alt

জাতীয়

আর কোন অশান্তি, সংঘাত চাই না : প্রধানমন্ত্রী

বাসস : রোববার, ২৮ মে ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আর কোন সংঘাত চায় না, বরং জনগণের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি চায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা আর কোন অশান্তি, সংঘাত চাই না। আমরা মানুষের জীবনকে উন্নত করতে চাই এবং আমরা সর্বদা এটি কামনা করি।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে দেশে বিরাজমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ গত ১৪ বছরে বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়মী লীগ জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন থেকে অব্যাহত শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশের কারণে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নে সক্ষম হয়েছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলি ও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সরকার ২০০৮ সালের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এর ফলে, আমরা দারিদ্র্যের হার এবং মাতৃমৃত্যু হ্রাস করতে, শিক্ষার হার এবং মানুষের গড় আয়ু বাড়াতে সক্ষম হয়েছি।’

তিনি বলেন, দেশে বিরাজমান টেকসই ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থসামাজিক অগ্রগতির একমাত্র কারণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি শান্তিপূর্ণ টেকসই পরিবেশ জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে সহায়ক এবং সবাইকে এটি মনে রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মাধ্যমে সব বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ যে কাজটি ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে করেছে।

তিনি বলেন, ‘এখন কেন এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা (চলছে), অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে তা ক্ষুধার্ত শিশু ও মানুষের জন্য ব্যবহার করা হবে না কেন? এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য হাজার হাজার শিশু ও নারী বিশ্বজুড়ে অমানবিক জীবনযাপন করছে।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ ১০ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, যারা নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছিল যা তাকে ১৯৭১ সালের পরিস্থিতি স্মরণ করিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসুক, (পৃথিবীতে) কোন ধরনের অশান্তি থাকবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে। ‘প্রতি মুহূর্তে আমাদের তাদের (স্বাধীনতা বিরোধীদের) বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন, সারাজীবন শান্তির বাণী প্রচার করেছেন, কিন্তু তাকে জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে।

‘আমাদের কী দুর্ভাগ্য, যে মানুষটি সারাজীবন শান্তির কথা বলেছেন তাকে তার জীবন দিতে হয়েছিল’- এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আজ তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই, তবে আমরা চাই যে তার দেশ উন্নত এবং সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে উঠুক।’

দেশে-বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করছেন তাদের স্বীকৃতি দিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শান্তি পুরস্কার’ প্রবর্তনেরও ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘কারণ আমরা শান্তি চাই এবং আমরা অবশ্যই শান্তির পথে এগিয়ে যাব।’

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং মূল বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও গবেষক মোনায়েম সরকার।

মূল বক্তব্যের ওপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও বিশিষ্ট লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু।

শুরুতেই বঙ্গবন্ধু ও তার জুলি ও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলি ও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট ও প্রথম দিনের কভার উন্মোচন করেন। তিনি দিবসটি উপলক্ষে একটি স্যুভেনির প্রকাশনার প্রচ্ছদও উন্মোচন করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলি ও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।

ফিদেল কাস্ত্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভাদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং এবং লিওনিদ ব্রেজনেভের মতো বিশ্ব নেতারা এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

বিশ্ব শান্তি পরিষদের শান্তি পুরস্কারটি ছিল বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

জুলি ও কুরি শান্তি পুরস্কার ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার।

এই মহান অর্জনের ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধুতে পরিণত হন।

বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী মেরি কুরি এবং পিয়েরে কুরির অবদানকে স্মরণ করতে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মানবিক কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৫০ সাল থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সংস্থাকে জুলি ও কুরি শান্তি পুরস্কার দিয়ে আসছে।

‘জনগণই শক্তি, জনগণই শক্তির উৎস’- বঙ্গবন্ধুর এই উক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সেই বিশ্বাসে বিশ্বাসী এবং সেই বিশ্বাস নিয়েই আমার পথচলা।’

বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষায় অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করছে- উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এক নম্বর দেশ হিসেবে আমরা বিশ্বজুড়ে শান্তি বজায় রাখছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষ, সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ শতাংশ। কিন্তু আজ সরকার তা ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। যেখানে দারিদ্র্যের সংখ্যা ছিল ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ, তা আজ ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, এদেশে কোন মানুষ দরিদ্র, গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষ অন্তত তাদের মৌলিক অধিকার- খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান পাবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশের আজকের এই আর্থসামাজিক উন্নয়নকে ধারাবাহিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশের অবদান বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের পরিবেশ বিশৃঙ্খল ছিল ও প্রতি রাতে কারফিউ দেয়া হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘২১ বছর পর আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা অন্তত এটা বলতে পারি যে আমরা একটি ভিত্তি তৈরি করেছি। মাঝখানে একটি অশান্ত পরিবেশ ছিল (২০০১ থেকে ২০০৮)।’

ছবি

রাষ্ট্রপতির থাকা না থাকা : রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত

ছবি

ছাত্র-গণ আন্দোলনে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বিচারের আশ্বাস সরকারের

ছবি

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ না করার সিদ্ধান্তে আন্দোলন

ছবি

সাংবিধানিক পথে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন: আসিফ নজরুলের ব্যাখ্যা

ছবি

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ: সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ

ছবি

এসবি’র নতুন প্রধান খোন্দকার রফিকুল, পুলিশে ব্যাপক রদবদল

ছবি

গণমাধ্যমকে হুমকি ও ঘেরাওয়ের ঘোষণায় সরকারের কঠোর অবস্থান

ছবি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে: রিজওয়ানা

গণ–অভ্যুত্থান ঘিরে সহিংসতায় ৯৮৬ জনের মৃত্যু

১ টাকা ৩০ পয়সায় ঢাকায় আসবে কৃষিপণ্য, রাজশাহী থেকে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন আগামী শনিবার থেকে চালু

ছবি

একজন চাকরিপ্রত্যাশী সর্বোচ্চ তিন বার বসতে পারবে বিসিএস পরীক্ষায়, উপদেষ্টা পরিষদে সিদ্ধান্ত

ছবি

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৪২ জনকে পুড়িয়ে মারার মামলা খারিজ

ছবি

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: ১৪ জেলায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা

ছবি

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর অনুমোদন

ছবি

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ : ঢাকা থেকে ৫ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ছবি

শেখ হাসিনার পরিবারসহ অন্যদের বরাদ্দ প্লট বাতিলে হাইকোর্টের রুল

ছবি

সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল গ্রেপ্তার

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে তিন আবেদনের শুনানি ১৭ নভেম্বর

ছবি

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া দানা’র প্রভাবে উপকূলে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

ছবি

গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই: নাহিদ ইসলাম

৮ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন বাবর

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি

ছবি

বঙ্গভবন এলাকা থমথমে, কড়া নিরাপত্তা

রাষ্ট্রপতির ভবিষ্যৎ, সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক না রাজনৈতিক

ছবি

বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধিতে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দিচ্ছে ইউএসএআইডি

ছবি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে আইন সংশোধনের আহ্বান হিউম্যান রাইটস ওয়াচের

ছবি

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আনন্দ মিছিল

ছবি

ছাত্রলীগ ‘নিষিদ্ধ ’, প্রজ্ঞাপন জারি করল সরকার

ছবি

ডেঙ্গু: অক্টোবরের ২৩ দিনেই মৃত্যু শতাধিক

ছবি

সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ আটক

ছবি

বিটিআরসির নতুন কমিশনার ইকবাল আহমেদ

ছবি

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আসছে, দেশের চার বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

ছবি

এইচএসসির ফল বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ: নিরাপত্তা বাহিনীর লাঠিপেটা, গ্রেপ্তার ৫৪

ছবি

রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে: উপদেষ্টা নাহিদ

ছবি

উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধি দল আসবে ঢাকায়

ছবি

বঙ্গভবনের সামনে সংঘর্ষে ২৫ পুলিশ সদস্য আহত, উত্তেজনার পর নিরাপত্তা জোরদার

tab

জাতীয়

আর কোন অশান্তি, সংঘাত চাই না : প্রধানমন্ত্রী

বাসস

রোববার, ২৮ মে ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আর কোন সংঘাত চায় না, বরং জনগণের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি চায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা আর কোন অশান্তি, সংঘাত চাই না। আমরা মানুষের জীবনকে উন্নত করতে চাই এবং আমরা সর্বদা এটি কামনা করি।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে দেশে বিরাজমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ গত ১৪ বছরে বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়মী লীগ জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন থেকে অব্যাহত শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশের কারণে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নে সক্ষম হয়েছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলি ও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সরকার ২০০৮ সালের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এর ফলে, আমরা দারিদ্র্যের হার এবং মাতৃমৃত্যু হ্রাস করতে, শিক্ষার হার এবং মানুষের গড় আয়ু বাড়াতে সক্ষম হয়েছি।’

