alt

জাতীয়

ইসি গঠন আইন, এক বৈঠকেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত

ফয়েজ আহমেদ তুষার : সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

ইসি গঠনে প্রস্তাবিত আইনে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠকে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে কমিটি।

রোববার এ সংক্রান্ত (প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২) বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।

কমিটির সুপারিশে প্রতিবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং অযোগ্যাতার শর্তে দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের সঙ্গে সোমবার রাতে কথা হয় সংবাদের।

প্রথম দিনের বৈঠকেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। আমরা যোগ্যতা ও অযোগত্যার জায়গায় কিছু পরিবর্তন এনেছি।’

বৈঠকে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা কিছু সংযোজন প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা গ্রহণ করা হয়নি। গণমাধ্যমে এমন খবর এসেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘এমন তথ্য সঠিক নয়। তিনি (রুমিন) আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ আমরা তার বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শুনেছি। তিনি লিখিত আকারে কোন সংযোজন প্রস্তাব দেননি। রাজনৈতিক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। তিনি (রুমিন) বলেছেন, এই আইন ক্ষমতাসীনদের পক্ষে যাচ্ছে। কোন দফায় কি সংযোজন, বিয়োজন করা উচিত, সুনির্দিষ্ট এমন কোন প্রস্তাব তিনি দেননি।’

যে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ

সংসদে উত্থাপিত বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা সংক্রান্ত ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে কোন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্য পেশা’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

এর ফলে সুনির্দিষ্ট কিছু পেশজীবীর বাইরেও অনেকেরই কমিশনার হওয়ার সুযোগ থাকবে বলে জানান শহীদুজ্জামান সরকার।

আর অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬(ঘ) ধারায় বলা আছে, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে ‘দুই বছর’ শব্দ দুটি উঠিয়ে দেয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, নৈতিকস্খলন ফৌজদারি অপরাধে ‘যে কোন মেয়াদের’ সাজা হলেই সিইসি বা কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

বিলে আগের সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশনকে ‘বৈধতা’ দেয়া হচ্ছে বলে আলোচনা রয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদের প্রশ্নের জবাবে নওগাঁ থেকে চতুর্থ মেয়াদে সংসদে আসা আইন প্রণেতা এবং পেশায় আইনজীবী শহীদুজ্জামান বলেন, ‘ইনডেমনিটি বলছে অনেকে। ইনডেমনিটি নয়। আগের দুটো কমিশনের কার্যক্রমকে হেফাজত দেয়ার বিষয় এখানে আসেনি। কোন দায়মুক্তি নয়। সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতি ঐকমত্যের ভিত্তিতে করেছিলেন। বিলের ৯ দফায় শুধু সার্চ কমিটির বৈধতা দেয়া হয়েছে। আর আইনটা কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে। সার্চ কমিটির আইন নয়।’

আগামী বুধবার সংসদের মুলতবি বৈঠক শুরুর দিন প্রতিবেদনটি সংসদে উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানান কমিটির সভাপতি।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমকে রুমিন ফারহানা বলেন, আইনটির খসড়া নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে কোন আলাপ-আলোচনা করা হয়নি, এ বিষয়টি তিনি বৈঠকে উল্লেখ করেছিলেন। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের জন্য যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন, তার সঙ্গে এই খসড়ার কোন পার্থক্য নেই। যে কারণে অনেকে এটাকে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বলছেন, এমন তথ্যও তিনি বৈঠকে উপস্থাপন করেছেন।

তার প্রস্তাব ছিল- সার্চ কমিটি কাদের নাম প্রস্তাব করল, সেটা প্রকাশ করতে হবে, তার ওপর আলোচনা হবে, তারা আসলেই যোগ্য কি-না। যেহেতু এ বিষয়ে আইনে কিছু বলা হয়নি। তিনি এসব সংযোজন করতে বলেছিলেন। আইনের ৯ ধারায় ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা আইনের বেসিক কনসেপ্টের পরিপন্থী। রেস্ট্রোসপেকটিভ ইফেক্ট দেয়া আইনের চোখে কখনো ভালো হিসেবে দেখা হয় না। এটা পরিবর্তন করতে হবে।’ তবে তার এসব প্রস্তাব আমলে নেয়া হয়নি।

শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে সোমবারের বৈঠকে কমিটির সদস্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, শামসুল হক, আবদুল মজিদ খান, শামিম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝরনা সরকার, রুমিন ফারহানা ও সেলিম আলতাফ অংশ নেন। অধিবেশনের ভেতরে-বাইরে রাজনীতিক এবং অংশীজনদের আপত্তির মুখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইনের খসড়া রোববার জাতীয় সংসদে বিল আকারে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সে সময় অধিবেশনে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

