আঁখিকে দেয়া সরকারি জমি নিয়ে জটিলতা, বাবাকে শাসানো ২ পুলিশ প্রত্যাহার
নারী সাফ ফুটবল শিরোপা জয়ী দলের সদস্য আঁখি খাতুনের বাবার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে সিরাজগঞ্জে দুই পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শাসানো ও হুমকির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুজনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (শাহজাদপুর সার্কেল) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। এই দুই পুলিশ সদস্য হলেন শাহজাদপুর থানার এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতের একটি নোটিশে স্বাক্ষর নিতে যান এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা। ওই সময় আঁখির বাবা স্বাক্ষর দিতে রাজি না হলে তার সঙ্গে এ দুই পুলিশ সদস্য ‘অসদাচারণ’ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হলে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের রক্ষণভাগের সদস্য আঁখি বলেন, ‘সরকারিভাবে আমাকে দেয়া জমির বিষয়ে একটি পেপার নিয়ে থানা পুলিশ গিয়ে আমার বাবাকে শাসিয়েছে। তারা একটি কাগজে সই করতে বলার পর বাবা রাজি না হলে থানায় নিয়ে যাবে বলেছে। আমাকে ফোনে জানানো হয়েছে, আমি বাড়িতে যাওয়ার পর আমাকেও থানায় যেতে হবে।’
আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি কোন মামলার বাদী বা আসামি নই। আমি পুলিশকে বলেছি- আপনারা ইউএনও মহোদয় বা ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন। তখন আমার সঙ্গে তারা অসদাচারণ করেছে। আর এক পুলিশ সদস্য আমাকে ধরে নিয়ে যাবে বলেছে।’ আঁখির বড় ভাই নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গত বুধবার বিকেলে শাহজাদপুর থানা থেকে এএসআই মামুনসহ একটি টিম এসে আমার বাবাকে জানায়- সরকার থেকে আঁখিকে যে জায়গাটা দেয়া হয়েছে আদালত থেকে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আপনারা ওই জায়গা ছেড়ে চলে যান। তা না হলে আপনাদের থানায় ধরে নিয়ে যাব।’
শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আদালত থেকে আঁখিদের জমি সংক্রান্ত একটি নোটিশ এসেছিল। সেই নোটিশের কপিটা এএসআই মামুন আঁখির বাবাকে দিতে গিয়েছিল এবং রিসিভ করে একটা সই দিতে বললে সেখানে আঁখির বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) হাসিবুল ইসলাম ও থানার ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা আঁখির পরিবারকে মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং উল্লেখিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত আট শতক জমি আঁখির পরিবারকে দলিল করে দেয়া হয়েছে। তারপরও স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই জমিটি নিজের দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন। বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্ত করছেন। আশা করছি তদন্তের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু আঁখি খাতুন আমাদের দেশ জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছেন তাই সরকার তাকে নিষ্কণ্টক জমি দিতে আদেশ করেছে। আমরা সেটাই নিশ্চত করছি।’
সাতক্ষীরায় সাবিনা ও মাসুরার বাড়িতে জেলা প্রশাসক, ফুলেল শুভেচ্ছা
সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন শিপ ২০২২ এ বাংলাদেশ নারী দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও অন্যতম খেলোয়াড় মাসুরার সাতক্ষীরার বাড়িতে গেলেন জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবীর। তাদের বাড়িতে যেয়ে পরিবারের সদস্যদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশপাশি মিষ্টিমুখ করান। সওজের জমি থেকে মাসুরাদের বাড়িটি উচ্ছেদ না করার আশ^াস দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি সাতক্ষীরা সদরের বিনেরপোতায় মাসুরার বাড়িতে ও সাড়ে ১০টায় শহরের পলাশপোলের সবুজবাগে সাবিনা খাতুনের বাড়িতে যান।
জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবীর মাসুরার বাড়িতে যেয়ে তার বাবা রজব আলী, মা ফতেমা খাতুন, দুই বোন সুরাইয়া খাতুন, সুমাইয়া খাতুন এবং তাদের প্রয়াত কোচ আকবর আলীর স্ত্রী রেহেনা আক্তারের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি মাসুরার বাবা ও মাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। তাদেরকে মিষ্টি মুখও করান জেলা প্রশাসক। কথোপকথনের একপর্যায়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় পড়া তাদের বসতঘর আপাতত ভাঙা হবে না বলে রজব আলীকে আশ^স্ত করেন। জেলা প্রশাসক সরকারি বন্দোবস্তকৃত জমি উপযোগী করে তাতে বসতঘর নির্মাণ করা পর্যন্ত সময় বাড়ানোর ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। একইসঙ্গে ডোবা ভরাট করে বাড়ি বানানোর জন্য প্রস্তুত করতে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রসঙ্গত, সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় ঘর তুলে বসবাস করেন মাসুরার বাবা রজব আলী। তবে মাসুরার বাবা দাবি করেছেন, ২০১৬ সালে তার মেয়েকে সংবর্ধনা দিয়ে তাকে বাড়ির জন্য জমি কিনে দেয়ার আশ্বাস দেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মহিউদ্দীন। ২০২০ সালে জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল বিনেরপোতায় ৮ শতক জমি দেন। সেই জমিতে ঘর করে তিনি বসবাস করছেন। সম্প্রতি রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য বাড়ি ভেঙে ফেলতে তিনটি ক্রস চিহ্ন দেয়া হয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, সাবিনা ও মাসুরা বাড়ি ফিরলে তাদের বড় আকারে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি জানানো হবে।
পরে সেখান থেকে জেলা প্রশাসক বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের সবুজবাগে দলের ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুনের বাড়িতে যান। মা মমতাজ বেগম ও বড় বোন সালমার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি সাবিনার মা ও বোনের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন। তাদেরকে মিষ্টিমুখও করার জেলা প্রশাসক। সাবিনা সাতক্ষীরায় ফিরে এলে তাকে সাতক্ষীরাবাসীর পক্ষ থেকে বড় আকারের সংবর্ধনা দেয়ার কথা বলেন জেলা প্রশাসক।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন শীফ ২০২২ এ বাংলাদেশ নারী দল চ্যাম্পিয়ন হয়
নিলুফার বাড়ির উঠানে ফেলা হলো বালু, পরিষ্কার করা হচ্ছে রাস্তা
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী দলের সদস্য কুষ্টিয়ার মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন নিলাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে নিজ এলাকায় লোকজন। এজন্য তার বাড়ি সংস্কার এবং বাড়ির সংযোগ রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে।
শিরোপাজয়ী নিলুফা ইয়াসমিন নিলা এখন ঢাকায়। বুধবার দুপুরে শিরোপাজয়ী দল দেশে ফিরেছে। এখন ছুটি পেলেই নিলুফা বাড়ি ফিরবেন। আর মেয়ের জন্য পথ চেয়ে আছেন মা বাছিরন আক্তার। নিলুফার ছোট বোন সুরভী আক্তারেরও যেন তর সইছে না।
চ্যাম্পিয়ন নিলুফার বাড়ি ফেরার আনন্দ ছুঁয়েছে এলাকাবাসীকেও। তাই মূল সড়ক থেকে নিলুফার বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার পথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া পৌরসভার স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দীন তার ব্যক্তিগত খরচে শ্রমিক দিয়ে এ কাজ করাচ্ছেন।
কুষ্টিয়া পৌরসভার বর্ধিত জুগিয়া সবজি ফার্মপাড়ায় নিলুফার বাড়ি। শহরের ভেতর হলেও ওই এলাকায় এখনও গ্রামীণ পরিবেশ। প্রধান সড়ক থেকে হেঁটে প্রায় ৫০০ গজ গিয়ে নিলুফার বাড়ি। পুরো পথে ইট বিছানো। তবে বৃষ্টির পানিতে শেওলা ও ঘাস জমে ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় শ্রমিকেরা সেগুলো ঘষে পরিষ্কার করছেন।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে নিলুফাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দীন। নিলুফার মা ও বোনের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। কোন সমস্যা আছে কি না, খোঁজখবর নেন। এ সময় নিলুফার বাড়ির উঠানে পানি জমে থাকতে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। এরপর বুধবার বিকেল থেকেই নিলুফার বাড়ির উঠানে বালু ফেলা শুরু হয়। এর আগে নালা কেটে পানি বের করা হয়। বালু ফেলে উঠান উঁচু করা হয়।
নিলুফার মা বাছিরন আক্তার বলেন, ‘নিলুফা এখন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেই আছে। এখনও ছুটি পায়নি। রাতে কথা হয়েছে। ছুটি পেলেই বাড়িতে আসবে। এখন মন ছটফট করছে। কাউন্সিলর বাড়ির উঠানে বালু ফেলে দিয়েছেন। নিলুফার বাড়ির আসার পথও পরিষ্কার করেছেন। খুবই ভালো লাগছে।’
শাহিন উদ্দীন বলেন, সাফজয়ী নিলুফা এই এলাকার গর্ব। তিনি বাড়িতে এলে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। তাকে নিয়ে আনন্দ উৎসব করা হবে।
বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
আঁখিকে দেয়া সরকারি জমি নিয়ে জটিলতা, বাবাকে শাসানো ২ পুলিশ প্রত্যাহার
নারী সাফ ফুটবল শিরোপা জয়ী দলের সদস্য আঁখি খাতুনের বাবার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে সিরাজগঞ্জে দুই পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শাসানো ও হুমকির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুজনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (শাহজাদপুর সার্কেল) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। এই দুই পুলিশ সদস্য হলেন শাহজাদপুর থানার এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতের একটি নোটিশে স্বাক্ষর নিতে যান এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা। ওই সময় আঁখির বাবা স্বাক্ষর দিতে রাজি না হলে তার সঙ্গে এ দুই পুলিশ সদস্য ‘অসদাচারণ’ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হলে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের রক্ষণভাগের সদস্য আঁখি বলেন, ‘সরকারিভাবে আমাকে দেয়া জমির বিষয়ে একটি পেপার নিয়ে থানা পুলিশ গিয়ে আমার বাবাকে শাসিয়েছে। তারা একটি কাগজে সই করতে বলার পর বাবা রাজি না হলে থানায় নিয়ে যাবে বলেছে। আমাকে ফোনে জানানো হয়েছে, আমি বাড়িতে যাওয়ার পর আমাকেও থানায় যেতে হবে।’
আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি কোন মামলার বাদী বা আসামি নই। আমি পুলিশকে বলেছি- আপনারা ইউএনও মহোদয় বা ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন। তখন আমার সঙ্গে তারা অসদাচারণ করেছে। আর এক পুলিশ সদস্য আমাকে ধরে নিয়ে যাবে বলেছে।’ আঁখির বড় ভাই নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গত বুধবার বিকেলে শাহজাদপুর থানা থেকে এএসআই মামুনসহ একটি টিম এসে আমার বাবাকে জানায়- সরকার থেকে আঁখিকে যে জায়গাটা দেয়া হয়েছে আদালত থেকে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আপনারা ওই জায়গা ছেড়ে চলে যান। তা না হলে আপনাদের থানায় ধরে নিয়ে যাব।’
শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আদালত থেকে আঁখিদের জমি সংক্রান্ত একটি নোটিশ এসেছিল। সেই নোটিশের কপিটা এএসআই মামুন আঁখির বাবাকে দিতে গিয়েছিল এবং রিসিভ করে একটা সই দিতে বললে সেখানে আঁখির বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) হাসিবুল ইসলাম ও থানার ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা আঁখির পরিবারকে মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং উল্লেখিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত আট শতক জমি আঁখির পরিবারকে দলিল করে দেয়া হয়েছে। তারপরও স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই জমিটি নিজের দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন। বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্ত করছেন। আশা করছি তদন্তের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু আঁখি খাতুন আমাদের দেশ জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছেন তাই সরকার তাকে নিষ্কণ্টক জমি দিতে আদেশ করেছে। আমরা সেটাই নিশ্চত করছি।’
সাতক্ষীরায় সাবিনা ও মাসুরার বাড়িতে জেলা প্রশাসক, ফুলেল শুভেচ্ছা
সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন শিপ ২০২২ এ বাংলাদেশ নারী দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও অন্যতম খেলোয়াড় মাসুরার সাতক্ষীরার বাড়িতে গেলেন জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবীর। তাদের বাড়িতে যেয়ে পরিবারের সদস্যদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশপাশি মিষ্টিমুখ করান। সওজের জমি থেকে মাসুরাদের বাড়িটি উচ্ছেদ না করার আশ^াস দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি সাতক্ষীরা সদরের বিনেরপোতায় মাসুরার বাড়িতে ও সাড়ে ১০টায় শহরের পলাশপোলের সবুজবাগে সাবিনা খাতুনের বাড়িতে যান।
জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবীর মাসুরার বাড়িতে যেয়ে তার বাবা রজব আলী, মা ফতেমা খাতুন, দুই বোন সুরাইয়া খাতুন, সুমাইয়া খাতুন এবং তাদের প্রয়াত কোচ আকবর আলীর স্ত্রী রেহেনা আক্তারের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি মাসুরার বাবা ও মাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। তাদেরকে মিষ্টি মুখও করান জেলা প্রশাসক। কথোপকথনের একপর্যায়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় পড়া তাদের বসতঘর আপাতত ভাঙা হবে না বলে রজব আলীকে আশ^স্ত করেন। জেলা প্রশাসক সরকারি বন্দোবস্তকৃত জমি উপযোগী করে তাতে বসতঘর নির্মাণ করা পর্যন্ত সময় বাড়ানোর ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। একইসঙ্গে ডোবা ভরাট করে বাড়ি বানানোর জন্য প্রস্তুত করতে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রসঙ্গত, সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় ঘর তুলে বসবাস করেন মাসুরার বাবা রজব আলী। তবে মাসুরার বাবা দাবি করেছেন, ২০১৬ সালে তার মেয়েকে সংবর্ধনা দিয়ে তাকে বাড়ির জন্য জমি কিনে দেয়ার আশ্বাস দেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মহিউদ্দীন। ২০২০ সালে জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল বিনেরপোতায় ৮ শতক জমি দেন। সেই জমিতে ঘর করে তিনি বসবাস করছেন। সম্প্রতি রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য বাড়ি ভেঙে ফেলতে তিনটি ক্রস চিহ্ন দেয়া হয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, সাবিনা ও মাসুরা বাড়ি ফিরলে তাদের বড় আকারে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি জানানো হবে।
পরে সেখান থেকে জেলা প্রশাসক বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের সবুজবাগে দলের ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুনের বাড়িতে যান। মা মমতাজ বেগম ও বড় বোন সালমার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি সাবিনার মা ও বোনের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন। তাদেরকে মিষ্টিমুখও করার জেলা প্রশাসক। সাবিনা সাতক্ষীরায় ফিরে এলে তাকে সাতক্ষীরাবাসীর পক্ষ থেকে বড় আকারের সংবর্ধনা দেয়ার কথা বলেন জেলা প্রশাসক।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন শীফ ২০২২ এ বাংলাদেশ নারী দল চ্যাম্পিয়ন হয়
নিলুফার বাড়ির উঠানে ফেলা হলো বালু, পরিষ্কার করা হচ্ছে রাস্তা
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী দলের সদস্য কুষ্টিয়ার মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন নিলাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে নিজ এলাকায় লোকজন। এজন্য তার বাড়ি সংস্কার এবং বাড়ির সংযোগ রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে।
শিরোপাজয়ী নিলুফা ইয়াসমিন নিলা এখন ঢাকায়। বুধবার দুপুরে শিরোপাজয়ী দল দেশে ফিরেছে। এখন ছুটি পেলেই নিলুফা বাড়ি ফিরবেন। আর মেয়ের জন্য পথ চেয়ে আছেন মা বাছিরন আক্তার। নিলুফার ছোট বোন সুরভী আক্তারেরও যেন তর সইছে না।
চ্যাম্পিয়ন নিলুফার বাড়ি ফেরার আনন্দ ছুঁয়েছে এলাকাবাসীকেও। তাই মূল সড়ক থেকে নিলুফার বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার পথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া পৌরসভার স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দীন তার ব্যক্তিগত খরচে শ্রমিক দিয়ে এ কাজ করাচ্ছেন।
কুষ্টিয়া পৌরসভার বর্ধিত জুগিয়া সবজি ফার্মপাড়ায় নিলুফার বাড়ি। শহরের ভেতর হলেও ওই এলাকায় এখনও গ্রামীণ পরিবেশ। প্রধান সড়ক থেকে হেঁটে প্রায় ৫০০ গজ গিয়ে নিলুফার বাড়ি। পুরো পথে ইট বিছানো। তবে বৃষ্টির পানিতে শেওলা ও ঘাস জমে ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় শ্রমিকেরা সেগুলো ঘষে পরিষ্কার করছেন।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে নিলুফাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দীন। নিলুফার মা ও বোনের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। কোন সমস্যা আছে কি না, খোঁজখবর নেন। এ সময় নিলুফার বাড়ির উঠানে পানি জমে থাকতে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। এরপর বুধবার বিকেল থেকেই নিলুফার বাড়ির উঠানে বালু ফেলা শুরু হয়। এর আগে নালা কেটে পানি বের করা হয়। বালু ফেলে উঠান উঁচু করা হয়।
নিলুফার মা বাছিরন আক্তার বলেন, ‘নিলুফা এখন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেই আছে। এখনও ছুটি পায়নি। রাতে কথা হয়েছে। ছুটি পেলেই বাড়িতে আসবে। এখন মন ছটফট করছে। কাউন্সিলর বাড়ির উঠানে বালু ফেলে দিয়েছেন। নিলুফার বাড়ির আসার পথও পরিষ্কার করেছেন। খুবই ভালো লাগছে।’
শাহিন উদ্দীন বলেন, সাফজয়ী নিলুফা এই এলাকার গর্ব। তিনি বাড়িতে এলে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। তাকে নিয়ে আনন্দ উৎসব করা হবে।