল দরবার শরিফের ভক্তরাও আজ ঈদ উদ্যাপন করছেন।
এছাড়া মোংলা, বরিশাল, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজারের বেশ কয়েকটি এলাকায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়।
বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ বৃহস্পতিবার দেশের একাধিক জেলার বিভিন্ন স্থানে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, পিরোজপুর ,দিনাজপুর, শরীয়তপুরসহ দেশের কয়েক জেলার বিভিন্ন স্থানের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদুল ফিতর পালন করছেন মির্জাখীল দরবারের অনুসারীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে চন্দনাইশ শাহসুফী মমতাজিয়া দরবার শরীফে দুটি ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদের প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. আলী এবং দ্বিতীয় জামায়াতে ইমামতি করেন শাহজাদা মনজুর আলী।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার দুটি গ্রামসহ সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ির অর্ধশতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হচ্ছে। সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করেন। আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ও তৈলারদ্বীপ গ্রামে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সিগঞ্জের ৯টি গ্রামে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। গ্রামগুলো হচ্ছে- সদর উপজেলার আনন্দপুর, শিলই, নায়েবকান্দি, আধারা, মিজিকান্দি, কালিরচর, বাংলাবাজার, বাঘাইকান্দির ও কংসপুরা একাংশ।
গ্রামগুলোর জাহাগীর তরিকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছে। বিগত বছরগুলোর মতো শিলই গ্রামে এই ঈদ জামাতে ইমামতি করেছেন হাজী ডা. মনিরুল ইসলাম। তিনি এবার অসুস্থ থাকায় তার ছেলে ঈদ জামাত পড়ান মো. সফিকুল ইসলাম।
সকাল ৯টায় খোলা মাঠে স্থানীয় ঈদগায়ে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কোলাকুলিসহ আনন্দে মেতে উঠেন গ্রামবাসী।
কলাপাড়ায় ঈদ উদযাপন
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার আজ বৃহস্পতিবার ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করছে। তারা প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। এই পরিবারগুলো এলাকায় চান টুপির লোক হিসেবে পরিচিত। মূলত তারা কাদরিয়া চিশতিয়া তরিকতের অনুসারী।
জানা গেছে, উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের উত্তর নিশানবাড়িয়া জাহাগিরিয়া শাহ্সূফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে এই অনুসারীদের ঈদের নামাজের প্রধান জামাত বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাফেজ মোহাম্মদ আরিফ এতে ইমামতি করেন। এ জামাতে ধানখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া, গিলাতলা, ফুলতলী ও পাঁচজুনিয়া গ্রামের চান টুপির লোকেরা অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া কলাপাড়া পৌর শহরের নাইয়াপট্টি, উত্তর লালুয়া মাঝিবাড়িসহ বিভিন্ন স্পটে আরও ৮টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া, গন্ডামারি, মরিচবুনিয়া, চালিতাবুনিয়া, ছইলাবুনিয়া, সেনের হাওলা, পৌর শহরের নাইয়াপট্টি, বাদুরতলী, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের তেগাছিয়া, সাফাখালী, চরপাড়া এবং আজিমদ্দিন গ্রামে প্রায় ৫ হাজার পরিবারে এ তরিকার ১৫ হাজার লোক বসবাস করেন।
কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া দরবার শরীফের পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন বিশ্বাস জানান, তারা চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চন নগর ইউনিয়নের পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের সিলসিলায়ে আলীয়া কাদরিয়া চিশতিয়া জাহাগিরিয়িা তরিকতের অনুসারী। যার কারণে তারা একদিন আগে রোজা রাখা শুরু করেন এবং ঈদও একদিন আগে উদযাপন করে থাকেন।
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান,
সৌদি আরবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দিনাজপুরে আজ ঈদ উদযাপন করছে প্রায় দেড় হাজার পরিবার। দিনাজপুর সদর, চিরিরবন্দর, বিরল, কাহারোল, বিরামপুর উপজেলাসহ বেশকিছু এলাকায় আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে।
আজ সকাল সাড়ে ৭টায় দিনাজপুর শহরের পার্টি সেন্টারে নারী-পুরুষসহ দুই শতাধিক মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। এ নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা সাইফুল ইসলাম।
এ ছাড়া দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতাড়া, বিরল উপজেলার কান্দেবপুর ও কাজিপাড়া, কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ ও গড়েয়া এবং বিরামপুর উপজেলায় দুটি গ্রামে আজ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলায় ১৩টি উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করছে।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান,সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে আজ পবিত্র ঈদ পালন করেছে শরীয়তপুরের ৩০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরিফের অনুসারী ৩০টির অধিক গ্রামের বাসিন্দারা আজ সকাল ৯টায় নিজ নিজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
সুরেশ্বর দরবার শরিফের পীর শাহ নূরে কামাল সুরেশ্বরী বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখি এবং ঈদ পালন করে থাকি। এ বছর সেই নিয়মেই আমরা আজ ঈদ পালন করছি। করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনা থাকায় আমরা মসজিদে নামাজ আদায় করেছি। এর আগে তারাবি নামাজও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করেছি।’
নূরে কামাল দাবি করেন, শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় দেড় কোটি মুসলমান আজ ঈদের নামাজ আদায় করেছে।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের ১৫ গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। জেলার হাজীগঞ্জের সাদ্রা মাদরাসা মাঠে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা আরীফ চৌধুরী। এ সময় আরীফ চৌধুরীর অনুসারী মুসল্লিরা ঈদের জামাতে অংশ নেন। পরে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব, কচুয়া ও শাহরাস্তিসহ পাঁচ উপজেলার প্রায় ১৫টি গ্রামে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। ঈদের নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
মাওলানা আরীফ চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার (১১ মে) সোমালিয়া, নাইজার ও পাকিস্থানে চাঁদ দেখে গেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর নির্ভরযোগ্য ছিল না। তাই বুধবার (১২ মে) আমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করিনি।
তিনি বলেন, যারা দুই দিন আগে ঈদ করেছে তারা ভুল তথ্যের মধ্যে দিয়ে ঈদ পালন করেছে। আর সেই সংখ্যা খুবই কম। বুধবার (১২ মে) হাজীগঞ্জ উপজেলার শমেষপুর ও সাদ্রা এলাকার দুটি গ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।
এর আগে সোমালিয়া, নাইজার ও পাকিস্থানে চাঁদ দেখে গেছে- এমন খবরের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার (১২ মে) চাঁদপুরের কয়েকটি গ্রামে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
১৯২৮ সাল থেকে মুফতি আল্লামা ইসহাক (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত চাঁদপুর জেলার সাদ্রা ঐতিহাসিক দরবার শরিফের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সর্বপ্রথম চাঁদ দর্শনের নির্ভরযোগ্য সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবছরই ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহাসহ ধর্মীয় সকল উৎসব পালন করেন। তবে এবার তাদের মাঝে দ্বন্দ্বের কারণে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিন আগাম ঈদ উদযাপিত হয়।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে দেখা গেছে উদাসীনতা। বেশিরভাগ মুসল্লির মুখে ছিল না ছিল মাস্ক। এছাড়াও সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা ইমান আলী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ করেন এসব গ্রামের মুসল্লিরা।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যাংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার কয়েকটি গ্রামে থাকা মির্জারখীল দরবার শরিফের ভক্তরাও আজ ঈদ উদ্যাপন করছেন।
এছাড়া মোংলা, বরিশাল, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজারের বেশ কয়েকটি এলাকায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়।