বিলটি সম্পর্কে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব পেশায় আইনজীবী এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সংবাদকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে চিফ এক্সিকিউটিভের (প্রধানমন্ত্রীর) কর্তৃত্ব থেকেই যায়। যা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের অন্তরায়।’

জাতীয় পার্টি সংসদে এ সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব দেবে বলে জানান তিনি। ‘আইনটি অসম্পূর্ণ’ এমন মন্তব্য করে সংসদে সংশোধনী প্রস্তাব আনা হবে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

ছবি

বৃষ্টিপাত কমার আভাস, সরানো হলো সতর্ক সংকেত

ছবি

১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার

প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম গেলো ত্রিপুরা

৯৮৪টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ উত্তীর্ণ, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনে খসড়া অনুমোদন

৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা স্থগিতের তথ্য ভিত্তিহীন: পিএসসি

নির্মাণাধীন ভবনে সাবেক সচিব, বিচারক ও কর্মকর্তার ফ্ল্যাট, অনুসন্ধানে দুদক

দেশে আবার ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সবাই একমত: আলী রীয়াজ

সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিল

এস আলম ও পরিবারের সিঙ্গাপুরে ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ

অর্থ আত্মসাৎ স্বাস্থ্যের সাবেক পরিচালকসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় সড়কে প্রাণ গেল অন্তঃসত্ত্বার

ছবি

প্রতিবন্ধকতাকে উড়িয়ে এসএসসিতে অদম্য লিতুন জিরার চমক

ডেঙ্গু: চলতি বছরে আক্রান্ত প্রায় ১৪ হাজার, মোট মৃত্যু ৫৪ জনের

ছবি

বিএসএফ সীমান্তরক্ষী নয়, একটি খুনি বাহিনী: নাহিদ

ছবি

মোবাইল তুলতে গিয়ে ৪ চা শ্রমিকের মৃত্যু, বাগানে শোকের ছায়া

শাপলা-দোয়েল বাদ, যুক্ত হচ্ছে বেগুন, লাউ, লিচু

আইসিসিতে বিচার দাবি অ্যামনেস্টির

ছবি

নোয়াখালীতে টানা ভারী বর্ষণে পানিবন্দী ৬৩,৮৬০ পরিবার, আশ্রয়কেন্দ্রে ২৬৮ পরিবার, জনদুর্ভোগ চরমে

গণমাধ্যম সংস্কারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ১২ নতুন সিদ্ধান্ত

আরপিও, নির্বাচন কর্মকর্তা, আইন সংশোধনসহ এক গুচ্ছ সুপারিশ নিয়ে ইসির বৈঠক

পাসের হারে শীর্ষে রাজশাহী, পিছিয়ে বরিশাল বোর্ড

মার্কিন শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা আজ শেষ হচ্ছে, প্রথম দিনের আলোচনায় ‘বেশিরভাগ ইস্যুতে ঐকমত্য’

ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় সন্তুষ্ট বিএনপি

ছবি

১৫ বছর পর এসএসসি ও সমমানের ফলে ছন্দপতন, ১৯ লাখ পরীক্ষার্থীর ছয় লাখই ফেল

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার বিচার শুরু, দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হলেন সাবেক আইজিপি মামুন

ছবি

চীন ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

১৮ জুলাই গ্রাহকদের ১ জিবি ফ্রি ডেটা দিতে নির্দেশনা জারি করেছে বিটিআরসি

ছবি

শহীদ ও আহতদের জন্য আলাদা দুটি ফ্ল্যাট প্রকল্প একনেকে যাচ্ছে

ছবি

জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী ঐচ্ছিক প্রোটোকলসহ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন

ছবি

মাধ্যমিকে পাসের হার ৬৮.৪৫ শতাংশ

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রগতি, কিন্তু এখন মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য জরুরি: আলী রীয়াজ

ছবি

শাপলা-দোয়েল বাদ, নতুন তালিকায় ১১৫ প্রতীক

ছবি

বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের এবার বাদ দেওয়ার চিন্তা

ছবি

জুলাই আহতদের জন্য ঢাকায় দেড় হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে সরকার

ছবি

শেখ হাসিনার কল রেকর্ড ‘ট্রেলারমাত্র’, উদ্ধার করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা: তাজুল ইসলাম

tab

জাতীয়

ইসি গঠন আইন, এক বৈঠকেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত

ফয়েজ আহমেদ তুষার

সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

ইসি গঠনে প্রস্তাবিত আইনে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠকে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে কমিটি।

রোববার এ সংক্রান্ত (প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২) বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।

কমিটির সুপারিশে প্রতিবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং অযোগ্যাতার শর্তে দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের সঙ্গে সোমবার রাতে কথা হয় সংবাদের।

