বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম সমন্বয়
মোকাব্বির খানের ওয়াকআউট
প্রয়োজনে যেকোন সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম সমন্বয়ে (বাড়ানো বা কমানো) সরকারের ক্ষমতা আইনি কাঠামোয় এনেছে জাতীয় সংসদ। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল’ পাসের মাধ্যমে এই ক্ষমতা আইনে পরিণত হয়। পাস হওয়া বিলের বিরোধিতা করে সংসদের বৈঠক থেকে ‘ওয়াকআউট (বের হয়ে যাওয়া)’ করেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। এছাড়া বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সদস্য বিলটির বিভিন্ন ধারার সমালোচনা করেন।
আগে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করত, এটা কমিশনের একক এখতিয়ার ছিল। গত ১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মধ্য দিয়ে বিইআরসি আইন সংশোধন হওয়ার পর থেকে সরকার প্রয়োজন শুনানি ছাড়াই বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম সমন্বয়ের ক্ষমতা পায়। এরপর ওই অধ্যাদেশ বলে নতুন বছরের শুরুতেই একবার বিদ্যুতের দাম, একবার গ্যাসের দাম বাড়ায় সরকার।
রোববার সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। বিলের ওপর বিরোধী দলের সদস্যদের দেয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।
বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য জনস্বার্থে কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এসবের উৎপাদন বৃদ্ধি, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘পানির ট্যাংকে নিচে ফুটে থাকলে কখনো তা ভরাট করা যাবে না। যতদিন পর্যন্ত রেন্টাল, কুইক-রেন্টাল থাকবে ততদিন এখানে লস থাকবে। সাবসিডিটা (ভর্তুকি) কী। মন্ত্রী এক্সপ্লেইন (ব্যাখ্যা) দেন। সাবসিডির নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এই টাকা দিয়ে প্রাইভেট পাওয়ার প্লান্টকে সেখানে পেমেন্ট করে।’
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বিদ্যুৎ খাতে ইনডেমনিটির (দায়মুক্তির বিশেষ আইন) কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘এই কালো আইনের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। বঙ্গবন্ধু প্রায়ই সে কথা বলতেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সুরক্ষা দিতে একবার ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল। আজ দুর্নীতিবাজ ও মুনাফাখোরদের সুরক্ষা দিতে ইনডেমনিটিসহ বিলটি আনা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির দাম আরও বাড়বে।’
বিলটি জনমত যাচাইয়ের জন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার গত ১৪ বছরে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে দুরাবস্থার কারণ লুটপাট আর দুর্নীতি। ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের অরাজকতা আর লুটপাট নিয়ে কথা বললে সরকারের গায়ে লাগে। প্রধানমন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিলে কী হবে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা আছে, তিনি করতে পারেন।’
মোকাব্বির খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর তার নির্বাচনী এলাকার জনগণ মনে করছেন তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। এ কারণে তাকে কম কথা বলার অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠেছে। মানুষ দিশেহারা। সামনে রমজান। এর আগে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে মানুষের কষ্ট বেড়ে যাবে।’
বিলের সংশোধনী দিয়ে মোকাব্বির খান বলেন, ‘বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম বাড়লে সবকিছুর ওপর এর প্রভাব পড়ে। কিন্তু এতে সরকারের কিছু যায় আসে না। গণতান্ত্রিক সরকার আর ইনডেমনিটি, কালো আইন একসঙ্গে যায় না। মানুষের ওপর আস্থা হারালে সরকার কালো আইন করে।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘সরকার কি জনগণের আস্থা হারিয়ে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই আইন করছে? এই আইনের একমাত্র উদ্দেশ্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানো।’ তিনি বলেন, ‘তার জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী গ্রহণ করেননি। এই বিলটি জনস্বার্থবিরোধী।’ তাই তিনি নিজের সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন এবং জনস্বার্থে এই বিলের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, ‘ঢাকায় দিনের বেলা গ্যাস থাকে না। সকাল থেকে তিনটা চারটা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। গ্রামের অবস্থা আরও খারাপ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিলে ভালো হয়।’
বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘বিদ্যুতে যে সাবসিডি সেটা মূলত জনগণের প্রতি ইনভেস্টমেন্ট। কুইক রেন্টাল ব্যবস্থা ছিল স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা।’
ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়ার বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বিপু উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘১০ বছরের জন্য একটি বাড়ি ভাড়া নেয়া হলে সেখানে থাকুন বা না থাকুন ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। এমন বলা যাবে না যে, যে কয়দিন থাকবেন সে কয়দিনের ভাড়া দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সময় বিদ্যুতের সিস্টেম লস ছিল ৪৪ শতাংশ। তার অর্ধেকই চুরি হতো। এখন সিস্টেম লস ৬-৭ শতাংশ।’
গত ৫ জানুয়ারি বিইআরসি আইনের (সংশোধন) অধ্যাদেশটি সংসদে তোলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর ২২ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সেটি বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করেন। বিলটি পাঁচ দিনের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলটি উত্থাপনের দিন বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বিপু বলেন, অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখার স্বার্থে নিয়মিত ও দ্রুত ট্যারিফ সমন্বয়ের জন্য বিইআরসির পাশাপাশি সরকারের ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রয়োজন। রোববার বিলটি পাস হওয়ায় অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত হলো।
সংসদে নসরুল হামিদ জানান, আইন পাস হলেও বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া বিইআরসির মাধ্যমেই গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করবে সরকার।
বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম সমন্বয়
