alt

জাতীয়

ডলার সংকটে জ্বালানি তেলের বকেয়া নিয়ে বিপাকে বিপিসি

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক : মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

ডলার-সংকটে আমদানি করা জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ সরকার। জ্বালানি তেল আমদানি ও বাজারজাতকরণে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কাছে ছয়টি আন্তর্জাতিক কোম্পানির পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

বকেয়া অর্থ না পাওয়ায় এদের কেউ কেউ পূর্ব নির্ধারিত সূচির চেয়ে কম কার্গো (তেলবাহী) পাঠানোর পাশপাশি তেল সরবরাহ (রপ্তানি) ‘স্থগিত করারও হুমকি’ দিয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বিপিসির দুটি চিঠির একটির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স সম্প্রতি এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তবে বিপিসির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলছেন, ‘তেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিপিসির সম্পর্ক বহুদিনের। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, আলোচনা চলছে। আমরা কিস্তিতে তাদের পেমেন্ট (পাওনা) দিচ্ছি; তারা আপত্তি করছে না। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বকেয়া কমে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি সিনোপেকের বাণিজ্যিক অংশীদার ইউনিপেক, ভিটল, এনোক, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি), পেট্রোচায়না এবং ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি তেল সরবরাহ বাবদ বিপিসির কাছে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাওনা হয়েছে।

জ্বালানি তেলের অভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট ও রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ মে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বিপিসি বলেছে, ‘দেশের বাজারে বিদেশি মুদ্রার সংকট থাকায় এবং সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের চাহিদা পূরণ করতে না পারায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সময়মতো আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে পারছে না।’

চিঠিতে বিপিসি আরও জানায়, ‘চলতি বছর ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারিকে ৪ কোটি ১১ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে বিপিসিকে; আইওসিকে (আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি) ডিজেল ও জেট ফুয়েল বাবদ দিতে হবে ১৪ কোটি ৭২ লাখ ডলার।’ এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে রুপিতে অর্থ পরিশোধ করতে পারে, তার অনুমতি দিতে সরকারকে অনুরোধ জানায় বিপিসি।

এর আগে গত এপ্রিল মাসে পাঠানো আরেক চিঠিতে বিপিসি বলে, ‘মে মাসের তফসিল অনুযায়ী জ্বালানি আমদানি করা না গেলে দেশব্যাপী সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে, সেই সঙ্গে জ্বালানির মজুদ বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে।’

এ বিষয়ে মতামত জানতে ফোন করে বিপিসি কিংবা জ্বালানি মন্ত্রণালয়; কারোই সাড়া পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে জানায় রায়টার্স।

বিপিসির চিঠির বিষয়ে রায়টার্সের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে যৌক্তিকভাবে ডলার ছাড় করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে রয়টার্স বলছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে বাংলাদেশের ডলারের রিজার্ভ এক তৃতীয়াংশেরও বেশি সংকুচিত হয়ে সাত বছরের সর্বনিম্ন ৩০.১৮ মার্কিন বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আমদানি করা জ্বালানি এবং খাদ্যের উচ্চ ব্যয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করা প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটিকে (বাংলাদেশ) এই বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএফএফ) থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিতে হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি ব্যয় মেটাতে চলতি অর্থবছরে বিপিসিকে ৫০০ কোটি ডলার এবং এলএনজি আমদানিতে পেট্রোবাংলাকে ২০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। এ ছাড়া ঋণপত্র খুলতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকেও ৩০০ কোটি ডলার দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা সবকিছু যৌক্তিকভাবে ব্যবস্থাপনা করছি। বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। নানা উত্থান-পতন সত্ত্বেও আমরা ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ সংরক্ষণ করছি।’

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের সংক্ষিপ্ত চিত্রও তুলে ধরে প্রতিবেদনে রয়টার্স বলে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ডলার সল্পতার কারণ দেখিয়ে কয়েক মাস ধরে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর ১৫০ কোটি ডলার মূল্যমানের বিল পরিশোধ করছে না। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সাল খান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এ বিলম্বের কারণে অনেক স্থানীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে; এর প্রতিকার না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে।’