প্রথম দিনের বৈঠকেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। আমরা যোগ্যতা ও অযোগত্যার জায়গায় কিছু পরিবর্তন এনেছি।’

বৈঠকে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা কিছু সংযোজন প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা গ্রহণ করা হয়নি। গণমাধ্যমে এমন খবর এসেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘এমন তথ্য সঠিক নয়। তিনি (রুমিন) আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ আমরা তার বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শুনেছি। তিনি লিখিত আকারে কোন সংযোজন প্রস্তাব দেননি। রাজনৈতিক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। তিনি (রুমিন) বলেছেন, এই আইন ক্ষমতাসীনদের পক্ষে যাচ্ছে। কোন দফায় কি সংযোজন, বিয়োজন করা উচিত, সুনির্দিষ্ট এমন কোন প্রস্তাব তিনি দেননি।’

যে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ

সংসদে উত্থাপিত বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা সংক্রান্ত ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে কোন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্য পেশা’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

এর ফলে সুনির্দিষ্ট কিছু পেশজীবীর বাইরেও অনেকেরই কমিশনার হওয়ার সুযোগ থাকবে বলে জানান শহীদুজ্জামান সরকার।

আর অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬(ঘ) ধারায় বলা আছে, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে ‘দুই বছর’ শব্দ দুটি উঠিয়ে দেয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, নৈতিকস্খলন ফৌজদারি অপরাধে ‘যে কোন মেয়াদের’ সাজা হলেই সিইসি বা কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

বিলে আগের সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশনকে ‘বৈধতা’ দেয়া হচ্ছে বলে আলোচনা রয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদের প্রশ্নের জবাবে নওগাঁ থেকে চতুর্থ মেয়াদে সংসদে আসা আইন প্রণেতা এবং পেশায় আইনজীবী শহীদুজ্জামান বলেন, ‘ইনডেমনিটি বলছে অনেকে। ইনডেমনিটি নয়। আগের দুটো কমিশনের কার্যক্রমকে হেফাজত দেয়ার বিষয় এখানে আসেনি। কোন দায়মুক্তি নয়। সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতি ঐকমত্যের ভিত্তিতে করেছিলেন। বিলের ৯ দফায় শুধু সার্চ কমিটির বৈধতা দেয়া হয়েছে। আর আইনটা কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে। সার্চ কমিটির আইন নয়।’

আগামী বুধবার সংসদের মুলতবি বৈঠক শুরুর দিন প্রতিবেদনটি সংসদে উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানান কমিটির সভাপতি।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমকে রুমিন ফারহানা বলেন, আইনটির খসড়া নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে কোন আলাপ-আলোচনা করা হয়নি, এ বিষয়টি তিনি বৈঠকে উল্লেখ করেছিলেন। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের জন্য যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন, তার সঙ্গে এই খসড়ার কোন পার্থক্য নেই। যে কারণে অনেকে এটাকে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বলছেন, এমন তথ্যও তিনি বৈঠকে উপস্থাপন করেছেন।

তার প্রস্তাব ছিল- সার্চ কমিটি কাদের নাম প্রস্তাব করল, সেটা প্রকাশ করতে হবে, তার ওপর আলোচনা হবে, তারা আসলেই যোগ্য কি-না। যেহেতু এ বিষয়ে আইনে কিছু বলা হয়নি। তিনি এসব সংযোজন করতে বলেছিলেন। আইনের ৯ ধারায় ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা আইনের বেসিক কনসেপ্টের পরিপন্থী। রেস্ট্রোসপেকটিভ ইফেক্ট দেয়া আইনের চোখে কখনো ভালো হিসেবে দেখা হয় না। এটা পরিবর্তন করতে হবে।’ তবে তার এসব প্রস্তাব আমলে নেয়া হয়নি।

শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে সোমবারের বৈঠকে কমিটির সদস্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, শামসুল হক, আবদুল মজিদ খান, শামিম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝরনা সরকার, রুমিন ফারহানা ও সেলিম আলতাফ অংশ নেন। অধিবেশনের ভেতরে-বাইরে রাজনীতিক এবং অংশীজনদের আপত্তির মুখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইনের খসড়া রোববার জাতীয় সংসদে বিল আকারে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সে সময় অধিবেশনে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

বিলটি সম্পর্কে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব পেশায় আইনজীবী এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সংবাদকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে চিফ এক্সিকিউটিভের (প্রধানমন্ত্রীর) কর্তৃত্ব থেকেই যায়। যা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের অন্তরায়।’

জাতীয় পার্টি সংসদে এ সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব দেবে বলে জানান তিনি। ‘আইনটি অসম্পূর্ণ’ এমন মন্তব্য করে সংসদে সংশোধনী প্রস্তাব আনা হবে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

back to top