alt

জাতীয়

দেশে ৫১ শতাংশ নারীর বাল্যবিয়ে হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ০৩ মে ২০২৩

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় বাংলাদেশে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম। দেশটিতে ৫১ শতাংশ নারীর বিয়ে হয়েছিল তাঁদের শৈশবে। আজ বুধবার জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নতুন এক বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তথ্যের উৎস হিসেবে ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগে এবং ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাঁদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে এবং তারা যাতে বেড়ে উঠতে পারে, সে সুযোগ দিতে আমাদের জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।’

তবে গত এক দশকে বাল্যবিবাহ ধারাবাহিকভাবে কমছে। এ হার কমে আসায় বড় ভূমিকা রাখছে দক্ষিণ এশিয়া। অগ্রগতি সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো প্রতি চার তরুণীর মধ্যে একজনের বিয়ে হচ্ছে তাঁর ১৮তম জন্মদিনের আগেই। এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে বাল্যবিবাহ কমছে, তাতে সেখানে এ ধরনের বিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হতে প্রায় ৫৫ বছর লাগতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বে এখন যত বাল্যবধূ রয়েছে, তাদের ৪৫ শতাংশই এই অঞ্চলের। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা সত্ত্বেও এখনো বিশ্বের মোট বাল্যবধূর এক-তৃতীয়াংশই এ দেশের।

বাল্যবধূর সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে সাব-সাহারান আফ্রিকার অবস্থান দ্বিতীয় (২০ শতাংশ)। এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে এ ধরনের বিয়ের হার কমছে, সেই গতিতে চলতে থাকলে বাল্যবিবাহ পুরোপুরি বন্ধ করতে ২০০ বছরের বেশি সময় লাগবে।

লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলও পিছিয়ে পড়ছে। সেখানে বর্তমানে যে হারে বাল্যবিবাহ হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে অঞ্চলভেদে বাল্যবিবাহের দিক থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম অঞ্চলে পরিণত হবে। ক্রমাগত অগ্রগতির পর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়াতেও অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বর্তমানে জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাঁদের ছোটবেলায়। অথবা বলা যায়, প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়। পাঁচ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ। এবার তা ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী বাল্যবিবাহ কমানোর গতি ২০ গুণ বাড়াতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

আজ বুধবার প্রকাশিত ইউনিসেফের নতুন বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত এক দশকে বাল্যবিবাহ ধারাবাহিকভাবে নিম্নমুখী হওয়া সত্ত্বেও সংঘাত, জলবায়ুজনিত অভিঘাত, কোভিড-১৯-এর বিরূপ প্রভাবসহ একাধিক সংকট এ ক্ষেত্রে কষ্টার্জিত অর্জন ভেস্তে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এ বিষয়ে বলেন, একের পর এক সংকটে বিশ্ব জর্জরিত, যা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে, বিশেষ করে মেয়েদের, যাদের বিয়ের কনে হিসেবে নয়; বরং শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা উচিত।

যেসব মেয়ের শৈশবে বিয়ে হয়, তাদের তাৎক্ষণিক ও জীবনভর এর পরিণতি ভোগ করতে হয়। তাদের স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তারা অল্প বয়সে গর্ভধারণের বাড়তি ঝুঁকির মুখে পড়ে, ফলস্বরূপ যা শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের জটিলতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। বাল্যবিবাহের এই প্রচলন মেয়েদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধব থেকেও বিচ্ছিন্ন করতে পারে এবং তাদের নিজেদের কমিউনিটিতে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত রাখতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সার্বিক কল্যাণের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর চলমান প্রভাবগুলোর কারণে গত এক দশকে বাল্যবিবাহের অবসান ঘটাতে মূল্যবান অর্জনগুলোও হুমকির সম্মুখীন বা এমনকি তা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, মহামারি ইতিমধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধের সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে দিয়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করেছি, বাল্যবিবাহ বন্ধে অগ্রগতি সম্ভব। তবে এ জন্য বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা মেয়ে ও পরিবারগুলোর জোরালো সমর্থন প্রয়োজন। মেয়েদের স্কুলে টিকিয়ে রাখার বিষয়ে এবং তাদের অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।’