তিনি বলেন, দেশে বিরাজমান টেকসই ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থসামাজিক অগ্রগতির একমাত্র কারণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি শান্তিপূর্ণ টেকসই পরিবেশ জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে সহায়ক এবং সবাইকে এটি মনে রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মাধ্যমে সব বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ যে কাজটি ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে করেছে।

তিনি বলেন, ‘এখন কেন এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা (চলছে), অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে তা ক্ষুধার্ত শিশু ও মানুষের জন্য ব্যবহার করা হবে না কেন? এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য হাজার হাজার শিশু ও নারী বিশ্বজুড়ে অমানবিক জীবনযাপন করছে।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ ১০ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, যারা নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছিল যা তাকে ১৯৭১ সালের পরিস্থিতি স্মরণ করিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসুক, (পৃথিবীতে) কোন ধরনের অশান্তি থাকবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে। ‘প্রতি মুহূর্তে আমাদের তাদের (স্বাধীনতা বিরোধীদের) বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন, সারাজীবন শান্তির বাণী প্রচার করেছেন, কিন্তু তাকে জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে।

‘আমাদের কী দুর্ভাগ্য, যে মানুষটি সারাজীবন শান্তির কথা বলেছেন তাকে তার জীবন দিতে হয়েছিল’- এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আজ তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই, তবে আমরা চাই যে তার দেশ উন্নত এবং সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে উঠুক।’

দেশে-বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করছেন তাদের স্বীকৃতি দিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শান্তি পুরস্কার’ প্রবর্তনেরও ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘কারণ আমরা শান্তি চাই এবং আমরা অবশ্যই শান্তির পথে এগিয়ে যাব।’

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং মূল বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও গবেষক মোনায়েম সরকার।

মূল বক্তব্যের ওপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও বিশিষ্ট লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু।

শুরুতেই বঙ্গবন্ধু ও তার জুলি ও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলি ও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট ও প্রথম দিনের কভার উন্মোচন করেন। তিনি দিবসটি উপলক্ষে একটি স্যুভেনির প্রকাশনার প্রচ্ছদও উন্মোচন করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলি ও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।

ফিদেল কাস্ত্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভাদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং এবং লিওনিদ ব্রেজনেভের মতো বিশ্ব নেতারা এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

বিশ্ব শান্তি পরিষদের শান্তি পুরস্কারটি ছিল বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

জুলি ও কুরি শান্তি পুরস্কার ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার।

এই মহান অর্জনের ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধুতে পরিণত হন।

বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী মেরি কুরি এবং পিয়েরে কুরির অবদানকে স্মরণ করতে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মানবিক কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৫০ সাল থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সংস্থাকে জুলি ও কুরি শান্তি পুরস্কার দিয়ে আসছে।

‘জনগণই শক্তি, জনগণই শক্তির উৎস’- বঙ্গবন্ধুর এই উক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সেই বিশ্বাসে বিশ্বাসী এবং সেই বিশ্বাস নিয়েই আমার পথচলা।’

বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষায় অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করছে- উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এক নম্বর দেশ হিসেবে আমরা বিশ্বজুড়ে শান্তি বজায় রাখছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষ, সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ শতাংশ। কিন্তু আজ সরকার তা ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। যেখানে দারিদ্র্যের সংখ্যা ছিল ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ, তা আজ ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, এদেশে কোন মানুষ দরিদ্র, গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষ অন্তত তাদের মৌলিক অধিকার- খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান পাবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশের আজকের এই আর্থসামাজিক উন্নয়নকে ধারাবাহিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশের অবদান বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের পরিবেশ বিশৃঙ্খল ছিল ও প্রতি রাতে কারফিউ দেয়া হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘২১ বছর পর আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা অন্তত এটা বলতে পারি যে আমরা একটি ভিত্তি তৈরি করেছি। মাঝখানে একটি অশান্ত পরিবেশ ছিল (২০০১ থেকে ২০০৮)।’

back to top