alt

জাতীয়

শ্রদ্ধায় জনককে স্মরণ করল জাতি, কমিশন গঠনের দাবি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ১৫ আগস্ট ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক দিবসে বনানী কবরস্থানে মা, ভাই ও স্বজনদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন

বিনম্র শ্রদ্ধায় সারাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপশি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

এবার দাবি উঠেছে, তদন্ত কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে, তাদের বিচারের আওতায় আনার পাশপাশি বঙ্গবন্ধুর খুনি যারা এখনও বিদেশে পলাতক, দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকরের দাবিও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি থেকে।

বঙ্গবন্ধুর সমাধি ও প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া, শোকসভা, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গতকাল রোববারই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। রাতভর মাইকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পাশপাশি জনপ্রিয় দেশাত্ববোধক গান প্রচার চলে। পাশপাশি চলে খিচুড়ি রান্নার আয়োজন। সোমবার (১৫ আগস্ট) দুস্থদের জন্য খাবার বিতরণ এখন থেকেই করা হয়। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি নানা সংগঠনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, মসজিদ এবং অন্য উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনাসহ নানা আয়োজন ছিল দিবসটি উপলক্ষে।

তবে সোমবার সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

প্রথমে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকশ দল জাতির পিতার প্রতি রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পরে ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী (পক্ষে সংসদ সচিবালয়ের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস) এবং প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকিৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবেও শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ দলের জ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম প্রধান কুশীলব বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ হত্যাকারীদের বিচার হলেও জিয়াউর রহমানসহ নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার হয়নি। এদের বিচারের আওতায় এনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মুখোশ উন্মোচন করা জাতির প্রত্যাশা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক রাজধানীর বাইরে শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের শীঘ্রই ফিরেয়ে আনা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। দুই দিন আগে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের নেপথ্যে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে এ বছরই কমিশন গঠন করা হবে। কমিশনের রূপরেখা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের ঐতিহাসিক বাসভবন পরিদর্শন করেন। স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক-দালালদের চক্রান্তে ৪৭ বছর আগের এই দিনে এখানেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বাড়িটি এখন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে, সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন সরকারপ্রধান।

এরপর প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। সেখানে তিনি তার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অন্য শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকশ দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। পরে সেখানে ফাতেহা পাঠ ও শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত ও দোয়ায় অংশ নেন শেখ হাসিনা। পরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশে তিনি বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান।

সেখানে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সরকারপ্রধান। এরপর স্বাধীনতার স্থপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকশ দল সেখানে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

প্রধানমন্ত্রী এরপর বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের অন্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে জাতির পিতার সমাধিতে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন। এছাড়া জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে জাতির পিতার সমাধিতে আরেকটি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

আওয়ামী লীগ এবং এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতরারও বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে জাতির পিতার সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বাদ মাগরিব বঙ্গভবনের দরবার হলে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে বেলা ১১টার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়ক সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেয়া হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।

সকাল থেকেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের আশপাশে ফুল হাতে জনতার আনাগোনা শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ত্যাগ করার পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে জনতার ঢল নামে।

ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎসজীবী লীগের নেতাকর্মী ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের পক্ষ থেকে এ সময় প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ বেতার, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিনিধিরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক-দালালদের ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবাষির্কী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমলে দিবসটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

দিবসটি উপলক্ষে রোববার রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দেন। সোমবার ছিল সরকারি ছুটির দিন। রাজধানীতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, সংস্থা এবং সারাদেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করেছে।

সোমবার ভোরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দলের ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন ইউনিট কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে শোক দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা সরাসরি সম্প্রচারসহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।

বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ১০০ বার কুরআন খতম ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুরআন খতম ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করে। কুরআন খতম শেষে জাতির পিতা ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এদিকে মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা ১ মিনিট) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭-এ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০) মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও বিশেষ প্রার্থনা, সকাল ৯টায় তেজগাঁও হলি রোজারি চার্চে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করে।

এদিকে সারাদেশে জেলা, উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়েও বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী পালন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন। দিবসটি উপলক্ষে কোরআনখানি, মিলাদ, দোয়া, শোকসভা, প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

ছবি

বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চায় প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুরে মরে যাচ্ছে মুরগি, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে খামার

ছবি

আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

একটানা এতদিন এত তাপ দেখেনি বাংলাদেশ

রোববার খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ‘ভিত্তিহীন’ তথ্য রয়েছে

ছবি

গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা টিকিয়ে রাখতে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে বদ্ধপরিকর ইসি

ছবি

থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

ছবি

মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুনাই থেকে ফিরছে দুই বাংলাদেশির লাশ

ছবি

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হলেন এম ইউ কবীর চৌধুরী

বাল্যবিবাহ রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে : মানবাধিকার কমিশন

ছবি

১৫ বছরে আমাদের চাল আমদানি করতে হয়নি: এলজিআরডি মন্ত্রী

ছবি

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি

ছবি

যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

গ্যাস সংকটে আগামীর ‘ভরসা’ এলএনজি

ছবি

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর : ‘আমার স্বপ্নও ভেঙে গেছে’