ছবি

‘জুলাই শহীদ দিবস’ আজ, রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন বাংলাদেশে

ছবি

ইসির ওয়েবসাইট থেকে সরানো হলো ‘নৌকা’ প্রতীক

ছবি

শেখ মঈনউদ্দিন এবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর দায়িত্বে

ছবি

২০ বছরের পুরনো যানবাহন সরাতে শিগগিরই অভিযান: বিআরটিএ চেয়ারম্যান

ছবি

দুদকের নতুন সচিব খালেদ রহীম

ছবি

‘নৌকা’ মার্কা কাদের জন্য রেখে দিলেন, প্রশ্ন আসিফ মাহমুদের

প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

শামীম ওসমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

৯৬ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া

বাংলা একাডেমি সংস্কার কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন ব্রাত্য রাইসু

গুলিস্তানে দুই ট্রাকের মাঝখানে চাপা পড়ে চালকের সহকারী নিহত

আগস্ট থেকে ১৫ টাকা কেজিতে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার: খাদ্য উপদেষ্টা

ছবি

সব ঘটনা সাম্প্রদায়িক নয়’—সংখ্যালঘু সহিংসতা নিয়ে পুলিশের ব্যাখ্যা

ভাঙ্গুড়ায় তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা

ছবি

শ্রীমঙ্গলে ডিনস্টন সিমেট্রি যেন এক টুকরা স্কটল্যান্ড

বিএসবির বাশারকে আদালত চত্বরে ঘুষি, লাথি, ডিম নিক্ষেপ

দুই বিভাগে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামিদের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি কাল

চিকুনগুনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জাও ছড়াচ্ছে ডেঙ্গুর পাশাপাশি

বুধবার বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাইদ দিবস

ছবি

ফেনীর বন্যায় ১৪৬ কোটি টাকার ক্ষতি, এখনও পানিবন্দী সাত হাজার পরিবার

বড়পুকুরিয়ার ‘উচ্চ মানের’ কয়লা ‘কম দামে’ নিচ্ছে পিডিবি

বাণিজ্যের নামে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন চুক্তি চলবে না: সিপিবি

রিভিউ হবে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্লান্টের চুক্তি

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা: ফের ৫ দিনের রিমান্ডে মহিন

ছবি

‘জাতীয় সংস্কারক’ উপাধি পেতে ইচ্ছুক নন অধ্যাপক ইউনূস

নিবন্ধনের শর্ত পূরণে ব্যর্থ এনসিপিসহ ১৪৪ দল: ইসি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐকমত্য, পরিবর্তনে লাগবে গণভোট

ছবি

নতুন নীতিমালায় পিস্তল-রাইফেলের লাইসেন্স ও নবায়নে বাড়ল শর্ত ও ফি

ছবি

শহীদদের স্মরণে সরকারি-বেসরকারি ভবনে অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা

ছবি

দলগুলোর মতবিরোধে উচ্চকক্ষ নিয়ে রোববার সিদ্ধান্ত ঘোষণা

ছবি

বদলির আদেশ অমান্য ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে বরখাস্ত ৮ কর্মকর্তা

ছবি

তিস্তা রক্ষায় জনগণের দাবি পরিকল্পনায় যুক্ত করা হয়েছে: পরিবেশ উপদেষ্টা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচ দেশে প্রবাসী ভোটার তালিকাভুক্তির উদ্যোগ

ছবি

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আরও ৫ লাখ পরিবার যুক্ত, শুরু অগাস্টে

ছবি

বাংলা একাডেমি সংস্কার কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন ব্রাত্য রাইসু

tab

জাতীয়

দেশে ৫১ শতাংশ নারীর বাল্যবিয়ে হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ০৩ মে ২০২৩

