alt

জাতীয়

বিশ্বকাপ আয়োজনে ‘৪০০-৫০০ শ্রমিক’ মারা গেছে, স্বীকার করল কাতার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক: : বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কাতারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। ফিফা বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে গিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নে কয়েক লাখ শ্রমিক নিয়োগ দেয় কাতার।

কাতারে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পাওয়াদের অধিকাংশই মানবেতর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাজ করেছেন। বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে বিশ্বের অন্যতম বড় এ ক্রীড়া আয়োজনের প্রধান হাসান আল-থাওয়াদি।

সিএনএন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে লিখেছে, এর আগে কাতারের সরকারি কর্মকর্তারা প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর যে হিসাব জানিয়েছিলেন, এই সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি।

মঙ্গলবারও ওই সংখ্যা সমর্থন করে বিবৃতি দেন কাতারের সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লিগ্যাসির (এসসি) একজন মুখপাত্র। বিবৃতিতে ওই মুখপাত্র বলেন, “২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কাতারজুড়ে সব কর্মস্থলের (৪১৪) সব খাতের ও সব জাতীয়তার কর্মীদের মৃত্যুর আলাদা পরিসংখ্যান রয়েছে।”

যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক পিয়ার্স মরগ্যানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর ওই সংখ্যা বলেন আল-থাওয়াদি। সোমবার টকটিভিতে ওই সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়।

প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মরগ্যানের প্রশ্নের জবাবে আল-থাওয়াদি বলেন, “সংখ্যাটি সম্ভবত ৪০০ জনের মতো, ৪০০ থেকে ৫০০ এর মধ্যে। আমার এ মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটি জানা নেই, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একজনের মৃত্যুও অনেক বেশি, বিষয়টি এমনই।”

এর আগে নভেম্বরে সিএনএনের প্রশ্নের জবাবে কাতার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বিশ্বকাপ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কাজ করার সময় তিন জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে এবং কাজে না থাকা অবস্থায় মারা গেছেন ৩৭ জন।

কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে এ আয়োজনের বিভিন্ন প্রকল্পে মারা যাওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের স্মরণে জার্মানিতে এই ব্যতিক্রমী প্রদর্শনীর আয়োজন হয়।

কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে এ আয়োজনের বিভিন্ন প্রকল্পে মারা যাওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের স্মরণে জার্মানিতে এই ব্যতিক্রমী প্রদর্শনীর আয়োজন হয়।

বিশ্বকাপ আয়োজন উপলক্ষে কাতারে কয়েক লাখ অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছেন, যাদের বেশিরভাগই মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সেখানে কাজ করছেন বলে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের দিনও স্টেডিয়ামে বিভিন্ন স্টলে কাজ করতে যাওয়া দুই শতাধিক প্রবাসী শ্রমিকরা সারাদিন কড়া রোদে অপেক্ষায় ছিলেন খাবার, পানি ও শৌচাগারে যাওয়ার সুযোগ ছাড়াই।

কাতারসহ পার‌স্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলো কড়া সমালোচনা করে আসছে। যদিও কাতার দাবি করেছে যে তারা তাদের শ্রমআইন সংস্কার করেছে।

পিয়ার্স মরগ্যানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসান আল-থাওয়াদিও বলেন, “আমি মনে করি প্রতি বছরই কর্মস্থলগুলোতে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার মানের উন্নতি হয়েছে, অন্তত আমাদের কর্মস্থলগুলোতে, বিশ্বকাপের কর্মস্থলগুলোতে, যেগুলোর জন্য আমরা দায়বদ্ধ।”

এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের গত বছরের একটি প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে সিএনএন লিখেছে, ২০১০ সালে কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজার দক্ষিণ এশীয় প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে সেদেশে, যাদের বেশিরভাগই কম মজুরির, বিপদজনক কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং প্রায়ই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তাদের কাজ করতে হত।

অবশ্য গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা সব মৃত্যুই বিশ্বকাপের অবকাঠামো নির্মাণের কাজে সংশ্লিষ্ট বলে প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি এবং সিএনএনও নিরপেক্ষভাবে মৃত্যুর তথ্য যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।

