alt

জাতীয়

মোবাইলের অব্যবহৃত ডেটা পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত হোক চান ৮৮ শতাংশ গ্রাহক

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

ইন্টারনেট প্যাকেজের অব্যবহৃত ডেটা পরবর্তী যেকোনো প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত হোক এমনটি চান দেশের প্রায় ৮৮ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক। গ্রাহকদের এই প্রত্যাশার বিষয়টি উঠে এসেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পরিচালিত একটি অনলাইন জরিপে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একই প্যাকেজ কিনলে শুধু সে ক্ষেত্রে অব্যবহৃত ডেটা পরের প্যাকেজে যুক্ত হয়, যাকে বলা হয় ‘ক্যারি ফরোয়ার্ড’। জরিপে দেখা যাচ্ছে, এই নিয়মের পরিবর্তন চান গ্রাহকেরা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রমনায় বিটিআরসির কার্যালয়ে ‘মোবাইল অপারেটরসমূহের সেবা (প্যাকেজ এবং ডেটার মূল্য) সংক্রান্ত’ এক মতবিনিময় সভায় জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়।

দেশে মোবাইল অপারেটরগুলো এখন ৩,৭, ১৫ ও ৩০ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট প্যাকেজ দিতে পারে। এর বাইরে ‘আনলিমিডেট’ বা নির্দিষ্ট মেয়াদহীন কিছু প্যাকেজ রয়েছে, যার জনপ্রিয়তা কম এবং এগুলো নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

স্বল্পমেয়াদি প্যাকেজ কিনলে অনেক সময় দেখা যায়, মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ডেটা অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কেউ যদি আগের কেনা প্যাকেজটি আবার কেনেন, তাহলে অব্যবহৃত ডেটা পরের প্যাকেজে যোগ হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকের মেয়াদ শেষের আগে প্যাকেজ কিনতে মনে থাকে না। আবার অনেক গ্রাহক ভিন্ন প্যাকেজ কেনেন। তখন আর অব্যবহৃত ডেটা পরের প্যাকেজে যোগ হয় না।

এ বিষয়ে কী নীতি হওয়া উচিত তা বিটিআরসির জরিপে গ্রাহকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে প্রায় ৮৮ শতাংশ গ্রাহক মেয়াদকালের মধ্যে যেকোনো প্যাকেজ কিনলে, অব্যবহৃত ডেটা যোগ হওয়ার নীতি চেয়েছেন। বাকিরা মেয়াদকালের মধ্যে একই পরিমাণের ভিন্ন মেয়াদের প্যাকেজ কিনলে এবং মেয়াদের মধ্যে একই প্যাকেজ কিনলে, অব্যবহৃত ডেটা যোগ হওয়ার নীতির পক্ষে। উল্লেখ্য, বিটিআরসির উপস্থাপনায় এ ক্ষেত্রে আলাদা হার উল্লেখ করা হয়।

বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল ডেটার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার একটি খসড়া পরিকল্পনা তারা করেছে। এর জন্য অনলাইনে জরিপটি করা হয়েছে। এতে প্রায় ৫৪৯ গ্রাহক অংশ নেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীর বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী।

সভায় বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন। তিনি জানান, বেশিসংখ্যক গ্রাহক ইন্টারনেট প্যাকেজের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০টির মধ্যে রাখার মত দিয়েছেন। বেশির ভাগ গ্রাহক চান, ইন্টারনেট প্যাকেজের মেয়াদ হওয়া উচিত তিনটি—৭ দিন, ৩০ দিন ও নির্দিষ্ট মেয়াদহীন (আনলিমিটেড)।

গ্রাহকদের কাছে প্রশ্ন ছিল, ডেটার দাম কেমন হওয়া উচিত? জবাবে প্রায় ৫৩ শতাংশ গ্রাহক বলেন, প্রতি গিগাবিট (জিবি) ইন্টারনেটের দাম যেকোনো মেয়াদের জন্য সমান হওয়া উচিত। ২৭ শতাংশ গ্রাহক বলেছেন, ভিন্ন মেয়াদের জন্য ডেটার দাম ভিন্ন হওয়া উচিত; আর বাকিরা বলেছেন, স্বল্পমেয়াদি ডেটার দাম কম হওয়া উচিত।

