alt

জাতীয়

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে : বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও ডিসেম্বরে চালুর পরিকল্পনা

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ : শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০২২

নির্মাণ কাজ চলছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের -সংবাদ

ঢাকার যানজট নিরসনে উত্তরার বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়ক)। ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি নির্মাণ হলে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১৫-২০ মিনিটে কুতুবখালী দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠা যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

এই প্রকল্পের একটি অংশ চলতি বছরের ডিসেম্বরে খুলে দেয়া হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা থেকে বনানী রেলগেট পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত চালু হওয়ার কথা রয়েছে ডিসেম্বরে। এ পর্যন্ত উড়াল সড়ক প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তিনটি অংশে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে চলছে এ প্রকল্পের কাজ। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সেতু কর্তৃপক্ষ। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত উড়াল সড়কে নির্মাণ করা হচ্ছে।

প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর সংবাদকে বলেন, ‘উত্তরা বিমানবন্দর থেকে বনানী হয়ে তেজগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ভালো। আমরা আশা করছি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই অংশ চালু করা যাবে। এছাড়া বাকি অংশটুকু পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।’

প্রকল্প সূত্র জানায়, তিনটি অংশের মধ্যে প্রথম অংশ : বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত মোট দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এ অংশের অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ। দ্বিতীয় অংশ : বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। এই অংশের অংশের অগ্রগতি ২৬ শতাংশ। তৃতীয় অংশ : মগবাজার-যাত্রাবাড়ীর হয়ে কুতুবখালী পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার। এ অংশের অগ্রগতি ১০ শতাংশ।

বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলগেট অংশের মূল কাজ শেষ হয়েছে। আরও ৪ মাসের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে। তাই ডিসেম্বরে এই অংশটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর খুলে দেয়া হবে। কিন্তু নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রেখে চলতি বছরেই সাড়ে ৭ কিলোমিটার খুলে দেয়া হবে। বাকি অংশ ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রকল্প পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেছিলেন, ‘প্রকল্পের কাজ চলছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে প্রথম অংশটি দ্রুত খুলে দেয়া হবে। কিন্তু নিদিষ্ট সময় বলা হয়নি। প্রকল্প অংশের কঠিন কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রথম অংশ ৭৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো অংশ ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে।’ প্রকল্প সূত্র জানায়, উড়াল সড়কটির প্রথম অংশের এক হাজার ৪৮২টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে। ৩২৯টি পাইল ক্যাপের মধ্যে ২৯০টির কাজ শেষ, ৩২৯টি কলামের মধ্যে ২৮৫টি কলামের কাজ শেষ হয়েছে। ৩২৯টি ক্রস-বিমের মধ্যে ২৩৫টি, ৩ হাজার ৭২টি আই গার্ডারের মধ্যে এক হাজার ৪৫২টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া বনানী থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ২১৭৯টি পাইলের মধ্যে ১২৫৩, ৬৩১টি পাইল ক্যাপের মধ্যে ১২৫টি, ৬৩১টি কলামের মধ্যে ৯৯টি ও তিনটি টি ক্রস-বিমের কাজ শেষ হয়েছে।

জটিলতা : ৫ বছরের নির্মাণের কাজ চলছে ১২ বছর

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (বিরতিহীন উড়াল সড়কপথ) নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন হয় ২০০৯ সালে। ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। রুট জটিলতা ও অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ আর শুরু হয়নি। পরবর্তী সময়ে ২০১৩ সালে এক্সপ্রেসওয়ের রুট সংশোধন করা হয়। এর ভিত্তিতে সংশোধন করা হয় এক্সপ্রেসওয়ের নকশা। পরে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। এর মধ্যে প্রকল্প ব্যয় দুই দফা ও মেয়াদ তিন দফা সময় বাড়ানো হয়েছে।

ডিপিপি অনুমোদনে মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে ডিপিপি প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। একই সঙ্গে সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় সংশোধনী প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ও ব্যয় বেড়ে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চায়না এক্সিম ব্যাংক ও আইসিবি চায়না যৌথভাবে ৭ হাজার ৩১৮ কোটি কাটা ঋণ সহায়তা দিবে। বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদার (পিপিপি) ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি।

২৫ বছর টোল আদায় করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল দিয়ে চলাচল করবে সব যানবাহন। প্রাথমিকভাবে টোল ধরা হয়েছে প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য মোটরগাড়িতে ১২৫ টাকা, যাত্রীবাহী বাসে ২৫০ টাকা, ৬ চাকার ট্রাকে ৫০০ টাকা আর ৬ চাকার বেশি ট্রাকের জন্য ৬২৫ টাকা। তিন বছর পর পর টোলের হার পুনঃনির্ধারণ করা হবে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ২৫ বছর টোল আদায় করবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প ব্যয় ও টোলের হার বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব ২০১৩ সালের নভেম্বরে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন করা হয় বলে সেতু বিভাগের সূত্র জানায়।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেন, ‘পিপিপি ভিত্তিতে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৫ বছর টোল আদায়ের মাধ্যমে খরচ উঠাবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ অর্থায়ন জটিলতায় কাজে ধীরগতি ছিল। এখন এই সমস্যা কেটে গেছে।’ তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

