‘এবার ধান নাগাতে (রোপণ করতে) অ্যানা (একটু) ভোজাল (সমস্যা) হলেও ধান কাটার পর ফলন ভালো হওয়াত (হওয়াতে) আর কোন কষ্ট নাই। যে জমিত ধান কাটনো (মাড়াই) সেই জমিত এবার আগের বারের চেয়ে বেশি ফলন হচে (হয়েছে)।’ সংবাদকে বলেন ফরহাদ হোসেন।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বেতকাপা গ্রামের ফরহাদ হোসেন। স্থানীয় চতরা বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা করেন। তিনি ৫০ শতক জমিতে ‘গুটি স্বর্ণা’ জাতের ধান লাগিয়েছিলেন। চলতি মৌসুমে খরা, সার পেতে সমস্যা থাকলেও ধান কাটার পর তার মুখে ‘তৃপ্তির’ হাসি। তিনি বলেন, ‘গতবারের থেকে (চেয়ে) এবার ২-৩ মণ বেশি ধান হইচে (হয়েছে)।’
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কাষিয়াবাড়ী গ্রামের কৃষক আফতাব আলী। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে গুটি স্বর্ণা ধান চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার ধানের ফলন বেশি হয়েছে। এবার বৃষ্টি না থাকায় এবং সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় আমন চাষে খরচ কিছুটা বেড়েছে।’
তিনি আশা করছেন, ধানের বাজার ভালো থাকলে কিছুটা লাভবান হতে পারবেন।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জের কৃষক আনোয়ার হেসেন। তিনি টেলিফোনে সংবাদের এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমন মৌসুমে প্রতি বছর সুগন্ধি ধান বেশি আবাদ (চাষ) করলেও এবার সুগন্ধি ধান কম লাগিয়েছি। তবে পাশাপাশি পাঁচ বিঘা জমিতে মোটা জাতের ধান লাগিয়েছি। তাতে আমার প্রতি বিঘা জমিতে ধানের ফলন বেড়েছে ১০-১৫ মণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি সারের দামের সঙ্গে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম কমাতো তাহলে আমরা কৃষকরা আরও বেশি খুশি হতাম।’
একই উপজেলার কুলানন্দপুর গ্রামের হারুণুর রশিদ তার জমিতে প্রতি বিঘায় ৩-৪ মণ ফলন বেশি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, এবার একটু আমনে পানি সেচ দেয়া লাগলেও ফলন অন্যবারের তুলনায় ভালো হয়েছে।
অন্য বছরের তুলনায় এ বছর দেশে বৃষ্টিপাত কম হওয়া সত্ত্বেও আমন ধানের ‘ভালো ফলন’ হয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকায় কথা বলে জানা গেছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ‘বাম্পার’ ফলনের আভাস দিচ্ছেন। বর্তমান বাজারে কাক্সিক্ষত দরে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পেরে কৃষকরাও খুশি। যদিও তাদের অন্য বছরের তুলনায় উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ইতোমধ্যে আমন সংগ্রহ শুরু হয়ে গেছে। তারা ফসল সংগ্রহে মাঠে আর কৃষাণিরা ঘরে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
রংপুরের জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মন্ডল সংবাদকে বলেন, ‘সারাদেশে বৃষ্টি কম এটা একটা বিষয় ছিল। আমাদের রংপুর জেলায় এমনভাবে বৃষ্টি হয়েছে আর সূর্যের আলো বেশি ছিল। সূর্যের আলোতে সালোকসংশ্লেষণ বেশি হয়েছে গ্রিন ফিলিং ভালো হয়েছে এ জন্য ফলনও ভালো হয়েছে।’
এলাকার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আমন ধান কাটায় ‘ব্যস্ত’ কৃষক। কেউ আঁটি বেঁধে ধানের বোঝা কাঁধে করে, কেউ ভ্যানে আবার কেউ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। তবে কৃষকরা বলছেন, চড়া সুদে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ, সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি, জমিতে সেচ দেয়াসহ বিভিন্নভাবে বিঘাপ্রতি অতিরিক্ত অনেক টাকা খরচ হয়েছে। বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তাতে তাদের উৎপাদন খরচ উঠানো নিয়ে শঙ্কায় তারা। সরকার যে ধান চাল কেনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে তা দিয়েও তাদের পোষাবে না, সে কারণে ধানের ক্রয়মূল্য বৃদ্ধি এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে বেশি বেশি ধান কেনার দাবি জানিয়েছেন। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর কৃষি অঞ্চলে ৫ জেলায় চলতি আমন মৌসুমে হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমি। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ধান কাটা, মাড়াই শুরু হয়েছে। ৫ জেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে। কৃষকরা বৈরী আবহাওয়া বিশেষ করে বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে জমি তৈরি, চারা রোপণ এবং বেশি দামে সার কিনে জমিতে প্রয়োগ করায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শাহ আলম জানান, এবার রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় আমন ধানের ফলন অসম্ভব ভালো হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। রংপুর কৃষি অঞ্চলের ৫ জেলার খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল অন্যান্য জেলার চাহিদা মেটাবে। তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বে মহামারীর আশঙ্কা বিশেষ করে খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় আমন ধান দেশের খাদ্য ঘাটতি মেটাতে অনেকটাই সক্ষম হবে।
দিনাজপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৩২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। গত বছর জেলায় ২ লাখ ৬০ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে আমান আবাদ হয়েছিল। জেলায় এবার আমন আবাদ বেড়েছে।
কিশোরগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার ১৩টি উপজেলার ৮২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার জেলায় ৯০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। নেত্রকোনায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৮০০ হেক্টর। কিন্তু চাষাবাদ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। ফলনও ভালো হয়েছে।
রাজশাহী জেলার ৭৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবাদ হয়েছে ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টরে। প্রায় ১ হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে ৮৮ হাজার ৯১৯ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ হেক্টর বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক (ডিজি) মো. বেনজীর আলম সংবাদকে বলেন, চলতি বছর দেশে ৫৯ লাখ ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ৫৯ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করতে পেরেছি।
‘আমরা ন্যাচারকে দোষ দেই। এবার প্রথম দিকে বৃষ্টি হয়েছে পরে কিছুদিন হয়নি আবার কিছু বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের কৃষকরা নিজেরাই নিজেদের মতো চাষবাস করেছে সেই সক্ষমতা তাদের আছে। অনেক জায়গায় একদম বৃষ্টিপাত হয় নাই সেখানে কৃষকরাই সেচ দিয়ে আবাদ করছে। পরবর্তীতে ওইসব এলাকায় প্রয়োজনের সময় বৃষ্টি হওয়ায় ধানের প্রতিটা দানা পুষ্ট হইছে, এ কারণে ফলন বেড়ে গেছে’ বলেন তিনি।
মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২
‘এবার ধান নাগাতে (রোপণ করতে) অ্যানা (একটু) ভোজাল (সমস্যা) হলেও ধান কাটার পর ফলন ভালো হওয়াত (হওয়াতে) আর কোন কষ্ট নাই। যে জমিত ধান কাটনো (মাড়াই) সেই জমিত এবার আগের বারের চেয়ে বেশি ফলন হচে (হয়েছে)।’ সংবাদকে বলেন ফরহাদ হোসেন।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বেতকাপা গ্রামের ফরহাদ হোসেন। স্থানীয় চতরা বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা করেন। তিনি ৫০ শতক জমিতে ‘গুটি স্বর্ণা’ জাতের ধান লাগিয়েছিলেন। চলতি মৌসুমে খরা, সার পেতে সমস্যা থাকলেও ধান কাটার পর তার মুখে ‘তৃপ্তির’ হাসি। তিনি বলেন, ‘গতবারের থেকে (চেয়ে) এবার ২-৩ মণ বেশি ধান হইচে (হয়েছে)।’
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কাষিয়াবাড়ী গ্রামের কৃষক আফতাব আলী। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে গুটি স্বর্ণা ধান চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার ধানের ফলন বেশি হয়েছে। এবার বৃষ্টি না থাকায় এবং সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় আমন চাষে খরচ কিছুটা বেড়েছে।’
তিনি আশা করছেন, ধানের বাজার ভালো থাকলে কিছুটা লাভবান হতে পারবেন।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জের কৃষক আনোয়ার হেসেন। তিনি টেলিফোনে সংবাদের এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমন মৌসুমে প্রতি বছর সুগন্ধি ধান বেশি আবাদ (চাষ) করলেও এবার সুগন্ধি ধান কম লাগিয়েছি। তবে পাশাপাশি পাঁচ বিঘা জমিতে মোটা জাতের ধান লাগিয়েছি। তাতে আমার প্রতি বিঘা জমিতে ধানের ফলন বেড়েছে ১০-১৫ মণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি সারের দামের সঙ্গে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম কমাতো তাহলে আমরা কৃষকরা আরও বেশি খুশি হতাম।’
একই উপজেলার কুলানন্দপুর গ্রামের হারুণুর রশিদ তার জমিতে প্রতি বিঘায় ৩-৪ মণ ফলন বেশি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, এবার একটু আমনে পানি সেচ দেয়া লাগলেও ফলন অন্যবারের তুলনায় ভালো হয়েছে।