ডেটা প্যাকেজের সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পক্ষে প্রায় ৪৬ শতাংশ এবং ভিন্ন মেয়াদের প্যাকেজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণের পক্ষে প্রায় ২১ শতাংশ গ্রাহক। বাকি গ্রাহকের অর্ধেক প্রতি জিবির জন্য সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য এবং অর্ধেক ভিন্ন মেয়াদের ডেটার জন্য একই সর্বনিম্ন ও ভিন্ন ভিন্ন সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

অবশ্য অনুষ্ঠানে ডেটার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়। দাম নির্ধারণের বদলে মান উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। টেলিযোগাযোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্নএশিয়ার জ্যেষ্ঠ পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান সরকার কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়াকেও প্রাগৈতিহাসিক চিন্তা বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, বাজারে অনেক প্রতিযোগিতা আছে। দাম নির্ধারণের বদলে যে অসংগতি আছে, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে সমাধান করা উচিত।

বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকলে দাম বেঁধে দিতে হয় না বলে উল্লেখ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মইনুল ইসলাম জাবের। তিনি মোবাইল অপারেটরগুলোর বর্তমান প্যাকেজ–পদ্ধতিরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সেবার মান বাড়ানোর দিকে বিটিআরসির নজর দেওয়া উচিত।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, প্যাকেজ বেশি থাকলে গ্রাহকেরা বিশেষ করে তরুণেরা পছন্দেরটি বাছাই করে নিতে পারেন।

মতবিনিময় সভায় সরাসরি ও অনলাইনে বেশ কয়েকজন গ্রাহক যুক্ত ছিলেন। তাঁরা সেবার মান নিয়ে অসন্তোষের কথা জানান। উপস্থিত বেশির ভাগ গ্রাহক ছিলেন টেলিটকের।

অপারেটরদের মধ্যে রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম টেলিযোগাযোগ সেবার ওপর উচ্চ হারে কর আরোপের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ১০০ টাকার মধ্যে নানা রকম কর ও ফি হিসেবে সরকারের কোষাগারে যায় ৫৪ টাকা।

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ সভায় জানান, মতবিনিময় সভায় যেসব মতামত এসেছে, তা পর্যালোচনা করা হবে।

বিটিআরসির কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) মো. মাহবুব-উল-আলম, গ্রামীণফোনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) হোসেন সাদাত, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঞা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ছবি

‘জোড়া লাগানো’ দুই শিশু ‘পৃথক হওয়া’র পর এবার ছাড়া পেলো হাসপাতাল থেকে

ছবি

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর পথ নেই: আইনমন্ত্রী

ছবি

দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জ্যাক সুলিভানের বৈঠকের কথা জানাল হোয়াইট হাউস

ছবি

দেশের পথে প্রধানমন্ত্রী

ছবি

আইএমএফ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির আগে পর্যালোচনা মিশন আসছে

ছবি

৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ১৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৭৯৯

ছবি

‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের দাবি

ছবি

দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান

ছবি

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্ত্রের ঝনঝনানির সুযোগ নেই: র‌্যাব

ছবি

বিবাহিত ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশনা অযৌক্তিক : তথ্যমন্ত্রী

গণতন্ত্রের দুর্বলতার কারণে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ

ছবি

গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি আরোপ নিয়ে যা বললেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র

কুড়িগ্রামে ‘স্বভাবকবি’ রাধাপদ রায়ের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ বিশিষ্ট নাগরিকদের

ছবি

জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৫.৬ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের

ছবি

বায়ুদূষণের শীর্ষে লাহোর, ঢাকা ১১তম

ছবি

অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা দখল করতে পারবে না : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

এলপি গ্যাস : টানা ৩ মাসে তিন দফায় দাম বাড়লো ৩৬%

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৫৯৬

ছবি

বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত

ছবি

ভিসানীতি নিয়ে যা হচ্ছে তা অতিরঞ্জিত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বাড়লো ৭৯ টাকা

