পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ অভিযোগকারীদের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বহুল প্রতীক্ষিত দেশের বৃহত্তম এ সেতু চালুর উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির বানোয়াট’ অভিযোগ তুলে বাংলাদেশকে অপমান করা হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করেই মোমেন বলেন, “যারা এই অপমান করেছে, তাদেরকে বলব আপনাদের উচিত হবে, ক্ষমা চাওয়া এবং স্বেচ্ছায় তাদেরকে কমপেনসেশন দিয়ে তাদের এই অপরাধ, নিজেদের গ্লানিটা দূর করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।”
সাত বছরের নির্মাণ কাজ আর দীর্ঘদিনের বিতর্ক ও সমালোচনা পেছনে ফেলে গত শনিবার দেশের বৃহত্তম এ যোগাযোগ অবকাঠামো উদ্বোধন করা হয়। পরদিন রোববার থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া প্রমত্তা পদ্মার উপর দিয়ে দক্ষিণ জনপদের ২১ জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয় দেশের সব এলাকার।
বিশ্ব ব্যাংকসহ চারটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের ওপর ভর করে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার।
সেতুর নির্মাণ কার্যক্রম এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়ে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীটি।
ওই সময় বহুজাতিক ওই প্রতিষ্ঠানের চাপে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, পদ্মা সেতুর ইনটেগ্রিটি অ্যাডভাইজার মসিউর রহমান ও সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে সরাতে হয়েছিল; যা গড়িয়ে ছিল মামলা পর্যন্ত।
ওই ঘটনায় দুদকের মামলার তদন্তে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা উঠে আসে। অন্যদিকে, কানাডার আদালতে গিয়েও দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ করতে পারেনি বিশ্ব ব্যাংক।
সেতু চালুর উদযাপনে মঙ্গলবার ফরেইন সার্ভিস একাডেমিতে ওই আয়োজনে আরও বক্তব্য দিয়েছেন বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান এবং জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াও।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে যে মূল্যবান অর্জন, অনেকে বিশ্বাস করতে পারেনি, সেই অর্জনটা আমরা করেছি। পদ্মা সেতু আমাদের জন্য সে রকম একটি গৌরবের অধ্যায়। আমাদের অনেক বড় অর্জন।
“কত ব্রিজ, কত বড় কী সেটা না, আমাদের যে প্যাঁচে ফেলার একটা চেষ্টা, আমাদেরকে নিচে ফেলার অপচেষ্টা, মিথ্যা-বানোয়াট গল্প তৈরি করে আমাদেরকে যে হেয় করার চেষ্টা, সেজন্য এটা বিশেষ দিক রেখে গেছে।”
বিদেশিদের কথায় যারা প্রভাবিত হয়, তাদেরও কড়া সমালোচনা করেন শিক্ষকতা থেকে রাজনীতিতে আসা মোমেন।
তিনি বলেন, “বিদেশিদের কথায় অনেকে লাফালাফি করেন, আমি সেজন্য খুব দুঃখ পাই। আমি সবাইকে বলতে চাই, পদ্মা সেতু আমাদের শিক্ষা দিল যে, আমরা আমাদের মানুষের কথা চিন্তা করে, আমাদের দেশের অবস্থান বিবেচনা করে বিদেশিদের কথায় শুধু লাফাব না।
“বিদেশিরা অনেক সময় বিভিন্ন রকমের ফন্দিফিকিরের কারণে, অনেক কিছু স্বার্থের ফিকিরে তারা বিভিন্ন রকম কথা বলেন, স্যাংশন দেয়, তাদের পাবলিক ফেইস এক আর প্রাইভেট ফেইস এক। এটা আমাদের উপলব্ধি করার সময় এসেছে।”
বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রকম ফন্দিফিকিরের কারণে অনেক সময় অভিযোগ তুলে থাকে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সেজন্য আমি দেশবাসীকে, বিশেষ করে যারা পণ্ডিতজন, যারা জ্ঞানপাপী তাদের বলতে চাই, চিন্তার পরিধি আরও বিস্তৃত করেন।
“যারা আমাদেরকে অপবাদ দিয়েছিল, এই যে যাদের উপর অত্যাচার করেছিল, যাদের চারিত্রিক মূল্যবোধ প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল…আমাদের উচিত হবে, চিন্তার পরিধিকে বিস্তৃত করেন।”
অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্ত ও দৃঢ়তার কারণে এই সেতু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। দেশের মানুষের কল্যাণকে সে সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রভাগে রেখেছিলেন তিনি।”
এই সেতুকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহের আর্কাইভ তৈরি করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত মোশাররফ বলেন, “একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভুয়া অভিযোগ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের মত প্রতিষ্ঠান যে সময় ও অর্থ নষ্ট করেছে তা কোনোভাবে হতে পারে না।”
অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বক্তব্য দেন।