অন্য বছরের তুলনায় এ বছর দেশে বৃষ্টিপাত কম হওয়া সত্ত্বেও আমন ধানের ‘ভালো ফলন’ হয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকায় কথা বলে জানা গেছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ‘বাম্পার’ ফলনের আভাস দিচ্ছেন। বর্তমান বাজারে কাক্সিক্ষত দরে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পেরে কৃষকরাও খুশি। যদিও তাদের অন্য বছরের তুলনায় উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ইতোমধ্যে আমন সংগ্রহ শুরু হয়ে গেছে। তারা ফসল সংগ্রহে মাঠে আর কৃষাণিরা ঘরে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
রংপুরের জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মন্ডল সংবাদকে বলেন, ‘সারাদেশে বৃষ্টি কম এটা একটা বিষয় ছিল। আমাদের রংপুর জেলায় এমনভাবে বৃষ্টি হয়েছে আর সূর্যের আলো বেশি ছিল। সূর্যের আলোতে সালোকসংশ্লেষণ বেশি হয়েছে গ্রিন ফিলিং ভালো হয়েছে এ জন্য ফলনও ভালো হয়েছে।’
এলাকার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আমন ধান কাটায় ‘ব্যস্ত’ কৃষক। কেউ আঁটি বেঁধে ধানের বোঝা কাঁধে করে, কেউ ভ্যানে আবার কেউ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। তবে কৃষকরা বলছেন, চড়া সুদে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ, সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি, জমিতে সেচ দেয়াসহ বিভিন্নভাবে বিঘাপ্রতি অতিরিক্ত অনেক টাকা খরচ হয়েছে। বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তাতে তাদের উৎপাদন খরচ উঠানো নিয়ে শঙ্কায় তারা। সরকার যে ধান চাল কেনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে তা দিয়েও তাদের পোষাবে না, সে কারণে ধানের ক্রয়মূল্য বৃদ্ধি এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে বেশি বেশি ধান কেনার দাবি জানিয়েছেন। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর কৃষি অঞ্চলে ৫ জেলায় চলতি আমন মৌসুমে হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমি। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ধান কাটা, মাড়াই শুরু হয়েছে। ৫ জেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে। কৃষকরা বৈরী আবহাওয়া বিশেষ করে বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে জমি তৈরি, চারা রোপণ এবং বেশি দামে সার কিনে জমিতে প্রয়োগ করায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শাহ আলম জানান, এবার রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় আমন ধানের ফলন অসম্ভব ভালো হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। রংপুর কৃষি অঞ্চলের ৫ জেলার খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল অন্যান্য জেলার চাহিদা মেটাবে। তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বে মহামারীর আশঙ্কা বিশেষ করে খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় আমন ধান দেশের খাদ্য ঘাটতি মেটাতে অনেকটাই সক্ষম হবে।
দিনাজপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৩২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। গত বছর জেলায় ২ লাখ ৬০ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে আমান আবাদ হয়েছিল। জেলায় এবার আমন আবাদ বেড়েছে।
কিশোরগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার ১৩টি উপজেলার ৮২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার জেলায় ৯০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। নেত্রকোনায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৮০০ হেক্টর। কিন্তু চাষাবাদ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। ফলনও ভালো হয়েছে।
রাজশাহী জেলার ৭৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবাদ হয়েছে ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টরে। প্রায় ১ হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে ৮৮ হাজার ৯১৯ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ হেক্টর বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক (ডিজি) মো. বেনজীর আলম সংবাদকে বলেন, চলতি বছর দেশে ৫৯ লাখ ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ৫৯ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করতে পেরেছি।
‘আমরা ন্যাচারকে দোষ দেই। এবার প্রথম দিকে বৃষ্টি হয়েছে পরে কিছুদিন হয়নি আবার কিছু বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের কৃষকরা নিজেরাই নিজেদের মতো চাষবাস করেছে সেই সক্ষমতা তাদের আছে। অনেক জায়গায় একদম বৃষ্টিপাত হয় নাই সেখানে কৃষকরাই সেচ দিয়ে আবাদ করছে। পরবর্তীতে ওইসব এলাকায় প্রয়োজনের সময় বৃষ্টি হওয়ায় ধানের প্রতিটা দানা পুষ্ট হইছে, এ কারণে ফলন বেড়ে গেছে’ বলেন তিনি।