বিশেষ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম সমন্বয় (বাড়ানো-কমানো) করার ক্ষমতা নিজের হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার, যা এতদিন বিইআরসির একক এখতিয়ারে ছিল। সোমবার (২৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
এর আগে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একটি সারসংক্ষেপ মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য পাঠান জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়ার সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু খসড়াটি অবলোকন ও অনুমোদন করে তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের সম্মতি দিয়েছেন বলেও জানান জ্বালানি সচিব।
সারসংক্ষেপে বলা হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন। অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখার সঙ্গে নিয়মিত ও দ্রুততম সময়ে মূল্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইআরসির পাশাপাশি সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩-এর ধারা ৩৪-এর উপ-ধারা (৩) সংশোধন এবং ধারা এক সন্নিবেশিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, যেহেতু বর্তমানে সংসদ অধিবেশন নাই এবং আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমান আইনে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের ট্যারিফ/মূল্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইআরসির পাশপাশি সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিধান সংযোজনের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করতে পারেন।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এখনে বিইআরসি সব (দাম সমন্বয়) হ্যান্ডেল করে। কিন্তু বিইআরসির কিছু কিছু জায়গায় একটু প্রবলেম হয়, যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে থাকতে পারে। কারণ আইনে বলা আছে বিইআরসি ৯০ দিনের মধ্যে এগুলো সব শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। অনেক সময় আমাদের ইমিডিয়েট প্রয়োজন আসে, অনেক সময় তারা ঠিকভাবে সমন্বয় করতে পারে না।’
সেজন্য বিইআরসির আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন বিশেষ কারণে এ ট্যারিফ নির্ধারণ করতে পারবে।’
তাহলে কী মন্ত্রণালয় এটি যেকোন সময় করতে পারবে- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যেমন এখন ধরুন ৯০ দিন সময় নিয়ে ওনারা (বিআরসি) শুনানি নেন। একটা ইমার্জেন্সি এলো। আবার অনেক সময় দাম কমে গেল কিন্তু বিআরসি ৯০ দিন ধরে দাম কমাবে। সরকার হস্তক্ষেপ করে একটা নোটিফিকেশন দিয়ে দাম কমিয়ে নিয়ে আসতে পারবে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, স্বাভাবিকভাবে দাম সমন্বয়ের কাজ বিইআরসি কমিশনই করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার এক্ষেত্রে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবে।
জ্বালানি তেল, তরলীকৃত পেট্রলিয়াম গ্যাস (এলপিজি), তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বেসরকারিভাবে আমদানি ও বিক্রির সুযোগ রাখার বিষয়ে পৃথক আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রোডিটেশন আইন ২০২২ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই আইনের আওতায় একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে। যার সদস্য সংখ্যা হবে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট। সেখানে একজন চেয়ারম্যান থাকবেন। এই কাউন্সিল ইনস্টিউশন ও মেডিকেল শিক্ষার প্রসারে কাজ করবে।
এছাড়া, মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ বিমান আইন ২০২২ এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে। আরও অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ও কসোভো সরকারের মধ্যে কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাবে অনুমোদন। বাংলাদেশ ব্রুনাই দারুসসালাম এর মধ্যে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক মন্ত্রিসভার ভূতাপেক্ষ অনুমোদন এবং বাংলাদেশ ও লুক্সেমবার্গের মধ্যে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল সংক্রান্ত চুক্তির খসড়ায়ও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
বিশেষ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম সমন্বয় (বাড়ানো-কমানো) করার ক্ষমতা নিজের হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার, যা এতদিন বিইআরসির একক এখতিয়ারে ছিল। সোমবার (২৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
এর আগে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একটি সারসংক্ষেপ মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য পাঠান জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়ার সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু খসড়াটি অবলোকন ও অনুমোদন করে তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের সম্মতি দিয়েছেন বলেও জানান জ্বালানি সচিব।
সারসংক্ষেপে বলা হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন। অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখার সঙ্গে নিয়মিত ও দ্রুততম সময়ে মূল্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইআরসির পাশাপাশি সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩-এর ধারা ৩৪-এর উপ-ধারা (৩) সংশোধন এবং ধারা এক সন্নিবেশিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, যেহেতু বর্তমানে সংসদ অধিবেশন নাই এবং আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমান আইনে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের ট্যারিফ/মূল্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইআরসির পাশপাশি সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিধান সংযোজনের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করতে পারেন।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এখনে বিইআরসি সব (দাম সমন্বয়) হ্যান্ডেল করে। কিন্তু বিইআরসির কিছু কিছু জায়গায় একটু প্রবলেম হয়, যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে থাকতে পারে। কারণ আইনে বলা আছে বিইআরসি ৯০ দিনের মধ্যে এগুলো সব শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। অনেক সময় আমাদের ইমিডিয়েট প্রয়োজন আসে, অনেক সময় তারা ঠিকভাবে সমন্বয় করতে পারে না।’
সেজন্য বিইআরসির আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন বিশেষ কারণে এ ট্যারিফ নির্ধারণ করতে পারবে।’
তাহলে কী মন্ত্রণালয় এটি যেকোন সময় করতে পারবে- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যেমন এখন ধরুন ৯০ দিন সময় নিয়ে ওনারা (বিআরসি) শুনানি নেন। একটা ইমার্জেন্সি এলো। আবার অনেক সময় দাম কমে গেল কিন্তু বিআরসি ৯০ দিন ধরে দাম কমাবে। সরকার হস্তক্ষেপ করে একটা নোটিফিকেশন দিয়ে দাম কমিয়ে নিয়ে আসতে পারবে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, স্বাভাবিকভাবে দাম সমন্বয়ের কাজ বিইআরসি কমিশনই করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার এক্ষেত্রে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবে।
জ্বালানি তেল, তরলীকৃত পেট্রলিয়াম গ্যাস (এলপিজি), তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বেসরকারিভাবে আমদানি ও বিক্রির সুযোগ রাখার বিষয়ে পৃথক আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রোডিটেশন আইন ২০২২ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই আইনের আওতায় একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে। যার সদস্য সংখ্যা হবে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট। সেখানে একজন চেয়ারম্যান থাকবেন। এই কাউন্সিল ইনস্টিউশন ও মেডিকেল শিক্ষার প্রসারে কাজ করবে।
এছাড়া, মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ বিমান আইন ২০২২ এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে। আরও অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ও কসোভো সরকারের মধ্যে কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাবে অনুমোদন। বাংলাদেশ ব্রুনাই দারুসসালাম এর মধ্যে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক মন্ত্রিসভার ভূতাপেক্ষ অনুমোদন এবং বাংলাদেশ ও লুক্সেমবার্গের মধ্যে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল সংক্রান্ত চুক্তির খসড়ায়ও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।