ছবি

বৃষ্টিপাত কমার আভাস, সরানো হলো সতর্ক সংকেত

ছবি

১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার

প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম গেলো ত্রিপুরা

৯৮৪টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ উত্তীর্ণ, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনে খসড়া অনুমোদন

৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা স্থগিতের তথ্য ভিত্তিহীন: পিএসসি

নির্মাণাধীন ভবনে সাবেক সচিব, বিচারক ও কর্মকর্তার ফ্ল্যাট, অনুসন্ধানে দুদক

দেশে আবার ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সবাই একমত: আলী রীয়াজ

সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিল

এস আলম ও পরিবারের সিঙ্গাপুরে ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ

অর্থ আত্মসাৎ স্বাস্থ্যের সাবেক পরিচালকসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় সড়কে প্রাণ গেল অন্তঃসত্ত্বার

ছবি

প্রতিবন্ধকতাকে উড়িয়ে এসএসসিতে অদম্য লিতুন জিরার চমক

ডেঙ্গু: চলতি বছরে আক্রান্ত প্রায় ১৪ হাজার, মোট মৃত্যু ৫৪ জনের

ছবি

বিএসএফ সীমান্তরক্ষী নয়, একটি খুনি বাহিনী: নাহিদ

ছবি

মোবাইল তুলতে গিয়ে ৪ চা শ্রমিকের মৃত্যু, বাগানে শোকের ছায়া

শাপলা-দোয়েল বাদ, যুক্ত হচ্ছে বেগুন, লাউ, লিচু

আইসিসিতে বিচার দাবি অ্যামনেস্টির

ছবি

নোয়াখালীতে টানা ভারী বর্ষণে পানিবন্দী ৬৩,৮৬০ পরিবার, আশ্রয়কেন্দ্রে ২৬৮ পরিবার, জনদুর্ভোগ চরমে

গণমাধ্যম সংস্কারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ১২ নতুন সিদ্ধান্ত

আরপিও, নির্বাচন কর্মকর্তা, আইন সংশোধনসহ এক গুচ্ছ সুপারিশ নিয়ে ইসির বৈঠক

পাসের হারে শীর্ষে রাজশাহী, পিছিয়ে বরিশাল বোর্ড

মার্কিন শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা আজ শেষ হচ্ছে, প্রথম দিনের আলোচনায় ‘বেশিরভাগ ইস্যুতে ঐকমত্য’

ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় সন্তুষ্ট বিএনপি

ছবি

১৫ বছর পর এসএসসি ও সমমানের ফলে ছন্দপতন, ১৯ লাখ পরীক্ষার্থীর ছয় লাখই ফেল

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার বিচার শুরু, দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হলেন সাবেক আইজিপি মামুন

ছবি

চীন ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

১৮ জুলাই গ্রাহকদের ১ জিবি ফ্রি ডেটা দিতে নির্দেশনা জারি করেছে বিটিআরসি

ছবি

শহীদ ও আহতদের জন্য আলাদা দুটি ফ্ল্যাট প্রকল্প একনেকে যাচ্ছে

ছবি

জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী ঐচ্ছিক প্রোটোকলসহ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন

ছবি

মাধ্যমিকে পাসের হার ৬৮.৪৫ শতাংশ

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রগতি, কিন্তু এখন মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য জরুরি: আলী রীয়াজ

ছবি

শাপলা-দোয়েল বাদ, নতুন তালিকায় ১১৫ প্রতীক

ছবি

বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের এবার বাদ দেওয়ার চিন্তা

ছবি

জুলাই আহতদের জন্য ঢাকায় দেড় হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে সরকার

ছবি

শেখ হাসিনার কল রেকর্ড ‘ট্রেলারমাত্র’, উদ্ধার করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা: তাজুল ইসলাম

tab

জাতীয়

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে : বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও ডিসেম্বরে চালুর পরিকল্পনা

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

নির্মাণ কাজ চলছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের -সংবাদ

শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০২২

ঢাকার যানজট নিরসনে উত্তরার বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়ক)। ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি নির্মাণ হলে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১৫-২০ মিনিটে কুতুবখালী দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠা যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