এ বিষয়ে বিপিডিবির মুখপাত্র শামিম হাসান বলেছেন, ‘এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বিল পরিশোধের চেষ্টা করছি, কিন্তু অন্যদের মতো আমরাও ডলার সংকটে আছি।’

প্রসঙ্গত, ডলার সংকটের কারণে সম্প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম জ্বালানি কয়লা আমদানিতেও জটিলতা তৈরি হয়। কয়লার অভাবে সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটে রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। একই কারণে চীন-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীতে স্থাপিত পায়রা ১৩২০ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও জটিলতায় পড়ে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে পৃথক চিঠি দিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানায় রামপাল ও পায়রা কর্তৃপক্ষ। তবে পায়রা এখনও বন্ধ হয়নি আর রামপলে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে।

ছবি

বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ৫টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক সই

ছবি

ঢাকা ছাড়লেন কাতারের আমির

ছবি

সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা জব্দ করা জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছেছে; ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকের সবাই নিরাপদ

ছবি

পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

ছবি

পদত্যাগ না করেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

ছবি

বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত : ইসি সচিব

ছবি

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড , আছে লোড শেডিংও

ছবি

বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই

ছবি

ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বাড়লো আরও ৩ দিন, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ড এর যৌথ অংশগ্রহণে টিএল-২০২৪ উদ্বোধন

ছবি

শিশু অধিকার বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ--স্পীকার

ছবি

দু’দিনের সফরে কাতারের আমির ঢাকায়

ছবি

পাঁচ দিনের সফরে বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া

ছবি

আনু মুহাম্মদের পায়ে ‌‘কম্বাইন্ড অপারেশন’ দরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি

আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা, বাড়লো আরও ৩ দিন

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই কি এত তাপ?

ছবি

ভারতের উজানে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় তিস্তা মরা খালে পরিনত হয়েছে

ছবি

তাপদাহ : হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

ছবি

পিছিয়ে নেই নারীরাও তামিলনাড়ু থেকে ট্রাক নিয়ে বেনাপোল এলেন অন্নপূর্ণা

ছবি

দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসছেন কাতারের আমির, ১১ টি চুক্তি-সমঝোতা

ছবি

অন্যায় আবদারের কাছে মাথানত করবো না: ইসি আলমগীর

ছবি

তীব্র গরম : হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

ছবি

দাবদাহ : হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

ছবি

বোরো মৌসুমে ৩২ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে সরকার

ছবি

ব্যারিস্টার খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি

ছবি

‘মুজিব ব্যাটারি’ কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

দীর্ঘ ছুটি শেষে খুলেছে সুপ্রিম কোর্ট

ছবি

হিট অ্যালার্টের মধ্যেই ৬০ কি.মি. বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে

দাবদাহে ‘কপাল পোড়ার’ শঙ্কায় কৃষক, শুকিয়ে যাচ্ছে ধান ক্ষেত, মরছে সবজির গাছ

ছবি

সোমবার থেকে ৪ দিনব্যাপী ন্যাপ এক্সপো, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেয়া হবে:প্রতিমন্ত্রী

ছবি

গরমের কারণে সব সরকারি স্কুল, কলেজ আরও ৭ দিন বন্ধ

tab

জাতীয়

ডলার সংকটে জ্বালানি তেলের বকেয়া নিয়ে বিপাকে বিপিসি

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক

মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

ডলার-সংকটে আমদানি করা জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ সরকার। জ্বালানি তেল আমদানি ও বাজারজাতকরণে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কাছে ছয়টি আন্তর্জাতিক কোম্পানির পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