ছবি

এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য

ছবি

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

ছবি

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৩ নতুন বিচারক

ছবি

কক্সবাজারে ভোটার হওয়া রোহিঙ্গাদের তালিকা চায় হাই কোর্ট

ছবি

ব্যাংকক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

তাপপ্রবাহের এলাকা আরও বাড়বে

ছবি

ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ৫টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক সই

ছবি

ঢাকা ছাড়লেন কাতারের আমির

ছবি

সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা জব্দ করা জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছেছে; ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকের সবাই নিরাপদ

ছবি

পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

ছবি

পদত্যাগ না করেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

ছবি

বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত : ইসি সচিব

ছবি

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড , আছে লোড শেডিংও

ছবি

বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই

ছবি

ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বাড়লো আরও ৩ দিন, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ড এর যৌথ অংশগ্রহণে টিএল-২০২৪ উদ্বোধন

ছবি

শিশু অধিকার বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ--স্পীকার

tab

জাতীয়

শ্রদ্ধায় জনককে স্মরণ করল জাতি, কমিশন গঠনের দাবি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক দিবসে বনানী কবরস্থানে মা, ভাই ও স্বজনদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন

সোমবার, ১৫ আগস্ট ২০২২

বিনম্র শ্রদ্ধায় সারাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপশি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

এবার দাবি উঠেছে, তদন্ত কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে, তাদের বিচারের আওতায় আনার পাশপাশি বঙ্গবন্ধুর খুনি যারা এখনও বিদেশে পলাতক, দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকরের দাবিও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি থেকে।

বঙ্গবন্ধুর সমাধি ও প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া, শোকসভা, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গতকাল রোববারই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। রাতভর মাইকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পাশপাশি জনপ্রিয় দেশাত্ববোধক গান প্রচার চলে। পাশপাশি চলে খিচুড়ি রান্নার আয়োজন। সোমবার (১৫ আগস্ট) দুস্থদের জন্য খাবার বিতরণ এখন থেকেই করা হয়। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি নানা সংগঠনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, মসজিদ এবং অন্য উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনাসহ নানা আয়োজন ছিল দিবসটি উপলক্ষে।

তবে সোমবার সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

প্রথমে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকশ দল জাতির পিতার প্রতি রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পরে ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী (পক্ষে সংসদ সচিবালয়ের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস) এবং প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকিৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবেও শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ দলের জ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম প্রধান কুশীলব বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ হত্যাকারীদের বিচার হলেও জিয়াউর রহমানসহ নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার হয়নি। এদের বিচারের আওতায় এনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মুখোশ উন্মোচন করা জাতির প্রত্যাশা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক রাজধানীর বাইরে শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের শীঘ্রই ফিরেয়ে আনা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। দুই দিন আগে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের নেপথ্যে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে এ বছরই কমিশন গঠন করা হবে। কমিশনের রূপরেখা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের ঐতিহাসিক বাসভবন পরিদর্শন করেন। স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক-দালালদের চক্রান্তে ৪৭ বছর আগের এই দিনে এখানেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বাড়িটি এখন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে, সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন সরকারপ্রধান।

এরপর প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। সেখানে তিনি তার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অন্য শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকশ দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। পরে সেখানে ফাতেহা পাঠ ও শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত ও দোয়ায় অংশ নেন শেখ হাসিনা। পরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশে তিনি বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান।

সেখানে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সরকারপ্রধান। এরপর স্বাধীনতার স্থপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকশ দল সেখানে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

প্রধানমন্ত্রী এরপর বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের অন্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে জাতির পিতার সমাধিতে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন। এছাড়া জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে জাতির পিতার সমাধিতে আরেকটি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

আওয়ামী লীগ এবং এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতরারও বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে জাতির পিতার সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বাদ মাগরিব বঙ্গভবনের দরবার হলে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে বেলা ১১টার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়ক সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেয়া হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।

সকাল থেকেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের আশপাশে ফুল হাতে জনতার আনাগোনা শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ত্যাগ করার পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে জনতার ঢল নামে।

ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎসজীবী লীগের নেতাকর্মী ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের পক্ষ থেকে এ সময় প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ বেতার, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিনিধিরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক-দালালদের ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবাষির্কী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমলে দিবসটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

দিবসটি উপলক্ষে রোববার রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দেন। সোমবার ছিল সরকারি ছুটির দিন। রাজধানীতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, সংস্থা এবং সারাদেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করেছে।

সোমবার ভোরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দলের ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন ইউনিট কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে শোক দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা সরাসরি সম্প্রচারসহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।

বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ১০০ বার কুরআন খতম ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুরআন খতম ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করে। কুরআন খতম শেষে জাতির পিতা ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এদিকে মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা ১ মিনিট) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭-এ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০) মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও বিশেষ প্রার্থনা, সকাল ৯টায় তেজগাঁও হলি রোজারি চার্চে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করে।

এদিকে সারাদেশে জেলা, উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়েও বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী পালন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন। দিবসটি উপলক্ষে কোরআনখানি, মিলাদ, দোয়া, শোকসভা, প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

back to top