এই প্রকল্পের একটি অংশ চলতি বছরের ডিসেম্বরে খুলে দেয়া হবে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা থেকে বনানী রেলগেট পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত চালু হওয়ার কথা রয়েছে ডিসেম্বরে। এ পর্যন্ত উড়াল সড়ক প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তিনটি অংশে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে চলছে এ প্রকল্পের কাজ। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সেতু কর্তৃপক্ষ। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত উড়াল সড়কে নির্মাণ করা হচ্ছে।

প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুল কবীর সংবাদকে বলেন, ‘উত্তরা বিমানবন্দর থেকে বনানী হয়ে তেজগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ভালো। আমরা আশা করছি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই অংশ চালু করা যাবে। এছাড়া বাকি অংশটুকু পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।’

প্রকল্প সূত্র জানায়, তিনটি অংশের মধ্যে প্রথম অংশ : বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত মোট দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এ অংশের অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ। দ্বিতীয় অংশ : বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। এই অংশের অংশের অগ্রগতি ২৬ শতাংশ। তৃতীয় অংশ : মগবাজার-যাত্রাবাড়ীর হয়ে কুতুবখালী পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার। এ অংশের অগ্রগতি ১০ শতাংশ।

বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলগেট অংশের মূল কাজ শেষ হয়েছে। আরও ৪ মাসের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে। তাই ডিসেম্বরে এই অংশটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর খুলে দেয়া হবে। কিন্তু নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রেখে চলতি বছরেই সাড়ে ৭ কিলোমিটার খুলে দেয়া হবে। বাকি অংশ ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রকল্প পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেছিলেন, ‘প্রকল্পের কাজ চলছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে প্রথম অংশটি দ্রুত খুলে দেয়া হবে। কিন্তু নিদিষ্ট সময় বলা হয়নি। প্রকল্প অংশের কঠিন কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রথম অংশ ৭৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো অংশ ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে।’ প্রকল্প সূত্র জানায়, উড়াল সড়কটির প্রথম অংশের এক হাজার ৪৮২টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে। ৩২৯টি পাইল ক্যাপের মধ্যে ২৯০টির কাজ শেষ, ৩২৯টি কলামের মধ্যে ২৮৫টি কলামের কাজ শেষ হয়েছে। ৩২৯টি ক্রস-বিমের মধ্যে ২৩৫টি, ৩ হাজার ৭২টি আই গার্ডারের মধ্যে এক হাজার ৪৫২টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া বনানী থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ২১৭৯টি পাইলের মধ্যে ১২৫৩, ৬৩১টি পাইল ক্যাপের মধ্যে ১২৫টি, ৬৩১টি কলামের মধ্যে ৯৯টি ও তিনটি টি ক্রস-বিমের কাজ শেষ হয়েছে।

জটিলতা : ৫ বছরের নির্মাণের কাজ চলছে ১২ বছর

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (বিরতিহীন উড়াল সড়কপথ) নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন হয় ২০০৯ সালে। ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। রুট জটিলতা ও অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ আর শুরু হয়নি। পরবর্তী সময়ে ২০১৩ সালে এক্সপ্রেসওয়ের রুট সংশোধন করা হয়। এর ভিত্তিতে সংশোধন করা হয় এক্সপ্রেসওয়ের নকশা। পরে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। এর মধ্যে প্রকল্প ব্যয় দুই দফা ও মেয়াদ তিন দফা সময় বাড়ানো হয়েছে।

ডিপিপি অনুমোদনে মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে ডিপিপি প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। একই সঙ্গে সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় সংশোধনী প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ও ব্যয় বেড়ে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চায়না এক্সিম ব্যাংক ও আইসিবি চায়না যৌথভাবে ৭ হাজার ৩১৮ কোটি কাটা ঋণ সহায়তা দিবে। বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদার (পিপিপি) ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি।

২৫ বছর টোল আদায় করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল দিয়ে চলাচল করবে সব যানবাহন। প্রাথমিকভাবে টোল ধরা হয়েছে প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য মোটরগাড়িতে ১২৫ টাকা, যাত্রীবাহী বাসে ২৫০ টাকা, ৬ চাকার ট্রাকে ৫০০ টাকা আর ৬ চাকার বেশি ট্রাকের জন্য ৬২৫ টাকা। তিন বছর পর পর টোলের হার পুনঃনির্ধারণ করা হবে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ২৫ বছর টোল আদায় করবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প ব্যয় ও টোলের হার বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব ২০১৩ সালের নভেম্বরে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন করা হয় বলে সেতু বিভাগের সূত্র জানায়।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেন, ‘পিপিপি ভিত্তিতে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৫ বছর টোল আদায়ের মাধ্যমে খরচ উঠাবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ অর্থায়ন জটিলতায় কাজে ধীরগতি ছিল। এখন এই সমস্যা কেটে গেছে।’ তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

back to top