বকেয়া অর্থ না পাওয়ায় এদের কেউ কেউ পূর্ব নির্ধারিত সূচির চেয়ে কম কার্গো (তেলবাহী) পাঠানোর পাশপাশি তেল সরবরাহ (রপ্তানি) ‘স্থগিত করারও হুমকি’ দিয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বিপিসির দুটি চিঠির একটির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স সম্প্রতি এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তবে বিপিসির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলছেন, ‘তেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিপিসির সম্পর্ক বহুদিনের। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, আলোচনা চলছে। আমরা কিস্তিতে তাদের পেমেন্ট (পাওনা) দিচ্ছি; তারা আপত্তি করছে না। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বকেয়া কমে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি সিনোপেকের বাণিজ্যিক অংশীদার ইউনিপেক, ভিটল, এনোক, ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি), পেট্রোচায়না এবং ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি তেল সরবরাহ বাবদ বিপিসির কাছে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাওনা হয়েছে।

জ্বালানি তেলের অভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট ও রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ মে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বিপিসি বলেছে, ‘দেশের বাজারে বিদেশি মুদ্রার সংকট থাকায় এবং সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের চাহিদা পূরণ করতে না পারায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সময়মতো আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে পারছে না।’

চিঠিতে বিপিসি আরও জানায়, ‘চলতি বছর ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারিকে ৪ কোটি ১১ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে বিপিসিকে; আইওসিকে (আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি) ডিজেল ও জেট ফুয়েল বাবদ দিতে হবে ১৪ কোটি ৭২ লাখ ডলার।’ এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে রুপিতে অর্থ পরিশোধ করতে পারে, তার অনুমতি দিতে সরকারকে অনুরোধ জানায় বিপিসি।

এর আগে গত এপ্রিল মাসে পাঠানো আরেক চিঠিতে বিপিসি বলে, ‘মে মাসের তফসিল অনুযায়ী জ্বালানি আমদানি করা না গেলে দেশব্যাপী সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে, সেই সঙ্গে জ্বালানির মজুদ বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে।’

এ বিষয়ে মতামত জানতে ফোন করে বিপিসি কিংবা জ্বালানি মন্ত্রণালয়; কারোই সাড়া পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে জানায় রায়টার্স।

বিপিসির চিঠির বিষয়ে রায়টার্সের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে যৌক্তিকভাবে ডলার ছাড় করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে রয়টার্স বলছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে বাংলাদেশের ডলারের রিজার্ভ এক তৃতীয়াংশেরও বেশি সংকুচিত হয়ে সাত বছরের সর্বনিম্ন ৩০.১৮ মার্কিন বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আমদানি করা জ্বালানি এবং খাদ্যের উচ্চ ব্যয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করা প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটিকে (বাংলাদেশ) এই বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএফএফ) থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিতে হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি ব্যয় মেটাতে চলতি অর্থবছরে বিপিসিকে ৫০০ কোটি ডলার এবং এলএনজি আমদানিতে পেট্রোবাংলাকে ২০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। এ ছাড়া ঋণপত্র খুলতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকেও ৩০০ কোটি ডলার দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা সবকিছু যৌক্তিকভাবে ব্যবস্থাপনা করছি। বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। নানা উত্থান-পতন সত্ত্বেও আমরা ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ সংরক্ষণ করছি।’

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের সংক্ষিপ্ত চিত্রও তুলে ধরে প্রতিবেদনে রয়টার্স বলে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ডলার সল্পতার কারণ দেখিয়ে কয়েক মাস ধরে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর ১৫০ কোটি ডলার মূল্যমানের বিল পরিশোধ করছে না। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সাল খান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এ বিলম্বের কারণে অনেক স্থানীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে; এর প্রতিকার না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে।’

এ বিষয়ে বিপিডিবির মুখপাত্র শামিম হাসান বলেছেন, ‘এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বিল পরিশোধের চেষ্টা করছি, কিন্তু অন্যদের মতো আমরাও ডলার সংকটে আছি।’

প্রসঙ্গত, ডলার সংকটের কারণে সম্প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম জ্বালানি কয়লা আমদানিতেও জটিলতা তৈরি হয়। কয়লার অভাবে সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটে রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। একই কারণে চীন-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীতে স্থাপিত পায়রা ১৩২০ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও জটিলতায় পড়ে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে পৃথক চিঠি দিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানায় রামপাল ও পায়রা কর্তৃপক্ষ। তবে পায়রা এখনও বন্ধ হয়নি আর রামপলে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে।

back to top