মোকাব্বির খানের ওয়াকআউট
রোববার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩
প্রয়োজনে যেকোন সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম সমন্বয়ে (বাড়ানো বা কমানো) সরকারের ক্ষমতা আইনি কাঠামোয় এনেছে জাতীয় সংসদ। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল’ পাসের মাধ্যমে এই ক্ষমতা আইনে পরিণত হয়। পাস হওয়া বিলের বিরোধিতা করে সংসদের বৈঠক থেকে ‘ওয়াকআউট (বের হয়ে যাওয়া)’ করেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। এছাড়া বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সদস্য বিলটির বিভিন্ন ধারার সমালোচনা করেন।
আগে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করত, এটা কমিশনের একক এখতিয়ার ছিল। গত ১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মধ্য দিয়ে বিইআরসি আইন সংশোধন হওয়ার পর থেকে সরকার প্রয়োজন শুনানি ছাড়াই বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম সমন্বয়ের ক্ষমতা পায়। এরপর ওই অধ্যাদেশ বলে নতুন বছরের শুরুতেই একবার বিদ্যুতের দাম, একবার গ্যাসের দাম বাড়ায় সরকার।
রোববার সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। বিলের ওপর বিরোধী দলের সদস্যদের দেয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।
বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য জনস্বার্থে কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এসবের উৎপাদন বৃদ্ধি, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘পানির ট্যাংকে নিচে ফুটে থাকলে কখনো তা ভরাট করা যাবে না। যতদিন পর্যন্ত রেন্টাল, কুইক-রেন্টাল থাকবে ততদিন এখানে লস থাকবে। সাবসিডিটা (ভর্তুকি) কী। মন্ত্রী এক্সপ্লেইন (ব্যাখ্যা) দেন। সাবসিডির নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এই টাকা দিয়ে প্রাইভেট পাওয়ার প্লান্টকে সেখানে পেমেন্ট করে।’
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বিদ্যুৎ খাতে ইনডেমনিটির (দায়মুক্তির বিশেষ আইন) কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘এই কালো আইনের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। বঙ্গবন্ধু প্রায়ই সে কথা বলতেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সুরক্ষা দিতে একবার ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল। আজ দুর্নীতিবাজ ও মুনাফাখোরদের সুরক্ষা দিতে ইনডেমনিটিসহ বিলটি আনা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির দাম আরও বাড়বে।’
বিলটি জনমত যাচাইয়ের জন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার গত ১৪ বছরে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে দুরাবস্থার কারণ লুটপাট আর দুর্নীতি। ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের অরাজকতা আর লুটপাট নিয়ে কথা বললে সরকারের গায়ে লাগে। প্রধানমন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিলে কী হবে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা আছে, তিনি করতে পারেন।’
মোকাব্বির খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর তার নির্বাচনী এলাকার জনগণ মনে করছেন তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। এ কারণে তাকে কম কথা বলার অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠেছে। মানুষ দিশেহারা। সামনে রমজান। এর আগে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে মানুষের কষ্ট বেড়ে যাবে।’
বিলের সংশোধনী দিয়ে মোকাব্বির খান বলেন, ‘বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম বাড়লে সবকিছুর ওপর এর প্রভাব পড়ে। কিন্তু এতে সরকারের কিছু যায় আসে না। গণতান্ত্রিক সরকার আর ইনডেমনিটি, কালো আইন একসঙ্গে যায় না। মানুষের ওপর আস্থা হারালে সরকার কালো আইন করে।’
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘সরকার কি জনগণের আস্থা হারিয়ে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই আইন করছে? এই আইনের একমাত্র উদ্দেশ্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানো।’ তিনি বলেন, ‘তার জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী গ্রহণ করেননি। এই বিলটি জনস্বার্থবিরোধী।’ তাই তিনি নিজের সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন এবং জনস্বার্থে এই বিলের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, ‘ঢাকায় দিনের বেলা গ্যাস থাকে না। সকাল থেকে তিনটা চারটা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। গ্রামের অবস্থা আরও খারাপ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিলে ভালো হয়।’
বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘বিদ্যুতে যে সাবসিডি সেটা মূলত জনগণের প্রতি ইনভেস্টমেন্ট। কুইক রেন্টাল ব্যবস্থা ছিল স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা।’
ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়ার বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বিপু উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘১০ বছরের জন্য একটি বাড়ি ভাড়া নেয়া হলে সেখানে থাকুন বা না থাকুন ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। এমন বলা যাবে না যে, যে কয়দিন থাকবেন সে কয়দিনের ভাড়া দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সময় বিদ্যুতের সিস্টেম লস ছিল ৪৪ শতাংশ। তার অর্ধেকই চুরি হতো। এখন সিস্টেম লস ৬-৭ শতাংশ।’
গত ৫ জানুয়ারি বিইআরসি আইনের (সংশোধন) অধ্যাদেশটি সংসদে তোলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। এরপর ২২ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সেটি বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করেন। বিলটি পাঁচ দিনের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলটি উত্থাপনের দিন বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বিপু বলেন, অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখার স্বার্থে নিয়মিত ও দ্রুত ট্যারিফ সমন্বয়ের জন্য বিইআরসির পাশাপাশি সরকারের ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রয়োজন। রোববার বিলটি পাস হওয়ায় অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত হলো।
সংসদে নসরুল হামিদ জানান, আইন পাস হলেও বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া বিইআরসির মাধ্যমেই গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করবে সরকার।