ছবি

বর্ডার খুলে দিলে আলু ২০-২৫ টাকায় নামবে : ভোক্তার ডিজি

ছবি

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম মাসে আয় পৌনে সাত কোটি টাকা

ছবি

নির্ধারিত সময়ের আগে চালু হতে পারে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল

ছবি

জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকাদান শুরু

ছবি

অপরাধী যেই হোক কাউকে ছাড় নয় : নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনার

ছবি

মার্কিন ভিসা প্রক্রিয়া নিয়ে সুখবর দিলেন রেনা বিটার

ছবি

রেবোটিক্স এখন আর বিলাসী পন্য নয় : পলক

ছবি

ডেঙ্গুতে ৯ মাসেই মৃত্যু ছাড়ালো হাজার

ছবি

বিশ্বকে সুন্দর করার পূর্বশর্ত শিশুদের সুন্দর করে গড়ে তোলা : রাষ্ট্রপতি

ছবি

দেশে বছরে নতুন ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়

ছবি

পুলিশ লাইন্সের মেস সমূহে খাবার মান নিয়ে প্রশ্ন

ছবি

নগর ও গ্রামের জীবনযাত্রার বৈষম্য দূর করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

২ কোটি ৯৫ লাখ ছাগল ও ভেড়াকে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে

tab

জাতীয়

মোবাইলের অব্যবহৃত ডেটা পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত হোক চান ৮৮ শতাংশ গ্রাহক

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

ইন্টারনেট প্যাকেজের অব্যবহৃত ডেটা পরবর্তী যেকোনো প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত হোক এমনটি চান দেশের প্রায় ৮৮ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক। গ্রাহকদের এই প্রত্যাশার বিষয়টি উঠে এসেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পরিচালিত একটি অনলাইন জরিপে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একই প্যাকেজ কিনলে শুধু সে ক্ষেত্রে অব্যবহৃত ডেটা পরের প্যাকেজে যুক্ত হয়, যাকে বলা হয় ‘ক্যারি ফরোয়ার্ড’। জরিপে দেখা যাচ্ছে, এই নিয়মের পরিবর্তন চান গ্রাহকেরা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রমনায় বিটিআরসির কার্যালয়ে ‘মোবাইল অপারেটরসমূহের সেবা (প্যাকেজ এবং ডেটার মূল্য) সংক্রান্ত’ এক মতবিনিময় সভায় জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়।

দেশে মোবাইল অপারেটরগুলো এখন ৩,৭, ১৫ ও ৩০ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট প্যাকেজ দিতে পারে। এর বাইরে ‘আনলিমিডেট’ বা নির্দিষ্ট মেয়াদহীন কিছু প্যাকেজ রয়েছে, যার জনপ্রিয়তা কম এবং এগুলো নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

স্বল্পমেয়াদি প্যাকেজ কিনলে অনেক সময় দেখা যায়, মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ডেটা অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কেউ যদি আগের কেনা প্যাকেজটি আবার কেনেন, তাহলে অব্যবহৃত ডেটা পরের প্যাকেজে যোগ হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকের মেয়াদ শেষের আগে প্যাকেজ কিনতে মনে থাকে না। আবার অনেক গ্রাহক ভিন্ন প্যাকেজ কেনেন। তখন আর অব্যবহৃত ডেটা পরের প্যাকেজে যোগ হয় না।

এ বিষয়ে কী নীতি হওয়া উচিত তা বিটিআরসির জরিপে গ্রাহকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে প্রায় ৮৮ শতাংশ গ্রাহক মেয়াদকালের মধ্যে যেকোনো প্যাকেজ কিনলে, অব্যবহৃত ডেটা যোগ হওয়ার নীতি চেয়েছেন। বাকিরা মেয়াদকালের মধ্যে একই পরিমাণের ভিন্ন মেয়াদের প্যাকেজ কিনলে এবং মেয়াদের মধ্যে একই প্যাকেজ কিনলে, অব্যবহৃত ডেটা যোগ হওয়ার নীতির পক্ষে। উল্লেখ্য, বিটিআরসির উপস্থাপনায় এ ক্ষেত্রে আলাদা হার উল্লেখ করা হয়।

বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল ডেটার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার একটি খসড়া পরিকল্পনা তারা করেছে। এর জন্য অনলাইনে জরিপটি করা হয়েছে। এতে প্রায় ৫৪৯ গ্রাহক অংশ নেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীর বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী।

সভায় বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন। তিনি জানান, বেশিসংখ্যক গ্রাহক ইন্টারনেট প্যাকেজের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০টির মধ্যে রাখার মত দিয়েছেন। বেশির ভাগ গ্রাহক চান, ইন্টারনেট প্যাকেজের মেয়াদ হওয়া উচিত তিনটি—৭ দিন, ৩০ দিন ও নির্দিষ্ট মেয়াদহীন (আনলিমিটেড)।

গ্রাহকদের কাছে প্রশ্ন ছিল, ডেটার দাম কেমন হওয়া উচিত? জবাবে প্রায় ৫৩ শতাংশ গ্রাহক বলেন, প্রতি গিগাবিট (জিবি) ইন্টারনেটের দাম যেকোনো মেয়াদের জন্য সমান হওয়া উচিত। ২৭ শতাংশ গ্রাহক বলেছেন, ভিন্ন মেয়াদের জন্য ডেটার দাম ভিন্ন হওয়া উচিত; আর বাকিরা বলেছেন, স্বল্পমেয়াদি ডেটার দাম কম হওয়া উচিত।

ডেটা প্যাকেজের সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পক্ষে প্রায় ৪৬ শতাংশ এবং ভিন্ন মেয়াদের প্যাকেজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণের পক্ষে প্রায় ২১ শতাংশ গ্রাহক। বাকি গ্রাহকের অর্ধেক প্রতি জিবির জন্য সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য এবং অর্ধেক ভিন্ন মেয়াদের ডেটার জন্য একই সর্বনিম্ন ও ভিন্ন ভিন্ন সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

অবশ্য অনুষ্ঠানে ডেটার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়। দাম নির্ধারণের বদলে মান উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। টেলিযোগাযোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্নএশিয়ার জ্যেষ্ঠ পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান সরকার কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়াকেও প্রাগৈতিহাসিক চিন্তা বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, বাজারে অনেক প্রতিযোগিতা আছে। দাম নির্ধারণের বদলে যে অসংগতি আছে, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে সমাধান করা উচিত।

বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকলে দাম বেঁধে দিতে হয় না বলে উল্লেখ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মইনুল ইসলাম জাবের। তিনি মোবাইল অপারেটরগুলোর বর্তমান প্যাকেজ–পদ্ধতিরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সেবার মান বাড়ানোর দিকে বিটিআরসির নজর দেওয়া উচিত।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, প্যাকেজ বেশি থাকলে গ্রাহকেরা বিশেষ করে তরুণেরা পছন্দেরটি বাছাই করে নিতে পারেন।

মতবিনিময় সভায় সরাসরি ও অনলাইনে বেশ কয়েকজন গ্রাহক যুক্ত ছিলেন। তাঁরা সেবার মান নিয়ে অসন্তোষের কথা জানান। উপস্থিত বেশির ভাগ গ্রাহক ছিলেন টেলিটকের।

অপারেটরদের মধ্যে রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম টেলিযোগাযোগ সেবার ওপর উচ্চ হারে কর আরোপের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ১০০ টাকার মধ্যে নানা রকম কর ও ফি হিসেবে সরকারের কোষাগারে যায় ৫৪ টাকা।

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ সভায় জানান, মতবিনিময় সভায় যেসব মতামত এসেছে, তা পর্যালোচনা করা হবে।

বিটিআরসির কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) মো. মাহবুব-উল-আলম, গ্রামীণফোনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) হোসেন সাদাত, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঞা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

back to top