আল-থাওয়াদি গত বছর গার্ডিয়ানের ওই পরিসংখ্যান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। সিএনএনের বেকি অ্যান্ডারসনের সঙ্গে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের শিরোনাম নিয়ে তিনি বলেছিলেন, “এটা একটা চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী শিরোনাম যা বিভ্রান্তিকর এবং এই প্রতিবেদনটির সারবস্তু নেই।”

কাতারের একজন কর্মকর্তা গত মাসে সিএনএনের কাছে দাবি করেন, গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে সাড়ে ছয় হাজার মৃত্যুর যে সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাতে গত ১০ বছরে সেদেশের সব প্রবাসী মৃত্যুর সংখ্যাও মিলিয়ে ফেলা হয়েছে।

“ওই তথ্য সত্য নয়। অসুস্থতা, বয়সজনিত কারণে ও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুও সেখানে রয়েছে, যা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়নি। প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়নি যে কাতারে প্রবাসী শ্রমিকদের মাত্র ২০ শতাংশ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত।”

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, কাতারের মোট শ্রমশক্তির ৯০ শতাংশই প্রবাসী শ্রমিক। মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করে আসছে, ২০১০ সালে কাতার ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অনেক প্রবাসী শ্রমিককে বিনা বেতনে কাজ করতে হয়েছে, তারা দেরিতে বেতন পাচ্ছে, দীর্ঘ সময় তীব্র গরমে তাদের কাজ করতে হয়েছে, নিয়োগকর্তারা হয়রানি করেছে এবং তারা কাতার থেকে বের হতেও পারেনি সে দেশের স্পন্সর ব্যবস্থার কারণে।

বিশ্বকাপ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট কিনা তা জানতে চেয়েছিলেন মরগ্যান। জবাবে আল-থাওয়াদি বলেন, “আমরা যখন বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য প্রতিযোগিতায় নামি, তখনই আমরা এ বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন ছিলাম। এই উন্নতিগুলো শুধু বিশ্বকাপ আয়োজনের কারণেই হয়নি। এসব জায়গায় আমরা উন্নতি করতে চেয়েছি আমাদের নিজস্ব মূল্যবোধের কারণে।

“বিশ্বকাপ একটি চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছে, একে তরান্বিত করেছে, একটি প্রভাবক হিসেবে স্পটলাইটের কারণে যা আমরা আগেই স্বীকার করেছি।”

তিনি বলেন, “এ কারণে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, শুধু আইনি ব্যবস্থায় উন্নয়ন নয়, বরং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রেও। এবং আজকে আমরা এমন একটি অবস্থানে পৌঁছেছি যেখানে আমাদের সবচেয়ে কড়া সমালোচকও এ অঞ্চলে আমাদেরকে একটি মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে।”

আগামী ছয় মাস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলবে নিউমুরিং টার্মিনাল: অর্থ উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠতা যোগদানের তারিখ থেকে, রুল হাইকোর্টের

মগবাজারে হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু

ডেঙ্গু: আরও ৩৮৬ জন আক্রান্ত, মৃত্যু ১

আদালতে সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ জবানবন্দি

ছবি

বারোমাসিয়া নদীর ভাঙা সাঁকোয় বারোমাসই দুঃখ

ছবি

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিচার শুরু আগামী ৩ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ

ছবি

মুরাদনগরে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির ১৫ সদস্যের দল

ছবি

ইস্টার্ন রিফাইনারিতে গত অর্থবছরে তেল শোধন ১৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন

ছবি

এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা ৫ অভিযোগ সঠিক নয়, দাবি রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবীর

ছবি

হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ড খনন প্রকল্পের নামে সমান হচ্ছে পাহাড়

রাজধানীতে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করেই ঘরে ফিরবো, ঘোষণা নাহিদ ইসলামের

ছবি

প্রতিবেশী দেশের নেতার সঙ্গে ফোনালাপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে অব্যাহতি

জ্বালানি আমদানিতে শুল্ক নীতি সংশোধন, চাপে বিপিসি

ভোটের তারিখ বা সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি: সিইসি

ছবি

জাতীয় সরকারের কথা বললেন তারেক

ছবি

স্বৈরাচার যেন আর মাথাচাড়া দিতে না পারে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