বুধবার, ২৯ জুন ২০২২
পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ অভিযোগকারীদের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বহুল প্রতীক্ষিত দেশের বৃহত্তম এ সেতু চালুর উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির বানোয়াট’ অভিযোগ তুলে বাংলাদেশকে অপমান করা হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করেই মোমেন বলেন, “যারা এই অপমান করেছে, তাদেরকে বলব আপনাদের উচিত হবে, ক্ষমা চাওয়া এবং স্বেচ্ছায় তাদেরকে কমপেনসেশন দিয়ে তাদের এই অপরাধ, নিজেদের গ্লানিটা দূর করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।”
সাত বছরের নির্মাণ কাজ আর দীর্ঘদিনের বিতর্ক ও সমালোচনা পেছনে ফেলে গত শনিবার দেশের বৃহত্তম এ যোগাযোগ অবকাঠামো উদ্বোধন করা হয়। পরদিন রোববার থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া প্রমত্তা পদ্মার উপর দিয়ে দক্ষিণ জনপদের ২১ জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয় দেশের সব এলাকার।
বিশ্ব ব্যাংকসহ চারটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের ওপর ভর করে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার।
সেতুর নির্মাণ কার্যক্রম এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়ে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীটি।
ওই সময় বহুজাতিক ওই প্রতিষ্ঠানের চাপে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, পদ্মা সেতুর ইনটেগ্রিটি অ্যাডভাইজার মসিউর রহমান ও সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে সরাতে হয়েছিল; যা গড়িয়ে ছিল মামলা পর্যন্ত।
ওই ঘটনায় দুদকের মামলার তদন্তে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা উঠে আসে। অন্যদিকে, কানাডার আদালতে গিয়েও দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ করতে পারেনি বিশ্ব ব্যাংক।
সেতু চালুর উদযাপনে মঙ্গলবার ফরেইন সার্ভিস একাডেমিতে ওই আয়োজনে আরও বক্তব্য দিয়েছেন বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান এবং জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াও।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে যে মূল্যবান অর্জন, অনেকে বিশ্বাস করতে পারেনি, সেই অর্জনটা আমরা করেছি। পদ্মা সেতু আমাদের জন্য সে রকম একটি গৌরবের অধ্যায়। আমাদের অনেক বড় অর্জন।
“কত ব্রিজ, কত বড় কী সেটা না, আমাদের যে প্যাঁচে ফেলার একটা চেষ্টা, আমাদেরকে নিচে ফেলার অপচেষ্টা, মিথ্যা-বানোয়াট গল্প তৈরি করে আমাদেরকে যে হেয় করার চেষ্টা, সেজন্য এটা বিশেষ দিক রেখে গেছে।”
বিদেশিদের কথায় যারা প্রভাবিত হয়, তাদেরও কড়া সমালোচনা করেন শিক্ষকতা থেকে রাজনীতিতে আসা মোমেন।
তিনি বলেন, “বিদেশিদের কথায় অনেকে লাফালাফি করেন, আমি সেজন্য খুব দুঃখ পাই। আমি সবাইকে বলতে চাই, পদ্মা সেতু আমাদের শিক্ষা দিল যে, আমরা আমাদের মানুষের কথা চিন্তা করে, আমাদের দেশের অবস্থান বিবেচনা করে বিদেশিদের কথায় শুধু লাফাব না।
“বিদেশিরা অনেক সময় বিভিন্ন রকমের ফন্দিফিকিরের কারণে, অনেক কিছু স্বার্থের ফিকিরে তারা বিভিন্ন রকম কথা বলেন, স্যাংশন দেয়, তাদের পাবলিক ফেইস এক আর প্রাইভেট ফেইস এক। এটা আমাদের উপলব্ধি করার সময় এসেছে।”
বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রকম ফন্দিফিকিরের কারণে অনেক সময় অভিযোগ তুলে থাকে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সেজন্য আমি দেশবাসীকে, বিশেষ করে যারা পণ্ডিতজন, যারা জ্ঞানপাপী তাদের বলতে চাই, চিন্তার পরিধি আরও বিস্তৃত করেন।
“যারা আমাদেরকে অপবাদ দিয়েছিল, এই যে যাদের উপর অত্যাচার করেছিল, যাদের চারিত্রিক মূল্যবোধ প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল…আমাদের উচিত হবে, চিন্তার পরিধিকে বিস্তৃত করেন।”
অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্ত ও দৃঢ়তার কারণে এই সেতু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। দেশের মানুষের কল্যাণকে সে সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রভাগে রেখেছিলেন তিনি।”
এই সেতুকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহের আর্কাইভ তৈরি করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত মোশাররফ বলেন, “একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভুয়া অভিযোগ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের মত প্রতিষ্ঠান যে সময় ও অর্থ নষ্ট করেছে তা কোনোভাবে হতে পারে না।”
অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বক্তব্য দেন।