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় বাংলাদেশে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম। দেশটিতে ৫১ শতাংশ নারীর বিয়ে হয়েছিল তাঁদের শৈশবে। আজ বুধবার জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নতুন এক বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তথ্যের উৎস হিসেবে ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগে এবং ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাঁদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে এবং তারা যাতে বেড়ে উঠতে পারে, সে সুযোগ দিতে আমাদের জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।’

তবে গত এক দশকে বাল্যবিবাহ ধারাবাহিকভাবে কমছে। এ হার কমে আসায় বড় ভূমিকা রাখছে দক্ষিণ এশিয়া। অগ্রগতি সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো প্রতি চার তরুণীর মধ্যে একজনের বিয়ে হচ্ছে তাঁর ১৮তম জন্মদিনের আগেই। এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে বাল্যবিবাহ কমছে, তাতে সেখানে এ ধরনের বিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হতে প্রায় ৫৫ বছর লাগতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বে এখন যত বাল্যবধূ রয়েছে, তাদের ৪৫ শতাংশই এই অঞ্চলের। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা সত্ত্বেও এখনো বিশ্বের মোট বাল্যবধূর এক-তৃতীয়াংশই এ দেশের।

বাল্যবধূর সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে সাব-সাহারান আফ্রিকার অবস্থান দ্বিতীয় (২০ শতাংশ)। এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে এ ধরনের বিয়ের হার কমছে, সেই গতিতে চলতে থাকলে বাল্যবিবাহ পুরোপুরি বন্ধ করতে ২০০ বছরের বেশি সময় লাগবে।

লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলও পিছিয়ে পড়ছে। সেখানে বর্তমানে যে হারে বাল্যবিবাহ হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে অঞ্চলভেদে বাল্যবিবাহের দিক থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম অঞ্চলে পরিণত হবে। ক্রমাগত অগ্রগতির পর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়াতেও অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বর্তমানে জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাঁদের ছোটবেলায়। অথবা বলা যায়, প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়। পাঁচ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ। এবার তা ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী বাল্যবিবাহ কমানোর গতি ২০ গুণ বাড়াতে হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

আজ বুধবার প্রকাশিত ইউনিসেফের নতুন বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত এক দশকে বাল্যবিবাহ ধারাবাহিকভাবে নিম্নমুখী হওয়া সত্ত্বেও সংঘাত, জলবায়ুজনিত অভিঘাত, কোভিড-১৯-এর বিরূপ প্রভাবসহ একাধিক সংকট এ ক্ষেত্রে কষ্টার্জিত অর্জন ভেস্তে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এ বিষয়ে বলেন, একের পর এক সংকটে বিশ্ব জর্জরিত, যা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে, বিশেষ করে মেয়েদের, যাদের বিয়ের কনে হিসেবে নয়; বরং শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা উচিত।

যেসব মেয়ের শৈশবে বিয়ে হয়, তাদের তাৎক্ষণিক ও জীবনভর এর পরিণতি ভোগ করতে হয়। তাদের স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তারা অল্প বয়সে গর্ভধারণের বাড়তি ঝুঁকির মুখে পড়ে, ফলস্বরূপ যা শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের জটিলতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। বাল্যবিবাহের এই প্রচলন মেয়েদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধব থেকেও বিচ্ছিন্ন করতে পারে এবং তাদের নিজেদের কমিউনিটিতে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত রাখতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সার্বিক কল্যাণের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর চলমান প্রভাবগুলোর কারণে গত এক দশকে বাল্যবিবাহের অবসান ঘটাতে মূল্যবান অর্জনগুলোও হুমকির সম্মুখীন বা এমনকি তা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, মহামারি ইতিমধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধের সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে দিয়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করেছি, বাল্যবিবাহ বন্ধে অগ্রগতি সম্ভব। তবে এ জন্য বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা মেয়ে ও পরিবারগুলোর জোরালো সমর্থন প্রয়োজন। মেয়েদের স্কুলে টিকিয়ে রাখার বিষয়ে এবং তাদের অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।’

back to top