পদ্মা সেতু মামলার পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগ, ‘গায়ের জোরে’ দায়মুক্তি দেওয়ার অভিযোগ দুদকের

ছবি

ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ হাজার ছাড়াল, মৃতের সংখ্যা ৪৩

ছবি

দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে ড. কামাল হোসেনের উদ্বেগ প্রকাশ

ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী স্মৃতি উদ্‌যাপন শুরু

ছবি

শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনকে হাজিরার নির্দেশ, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ

ছবি

আসিফের ব্যাগে ম্যাগাজিন: শাহজালাল বিমানবন্দরে বাড়ানো হল নিরাপত্তা

ছবি

বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই, ছিনতাইকারীরা-ই আসল সমস্যা: ডিএমপি কমিশনার

ছবি

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ধরে প্রস্তুতি নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ

ছবি

ইউনূস–রুবিও ফোনালাপে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদারে জোর

ছবি

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১,৬৯০ জন

ছবি

‘ন্যায়সংগত ও টেকসই জ্বালানি রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা জরুরি’

আহমেদ আকবর সোবহান ও তারিক আহমেদ সিদ্দিককে দুদকে তলব

সাড়ে তিন মাসেও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ কলেজছাত্রীর

এনসিপির সততা নিয়ে প্রশ্ন ‘আপ বাংলাদেশ’র

পলাতক লিয়াকত শিকদার, জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

ছবি

বাবুই পাখির ছানা হত্যা, অভিযুক্ত মোবারক আলী গ্রেপ্তার

শূন্য ইউনিটের বিদ্যুৎ বিল ৪০ হাজার টাকা!

tab

জাতীয়

বিশ্বকাপ আয়োজনে ‘৪০০-৫০০ শ্রমিক’ মারা গেছে, স্বীকার করল কাতার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক:

বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কাতারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। ফিফা বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে গিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নে কয়েক লাখ শ্রমিক নিয়োগ দেয় কাতার।

কাতারে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পাওয়াদের অধিকাংশই মানবেতর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাজ করেছেন। বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে বিশ্বের অন্যতম বড় এ ক্রীড়া আয়োজনের প্রধান হাসান আল-থাওয়াদি।

সিএনএন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে লিখেছে, এর আগে কাতারের সরকারি কর্মকর্তারা প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর যে হিসাব জানিয়েছিলেন, এই সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি।

মঙ্গলবারও ওই সংখ্যা সমর্থন করে বিবৃতি দেন কাতারের সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লিগ্যাসির (এসসি) একজন মুখপাত্র। বিবৃতিতে ওই মুখপাত্র বলেন, “২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কাতারজুড়ে সব কর্মস্থলের (৪১৪) সব খাতের ও সব জাতীয়তার কর্মীদের মৃত্যুর আলাদা পরিসংখ্যান রয়েছে।”

যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক পিয়ার্স মরগ্যানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর ওই সংখ্যা বলেন আল-থাওয়াদি। সোমবার টকটিভিতে ওই সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়।

প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মরগ্যানের প্রশ্নের জবাবে আল-থাওয়াদি বলেন, “সংখ্যাটি সম্ভবত ৪০০ জনের মতো, ৪০০ থেকে ৫০০ এর মধ্যে। আমার এ মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটি জানা নেই, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একজনের মৃত্যুও অনেক বেশি, বিষয়টি এমনই।”

এর আগে নভেম্বরে সিএনএনের প্রশ্নের জবাবে কাতার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বিশ্বকাপ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কাজ করার সময় তিন জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে এবং কাজে না থাকা অবস্থায় মারা গেছেন ৩৭ জন।

কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে এ আয়োজনের বিভিন্ন প্রকল্পে মারা যাওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের স্মরণে জার্মানিতে এই ব্যতিক্রমী প্রদর্শনীর আয়োজন হয়।

কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে এ আয়োজনের বিভিন্ন প্রকল্পে মারা যাওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের স্মরণে জার্মানিতে এই ব্যতিক্রমী প্রদর্শনীর আয়োজন হয়।

বিশ্বকাপ আয়োজন উপলক্ষে কাতারে কয়েক লাখ অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছেন, যাদের বেশিরভাগই মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সেখানে কাজ করছেন বলে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের দিনও স্টেডিয়ামে বিভিন্ন স্টলে কাজ করতে যাওয়া দুই শতাধিক প্রবাসী শ্রমিকরা সারাদিন কড়া রোদে অপেক্ষায় ছিলেন খাবার, পানি ও শৌচাগারে যাওয়ার সুযোগ ছাড়াই।

কাতারসহ পার‌স্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলো কড়া সমালোচনা করে আসছে। যদিও কাতার দাবি করেছে যে তারা তাদের শ্রমআইন সংস্কার করেছে।

পিয়ার্স মরগ্যানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসান আল-থাওয়াদিও বলেন, “আমি মনে করি প্রতি বছরই কর্মস্থলগুলোতে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার মানের উন্নতি হয়েছে, অন্তত আমাদের কর্মস্থলগুলোতে, বিশ্বকাপের কর্মস্থলগুলোতে, যেগুলোর জন্য আমরা দায়বদ্ধ।”

এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের গত বছরের একটি প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে সিএনএন লিখেছে, ২০১০ সালে কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজার দক্ষিণ এশীয় প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে সেদেশে, যাদের বেশিরভাগই কম মজুরির, বিপদজনক কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং প্রায়ই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তাদের কাজ করতে হত।

অবশ্য গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা সব মৃত্যুই বিশ্বকাপের অবকাঠামো নির্মাণের কাজে সংশ্লিষ্ট বলে প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি এবং সিএনএনও নিরপেক্ষভাবে মৃত্যুর তথ্য যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।

আল-থাওয়াদি গত বছর গার্ডিয়ানের ওই পরিসংখ্যান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। সিএনএনের বেকি অ্যান্ডারসনের সঙ্গে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের শিরোনাম নিয়ে তিনি বলেছিলেন, “এটা একটা চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী শিরোনাম যা বিভ্রান্তিকর এবং এই প্রতিবেদনটির সারবস্তু নেই।”

কাতারের একজন কর্মকর্তা গত মাসে সিএনএনের কাছে দাবি করেন, গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে সাড়ে ছয় হাজার মৃত্যুর যে সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাতে গত ১০ বছরে সেদেশের সব প্রবাসী মৃত্যুর সংখ্যাও মিলিয়ে ফেলা হয়েছে।

“ওই তথ্য সত্য নয়। অসুস্থতা, বয়সজনিত কারণে ও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুও সেখানে রয়েছে, যা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়নি। প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়নি যে কাতারে প্রবাসী শ্রমিকদের মাত্র ২০ শতাংশ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত।”

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, কাতারের মোট শ্রমশক্তির ৯০ শতাংশই প্রবাসী শ্রমিক। মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করে আসছে, ২০১০ সালে কাতার ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অনেক প্রবাসী শ্রমিককে বিনা বেতনে কাজ করতে হয়েছে, তারা দেরিতে বেতন পাচ্ছে, দীর্ঘ সময় তীব্র গরমে তাদের কাজ করতে হয়েছে, নিয়োগকর্তারা হয়রানি করেছে এবং তারা কাতার থেকে বের হতেও পারেনি সে দেশের স্পন্সর ব্যবস্থার কারণে।

বিশ্বকাপ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট কিনা তা জানতে চেয়েছিলেন মরগ্যান। জবাবে আল-থাওয়াদি বলেন, “আমরা যখন বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য প্রতিযোগিতায় নামি, তখনই আমরা এ বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন ছিলাম। এই উন্নতিগুলো শুধু বিশ্বকাপ আয়োজনের কারণেই হয়নি। এসব জায়গায় আমরা উন্নতি করতে চেয়েছি আমাদের নিজস্ব মূল্যবোধের কারণে।

“বিশ্বকাপ একটি চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছে, একে তরান্বিত করেছে, একটি প্রভাবক হিসেবে স্পটলাইটের কারণে যা আমরা আগেই স্বীকার করেছি।”

তিনি বলেন, “এ কারণে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, শুধু আইনি ব্যবস্থায় উন্নয়ন নয়, বরং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রেও। এবং আজকে আমরা এমন একটি অবস্থানে পৌঁছেছি যেখানে আমাদের সবচেয়ে কড়া সমালোচকও এ অঞ্চলে আমাদেরকে একটি মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে।”

back to top